চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে সাত হাজার মিটার অবৈধ জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। পৃথক আরেকটি অভিযানে রেললাইনের উপর বৈদুতিক খুঁটির নিচে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ ইন্টারনেট ও ডিসের তার কেটে অপসারণ করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুর ও বিকালে সদর উপজেলার ভাদুঘর সংলগ্ন তিতাস নদী এবং শহরের কলেজপাড়ার লেবেল ক্রসিং এলাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসেন এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, সদর পৌর শহরের ভাদুঘর তিতাস নদীতে অবৈধ কারেন্ট ও রিং জাল দিয়ে কিছুদিন ধরে মৎস্য শিকার করে আসছেন একটি চক্র।
বিষয়টি জানতে পেরে শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসেন ভাদুঘর এলাকায় তিতাস নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় নদীতে অবৈধ জাল দিয়ে মৎস্য শিকারর অভিযোগ দুই হাজার মিটার অবৈধ রিং জাল ও পাঁচ হাজার মিটার করেন্ট জাল জব্দ করা হয়। তবে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ায় অবৈধ এসব জালের মালিককে আটক করা সম্ভব হয়নি। পরে জব্দকৃত দুই হাজার মিটার রিং জাল এবং পাঁচ হাজার মিটার কারেন্ট জাল আগুনে পোড়ানো হয়।
এদিকে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আখাউড়াগামী তিতাস কমিউটার ট্রেন শহরের কলেজপাড়ার লেবেল ক্রসিং এলাকা অতিক্রম করার সময় ট্রেনের ছাদে থাকা দুই যাত্রী রেললাইনের উপরে বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে থাকা তারের সঙ্গে প্যাচ লেগে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে ঘটনাস্থলেই এক যাত্রী মারা যান এবং অপরযাত্রী আহত হন।
এঘটনার জন্য শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কলেজপাড়ার লেবেল ক্রসিং এলাকায় পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ বিভাগের সদস্যদের নিয়ে পৌঁছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসেন। পরে লেবেল ক্রসিং এলাকায় রেললাইনের উপরে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ সকল তার কেটে সরানো হয়।
এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনাকারী সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসেন বলেন, ভাদুঘর সংলগ্ন তিতাস নদীতে অভিযান চালিয়ে মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৯০ এর আলোকে দুই হাজার মিটার অবৈধ রিং জাল ও পাঁচ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। আর কলেজপাড়ার লেবেল ক্রসিং এলাকায় রেললাইনের উপর থাকা অপ্রয়োজনীয় তার কেটে অপসারণ করা হয়েছে। এতে এখানে মৃত্যুর ঝুঁকি কমবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে পৌর আধুনিক সুপার মার্কেট চত্বরে শান্তি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌসের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন স্বপন, এহসান উল্লাহ মাসুদ, সালাহউদ্দিন সরকার, রাকিব আহমেদ সোহেল, রিটন রায়, আমজাদ হোসেন রনি, জসিম উদ্দিন রানা, আকবর হোসেন লিটন, আলী আজম প্রমুখ।
শান্তি সমাবেশে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলছে, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ঠিক সেই মুহূর্তে বিএনপি-জামাত দেশব্যাপী সন্ত্রাস, নৈরাজ্য আর জনগণের জানমালের ক্ষতি করছে।
যারা এদেশের বিরুদ্ধে, বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে তাদেরকে রাজপথেই কঠোরভাবে প্রতিহত করবে যুবলীগ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবারও সরকার গঠন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ২০ অক্টোবর শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৬০২টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপুজা। যা গত বছরের চেয়ে ১১টি বেশী।
এবছর জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৪৮টি পুজা হবে নাসিরনগরে। এছাড়া নবীনগরে ১৩৩টি, সদর উপজেলায় ৭৯টি, বিজয়নগরে ৫৭টি, কসবায় ৫২টি, সরাইলে ৪৮টি, বাঞ্ছারামপুরে ৪৬টি, আখাউড়ায় ২৩টি ও আশুগঞ্জে ১৬টি মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬০২টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ৩৯৪টিকে সাধারণ ও ২০৮টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে পুলিশ। এর মধ্যে নাসিরনগরের ১৪৮টি মণ্ডপকেই সাধারনের তালিকায় রাখা হয়। আজ ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে জেলা পুলিশের অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়। মূলত ‘ঝুঁকিপূর্ণগুলোকে’ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরে নেয় পুলিশ।
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ি, নাসিরনগরের পাশাপাশি কসবা উপজেলায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপ নেই। সদর উপজেলার ৫৭টি, আশুগঞ্জের ১৬টি, সরাইলের ৩২, নবীনগরের ৪৬টি, বাঞ্ছারামপুরের ১২টি, আখাউড়ার ২০টি, বিজয়নগরের ২৫টি মণ্ডপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়।
পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুুষ্ঠিত প্রস্ততি সভায় বক্তব্য রাখেন, সোমেশ রঞ্জন রায়, নির্মল চৌধুরী, সঞ্জীব সাহা বাপ্পী, নিতীশ চন্দ্র রায়, মন্টু রঞ্জন সাহা, সঞ্জয় সাহা, কার্তিক চৌধুরী, সঞ্জয় চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় নাসিরনগর পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বলেন, তাঁর এলাকার পুজা নিয়ে তিনি শঙ্কায় প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেনন, ২০১৬ সালের ৩০ মে নাসিরনগরে যে সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছিল সেসব মামলার আসামীরা এখন জামিন পেয়ে ঘুরাফেরা করছেন। যে কারণে তাদের এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে পুজা করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারার শঙ্কায় সেখানে তিনি বাড়তি নজরদারির আবেদন জানান।
মত বিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সার্বিক প্রেক্ষপটে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে গুজবে কান দেওয়া যাবে না। কিছু একটা ঘটলে আমাদেরকে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।’ যেকোনো প্রয়োজনে পুলিশ জানাতে তিনি আহবান জানান।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত দুর্গাপুজার প্রস্তুতি মূলক সভায় বলা হয়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) হেলেনা পারীভনের সঞ্চানলায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজিবি-২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আরমান আরিফ, ৬০ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জোবায়ের বিন জাবের, সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ, সাবেক অধ্যক্ষ বিভ‚তিভূষন দেবনাথ, সাবেক অধ্যক্ষ অমৃত লাল সাহা, সোমেশ রঞ্জন রায়, সঞ্জিব সাহা বাপ্পী, নিতীশ রঞ্জন রায়, বিশ্বজিৎ পাল বাবু, সাধন চন্দ্র চৌধুরী, কার্তিক চৌধুরী প্রমুখ। সভায় বলা হয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুন্দরভাবে পুজা উদযাপনে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা মিয়া আবদুল মতিনকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
আজ ২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেলে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছেল সিদ্দিকী ও কসবা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন ভূঁইয়া বকুল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল-মামুন সরকার বলেন, জেলা পরিষদ মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিকদের স্মৃতি রক্ষায় কাজ করবে। তিনি বলেন, জেলা পরিষদের উদ্যোগে স্মৃতি বিজরিত স্থান আখাউড়া উপজেলার ঘাগুটিয়া এলাকায় একটি পর্যটন ছাউনী নির্মাণ করা হবে। সেই ছাউনীর নাম করন ভাষা সৈনিক মিয়া আবদুল মতিনের নামে করা হবে। এছাড়াও জেলার আরো চারজন ভাষা সৈনিকের স্মৃতি রক্ষায় কাজ করবে জেলা পরিষদ।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ৯১ বয়স বয়সী ভাষা সৈনিক মিয়া আবদুল মতিন বলেন, তখন আমি আখাউড়ার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র। মায়ের ভাষা তারা কেড়ে নিতে চায় বিষয়টি শোনার পর আর স্থির থাকতে পারিনি। পরে আখাউড়ায় আন্দোলন শুরু করি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার অপরাধে ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আমার বাড়ি থেকে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। দুই মাস কারাবরণ শেষে জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসি। এই আন্দোলনের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে শার্ট ও প্যান্ট উপহার দেন।
এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য অতিথিরা তাকে বিদায় জানানোর সময় অনেকের চোখেই পানি চলে আসে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মিয়া মতিনের হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেয়া হয়। উল্লেখ্য, মিয়া আবদুল মতিনের বাড়ি আখাউড়া ফেব্রুয়ারি টনকী গ্রামে। তিনি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য আটজনের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মিছিলটি উপজেলার মোগড়া বাজার ও গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা প্রদিক্ষণ করে। পরে তাদের এই আন্দোলনটি গণবিক্ষোভে রূপ নেয়।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার অপরাধে ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। দুই মাস কারাবরণ শেষে জেলখানা থেকে তিনি ছাড়া পান। ১৯৫৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মতিনসহ আরো কয়েকজনকে ঢাকায় ডেকে পাঠান ও সাহসিকতার জন্য তাদের উপহার দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ৮০জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বিকেল ৩টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী মোড়ে সংঘর্ষের সময় আশিক মিয়া (১৭) হত্যার ঘটনায় তার পিতা সাগর মিয়া বাদী হয়ে গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ২০০/৩০০ লোককে আসামী করা হয়েছে।
মৃত আশিক মিয়া পৌর এলাকার কলেজপাড়ার সাগর মিয়ার ছেলে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোঃ মহসিন, তানজিল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক হালিম শাহ লিল মিয়া, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান আনসারী, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাকিল মিয়া, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সামি আহমেদ নাবিল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুরে মাওলা ফারানি, বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান, বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব হোসাইন প্রমুখ। এজাহারে মামলার বাদী সাগর মিয়া অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মোদি বিরোধী আন্দোলনের সময় জেলার বিভিন্ন ¯’ানে বিক্ষোভ মিছিল হয় ও মিছিলে অংশ গ্রহণ করে আশিক মিয়া।
২৬ মার্চ বিকেল ৩ টার দিকে শহরের কাউতলী মোড়ে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নির্দেশে আসামীরা আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ও ককটেল নিপে করে। তাদের ছোড়া গুলি আশিকের বুকে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিসৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় হাসপাতাল থেকে কোন স্লিপ দেয়া হয়নি ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই আশিকের লাশ দাফন করা হয়। ওই সময় স্বৈরাচারি সরকারের দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।