চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ ২১ আগস্ট সোমবার এ ঘটনায় হাকিম মিয়া(২৮) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
হাকিম মিয়া উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের অরুয়াইল গ্রামের মৃত ফারুক মিয়ার ছেলে। সোমবার দিনে দুপুরে উপজেলা অরুয়াইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুই পুলিশ সদস্যকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হামলায় আহত সরাইল থানার এএসআই শামছুল আলম বলেন, দুপুরে অরুয়াইল বাজার এলাকায় দায়িত্বকালে বাজারের সুতা ব্যবসায়ী কালা মিয়া জানান, তার মেয়ে জামাই হাকিম মিয়া (২৮) তার মেয়ে সোমাকে (২১) মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। এখন তার মেয়ে সোমা অরুয়াইল বাজারের হাজি শিশু মিয়া মার্কেটের ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়ার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করছেন। সোমা ও তার বাবা কালা মিয়া থানা বা কোর্টে গিয়ে আইনের আশ্রয় নিতে সাহায্য প্রার্থনা করেন। ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের নিয়ে বের হওয়ার সাথে সাথে মেয়ের জামাই হাকিম মিয়া ও রিফাতসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জন যুবক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমিসহ আরেকজন পুলিশ সদস্য রোকন উদ্দিনও আহত হয়।
সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আ.স.ম আতিকুর রহমান বলেন, পুলিশের ওপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় নামধারী ২ জন এবং অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১১ জন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের শাহজাহান আলম, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম (জুয়েল), ইসলামী ঐক্যজোটের আবুল হাসানাত, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) রাজ্জাক হোসেন, তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পাটির কাজী মাসুদ আহমেদ, স্বতন্ত্র মঈন উদ্দিন ও জিয়াউল হক মৃধা, জাতীয় পার্টির রেজাউল ইসলাম ভূঞা ও আবদুল হামিদ এবং তরিকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুছ।
এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক দুইবারের এমপি জিয়াউল হক মৃধা ও জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব দলীয় প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঞা সম্পর্কে আপন শ্বশুর-জামাতা।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে জিয়াউল হক মৃধার মেয়ে জামাই রেজাউল ইসলাম ভূঁঞা মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এ কারণে তার শ্বশুর ও তৎকালীন জাপার ভাইস প্রেসিডেন্ট সাংসদ জিয়াউল হক মৃধার কর্মী-সমর্থকরা ঢাকা-কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল বিশ্বরোড এলাকায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। জিয়াউল হক এ আসনে পরপর দুবার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে রেজাউল মনোনয়ন পাওয়ায় এ আসনে জাপার প্রার্থিতা নিয়ে জামাই-শ্বশুর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। চলে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়।
তবে শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা রওশন এরশাদপন্থি এবং দলের বহিষ্কৃত নেতা। রওশনপন্থি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক তিনি। তাই দলীয় মনোনয়ন পাননি জিয়াউল হক মৃধা। এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মৃধার মেয়ে জামাই রেজাউল মনোনয়ন জমা দিলেও একই দল থেকে মনোনয়ন জমা দেন আব্দুল হামিদ ভাসানী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঞা বলেন, ‘এ আসনে আব্দুল হামিদও আমাদের দল থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। যেমন গত নির্বাচনে বিএনপি একাধিক প্রার্থী জমা দিয়েছিলেন। যদি এরমধ্যে কেউ বাদ যায়! মূলত ওই আসনে আব্দুল হামিদ নির্বাচন করবেন।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক দুইবারের এমপি জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘সবশেষ উপনির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমি রওশনপন্থি, (নির্বাচনে) রওশনপন্থিরা সবাই আছেন। জাতীয় পার্টি থেকে কে নির্বাচন করলো বা মনোনয়ন পেলো তা আমার দেখার দরকার নেই।’
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা কায়ছানকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ ২৬ মার্চ বুধবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে পোস্ট দেওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ফেসবুক পোস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পোস্টটি প্রকাশের পরপরই রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন এসিল্যান্ড সিরাজুম মুনিরা কায়ছান।
এসিল্যান্ডের অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে লেখা ছিল- “পৃথিবীর বুকে বাংলার নাম আজ উজ্জ্বল, লড়াইয়ের ইতিহাসে লেখা হলো অনন্য মহিমা, সেখানে বীরত্বের গান বাজে নিঃশব্দে, শাসকগোষ্ঠীর শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির সীমানা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মম গণহত্যা চালায়। সেদিন রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ স্বাধীন! এরপর শুরু হয় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়, কিন্তু এর ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ২৬ মার্চেই। তাই এই দিনটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, সংগ্রামের চেতনা এবং আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল। আমাদের স্বপ্ন একটি দুর্নীতিমুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত বাংলাদেশ। যেখানে সব নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে, শিক্ষার মান আরো উন্নত হবে, অর্থনীতি হবে স্বনির্ভর, এবং সর্বোপরি-গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার থাকবে সুসংহত। অর্জিত স্বাধীনতা কেবল একটি ঘটনা নয়, জীবনধারার প্রাত্যহিকতায় মুক্তির আবেশ দায়িত্ব এদেশের প্রতিটি সন্তানের কাঁধে, আগামী দিনে গড়তে হবে সোনার বাংলাদেশ। মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা…”। পোস্টটি মূহুর্তে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পরই সরাইল উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানান এবং এসিল্যান্ডের অপসারণ দাবি করেন।
পরে তিনি দাবি করেন, তিনি নিজে পোস্টটি করেননি। তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছিল। পরবর্তীতে আইডি ফিরে পেয়ে পোস্টটি মুছে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, এসিল্যান্ড জানিয়েছেন তার ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড অনেকের কাছে ছিলো। জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছেন আপাতত তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ছুটিতে পাঠাতে। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মনোমুগ্ধকর লাঠি খেলা। লাঠি খেলার আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ছিল উৎসবের আমেজ। আজ ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়েনের তেরোকান্দা গ্রামের একটি বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী এই প্রাচীন খেলা।
খেলায় ঢাক, ঢোল আর কাঁসার ঘন্টার শব্দে চারপাশে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাদ্যের তালে তালে নেচে নেচে লাঠি খেলে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে তরুণ ও বর্ষিয়ান লাঠিয়ালরা। তারপরই চলে লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও তাকে আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা।
এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে উৎসাহ যোগায় খেলোয়াড়দের। কালক্রমে হারিয়ে যাওয়া লাঠি খেলা দেখতে ভিড় করে নানা বয়সের নারী-পুরুষ। গ্রামীন এ ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাকে টিকিয়ে রাখতে দরকার প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা এমনটাই মনে করেন দর্শনার্থীরা। বিকেল থেকে সন্ধ্যা অবধি চলা লাঠিখেলায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কয়েকটি লাঠিয়াল বাহিনী অংশগ্রহণ করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাহরাইনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা গ্রামের শানু মিয়া (৪৫)। স্থানীয় সময় ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত ৩ টায় বাহরাইনের সালমানিয়া হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এর আগে গত ৫ দিন আগে বাহরাইনের আলি নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় শানু মিয়া গুরুতর আহত হয়ে সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নিহত শানু মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা গ্রামের পশ্চিমপাড়া বন্দেরবাড়ির মৃত মো: ওয়াদ আলী মিয়ার পুত্র।
শানু মিয়ার ছোট ভাই রোবেল মিয়া জানান, ১৪ বছর আগে তার বড় ভাই শানু মিয়া জীবিকার টানে বাহরাইনে পাড়ি জমান ইতিমধ্যে ৪ বার তিনি ছুটিতে দেশে এসেছেন।
পারিবারিকভাবে রোকসানা, হাফসানা ও ফাতেমা নামে ৩ মেয়ের জনক তিনি। সর্বশেষ ৩ মাসের ছুটি কাটিয়ে গত ৯ দিন আগে ফের বাহরাইন গিয়েছেন শানু মিয়া। বাহরাইনে কর্মরত এক আত্বীয়ের মাধ্যমে পরিবারের কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় শানু মিয়া নিহত হওয়ার খবর আসে। এ খবরে পুরো পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া।
স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে এখানকার আকাশ বাতাস। এলাকাবাসীর মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শানু মিয়ার এতিম তিন কন্যা সন্তান তাদের পিতার লাশ এবং স্বামীহারা কোহিনূর বেগম তার স্বামীর লাশ দেশে এনে এক নজর দেখার আকুতি জানিয়েছেন। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন অসহায় পরিবারের লোকজন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় দালালসহ ৫ বাংলাদেশী নাগরিকে আটক করেছে সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) সদস্যরা।
আজ ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে মাধবপুর দেবনগর এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহজাদপুর এলাকার মৃত গনেশ সরকারের ছেলে পরিমল সরকার (৫৫), একই এলাকার লক্ষ্মী সরকারের ছেলে তাপস সরকার (৩৫) ও শ্যামল সরকারের ছেলে স্বপন সরকার (৪৫), বিজয়নগর উপজেলার মির্জাপুর এলাকার রায় কুমার মজুমদারের ছেলে দুর্জয় মজুমদার (১৯), মাধবপুর উপজেলা দেবনগর এলাকার মৃত আবু সামার ছেলে দালাল মোহাম্মদ আলী (৬০)।
২৫ বিজিবি জানায়, অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় ৫ বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করা হয়। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দালাল মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে তারা ভারতে চিকিৎসা ও কাজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।
আটককৃত মানব পাচারকারী দালালসহ ৫ বাংলাদেশী নাগরিকদের মাধবপুর থানায় মামলা দায়ের করে হস্তান্তর করা হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারে সে ব্যাপারে সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) অভিযান চলমান থাকবে।