চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় সিএনজি চালিত অটোরিক্সার ৫ যাত্রী নিহত হয়েছে। আজ ২১ আগস্ট সোমবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জে কাভার্ড ভ্যান চাপায় ও সরাইল উপজেলায় বাস চাপায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে ৩ জন।
জানা যায়, সোমবার দুপুরে আশুগঞ্জে থেকে যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় আসার পথে মহাসড়কের সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ায়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ঢাকামুখী একটি কাভার্ড ভ্যান (ঢাকা মেট্রো ম-২৭-৮২৩৭) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা ওই সিএনজি চালিত অটোরিক্সাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন পুরুষসহ এক শিশু মারা যায়। এর মধ্যে আহত একজনকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে মারা যায়। নিহতরা হলো জেলার সরাইল উপজেলার বড়ইবাড়ি গ্রামের ফরিদা মিয়ার ছেলে সিএনজি চালক মোঃ সোহেল মিয়া (২৭), একই গ্রামের নাজমুল মিয়ার ছেলে মোঃ জিলানী (৮), পানিশ্বর ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামের আছকর মিয়া (৬০) ও কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার মির্জাপুর গ্রামের মোঃ রশিদ মিয়ার ছেলে উজ্জল (৩৫)। এ ঘটনায় আরো ৩ যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, নিহত জিলানীর ছোট বোন দেড় বছর বয়সী তাইরিন, বাবা নাজমুল মিয়া ও মা শাহানা বেগম। তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, সোমবার দুপুরে একই মহাসড়কে জেলার সরাইল উপজেলার ইসলামাবাদ এলাকায় বাস চাপায় সিএনজি অটোরিক্সার যাত্রী আবু হানিফ (৬০) নিহত হয়েছে। তিনি আখাউড়া উপজেলার আব্দুল হাসেমের ছেলে। এ ঘটনায় আরো দুই যাত্রী আহত হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঢাকাগামী বাসটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সাটিকে চাপা দিলে অটোরিক্সার ৩ যাত্রী গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু হানিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, দুপুরে আশুগঞ্জে থেকে যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্স বিশ্বরোড আসার পথে মহাসড়কের সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ায়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ঢাকামুখী একটি কাভার্ড ভ্যান (ঢাকা মেট্রো ম-২৭-৮২৩৭) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা ওই সিএনজি চালিত অটোরিক্সাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন পুরুষসহ এক শিশু মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে। এর মধ্যে আহত একজনকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে মারা যায়। এছাড়া সরাইলেও সড়ক দুর্ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সব ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির কারণে সরাইল উপজেলায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিদ্যুতের প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর টানা ২৩ ঘণ্টা পর রবিবার রাত ১১টার দিকে পুরো উপজেলায় একযোগে বিদ্যুৎ আসে। এরপরও চলতে থাকে লোডশেডিং। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলাবাসী।
বিদ্যুৎ না থাকার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃপক্ষের ‘খামখেয়ালি’কে দায়ী করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্যদিকে বিউবোর কর্মকর্তারা সঞ্চালন লাইনে ‘সমস্যা’ হওয়ার কথা জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা সদরের বড় দেওয়ানপাড়া বাসিন্দা কলেজশিক্ষক মাহবুব খান বলেন, ‘এখানে বৃষ্টির দু-চারটি ফোঁটা পড়লেই টানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণেই এমনটি হয়ে থাকে। এখন চলছে রোজার মাস। এ সময়ে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি।’
সরাইল শতভাগ বিদ্যুৎ–সুবিধার আওতায় আসা একটি উপজেলা। এর নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে সদরসহ সাতটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের আওতাধীন। এখানে গ্রাহকসংখ্যা ৪৪ হাজার ৫০০। বিউবোর এ বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের অধিকাংশই শনিবার রাত ১২টার পর থেকে টানা ২৩ ঘণ্টার বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সামান্য হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাতের কারণে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলা সদরসহ পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ চলে যায়। শাহবাজপুর ও কালীকচ্ছ ইউনিয়নে বিকেল চারটার দিকে বিদ্যুৎ আসে। এ দুটি ইউনিয়নে আবার বিদ্যুৎ চলে যায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। এরপর সরাইল সদর, পানিশ্বর, চুন্টা, শাহজাদাপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নে রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাবে উপজেলাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকের বাসাবাড়ি কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ফ্রিজে রাখা খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়।
শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল হুদা চৌধুরী বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। রবিবার বিকেল চারটার দিকে আসে। কিছুক্ষণ পর আবার চলে যায়। এখানে আকাশে মেঘ দেখা দিলেই এমনটি হয়ে থাকে, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না।
ছোট দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা সমাজকর্মী রওশন আলী বলেন, ‘সরাইল বিদ্যুৎ কার্যালয়ে কর্মচারীদের মধ্যে গ্রুপিং আছে। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে সহ্য করতে পারে না। কেউ কাউকে সহায়তা করে না। এ কারণে এখানে আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে আরও বেশি।’
স্বল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন বিউবোর সরাইল উপজেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) আবদুর রউফ। তিনি বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাতের প্রচণ্ড বজ্রপাতের প্রভাবে সঞ্চালন লাইনে সমস্যা হয়। এ সমস্যা চিহ্নিত করতে সময় লেগেছে। এ জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে অনেক দেরি হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
বাহরাইনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা গ্রামের শানু মিয়া (৪৫)। স্থানীয় সময় ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত ৩ টায় বাহরাইনের সালমানিয়া হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এর আগে গত ৫ দিন আগে বাহরাইনের আলি নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় শানু মিয়া গুরুতর আহত হয়ে সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নিহত শানু মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা গ্রামের পশ্চিমপাড়া বন্দেরবাড়ির মৃত মো: ওয়াদ আলী মিয়ার পুত্র।
শানু মিয়ার ছোট ভাই রোবেল মিয়া জানান, ১৪ বছর আগে তার বড় ভাই শানু মিয়া জীবিকার টানে বাহরাইনে পাড়ি জমান ইতিমধ্যে ৪ বার তিনি ছুটিতে দেশে এসেছেন।
পারিবারিকভাবে রোকসানা, হাফসানা ও ফাতেমা নামে ৩ মেয়ের জনক তিনি। সর্বশেষ ৩ মাসের ছুটি কাটিয়ে গত ৯ দিন আগে ফের বাহরাইন গিয়েছেন শানু মিয়া। বাহরাইনে কর্মরত এক আত্বীয়ের মাধ্যমে পরিবারের কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় শানু মিয়া নিহত হওয়ার খবর আসে। এ খবরে পুরো পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া।
স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে এখানকার আকাশ বাতাস। এলাকাবাসীর মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শানু মিয়ার এতিম তিন কন্যা সন্তান তাদের পিতার লাশ এবং স্বামীহারা কোহিনূর বেগম তার স্বামীর লাশ দেশে এনে এক নজর দেখার আকুতি জানিয়েছেন। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন অসহায় পরিবারের লোকজন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলায় স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে শাহিদা আক্তার (২৬) নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তাঁকে জড়িয়ে ধরে দগ্ধ হয়েছে দেড় বছর বয়সী মেয়ে সন্তানটি। দগ্ধ হয়েছেন গৃহবধূর স্বামী আল-আমীন (৩০)। তাঁদের সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ওই গৃহবধূ মারা যান।
গত সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আল-আমীনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শাহিদার ছোট ভাই আবিদ মুন্সি। আল-আমীন ও তাঁর মেয়ে আলিফা আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছে। শাহিদার লাশ গতকাল রাতে গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
পুলিশ, মামলার এজাহার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আট বছর আগে উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের আলাই মুন্সির মেয়ে শাহিদা আক্তারের সঙ্গে মধ্যপাড়া গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে আল-আমীনের বিয়ে হয়। তাঁরা প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। প্রথমে আল-আমীনের পরিবার বিয়ে মেনে নিতে না চাইলেও পরে যৌতুক পেয়ে মেনে নেয়। তাঁদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। বিয়ের পর আল–আমীনকে যৌতুক দেওয়া হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা। এ টাকায় আল-আমীন মধ্যপ্রাচ্যে যান। তিন বছর আগে দেশে ফিরে তিনি ভবঘুরে স্বভাবের হয়ে পড়েন। টাকার অভাব হলেই তিনি স্ত্রীকে মারধর করতেন। শাহিদার পরিবার থেকে একাধিকবার টাকাও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। শাহিদাকে নিয়মিত মারধরের কারণে গ্রামে একাধিকবার সালিসও হয়েছে।
সোমবার সকালে টাকার জন্য শাহিদা আক্তারকে মারধর করতে থাকেন আল-আমীন। একপর্যায়ে নিজের মোটরসাইকেল থেকে পেট্রল বের করে শাহিদার গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। অগ্নিদগ্ধ শাহিদা যখন চিৎকার করছিলেন, তখন তাঁর দেড় বছরের শিশু আলিফাও চিৎকার দিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে। এতে শিশু আলিফা দগ্ধ হয়। নিজের দেওয়া আগুনে আল-আমীনও দগ্ধ হন। গ্রামের লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তিনজনকেই সোমবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলার বাদী শাহিদার ছোট ভাই আবিদ মুন্সি বলেন, ‘যৌতুকের জন্য পাষণ্ড আল-আমীন আমার বোনকে আগুনে পুড়িয়ে মারছে। আমরা তার ফাঁসি চাই।’
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, অগ্নিদগ্ধ আল-আমীন শঙ্কামুক্ত হলেও তাঁর মেয়ে শঙ্কামুক্ত নয়। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। পুলিশের নজরদারিতে আল-আমীনের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ২৩ জুন শুক্রবার সকালে উপজেলার বাড়িউড়া নামক স্থানে মরদেহটি পাওয়া যায়।
সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, সকালে মহাসড়কে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। মরদেহ দেখে মনে হয়েছে, হেঁটে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় কোনো গাড়ির চাপায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা গেছেন। তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।