চলারপথে রিপোর্ট :
প্রায় ৪ বছর আগে নির্মাণ শেষ হয় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের বারইয়া সেতুটি। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় এখনো সেটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। সাতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক নেই। এজন্য চলাচলে চরম বিড়ম্বনা পোহাচ্ছেন বারইয়া, ঝিকিরা ও কালিগঞ্জসহ অন্তত ১০-১৫ গ্রামের মানুষ। সেতুর দুই পাশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে মইয়ের মতো তৈরি করে পথচারীদের পারাপার হতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় ১৫ গ্রামের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম রুট উল্লাপাড়া-কালিগঞ্জ সড়কের বারইয়া খেয়াঘাট এলাকায় স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের ৪ বছর পার হলেও সংযোগ সড়ক না করায় সেটি কোনো কাজেই আসছে না। ফলে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুর দুই পাশের মই বেয়ে পার হতে হচ্ছে। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি ২০১৯ সালে নির্মাণ করা হয়। তবে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় এখনো সেতুর দুইপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি।
উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সায়েদ বলেন, বারইয়া গ্রামের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রাায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন সংযোগ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে যথাসময়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় আবেদন করা হয়েছে। সেখান থেকে ভূমি জরিপের কাজও শেষ হয়েছে। কিন্তু ওই ভূমির অধিগ্রহণ মূল্য এখনো নির্ধারণ কাজ সম্পন্ন হয়নি। তাই সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ আছে। ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই সেতুর বাকি কাজ শেষ করা হবে।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল হোসেন জানান, একটা ব্রিজ নির্মাণে বহুবিধ কাজ জড়িত থাকে। ব্রিজটি পরিদর্শন করা হয়েছে। স্থানীয় ভূমি মালিকদের সঙ্গে কথাও হয়েছে। আশা করছি দ্রুত অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করে সেতু দিয়ে জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
স্টাফ রিপোর্টার :
আজ ২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার অমর একুশে। মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্র“য়ারি ঢাকার রাজপথে ঘটেছিল ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার ঘটনা। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে যে সংগ্রামের সূচনা ঘটেছিল ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চুড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় প্রাণ বিলিয়ে দেয় বাঙালি তরুণ প্রজন্ম। ইতিহাস বিদদের মতে, ভাষার প্রশ্নে একুশের আন্দোলন হলেও প্রকৃত প্রস্তাবে তা ছিল শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রথম সম্মিলিত প্রতিবাদ। রক্তঝরা সে দিনটি তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে আত্ম অধিকার সচেতন করেছিল। সেখান থেকেই সমতা ভিত্তিক সমাজ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়।
পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেওয়ার প্রথম দৃস্টান্ত এটি। মাতৃভাষার জন্য বাঙালির গৌরবময় আন্দোলনের ৬৬ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউরের রক্তে সিক্ত শোকের এ দিনটি এখন গৌরবের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। তাই বরাবরের মতো এবারও অনন্য আয়োজনে দিনটি পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের ৩০তম সম্মেলনে ২৮টি দেশের সমর্থনে ফেব্রুয়ারির দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮ দেশে একযোগে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাঙালি জাতির জন্য এক অনন্য সাধারণ অর্জন। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতার এত বছর পর আজও একুশের অম্লান চেতনা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া যায়নি। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দেশের সংবিধানে বাংলার স্বীকৃতি মিললেও সর্বস্তরে তা চালুর দাবি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। তবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির সরকার ক্ষমতাসীন থাকায় জাতি অনেকটা আশান্বিত। বিশেষ করে এ সরকারের আমলে বাংলাভাষা চর্চা ও বিকাশের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শেষ হওয়ায় আশাবাদী হয়েছে মানুষ।
আজ সরকারি ছুটির দিন।
সারাদেশে আজ দিনের শুরু হয়েছে শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে। বিশ্বের দেশে দেশে নানা ভাষা, নানা বর্ণ, নানা সংস্কৃতির মানুষ আজ গাইছে একুশের অমর গান- আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি।
অনলাইন ডেস্ক :
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিপুরে একটি বাসায় চার্জার ফ্যান বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়ার দুইদিন পর স্বামী স্ত্রী মারা গেছে। নিহত স্বামী আব্দুস সালাম মন্ডল (৫৫) ও তার স্ত্রী বুলবুলি বেগম (৪০)।
১২ জুন সোমবার রাতে স্বামী ও ১৩ জুন মঙ্গলবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যায়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম জানান, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে চার্জার ফ্যান বিস্ফোরণ হয়ে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ পাঁচজন এসেছিলেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুস সালাম মন্ডল সোমবার রাতে মারা যান। তার শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। মঙ্গলবার সকালে মারা যান বুলবুলি বেগম। তার শরীরের ২৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল। এ ঘটনায় দগ্ধ আরও তিনজন চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
বাড়ির মালিক সোহাগ জানান, দগ্ধ হওয়া একই পরিবারের ৫ জনের মধ্যে স্বামী স্ত্রী মারা গেছে। বাকি অন্যদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহসীন জানান, সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সকালে স্বামী স্ত্রীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে এমন সংবাদ পেয়েছি।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুন সকাল ৮টায় ফতুল্লা কাশিপুর খিলমার্কেট এলাকায় সেলিনা বেগমের বাড়িতে চার্জার ফ্যান বিস্ফোরণে আগুন ধরে একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হয়। দগ্ধরা হলেন, আব্দুস সালাম (৫৫), তার স্ত্রী বুলবুলি বেগম (৪০), ছেলে টুটুল (২০), মেয়ে সোনিয়া (৩০) ও নাতিন মেহজাবীন (৭)।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বরিশালবাসীকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে নৌকায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আবারও ক্ষমতায় আসতে পারলে বরিশালে ছয় লেনের রাস্তাসহ অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নেরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
আজ ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। যখন জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়নি। বাংলাদেশ পিছিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আসলে দেশ এগিয়ে যায়। কাজেই এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।
এ সময় নতুন ভোটারদের কাছে নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আহ্বান, যারা প্রথমবার ভোট দিতে আসবেন, নিশ্চয় চাইবেন না যে, আপনার ভোট ব্যর্থ হোক। কাজেই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’
আওয়ামী লীগ যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করে, তখন বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রেললাইন কেটে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ মরার ফাঁদ পাতে। মা আর সন্তানকে একসাথে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। এই দৃশ্য বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। গাড়িতে আগুন দেয়। ২০০১ সালের অগ্নিন্ত্রাস শুরু করেছিল। এরপর ২০১৩, ২০১৪ সালের পর এখন আবার শুরু করেছে।
“আমি ধিক্কার জানাই, ওই বিএনপি-জামায়াতকে। বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার কোনো অধিকার বাংলাদেশে নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, ওদের রাজনীতি মানুষ পোড়ানোতে। তাদের এদেশের মানুষ চায় না। তাদের দোসর কে? যারা একাত্তরের গণহত্যা করেছে, লুটপাট করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে, মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিয়েছে। যাদের বিচার করেছি, সাজা দিয়েছি; সেই যুদ্ধাপরাধীরা হচ্ছে তাদের দোসর।”
তিনি বলেন, একদল হচ্ছে খুনি, সন্ত্রাসী, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, মানিলন্ডারিং এবং যত প্রকার অপকর্ম…এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী সেই দল। তার সাথে জুটছে যুদ্ধাপরাধী দল। এরা নির্বাচন চায় না। বানচাল করতে চায়।
নৌকায় ভোট দিলে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তরিক হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে আহ্বান, আপনারা ৭ তারিখে সকলে সকাল সকাল সবাই ভোট কেন্দ্রে যাবেন। মার্কাটা কি? নৌকা মার্কা। এই নৌকা হচ্ছে নুহ (রা.) নবীর নৌকা। মহাপ্লাবন থেকে মানুষকে রক্ষা করেছিল।
“এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়ে আজকে দারিদ্র বিমোচন হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।”
আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তিখাতে দেশকে এগিয়ে নিতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে দরে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষ জনশক্তি আমরা গড়ে তুলতে চাই। যাতে বিশ্বের সঙ্গে শিক্ষা-দীক্ষায় সব দিক থেকে আমাদের তরুণ প্রজন্ম চলতে পারে।
“ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ছেলে মেয়ে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হবে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিখবে। দক্ষ জনশক্তি হবে। আমাদের সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্ট সরকার হবে, আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট অর্থনীতি হবে, সমাজ ব্যবস্থা স্মার্ট হবে।”
দেশের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত বরিশালে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আজকে অবহেলিত বরিশাল আজ কোথায় আছে। বরিশাল কি উন্নত হয়েছে?’ এ সময় উপস্থিত জনতা দু’হাত তুলে বরিশালের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বরিশাল বিভাগে নৌবাহিনীর ঘাটি করেছি, সেনানিবাস করেছি, এলাকার উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি, সেখানে সোলার প্যানলসহ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকায় নিচ্ছি। ভবিষ্যতে বরিশালেও নিয়ে আসব যাতে আরও শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে।’
“তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল কুয়াকাটায় চলে আসবে, সেখানে স্থাপন করা হবে যাতে দক্ষিণাঞ্চলের ইন্টারনেট নির্বিঘ্ন হয়। বরিশাল ছিল অন্ধকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, এখন প্রতিটি ঘরে আলো জ্বলছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কথা দিয়েছিলাম কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না। কথা রেখেছি। আমরা দিন বদলের সনদ দিয়েছিলাম, এখন দিন বদলে গেছে।”
ভাঙা থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা এবং পায়রা পোর্ট পর্যন্ত ছয় লেনের রাস্তা তৈরি করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যেই আমাদের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই বরিশালে আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না।
এ সময় বরিশাল একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, মেরিন একাডেমি করে দিয়েছি, প্রতিটি নদীর ওপর সেতু করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, বরিশাল ছিল শষ্য ভাণ্ডার। আবারও সেই সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য খাদ্য সংরক্ষণাগার করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের ফলে দক্ষিণাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেটা মাথায় রেখে ডেল্টা প্লান ২১০০ পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা আমি করে দিয়েছি। কাজেই এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কারা পারবে? একমাত্র আওয়ামী লীগ পারবে।
এ সময় তিনি বলেন, দারিদ্রের হার ৪১ থেকে ১৮.৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র ২৫.১ ভাগ ছিল, তা ৫.৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি। ইনশাআল্লাহ এই বাংলাদেশের হতদরিদ্র থাকবে না। আমরা গৃহহীণদের ঘর করে দিচ্ছি। প্রতিটি মানুষ ঘর পাবে, জমি পাবে। কেউ গৃহহীন থাকবে না।
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির অভয়ারণ্য করেছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময় ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অন্ধকার যুগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯৬ থেকে থেকে ২০০১ সালে দেশ যত এগিয়েছিল, তারপর তার থেমে গেল। চক্রান্ত করে ২০০১ এ আমাদের হারানো হয়। এরপর যে অথ্যাচার শুরু হলো। এই বরিশাল থেকে ২৫ হাজার জনগণ আমার কোটালীপাড়া গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছিল। কেউ ঘরে থাকতে পারত না। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ হাত কাটা, পা কাটা, চোখ তোলা, হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হাড়গুড়ো করে মারা, ঘরবাড়ি দখল করা, মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা, ফাহিমা-মহিমা কতো মানুষ আত্মহত্যা করেছে। এইভাবে তাদের অত্যাচার চলেছিল।’
“২০০১ থেকে ২০০৬ ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অন্ধকার যুগ। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন না হলেও ওই বিএনপি ক্ষমতায় থেকে তাদের ভাগ্য গড়েছিল।”
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময়ে সমস্ত দেশের গ্রেনেড হামলা বোমা হামলা। এমনকি আমার ওপর পর্যন্ত গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাঁচিয়ে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আমাদের মানবঢাল করে সেদিন রক্ষা করেছিল। এই বাংলাদেশকে তারা একটা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দুর্নীতির অভ্য়ারণ্য করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী তার জনসভার শেষ দিকে বরিশাল বিভাগের নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে বরিশালবাসীর কাছে ভোট চান।
চলারপথে ডেস্ক :
বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়েছে চারদিক। ফসলি জমি শুকিয়ে গেছে। ফলে আউশ আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্রিউলি গ্রামে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইস্তেসকার) ও দোয়া করা হয়েছে।
আজ ১৩ মে শনিবার সকাল ১০টার দিকে হায়দরগঞ্জ মসজিদ সংলগ্ন মাঠে এই নামাজ আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। হায়দরগঞ্জ টাইটেল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল শায়খ মাওলানা জাফর আহমদ এ বিশেষ নামাজ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন। এতে অংশ নেন কয়েক শতাধিক ধর্মপ্রাণ মানুষ।
নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে মাঠঘাট ও কৃষিজমি। তীব্র খরায় ফলস উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মানুষ। এজন্য মহান আল্লাহর কাছে আমরা বৃষ্টির জন্য দোয়া করেছি।
নামাজ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনাকারী মাওলানা জাফর আহমদ বলেন, এখন বর্ষা মৌসুম চলছে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় হাহাকার চলছে। জমিতে হাল চাষ করা যাচ্ছে না। মহান আল্লাহ নিকট আমরা বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছি। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনসহ আনুগত্য প্রকাশে এই নামাজ আদায় ও দোয়া মোনাজাত করা হয়। আল্লাহ যেন রহমত নাজিল করেন, এটিই আমাদের কামনা।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের অপরাধে দুই ব্যক্তিকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে মাছ শিকারে ব্যবহৃত তিনটি ডিঙ্গি নৌকা ও ২০০ মিটার অবৈধ জাল জব্দ করা হয়।
আজ ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার উপজেলা মাহালিয়া বিল ও নয়াখাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরাফাত সিদ্দিকী। একই অভিযানে সড়কের উপর দোকানের মালামাল রাখার অপরাধে স্থানীয় সরকার আইনে আরও একজনকে জরিমানা করেন তিনি।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত শর্মা।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নাছির উদ্দীন, আবছার উদ্দীন ও আনিসুল ইসলাম। এদের মধ্যে নাছির ও আবছারকে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইনে ১ হাজার টাকা করে ২ হাজার টাকা এবং আনিসুল ইসলামকে স্থানীয় সরকার আইনে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী বলেন, মাহালিয়া বিল ও নয়াখাল এলাকায় নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের অপরাধে দুজনকে জরিমানা করা হয়েছে। অভিযানে তিনটি ডিঙ্গি নৌকা ও নিষিদ্ধ জাল জব্দ করা হয়েছে।