চলারপথে রিপোর্ট :
কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তরের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন, টেকসই উন্নয়ন ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে স্থান করে দেয়ার অংশ হিসেবে “স্কিলস্ ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগাম (ঝঊওচ) এর সোশ্যাল মার্কেটিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ ২৩ আগস্ট বুধবার দুপুরে “সেন্সিটাইজেশন ওয়ার্কশপ ফর জেন্ডার মেইনস্ট্রিমিং” বিষয়ক অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এসইআইপি প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ফাতেমা রহিম ভীনা।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এসইআইপির সহকারি নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) আছমা আরা বেগম।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সোশ্যাল মার্কেটিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বর্ণমালা কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ পিপুল।
অবহিকরণ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন এসইআইপির সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মোঃ বদরুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম. কাউছার এমরান, অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা নাজমীন, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা মুজিব, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক মোঃ শাহআলম, এনজিও কর্মকর্তা এস.এম. শাহীন প্রমুখ।
অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফাতেমা রহিম ভীনা বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি নারী। বিশাল সংখ্যক নারী সমাজকে উপার্জনমূলক কাজের বাইরে রেখে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা কখনোই সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, এসইআইপি’র দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণে নারীদের জন্য কমপক্ষে ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত আছে। এসব প্রশিক্ষণে নারীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা গেলে তাদের আয়বর্ধনমূলক কাজে নিয়োজিত করার সুযোগ তৈরি হয়। তিনি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণে নারীদের অংশগ্রহণ কে উৎসাহিত করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের চমক দেখাতে পেরেছে। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানব সম্পদে গড়ে তুলতে হবে। এসইআইপি প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করছে। এসইআইপি অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এসইআইপির প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা নারী সমাজে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, সদর উপজেলার চিনাইরে টিটিসিতে এসইআইপি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাল অতিক্রম করছে। দেশে বর্তমানে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী জনসংখ্যা ৬৬ শতাংশ। বিশাল এই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তর করতে পারলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের কাতারে স্থান করে দেয়া সহজ হবে। দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আওতায় এনে সম্মানজনক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতেই ঝঊওচ কাজ করছে।
অবহিত করণ কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, নারী সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষক, এনজিও কর্মী, ধর্মীয় নেতা এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ মোট ৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্যাস ফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।
১৪ মে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর স্ত্রী নাটোর উপজেলা সদরের পাইকপাড়ার বাসিন্দা মোছাম্মদ বিলকিস খাতুন (৫০), অধ্যক্ষের ছেলে আহমেদ ওয়াজিহ ওয়াসিক (২৭) ও নাটোরের পাইপাকপাড়ার পাওনাদার অধ্যক্ষের চাচাতো ভাই রায়েজুল ইসলাম ওরফে রাজু (৫৫)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দেড় থেকে দুই বছর আগে রায়েজুলের কাছ থেকে সুদের উপর ছয় লাখ টাকা ঋণ করেন অধ্যক্ষ মোস্তাব আলী। সুদের কিস্তির টাকা নেওয়ার জন্য রায়েজুল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষের কাছে আসা-যাওয়া করতেন। সুদের কিস্তি দিতে দেরি হলে তিনি অধ্যক্ষকে মানসিকভাবে অপমান-অপদস্থ করতেন। অপরদিকে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে অধক্ষের পারিবারিক কলহ হতো। তারা বিভিন্নভাবে মানসিক চাপ দিয়ে নাজেহাল করাসহ আত্মহত্যা করার জন্য অধ্যক্ষকে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতো। স্ত্রী-সন্তানের অপমানজনক কথাবার্তায় তিনি প্রায় সময় বাসায় সকালের নাস্তা ও অনেক সময় দুপুরের খাবার খেতেন না। অধ্যক্ষ ঋণগ্রস্থ হওয়া সত্ত্বেও তার স্ত্রী-সন্তান বিলাসিতার জীবনযাপন করত। অধ্যক্ষের ছেলে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করত। টাকার জন্য প্রায় অধ্যক্ষকে চাপ সৃষ্টি করত ছেলে। প্রতিবাদ করলেই স্ত্রী-সন্তানের লাঞ্ছনার শিকার হতেন তিনি। তারা প্রায়ই অধ্যক্ষকে বিষ খেয়ে বা ফাঁসি দিয়ে মরে যেতে বলতেন। গত ১০ মে সকালে অধ্যক্ষের কর্মস্থলে পৌঁছে মুঠোফোনে সুদের টাকা চান রায়েজুল। এতে মানসিকভাবে উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েন অধ্যক্ষ। সেসময় স্ত্রী-সন্তানের অপমানজনক ও অশোভন আচরণে এবং সুদের টাকাকে কেন্দ্র করে পাওনাদারের কটুক্তিসহ অপমানজনক কথাবার্তায় লজ্জা ও ঘৃণায় অধ্যক্ষ শৌচাগারের ঝর্ণার পাইপের সঙ্গে গলায় পায়জামার রশি (নিয়ার) পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
অধ্যক্ষের ভাতিজা আসিফ বিন আলী বলেন, চাচা কলেজের অধ্যক্ষ থাকলেও পারিবারিকভাবে ভালো ছিলেন না। ঋণে জর্জরিত ছিলেন। কলেজের বেতনের সবটা দিয়ে প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতেন।
মামলার বাদী অধ্যক্ষের ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ভাই আত্মহত্যা করার মতো মানুষ ছিলেন না। তার মৃত্যুর পেছনের কারণ উদ্ঘাটন করার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ রইল। স্ত্রী-সন্তান তাকে (মোস্তাব আলী) মানসিক নির্যাতন করতেন। স্ত্রী-সন্তান ও পাওনাদার তার ভাইকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছেন।
রবিবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, অধ্যক্ষের মৃত্যুর বিষয়ে তার বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্তাধীন আছে।
জানা গেছে, গত ১০ মে সকাল ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরার ২ নম্বর লোকেশনের আবাসিক এলাকায় থেকে অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর মরদে উদ্ধার করে পুলিশ। শৌচাগারের ভেতরে গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তার বাড়ি নাটোর জেলায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধভাবে তিতাস নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে ড্রেজার ও বাল্কহেড জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বালু তোলার কাজে নিয়োজিত দুইজন ড্রেজার ও বাল্কহেড চালকসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। পরে ড্রেজার ও বাল্কহেডের দুই চালককে দুই মাস করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়। দন্ডপাওয়া দুই চালক হলেন কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার সুভারামপুর গ্রামের ইজাজুল ইসলাম ও মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের জিল্লুর রহমান।
আজ ২৭ আগস্ট রবিবার দুপুরে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের রাজকৃষ্ণপুর এলাকা থেকে এগুলো জব্দ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুলতানপুর ইউনিয়নের রাজকৃষ্ণপুর এলাকার তিতাস নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলো একটি চক্র। বিষয়টি জানতে পেয়ে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোশারফ হোসেন দুপুরে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি দুইজন ড্রেজার ও বাল্কহেড চালকসহ ছয়জনকে আটক করেন। পরে তিনি ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪(গ) ধারা লঙ্ঘন করে নদী থেকে বিপণনের উদ্দেশ্যে বালু উত্তোলন করায় এবং ড্রেজিং এর কারণে নদীর তীর ভাঙ্গনের শিকার হওয়ায় আইনের ১৫(১) ধারায় আটক দুইজন ড্রেজার ও বাল্কহেড চালককে ২ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন ও আটক চারজন শ্রমিককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন। জব্দকৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের জিম্মায় দিয়ে দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস ও সদরে মুহতামীম, দেশের শীর্ষ আলেমেদ্বীন আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ:)’র স্বরণে আজ ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বাদ আসর জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে এক আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ:) এর বর্ণাট্য জীবনীর উপর আলোচনা করেন জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আল্লামা মুফতী মুবারকুল্লাহ, শায়খুল হাদীস আল্লামা সাজিদুর রহমান, মাওলানা শামসুল হক ছাতিয়ানী, মাওলানা আখতারুজ্জামান, মুফতী শামসুল হক, মুফতী মারুফ কাসেমী, মুফতী আবু বকর, মুফতী শরীফ উদ্দিন আফতাবী, মুফতী রাকিবুল হাসান, হাফেজ মাওলানা মহিউদ্দিন মাওলানা আনোয়ার বিন মুসলিম, মাওলানা শরিফুদ্দীন, ক্বারি বোরহান উদ্দিন, মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান প্রমুখ।
বক্তাগণ বলেন, আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ:) সারাজীবন ইসলাম, মাদ্রাসা, মসজিদ সহ দ্বীনের বহুমুখী কার্যক্রম অত্যন্ত নিষ্টার সাথে পরিচালনা করে গেছেন। তিনি অত্যন্ত সাদাসিধা জীবন যাপন করে গেছেন।
আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ:) এলেমের জগতে এক কিংবদন্তী আলেম ছিলেন, তার ইন্তেকালে এলেমের জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, যা পূরণ হবার নয়। সকলের সাথেই আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমীর ছিলো হাসিমাখা অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে তিনি সবসময় অবিভাবকের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার ইন্তেকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী একজন যোগ্য অবিভাবক হারিয়েছে।
আলোচনা শেষে আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ 🙂 এর মাগফিরাত কামনায় মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট বিশেষ দোয়া করা হয়।
দোয়া মাহফিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শীর্ষ উলামায়ে কেরাম, তালিবুলইলম ও মুসল্লীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্মের পর নবজাতক বদলে ফেলার অভিযোগে চিকিৎসক ও পরিচালকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন এক পরিবার। বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরে এক আদেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক আরেফিন আহমেদ হ্যাপি মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
এরআগে, একই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকার অজান্তা আক্তার নামে এক নারী। এতে বিবাদী করা হয়েছে জেলা শহরের মৌড়াইলের খ্রিস্টান মেডিকেল সেন্টার (মিশন হাসপাতাল) এর চিকিৎসক কামরুন্নাহার ও হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক দুলাল দাসকে।
মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী মো. জাকারিয়া বলেন, জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকার ছাল ছাবিল আক্তার রিয়া নামে এক প্রসূতি গত ২ ডিসেম্বর মিশন মেডিকেল সেন্টারে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। নবজাতকটি জন্ম গ্রহণের পরই শিশুটিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিকাল ৪টার দিকে নবজাতক কন্যা সন্তানটিকে তার মায়ের কাছে হাসপাতালের স্টাফরা দিয়ে যায়। এর কিছুক্ষন পর তারা এসে বলে যে, এই কন্যা সন্তানটি আপনার না, আরেকটি কন্যা সন্তান দিয়ে বলে এটি আপনার। আবার এর কিছুক্ষন পর এসে বলে এটিও আপনার না, আরেকটি শিশু কন্যা সন্তান এনে দিয়ে বলে এটি আপনার। এভাবে তিনবার নবজাতক শিশু দিয়ে বদল করে বলে তাদের সন্তান নয়। ৪র্থবারের মাথায় শিশু তারা দেয়। এতে প্রসূতির পরিবারে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এতে ওই পরিবারের সদস্যরা ধারণা করছেন, যোগসাজসে প্রতারনা ও শঠতার আশ্রয় নিয়ে তাদেরকে আসল শিশু না দিয়ে অন্য শিশু দিয়েছে। তাই এই ঘটনায় প্রসূতির বোন অজান্তা আক্তার বাদি হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবির ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবাদী চিকিৎসক কামরুন্নাহার বলেন, ‘এই প্রসূতি আমার অধিনে চিকিৎসাধীন ছিল। নবজাতক জন্ম হওয়ার পর শিশু চিকিৎসককে দেখানো হয়। এরপর তার পরিবারের সদস্যরা কানে আজান দিয়েছে। নবজাতক বদল হওয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা নেই। আমার কাছে যেহেতু চিকিৎসাধীন ছিল, আমাকেও এমন কিছু জানায়নি, শুনেছি মামলা হয়েছে। তদন্তে সত্য উদঘাটন হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি না পেয়ে এক নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকানোর ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দিয়েছেন এক ভুক্তভোগী। অভিযোগে ডিবি পুলিশের সদস্য রেজাউল করিমসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ডিবি পুলিশের সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা আরও আটজনকে আসামি করা হয়।
আজ ১৩ মে সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ আদালতের বিচারক বেগম আফরিন আহমেদ হ্যাপীর বরাবর অভিযোগটি জমা দেন ভোক্তভোগী বন্যা বেগম।
আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগে সদর উপজেলার চান্দিয়ারা এলাকার এনামুল হক, একই এলাকার তার স্বজন সামসুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম ও ভাই মো. সাগর এবং ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিমসহ ডিবি পুলিশের সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা আরও ৮ জনকে আসামি করা হয়।
জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলে আসামি গ্রেপ্তার করতে সদর উপজেলার থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদিপ্রবাসী নূরুল আলমের বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। আসামি নুরুল ইসলামকে না পেয়ে বাড়ির নারী ও শিশুদের মারধরসহ একপর্যায়ে ডিবির সদস্য রেজাউল করিম আসামির স্ত্রী বন্যা বেগমের মাথায় পিস্তল ঠেকান বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ) মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. বিল্লাল হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ) হাবিবুল্লাহ সরকার।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় দায়ের করা মমালার বাদী এনামুল হক, তার আত্মীয় সামছুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম এবং ভাই মো. সাগর সঙ্গে পুলিশকে নিয়ে ভূক্তভোগীর বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে বাড়িতে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আসামি নুরুলের স্ত্রী বন্যা বেগম (৩৩) ও তার নয় বছর বয়সী মেয়েকে মারধর করে। এক পর্যায়ে বন্যার মাথায় বন্দুক তাক করেন। দুটি গুলিও করে ডিবি সদস্যরা।
বন্যা বেগমের আইনজীবী মো. শওকত আলী বলেন, সোমবার ভুক্তভোগী বন্যা বেগমের বাড়িতে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা, শিশুসহ কয়েকজনকে মারধর দুটি গুলি করেছেন ইত্যাদি উল্লেখ করে এজাহার আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এই এজাহারের বিষয়ে আদালতে কোনো শুনানি হয়নি।