চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা থেকে বরিশালগামী একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে বাসটির অধিকাংশ পুড়ে গেলেও যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে দিতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ। বাসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে ত্রুটির কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে বাসটির শ্রমিকরা। তবে আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ জানাতে পারেনি কেউ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল এলাহী রেস্টুরেন্ট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে বরিশালগামী বিজনেস ক্লাস বাসটিতে ১৫ থেকে ১৬ জন যাত্রী ছিল। রাত ১২টার দিকে বাসটি বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদীর কটকস্থল এলাহী রেস্টুরেন্ট এলাকা অতিক্রমকালে বিকট শব্দে পেছনের অংশে বিস্ফোরণ হয় এবং আগুন ধরে যায়। যাত্রীরা চিৎকার দিলে বাসের শ্রমিক-কর্মচারিরা বাস থামিয়ে দ্রুত দরজা খুলে দিলে যাত্রীরা নেমে যান। এ সময় আশপাশের লোকজনের সহায়তায় বাসের শ্রমিকরা আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। খবর দেয়া হয় গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে। গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় অধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের সাব স্টেশন কর্মকর্তা আকতার উদ্দিন জানান, অগ্নিকাণ্ডে বাসটির পেছনের অংশে অনেক ক্ষতি হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণে বাসে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা।
গৌরনদী হাইওয়ে থানার ওসি গোলাম রসুল মোল্লা জানান, প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীরা জানিয়েছেন বাসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দিলে বিটক শব্দে বিস্ফোরণ হয়ে বাসের পেছনের অংশে ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। পরে পুরো বাসে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। বাসে আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ তদন্ত করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ২০ এপ্রিল রাঙামাটির নানিয়ারচর বুড়িঘাটের চিংড়ি খালের ছোট দ্বীপে চির নিন্দ্রায় শায়িত থাকা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের শাহাদাৎ বার্ষিকী।
বাঙ্গালী জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের এই দিনে বুড়িঘাটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে মর্টার শেলের আঘাতে শহীদ হয়েছিলেন।
উইকিপিডিয়ার তথ্যে ৮ ই এপ্রিল থাকলেও মূলত তারিখটি হবে ২০ এপ্রিল ১৯৭১।এই দিনটি নানিয়ারচরবাসীর জন্য রক্তে ঝরা দিন।
এ মহান বীর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ২০শে এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন । ২৬মার্চ যুদ্ধ শুরু হলে সহকর্মীদের সঙ্গে তিনিও ছুটে আসেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে শত্রু বাহিনীর নৌযান একাই ধ্বংস করেন ।
বাঙালীর এই মহান যোদ্ধা ১৯৪৩ সালের পহেলা মে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার পিতা ইমাম মুন্সি মেহেদি হাসান এবং মাতা মুকিদুন্নেসার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন ।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ২নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিড বোট ও ২টি লঞ্চ রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। ৬টি লঞ্চে অস্ত্র গোলাবারুদ মজুদ ও মর্টার সজ্জিত ছিলো। পাকিস্তানী বাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান টের পাওয়া মাত্রই তাদের অবস্থানের উপর মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাদের এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
এই সুযোগে হঠাৎ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের দুই কোম্পানি সৈন্য, বেশ কয়েকটি স্পীড বোট এবং দুটি লঞ্চে করে বুড়িঘাট দখলের জন্য আক্রমন করে। মর্টার আর ভারী অস্ত্র দিয়ে চালানো আক্রমণে প্রতিহতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ। এই লড়াকু সৈনিকের একসময় পাকবাহিনীর মর্টারের গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার দেহ।
বাংলার অসীম সাহসী বীর মুন্সি আব্দুর রউফ এর দেহ পরবর্তীতে বীরমুক্তি যোদ্ধা দয়ালকৃষ্ণ চাকমা উদ্ধার করে বুড়িঘাটের চিংড়ি খাল সংলগ্ন টিলায় সমাহিত করেন।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর উদ্যোগে সমাহিত স্থানটিতে নির্মিত করেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ।
মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেন এবং বাংলাদেশ রাইফেলস ১৯৭৩ সালে সিপাহী মুন্সি আব্দুর রউফকে ল্যান্স নায়েক পদে মরোণোত্তর পদবিতে পদোন্নতি প্রদান করেন, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ তার জীবনের বিনিময়ে রক্ষা করেন সহযোদ্ধার জীবন এবং পাকিস্তানী বাহিনীর বহু সৈন্যকে প্রতিহত করেছেন।
পার্বত্য অঞ্চলের দূর্গম নানিয়ারচর বুড়িঘাটে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া এই মহান বীরকে নিয়ে নানিয়ারচরবাসী গর্ববোধ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাত্র সাড়ে ৭ টাকার ইনজেকশন প্রায় ৫০ গুণ বেশি দাম চাওয়ায় এক ফার্মেসিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আজ ২ জুলাই বুধবার দুপুরে শহরের কুমারশীল মোড় এলাকার জান্নাত ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী। এ সময় কনজ্যুমার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক এস. এম. শাহীন অভিযানে সহযোগীতা করেন। সে সাথে ০৫ আনসার ব্যাটলিয়নের একটি দল নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত দুই দিন আগে মধ্য রাতে মুফতি কামরুল হাসান নামে একজন ভোক্তা জান্নাত ফার্মেসিতে একটি ইনজেকশন ক্রয় করতে যান। গভীর রাত হওয়ার কারণে এবং পার্শ্ববর্তী অন্যান্য ফার্মেসিগুলো বন্ধ থাকার কারণে ওই ওষুধ বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের মালিক সাড়ে ৭ টাকার ইনজেকশন সাড়ে তিনশত টাকা দাম চান। ক্রেতা তখন তাকে ক্রয় রশিদ দিতে বলেন। কিন্তু দোকানদার তা দিতে রাজি হননি। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। এতে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় পাশাপাশি অন্যান্য ক্রেতারা ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কৃত্রিম সংকটকালে অতিরিক্ত দাম রাখার অভিযোগ করেন।
ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী জানান, এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। ফলে জান্নাত ফার্মেসিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদেরকে সর্তক করে দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার কারণে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ১৪ মে তারিখের রবিবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
আজ ১২ মে শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। তবে ওই দিন অন্য শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষাবোর্ড জানায়, যে ৫ বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে তা পরবর্তী নতুন তারিখ নির্ধারণ করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
শিক্ষাবোর্ড জানায়, আগামী রবিবার সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন পদার্থ বিজ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং পরীক্ষা আছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র আঘাত এবার কক্সবাজারসহ চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। পরিস্থিতি অনুযায়ী কিছু পরীক্ষাকেন্দ্র আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ। মানবজাতির শিরোমণি মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিন। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল ইসলামের শেষ নবী (সা.) আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের এ দিনে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন। দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী বা সিরাতুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করে আসছে বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায়।
একটা সময় আরবজাহান ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মানুষ হয়ে পড়েছিল বেদিন। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা।
মারামারি আর হানাহানিতে লিপ্ত ছিল মানুষ। মূর্তিপূজা করত। এ যুগকে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’। এ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে, তাদের আলোর পথ দেখাতে আল্লাহতায়ালা মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে পাঠান।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।’ এ কারণে এবং তৎকালীন আরবজাহানের বাস্তবতায় এ দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি।
পবিত্র কুরআনে তাঁর জীবনকে বলা হয়েছে ‘উসওয়াতুন হাসানাহ্’ অর্থাৎ সুন্দরতম আদর্শ।
এ দিনটি উপলক্ষে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।