ধর্মান্ধ ও জঙ্গিগোষ্ঠীর জায়গা হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গা শিবির: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয়, 26 August 2023, 624 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় সব ধরনের অপরাধ কাজ সংঘটিত হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জায়গাগুলো ধর্মান্ধতার জন্য প্রজনন স্থান হয়ে উঠেছে।

ধর্মান্ধ গোষ্ঠীগুলোর লোকবল সংগ্রহের একটি জায়গা হয়ে উঠেছে এটি।

আজ ২৬ আগস্ট শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের উদ্যোগে ‘জেনোসাইড অ্যান্ড জাস্টিস : বাংলাদেশ রেসপন্স টু দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো ধর্মান্ধতার জন্মস্থান ও জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর লোকবল সংগ্রহের জায়গা হয়ে উঠেছে। এটি একটি অনেক বড় সমস্যা। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য সমস্যা নয়, পুরো অঞ্চলের জন্য সমস্যা। এজন্য রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান জরুরি৷

তিনি আরো বলেন, আমাদের বুঝতে হবে কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী বাছাই করে কানাডা, ইউরোপ, আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া কোনো সমাধান নয়। এটি বরং সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। কারণ মিয়ানমারে শরণার্থীরা এটি জানতে পারলে তারা বাংলাদেশে আসতে উৎসাহ বোধ করে। এই সমস্যার সমাধান হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মর্যাদা, সম্মান ও পূর্ণ নাগরিক অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা তাদের দায়িত্ব এড়াতে না পারে। এরা তাদের নাগরিক, তাদের ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।

এ সময় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গারা যেই এলাকায় বসবাস করছে সেখানে নিরাপত্তা একটি বড় ইস্যু। সেই এলাকাগুলোতে নিয়মিতভাবে হত্যা, খুন, গুম, মানবপাচারসহ নানা রকমের অনৈতিক ও অবৈধ কার্যক্রম চলছে। সেখানে ১০টির মতো জঙ্গি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে৷ আমরা সেই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবিলম্বে দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কার্যকর উপায় বের করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের সভাপতিত্বে সেমিনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি জোহার ভ্যানদার ক্ল্যাও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এয়ার কমোডর (অব:) ইশফাক এলাহী চৌধুরী, মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিপিজের (গবেষণা) পরিচালক ড. এম সঞ্জীব হোসেন প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জামিলা এ চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন

জাতীয়, রাজনীতি, 24 October 2024, 66 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল ২৪ অক্টোবর বুধবার রাতে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।

গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছিল শেখ হাসিনার পতনের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর পরদিনই নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অজ্ঞাত স্থান থেকে গতকাল রাতেই বিবৃতিতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান নিষিদ্ধকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছেন।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজন ছাত্রনেতা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনটির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে।

নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শক্তি ছিল ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠন। তবে স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের অনেকের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দখলদারিত্ব, মারামারি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মাদক বাণিজ্য, বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচিতে হামলা, দমনপীড়ন, অস্ত্রবাজির মতো অপরাধের শত শত অভিযোগ ওঠে।

এই সময়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অন্তত অর্ধশত প্রাণহানি ঘটেছে। ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ দাস এবং ২০১৯ সালে আবরার হত্যায় সংগঠনটি ধিকৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘গেস্ট রুম’ নামে নিপীড়নের কুখ্যাতিও রয়েছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগ ছিল দমনকারীর ভূমিকায়। গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুরুর পর শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মারমুখী ছিল। গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের নজিরবিহীন মারধর করে, যা থেকে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিনেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর অভ্যুত্থান দমনে অস্ত্র হাতে রাজপথে দেখা যায়। অভ্যুত্থানের সময় এবং শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র পাওয়া যায়। মধ্য জুলাই থেকেই অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগকে বের করে দিয়েছে অভ্যুত্থানকারীরা। ৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।

প্রজ্ঞাপনেও ছাত্রলীগকে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে হত্যা, নির্যাতন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল ছাত্রলীগ। এসবের প্রমাণ দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীর অপরাধ আদালতেও প্রমাণ হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও জনগণের ওপর আক্রমণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী; অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক, উস্কানিমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। সরকারের কাছে এসব কর্মকাণ্ডের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন নামাঙ্কিত রাজনৈতিক শাখা-২-এর জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা ১৮-এর উপধারা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।

আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী, নি‌ষিদ্ধের সিদ্ধান্ত পুন‌র্বিবেচনার আবেদনে ৩০ দিন সময় পা‌বে ছাত্রলীগ। আবেদন কর‌লে সরকার তা ৯০ দি‌নের ম‌ধ্যে নিষ্প‌ত্তি কর‌বে। নি‌ষি‌দ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাক‌লে ৩০ দি‌নের ম‌ধ্যে হাইকোর্টে আ‌পিলের সু‌যোগ পা‌বে।

সন্ত্রাসবি‌রোধী আইনের ২০ ধারায় উল্লেখ করা হ‌য়ে‌ছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সত্তার কার্যালয় বন্ধ করবে সরকার। ব্যাংক হিসাব বা অন্য সম্পদ জব্দ হবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা দেশ ত্যাগ করতে পারবে না। সংগঠনের পক্ষে বা সমর্থনে বিবৃতি, বিজ্ঞপ্তি, প্রকাশনা, প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসমক্ষে বক্তৃতা নিষিদ্ধ হবে।

গত ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একই আইনে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। তাদের আবেদনে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৮ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধে বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিলের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নুসরাত তাবাসসুম বলেন, জীবনের অন্যতম আনন্দের দিন আজ। ছাত্রলীগ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ ছিল না। এই ছাত্রলীগ ১৫ জুলাই আমাদের ওপর হামলা করেছে। সারাদেশে তারা অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে শহীদ করেছে। সরকারকে ধন্যবাদ জানাই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায়। আর কোনো ছাত্র সংগঠন যেন এমন সন্ত্রাসী না হয়।

সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, যারা কথায় কথায় আন্দোলনে জঙ্গিবাদ খুঁজত, তাদেরকেই জঙ্গি ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের গর্ত থেকে বের করে ধোলাই দিতে হবে।

আশরিফা খাতুন বলেন, আবু সাঈদের মৃত্যুর পর ছাত্রলীগ রাজাকার দমন হয়েছে বলে উল্লাস করেছিল। যখনই কোনো ন্যায্য দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়েছি, ছাত্রলীগ মেরেছে। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য গেলে, সেখানেও মারত। কোনোভাবেই ছাত্রলীগ যেন ফিরতে না পারে।

অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে না বললেও উচ্ছ্বাস দেখায়নি। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ছাত্রলীগ খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, গণহত্যাসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। সব জঙ্গি সংগঠন মিলে যত মানুষ খুন করেছে; ছাত্রলীগ এককভাবে বেশি করেছে। ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছে এবং শহীদ হয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে ছাত্র রাজনীতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। সুস্থ রাজনীতিচর্চার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। তবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধই সমাধান নয়। সংগঠনটির যারা সন্ত্রাস করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছে ছাত্রলীগ। সন্ত্রাস, নিপীড়ন, নির্যাতনের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে চায় না। ছাত্রলীগের অপরাধীদের বিচার চায়।

ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, ছাত্রলীগের নিষিদ্ধকে সাধুবাদ জানাই। নিষিদ্ধ হলেই অপতৎপরতা বন্ধ হবে না। অপরাপর সংগঠনের সঙ্গে আলাপে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন ছিল। ছাত্রলীগের তৎপরতা বন্ধে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বোস বলেন, নির্বাহী আদেশে কয়েক দিন আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ক্ষমতার পরিবর্তনে তা বদলেও গেছে। একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা কতখানি ফলপ্রসূ হবে, জানি না। নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে কতটুকু নিঃশেষ করা যাবে, জানি না। ছাত্রলীগকে মোকাবিলা করতে হবে আদর্শের জায়গায় এবং মাঠের রাজনীতিতে। রাজনৈতিকভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডে দুই জনের মৃত্যু

জাতীয়, 30 July 2023, 708 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বসতঘরে আগুন লেগে নারী-পুরুষ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ ৩০ জুলাই রবিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ইমরান হোসেন (২৬) ও নাছরিন আক্তার (২৩)। সম্পর্কে তারা ভাবি ও দেবর বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৌলতলী এলাকার কাজিরপাড়া গ্রামে নূর ইসলামের বসতঘরে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

মুন্সিগঞ্জ লৌহজং উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আব্দুল মতিন জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে বিচ্ছিন্ন এলাকায় রাস্তা না থাকায় নৌকাযোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়েছে। প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় দু’টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণ করে সেখান থেকে দুই জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নারী অপরজন পুরুষ।

বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বসতঘরে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ঘটনাস্থলটি স্বাভাবিক লোকালয় থেকে একটু দূরে এবং বর্ষার পানির কারণে বিচ্ছিন্ন বলে জানান স্থানীয়রা।

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশ, পাস ৯৩৩৭

জাতীয়, 20 December 2023, 519 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রথম পর্বের (বরিশাল, সিলেট, রংপুর বিভাগ) লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় ৯ হাজার ৩৩৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.mopme.gov.bd এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট www.dpe.gov.bd -তে ফলাফল পাওয়া যাবে। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনেও মেসেজ পাবেন।

মৌখিক পরীক্ষার তারিখ পরবর্তীতে জানানো হবে। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি এ পরীক্ষা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

গত ৮ ডিসেম্বর রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন।

এদিকে, অনিয়ম-জালিয়াতি এবং হরতাল-অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ায় ১ লাখ ৫৮ হাজার প্রার্থী অনুপস্থিত দাবি করে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কিছু প্রার্থী। তারা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিও করেছেন।

পাশাপাশি ৫৪ জন প্রার্থীর পক্ষে ফাতেমা আক্তার নামে একজন প্রার্থী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন। এ রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফল প্রকাশ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে দুই মন্ত্রণালয়সহ ১৩ অধিদপ্তর-দপ্তরে নোটিশও পাঠিয়েছেন। তবে নিয়োগ সংশ্লিষ্টরা এ নোটিশ পাননি বলে জানিয়েছেন।

ভয়াল কালরাত আজ

জাতীয়, 24 March 2024, 318 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চের কালরাত। ১৯৭১ সালের এ রাতেই বাংলার বুকে নেমে এসেছিল মৃত্যুর ঘনতমসা। পৃথিবীর ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের একটি ঘটেছিল আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমিতে।

রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হিংস্র হায়েনার মতো বর্বর শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরীহ-নিরস্ত্র স্বাধীনতাকামী বাঙালি জনগণের ওপর। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্ণ সামরিক সম্ভার নিয়ে রাত ১০টার পর সারা দেশে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসলীলা শুরু করে তারা।

সামরিক ভাষায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পরিচিত ছিল পাক-হানাদারদের এ হত্যা-অভিযান। শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ এড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বাঙালি হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নের পথেই এগিয়েছিল। অত্যাচার, উৎপীড়ন, পাশবিকতা, নৃশংসতা আর হিংস্রতার কালো থাবায় বিভীষিকা ছড়িয়ে দিয়েছিল পুরো ঢাকা শহরে।

বর্বর হত্যাযজ্ঞের এ দিনটি ‘গণহত্যা দিবস’ হিসাবে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে। কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত হামলার সেই নৃশংস ঘটনার স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। দিনটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বর্বরোচিত হামলায় বিশ্ববাসী হতবাক হয়ে দেখেছিল উন্মত্ত পাক বাহিনীর গণহত্যাকাণ্ড। মধ্যযুগীয় কায়দায় হানাদাররা রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা ঢাকা শহরে চালায় হত্যাযজ্ঞ, করে অগ্নিসংযোগ। এই রাতেই গ্রেফতার করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি দেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। ২৫ মার্চের কালরাতের বেদনাদায়ক ঘটনা সমগ্র জাতিকে শিহরিত করে। নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে পাখির মতো গুলি চালিয়ে হত্যা করে সেদিন মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যায়নি। ভয়াবহ সেই কালরাতের হত্যাযজ্ঞ বাঙালিকে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রেরণা জোগায়।

প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের এই দিন সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে সরাসরি এয়ারপোর্ট চলে যান। রাত পৌনে ৮টায় তিনি গোপনে বিমানে ঢাকা ত্যাগ করেন নিরপরাধ বাঙালির ওপর কাপুরুষোচিত সশস্ত্র হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে। পাক হানাদার বাহিনী জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে জল্লাদের মতো বাংলার নিরপরাধ জনগণের ওপর মেশিনগান, মর্টার আর ট্যাংক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে।

রাত ১টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২২তম বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা পিলখানা ইপিআর হেডকোয়ার্টারে আক্রমণ চালায়। কেন্দ্রীয় কোয়ার্টারে ১৮ জন বাঙালি গার্ড থাকলেও তারা পালটা আক্রমণের সুযোগ পাননি। পিলখানা আক্রমণের পাশাপাশি রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাঁখারী বাজারসহ ঢাকাজুড়েই শুরু হয় প্রচণ্ড আক্রমণ। বিভিন্ন এলাকাতে হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগ করে চলে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী।

মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকে ট্যাংক, সঙ্গে সেনা বোঝাই লরি। ইকবাল হল (বর্তমানে জহুরুল হক হল), জগন্নাথ হলে মধ্যযুগীয় কায়দায় চলে পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতা। শহিদ হন কয়েকশ ছাত্রছাত্রী। ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের নয়জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।

হানাদাররা চলার পথে রাস্তার দুই পাশে গুলি ছুড়ে মেরে ফেলে অসংখ্য নিরীহ, গরিব মানুষকে। মেডিকেল কলেজ ও ছাত্রাবাসে গোলার পর গোলা ছুড়ে হত্যা করা হয় অজস্র মানুষকে। রাজারবাগে পুলিশের বাঙালি সদস্যরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাদের সামান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই। ট্যাংক আর ভারী মেশিনগানের মুখে এ প্রতিরোধ বেশিক্ষক্ষণ টেকেনি। গ্যাসোলিন ছিটিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুরো সদর দপ্তর।

২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গোপন ওয়্যারলেস বার্তায় তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। ছাত্র-জনতা-পুলিশ-ইপিআর শত্রুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়েছে। আমি ঘোষণা করছি আজ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। সর্বস্তরের নাগরিকদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা যে যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন, যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। সম্মিলিতভাবে শত্রুর মোকাবিলা করুন। এই হয়তো আপনাদের প্রতি আমার শেষ বাণী হতে পারে। আপনারা শেষ শত্রুটি দেশ থেকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যান।’

এর আগে সকালে প্রেসিডেন্ট ভবনে ভুট্টো-ইয়াহিয়া এবং ইয়াহিয়া ও পিপলস পার্টির উপদেষ্টাদের মধ্যে আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর কাছে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ঢাকা ত্যাগের খবর সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছে ছিল। রাত ৯টার পর বঙ্গবন্ধু তার বাসভবনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছেন। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট অখণ্ড পাকিস্তানের সমাপ্তি টানতে চলেছেন।

পিলখানায় ইপিআর ব্যারাক ও অন্যান্য স্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার লিখিত বাণী ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে মেসেজ আকারে পাঠানো হয়। এ বার্তা চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দপ্তরে পৌঁছায়। চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙর করা একটি বিদেশি জাহাজও এ বার্তা গ্রহণ করে। চট্টগামে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী সাইক্লোস্টাইল করে রাতেই শহরবাসীর মধ্যে বিলির ব্যবস্থা করেন। রাত ১টায় পাকিস্তানি বাহিনীর একটি দল বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের অদূরে শুক্রাবাদে ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। এখানে প্রতিরোধ ব্যুহ ভেঙে হানাদাররা রাত দেড়টায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে আসে। হানাদার বাহিনী এলাপাতাড়ি গুলি চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে প্রবেশ করে। বঙ্গবন্ধুকে রাত দেড়টায় তার বাসভবন থেকে বন্দি করে শেরেবাংলা নগরের সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুকে সেনানিবাসে স্থানান্তর করা হয়। সকাল পর্যন্ত আদমজী কলেজের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুকে আটক রাখা হয়।

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের রাতে ১ মিনিট ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি ঘোষণা করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। রাত ১১টা থেকে ১১টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হবে। অন্ধকারে থাকবে দেশ।

শ্বাসনালিতে মারবেল আটকে শিশুর মৃত্যু

জাতীয়, 31 May 2023, 863 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শ্বাসনালিতে মারবেল আটকে মো. জাবের (৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১ টার দিকে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত জাবের ওই গ্রামের মো.মাসুদ মিয়ার ছেলে। বাড়ির সবার অগোচরে মারবেল নিয়ে খেলার একপর্যায়ে সেটি মুখে নিলে গলায় ভেতরে গিয়ে শ্বাসনালিতে আটকে যায়। তাৎক্ষণিক শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।