অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিঠি লেখা মার্কিন কংগ্রেসের ছয় সদস্যকে পাল্টা চিঠি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশন’। সেখানে কংগ্রেসম্যানদের চিঠির তথ্যকে অসত্য বলে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চিঠির তথ্যের সত্যতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কংগ্রেসের যে ছয় সদস্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন ব্যারি মুর, টিম বার্চেট, ওয়ারেন ডেভিডসন, বব গুড, স্কট পেরি ও কিথ সেলফ।
গত ২৬ আগস্ট ওই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসরত ২৬৭ জন বাংলাদেশি-আমেরিকান স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, মার্কিন সরকারি উচ্চপদে কর্মরত বাংলাদেশি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণরা।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাইডেন প্রশাসনের কাছে লেখা চিঠিতে নিজের জন্মভূমি সম্পর্কে মিথ্যা ও অসম্পূর্ণ তথ্য লেখা হয়েছে।
এতে গর্বিত বাংলাদেশি হিসেবে তাদের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।
চিঠিতে জানানো হয়, গত এক দশকে বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী-পুরুষের সম-অধিকার, নারী উন্নয়ন প্রগতি, ধর্মীয় সহিষ্ণুতাকে বিবেচনা না করে খুবই সংকীর্ণ আর একচোখাভাবে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছে।
কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশনের সদস্যরা চিঠিতে মনে করিয়ে দেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীসহ বাংলাদেশবিরোধী দলগুলো বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে লবিস্ট ফার্ম দিয়ে এসব অপপ্রচার চালিয়ে থাকে। চিঠিতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশি খ্রিস্টান কমিউনিটি প্রধানের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে সবাই সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের শন্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা এবং অর্জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের হয়ে শান্তিরক্ষা করতে গিয়ে বিদ্রোহীদের হাতে নিহতদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনার কারণে এত বিশাল অবদান আর আত্মত্যাগ কি অস্বীকার করবে জাতিসংঘ? জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের উজ্জ্বল অংশগ্রহণকে নিষিদ্ধ করা কোনোভাবেই নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বমানবতা রক্ষায় ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেয়। এত বিশাল সংখ্যক উদ্বাস্তু পৃথিবীর আর কোনো দেশ একসঙ্গে আশ্রয় দেয়নি উল্লেখ করে মানবতা রক্ষায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও প্রধানমন্ত্রীর অবদান তুলে ধরা হয়। শেখ হাসিনা নিজ দেশের স্বার্থের কথা না ভেবে এত বিশাল সংখ্যক অসহায় উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়ে জাতিসংঘ থেকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃত হন।
গণতন্ত্র নস্যাতের অভিযোগের জবাবে বাংলাদেশি আমেরিকানদের সংগঠন অতীতের গণতন্ত্র ধ্বংসকারী বিএনপি-জামায়েত-শিবিরের সন্ত্রাস ও একনায়কতান্ত্রিক শাসনের কথা উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, আমেরিকান হিসেবে তারা ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করছে, কিন্তু তার পরও আমেরিকা গণতন্ত্র ব্যবস্থা, মানবিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সে তুলনায় ৫২ বছর বয়সী বাংলাদেশের চেষ্টাটি প্রশংসার দাবি রাখে কি না, সেই প্রশ্ন রাখা হয়েছে চিঠিতে।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং মানবতা উন্নয়নের চারটি দিক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই দুর্নীতি দমনে কার্যকর ও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের নানা পর্যায়ে দুর্নীতি কমে আসছে ক্রমান্বয়ে। দীর্ঘ সময় অবৈধ সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি ও অন্যান্য স্বৈরশাসকের আমলে দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে বিস্তার লাভ করেছিল যে রাতারাতি তা নির্মূল করা সম্ভব নয়।
দ্বিতীয়ত, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ সামরিক শাসকদের দুঃশাসন ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত বাংলাদেশ ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসে। ইতিহাস থেকে আমরা জানি, দীর্ঘদিন সামরিক শাসিত একটি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কোনো সহজ কাজ নয়। তার পরও বর্তমান সরকার চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক মানের গণতান্ত্রিক ভাবধারায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে।
তৃতীয়ত, রাষ্ট্রীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক বিরোধী মতকে দমন-নিপীড়ন ও হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ও সামরিক শাসকদের আমল থেকে। সেখান থেকে বাংলাদেশকে আইনের শাসনে ফিরিয়ে এনে সন্ত্রাস-মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ দেখিয়ে বাংলাদেশ সুশাসনের ধারায় ফিরছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
চতুর্থত, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং একই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মার্কিন বন্ধুদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে আবার যদি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সরকার গঠিত হয়, তাহলে এ অঞ্চলে মৌলবাদের বিস্তার লাভ করবে আগের মতো। যা প্রতিবেশী দেশ ভারতের জন্যও হুমকিস্বরূপ। ২০০১-০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকারের ছত্রচ্ছায়াতেই এ অঞ্চলে ইসলামী জিহাদি আর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যে।
অনলাইন ডেস্ক :
ওয়াশিংটনের পুলিশ প্রধান স্মিথ একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারী শিকাগোর বাসিন্দা। তার বয়স ৩০ বছর। নাম ইলিয়াস রদ্রিগেজ। জাদুঘরের বাইরে তাকে পায়চারি করতে দেখা গিয়েছিল। এরপর সে চারজনের একটি দলের উপর গুলি চালায়। এতে ওই যুগল নিহত হন।
গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন, ডিসির ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরে গুলি চালানোর ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ইলিয়াস রদ্রিগেজকে শনাক্ত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে তার বয়স ৩০ বছর এবং সে শিকাগোর বাসিন্দা। পুলিশ আরো নিশ্চিত করেছে যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে তার পূর্বে কোনও যোগাযোগ ছিল না। ইহুদি জাদুঘরের একটি অনুষ্ঠানের বাইরে গুলি চালানোর ঘটনায় ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত হওয়ার পর এই ঘটনা ঘটল।
ঘটনার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, কর্মকর্তারা জানান যে তারা এখনও ঘটনার তদন্ত করছেন। ঘটনাস্থলে একটি অস্ত্র পাওয়া গেছে। ওয়াশিংটন পুলিশ প্রধান পামেলা স্মিথ বলেন, আটকের আগে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জাদুঘরের বাইরে ঘুরতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রি প্যালেস্টাইন স্লোগান দিয়েছিলেন।
ওয়াশিংটন ডিসির ডাউনটাউনে একটি ইহুদি জাদুঘরের বাইরে গুলিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী “ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন” বলে চিৎকার করেছে। এই ঘটনাটি বিবিসি সূত্রে জানা গেছে।
নিহতরা একটি তরুণ যুগল, যারা ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরে একটি অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন বলে ডিসি পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ আরো বলেছে এ ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে।
গতকাল রাত ৯টা ০৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) এই গুলির ঘটনা ঘটে। এই এলাকাটি অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র, জাদুঘর এবং সরকারি ভবন, যার মধ্যে এফবিআই-এর ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিসও রয়েছে, দ্বারা বেষ্টিত।
মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের প্রধান পামেলা স্মিথ বলেছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি গুলি চালানোর পর জাদুঘরের ভেতরে প্রবেশ করে এবং নিরাপত্তারক্ষীদের দ্বারা আটক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ইয়েচিয়েল লিটার সম্মেলনে জানিয়েছেন যে, নিহত যুগল বিয়ের পরিকল্পনা করছিলেন। লিটার বলেন, পুরুষ ভুক্তভোগী এই সপ্তাহে একটি আংটি কিনেছিলেন এবং জেরুজালেমে তাদের পরিকল্পিত ভ্রমণে প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। নিহতদের নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান ক্রিস্টি নোয়েম এক্স-এ পোস্ট করেছেন, “আজ রাতে ওয়াশিংটন ডিসির ইহুদি জাদুঘরের কাছে দুই ইসরায়েলি দূতাবাস কর্মী নির্বোধভাবে নিহত হয়েছেন। দয়া করে ভুক্তভোগীদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করুন। আমরা এই অধম অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনব।”
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এ ঘটনাকে “সেমিটিক-বিরোধী সন্ত্রাসের একটি জঘন্য কাজ” বলে অভিহিত করেছেন। রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন এক্স-এ লিখেছেন, “কূটনীতিক এবং ইহুদি সম্প্রদায়কে আঘাত করা একটি লাল রেখা অতিক্রম করা। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এই অপরাধমূলক কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।”
এই ঘটনার কারণে ব্যাপক পুলিশি প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে এবং শহরের বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি দূতাবাসের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে, জাদুঘরের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় দুই কর্মীকে কাছ থেকে”গুলি করা হয়েছে। মুখপাত্র তাল নাইম কোহেন বলেছেন, “আমরা স্থানীয় এবং ফেডারেল উভয় স্তরের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখি যে তারা হামলাকারীকে আটক করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ইসরায়েলের প্রতিনিধি এবং ইহুদি সম্প্রদায়কে রক্ষা করবে।
মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, হামলার সময় ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জাদুঘরের অনুষ্ঠানে ছিলেন না। সিবিএস জানিয়েছে, জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ডিসি ক্যাম্পাসও সাময়িকভাবে লকডাউন করা হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ-এ পোস্ট করে “ভয়াবহ ডিসি হত্যাকাণ্ড, যা স্পষ্টতই সেমিটিজম-ভিত্তিক” শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তার পোস্টে বলা হয়েছে, “ঘৃণা ও উগ্রবাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো স্থান নেই। ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা। এমন ঘটনা ঘটতে পারে দেখে খুবই দুঃখিত! ঈশ্বর আপনাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন!”
অনলাইন ডেস্ক :
চীনের তিব্বতের প্রত্যন্ত এলাকায় এক ভূমিকম্পে অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পে বহু ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। সূত্র : আল জাজিরা
চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টার (সিইএনসি) বলেছে, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে ওই ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল ছিল নেপাল সীমান্তের কাছে তিব্বতের ডিংরি কাউন্টি।
সিইএনসি ভূমিকম্পের মাত্রা ৬ দশমিক ৮ বললেও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ১ ছিল বলে জানিয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি বলেছে, ডিংরি কাউন্টি ও এর আশপাশের এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পন অনুভূত হয়েছে এবং ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থলের (এপিসেন্টার) কাছের বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। আঞ্চলিক দুর্যোগ ত্রাণ সদর দপ্তরের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, ৫৩ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ৬২ জন।
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে বিহার, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানেও এই ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়।
নেপাল ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষে হিমালয় পর্বতমালা গঠিত হয়েছে। এ কারণে এ অঞ্চলে প্রায়ই ভূমিকম্প ঘটে। ২০১৫ সালে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ প্রাণ হারান এবং ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হন। ওই ভূমিকম্পে অর্ধ-লক্ষাধিক বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির (এনসিএস) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। প্রথম ভূমিকম্পের পরপরই ওই অঞ্চলে আরো দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির চেতনা জাগ্রত রাখতে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্রিসবেন (ব্যাব) ও ব্রিসবেন বাংলা স্কুল ও ব্রিসবেন এথনিক স্কুল এসোসিয়েশন এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং হারমোনি ডে উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় রোবেলা ডোমাইন ইপসুইচে কুইন্সল্যান্ডেরর প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনারে কুইন্সল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া বিএনপির নেতা সাইদ চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এসময় ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সিনেটর পাউল স্কার ও বাংলাদেশি কমিউনিটি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধগণ।
নেতৃবৃন্দ জানান, প্রবাসে এই ধরনের আয়োজন একুশের চেতনার পুনর্জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করবে।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে থাকা ফরাসি নাগরিক এবং সে দেশের যেসব নাগরিক এ দেশে আসতে চান, তাদের সতর্ক করে দিয়েছে ঢাকার ফ্রান্স দূতাবাস। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে যাতে নতুন করে আর সহিংসতা না ছড়ায়, সে জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
আজ ২৮ জুলাই রবিবার ঢাকার ফ্রান্স দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় বলেছে, ‘সবাইকে শান্ত, সংযমী থাকার আহ্বান জানাই। সেই সঙ্গে নতুন করে যাতে সংঘাত না ঘটে, এর জন্য সংলাপের আহ্বান জানাই।’
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশে ফ্রান্সের যেসব নাগরিক থাকেন, তাদের এবং যেসব নাগরিক বাংলাদেশ ভ্রমণে ইচ্ছুক, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে।’
অনলাইন ডেস্ক :
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি ভয়াবহ গণহত্যার শিকার গাজা উপত্যকা ‘খালি’ করার ব্যাপারে যে প্রস্তাব দিয়েছেন, আরব বিশ্বজুড়ে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত বিশেষ বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে দাবি করেন, গাজা সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এবং এটি পরিষ্কার করার জন্য সেখানকার অধিবাসীদের সরিয়ে দেয়া উচিৎ। তিনি গাজাবাসী ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী দেশ মিশর ও জর্দানে স্থানান্তর করার প্রস্তাব দেন।
পার্স টুডের খবরে বলা হয়েছে, গাজাবাসী গত ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া সত্ত্বেও তাদের ভূমি ত্যাগ করতে রাজি হয়নি এখন সেই গাজাবাসীকে তাদের উপত্যকা পরিষ্কার করার অজুহাতে গাজা থেকে বিতাড়ন করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প যা ভালোভাবে নেয়নি ফিলিস্তিনি জনগণ।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে অবস্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে ‘গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যে যেকোনো প্রকল্পের’ তীব্র প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি জনগণ ‘তাদের ভূমি এবং পবিত্র স্থান ত্যাগ করবে না।’
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি চান জর্ডান এবং মিশর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে যাক। যুক্তরাষ্ট্র ‘পুরো এলাকাটি পরিষ্কার করবে।’
জর্ডান এবং মিশর ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, “আমরা ১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালে আমাদের জনগণের ওপর যে বিপর্যয় নেমেছিল তার পুনরাবৃত্তি হতে দেব না।”
গাজার বাসিন্দারা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বক্তব্য ‘নাকবা’ নামক ফিলিস্তিনের আধুনিক ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যখন ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কয়েক মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক তাদের পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
মাহমুদ আব্বাস ‘পূর্ব জেরুজালেমসহ গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমির ঐক্যকে ক্ষুণ্ন করে এমন যেকোনো নীতি’ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি ট্রাম্পকে ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া গাজা জিম্মি-যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সমর্থন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও বলেছেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের শাসনভার গ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার ফলে ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধে এখন যুদ্ধবিরতি চলছে। এসময়ে গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তরে ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রতি গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম এএফপিকে বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা গত কয়েক দশক ধরে যেভাবে তাদের জন্য কথিত বিকল্প ভূমিতে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে তেমনি তাদেরকে বলপূর্বক গাজা ত্যাগ করতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হলেও তারা তা প্রতিহত করবে।
গাজার আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ এক বিবৃতিতে গাজাবাসীকে সরিয়ে নেয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এ ধরনের পরিকল্পনার ফলে গাজাবাসীর ওপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালাতে ইসরায়েল দ্বিগুণ উৎসাহিত হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ১৫ মাস যুদ্ধের পর গাজা একটি ‘ধ্বংসস্তুপ’ হয়ে উঠেছে। তিনি আরো যোগ করেছেন যে, তিনি জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের এই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির প্রতি আমাদের প্রত্যাখ্যান দৃঢ় এবং পরিবর্তন হবে না। জর্ডান জর্ডানবাসীর পক্ষে এবং ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদের জন্য।
মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে ‘ফিলিস্তিনি ভূমিতে ফিলিস্তিনি জনগণের দৃঢ়তার প্রতি অব্যাহত সমর্থন’ প্রকাশ করেছে। দেশটি বলেছে, ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে স্থানচ্যুতিকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে মিসর। সেটা স্বল্পমেয়াদে হোক, কিংবা দীর্ঘমেয়াদে।
মিশর এর আগে গাজা থেকে সিনাই মরুভূমিতে ফিলিস্তিনিদের ‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির’ ইসরায়েলি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। মিশরের প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেছিলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তিকে ভেস্তে দিতে পারে।
জাতিসংঘের মতে, জর্ডান ইতিমধ্যেই প্রায় ২৩ লাখ নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি শরণার্থীর আবাসস্থল। এই পরিবারগুলোকে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল সৃষ্টির পর বহিষ্কার করা হয়েছিলো।