জিমে গোপন ভিডিওর প্রতিবাদ করায় মারধর, ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 31 August 2023, 1026 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিম) গোপনে আপত্তিকর ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় এক গৃহবধূসহ দুইজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩০ আগস্ট বুধবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস ক্লাব নামে একটি জিমে এ ঘটনা ঘটে।

banner

ঘটনার পর ৯৯৯-এ কল করলে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, ফিটনেস ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইমকে আটক করা হয়।

এ ঘটনা রাতে ওই গৃহবধূর ভাসুর মাসুদুর রহমান (সোহাগ) বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পর ওই তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।

মামলার এজাহার ও আহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ ও তার বোন শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস সেন্টারে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। সেখানে মেয়েদের ব্যায়াম করার আলাদা ব্যবস্থা ও পুরুষ যাওয়ার অনুমতি না থাকায় তারা ভর্তি হয়েছিলেন। জিমের ট্রেইনার মিতু আক্তারের আচরণে গোপন ভিডিও ধারণ করার বিষয়ে তাদের সন্দেহ হয়।

দুইদিন আগে তারা নিশ্চিত হন ট্রেইনার মিতু গোপনে তাদের ভিডিও ধারণ করেছেন। বুধবার বিকেলে মিতুকে ভিডিও করার কথা জিজ্ঞাসা করলে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এরই জেরে ট্রেইনার মিতু বিষয়টি জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লবকে জানান। খবর পেয়ে বিপ্লব মিতুকে নিয়ে তাদের দুই বোনের কাছে যান। সেখানে মিতু ওই গৃহবধূর চুলের মুঠি ধরে মারধর শুরু করেন।

একপর্যায়ে জিমে থাকায় শহরের উত্তর পৈরতলার সোহেল মিয়া নামে এক যুবক তাদের বাঁচাতে আসলে বিপ্লবসহ তার সহযোগীরা তাদের লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে আটকে রাখেন। এ অবস্থায় তাদের পরিবারের লোকজন আসলে জিমের ভেতরে ঢুকতে পারেননি। আশপাশের সড়কে উৎসুক মানুষ জমায়েত হয়ে ভিডিও করে ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন।

শেষে একজন ৯৯৯-এ কল দিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানা পুলিশ এসে তারা ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করেন। এসময় জিমের পরিচালক হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। গুরুতর আহত হওয়ায় ওই গৃহবধূ ও সহায়তা করতে আসা সোহেলকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, জিমের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৮/৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার তিন আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

বেশি দামে টিকিট বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লেন রেলকর্মী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 15 April 2023, 1618 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ছদ্মবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাটতে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম শেখ। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন। তাদের কাছে ট্রেনের ৬০ টাকার টিকিটের দাম ১০০ টাকা চান কাউন্টার সেলসম্যান সালাউদ্দিন। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

banner

একই সময় রেলওয়ে নিরাপত্তারক্ষী (আরএনবি) বিপ্লব চন্দ্র দাসও কাউন্টারে বসে টিকিট বিক্রি করছিলেন। তার কাছেও প্রশাসনের কর্মকর্তারা টিকিট কিনতে যান। দাম-দর করার পর টিকিট দেওয়ার সময় আঁচ করতে পারেন ম্যাজিস্ট্রেটের হানা। দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন বিপ্লব কিন্তু রক্ষা হয়নি। তাকে আনসার সদস্যরা আটক করেন। একইভাবে আয়েশা বেগম ও আরাফাত নামে আরও দুই টিকিট কালোবাজারিকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়।

আজ ১৫ এপ্রিল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে চালানো ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিম শেখ। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারির বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচিত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ ইউএনওর নেতৃত্বে পরিচয় গোপন রেখে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়।

তিনি আরও বলেন, ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে কাউন্টারের এক টিকিট সেলসম্যান এবং রেলওয়ের নিরাপত্তা রক্ষীকে হাতেনাতে ধরা হয়। পরে টিকিট সেলসম্যান সালাউদ্দিনকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আরএনবি সদস্য বিপ্লব চন্দ্র দাসকে রেলওয়ে আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া দুই টিকিট কালোবাজারি আয়েশা ও আরাফাতকে চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পণ্য নিয়ে মোংলায় রাশিয়ান জাহাজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 3 October 2023, 980 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
পাবনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২ হাজার ১২১ মেট্রিক টন মেশিনারি পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি ইয়ামাল অরলান’। রাশিয়ার এ জাহাজটি মঙ্গলবার দুপুরে মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নোঙর করে। বিকালে জাহাজ থেকে এসব মেশিনারি পণ্য জেটিতে খালাসের কাজ শুরু হয়েছে।

banner

রাশিয়ার এমভি ইয়ামাল অরলান জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট অসীম কুমার সাহা জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬৮ প্যাকেজে থাকা ২ হাজার ১২১ মেট্রিক টন মেশিনারি পণ্য নিয়ে গত ৩১ আগস্ট রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বন্দর থেকে মোংলার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ইয়ামাল অরলাম জাহাজটি। জাহাজটি মঙ্গলবার দুপুর ১টায় মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে। বিকালে জাহাজ থেকে এসব মেশিনারি পণ্য জেটিতে খালাসের কাজও শুরু হয়েছে। খালাস করা এসব মেশিনারি পণ্যের অধিকাংশই সড়ক পথে আর ভারী কিছু মালামাল নদী পথে দ্রুত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নেওয়া হবে।

এর আগে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিনারি পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরে এসেছিল এমভি স্যাপোডিলা একটি জাহাজ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, রাজনীতি, 19 September 2024, 574 Views,

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

banner

আজ ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শহরের কাউতলী মোড় থেকে জেলা জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, চট্টগ্রাম বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক এড. রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান তারেক এ আদেল, জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য নাছির আহমেদ খান, যুগ্ম আহবায়ক শেখ মাহবুবুর রহমান, শেখ মোঃ ইয়াছিন, সদর উপজেলা জাতীয় পাার্টির সভাপতি জেনহারুল ইসলাম লিটন, পৌর জাতীয় পার্টির আহবায়ক মোঃ আনিছ খান, জেলা জাতীয় ওলামা পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাওঃ সিরাজ আকরাম, জেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জোটন প্রমুখ।-প্রেস বিজ্ঞিপ্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রশাসকের নিকট ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৯ দফা দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 17 September 2024, 449 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নেতৃবৃন্দ আজ ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিনের নিকট সৌজন্য সাক্ষাৎপূর্বক ৯ দফা দাবি পেশ করেন।

banner

এ সময় তিনি আন্তরিকভাবে দাবিগুলো সমর্থন করেন এবং বাস্তবায়নের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব পেশ করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারি আলহাজ্ব মাওলানা গাজী নিয়াজুল করিম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি শেখ মুহাম্মদ শাহ আলম, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি ইহতেশাম বিল্লাহ আজিজী, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদুল্লাহ, আন্দোলনের জেলা শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ আসাদুল করিম প্রমুখ। দাবিগুলো হলো-

১। ২০২১ সাল থেকে বন্ধ হওয়া পৌর এলাকার সম্মানিত ইমামগণকে ঈদুল ফিতরের পূর্বে দেওয়া সম্মানি ভাতা পুনরায় চালু করা।

২। উপর্যুক্ত সম্মানিত ভাতা কমপক্ষে দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা।

৩। প্রকৃত রিকসা চালকদের লাইসেন্স প্রদান করা।

৪। একজনকে একাধিক লাইসেন্স প্রদান না করা।

৫। পৌরসভা কর্তৃক নির্ধারিত রিকসা ও অটোর ভাড়া কার্যকর করা। নিয়মিত মনিটরিং করা এবং অভিযান চালানো।

৬। ফুটপাত ও রাস্তায় অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা ও নিয়মিত অভিযান চালানো।

৭। হকারদের পুনর্বাসন করা।

৮। পৌরসভায় হেল্প ডেস্ক অতি আবশ্যকীয়। এর কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৯। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিভাগে সেবাপ্রার্থীদের হয়রানী বন্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকারের মতবিনিময়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 16 February 2023, 1325 Views,

স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার বলেছেন, একটি পক্ষ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এখনো কোন প্রকল্প পাস কিংবা অর্থ বরাদ্দ হয়নি। তাহলে অনিয়ম হল কোথায়? তারা রাজনৈতিকভাবে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোতিভাবে এমনটি করছেন।

banner

তিনি আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লাসহ কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পক্ষ থেকে দেয়া এক লাখ টাকার আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেওয়া উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা বলেন।

এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার আরো বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের কার্যকালে রাজস্ব ও এডিপির বরাদ্দে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়নে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এসব অভিযোগের মধ্যে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলমের বিরুদ্ধে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের একটি সরকারি নিবন্ধনবিহীন মাদ্রাসার নামে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ ও জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের শালগাঁও-কালিসীমা গ্রামের শতাধিক প্রকল্পের নামে কয়েক কোটি সরকারি টাকা হরিলুটের অভিযোগ উল্লেখযোগ্য।

তিনি বলেন, অনুসন্ধ্যানে জানতে পেরেছি, ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের পয়াগ দারুল উলুম মাদ্রাসার নামে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলম ১ কোটি ৫৫লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। একই সময়ে জেলা পরিষদের সদস্য সদস্য মোঃ বাবুল মিয়া সদর উপজেলার কালিসীমা-শালগাঁও গ্রামে বিভিন্ন খাতে ১১৮টি প্রকল্প দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

জেলা পরিষদ সদস্য পায়েল হোসেন মৃধা সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনয়নসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন ইউনিয়নে ভূয়া প্রকল্প বরাদ্দ করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। নাসিরনগর উপজেলা থেকে নির্বাচিত সাবেক সদস্য ফারুকুজ্জামান ফারুক উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র একটি গ্রামে এভাবে বরাদ্দ দিতে পারে না। একইভাবে একটি প্রকল্প শেষ হতে না হতেই একই প্রতিষ্ঠানে বার বার বরাদ্দ দেওয়া যায় না। যা সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম দিয়েছেন।

মতবিনিময় সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার আরো বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদের নির্বাচিত ৮জন সদস্য স্থানীয় সরকার উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে (আল-মামুন সরকার) বিধি বহির্ভূতভাবে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জেলা পরিষদের প্রথম সভা থেকে নির্বাচিত সদস্যদের পাশ কাটিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার।

তিনি নিজ ক্ষমতাবলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে চার লাখ টাকা, মেয়রকে চার লাখ ও ইউপি চেয়ারম্যানকে তিন লাখ টাকা করে বরাদ্দের বিভাজন করেছেন। যা স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদিত রাজস্ব তহবিল ও এডিপির বরাদ্দের ব্যবহার নীতিমালা ২০২২ এর পরিপন্থী।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল গেজেট বিপ্তপ্তিতে জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর অধিকতর সংশোধনীর প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদের প্রণীত ২০২২ সালে ১০ নং আইন মোতাবেক প্রত্যেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং ক্ষেত্রমতে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের প্রতিনিধি পদাধিকার বলে জেলা পরিষদের সদস্য।

এছাড়া জেলা পরিষদের এডিপি ও রাজস্ব খাতের অর্থে প্রকল্প গ্রহন, বাস্তবায়ন ও বন্টন নীতিমালা ২০০০ এর ৩ ধারা এর ৩ মোতাবেক জেলা পরিষদের প্রকল্প প্রণয়নের সময় জেলাধীন সকল উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সঙ্গে সমন্বয় করে জনসংখ্যার সংখ্যানুপাতে প্রকল্প গ্রহন ও অনুমোদন করতে হবে। সেই অনুসারে তাদের প্রকল্পের প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে।

আল মামুন সরকার বলেন, তাদের অভিযোগটি সঠিক নয়। কারণ পরিষদে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রকল্পের প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে। প্রকল্পের প্রস্তাব দিলে সেটি পরবর্তী সভায় পাস হবে। পরবর্তী সভা এখানো হয়নি। অনুমোদনের জন্য প্রকল্প মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় সেই প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে অর্থ বরাদ্দ দিবেন। পরে দরপত্র আহবান করা হবে। যার কোনো কিছুই এখনো হয়নি।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি যদি কোন অনিয়ম করি তাহলে আপনারা আমার বিরুদ্ধে লিখবেন। সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (উপ-সচিব) আমিনুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য আবদুল আজিজ ও রুমানা ফেরদৌসিসহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের সদস্য (সদর উপজেলা থেকে নির্বাচিত) ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মোঃ বাবুল মিয়া সাংবাদিকদের জানান, গত ৫ বছরে বিভিন্ন খাতে ১১৮টি প্রকল্প দিয়েছি। সকল প্রকল্পই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অবহেলিত ও যাদের প্রয়োজন তাদেরকেই প্রকল্প দিয়েছি। সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সত্য নয়। উল্লেখ্য মোঃ বাবুল মিয়া জেলা পরিষদের বিগত পরিষদেও সদস্য ছিলেন।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলমকে কয়েকবার তার মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভি করেননি।