চলারপথে রিপোট
পরশুরাম উত্তর বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে দুটি বেকারিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। একই সময় একটি মুদি দোকানে আরো ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আজ ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার এসব জরিমানা আদায় করেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরোজা হাবিব শাপলা।
অপরদিকে একই সময়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পৃথক অভিযান পরিচালনা করে তিনটি মোটরসাইকেল মালিককে ও একটি সবজি দোকানে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে ৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার প্রস্তুত, খাদ্যে ক্ষতিকর দ্রব্যের মিশ্রণ, পণ্যের মেয়াদোত্তীর্ণ ও বিএসটিআইএর অনুমোদন না থাকায় উত্তর বাজারের কাউতলী সড়কের আলিফ বেকারীর মালিক খায়রুল ইসলামের ২০ হাজার, শাহজালাল বেকারীর মালিক আমির হোসেনের ২০ হাজার টাকা এবং বাবুল মিয়ার মুদি দোকানে ৫ হাজার জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপল বলেন, প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে সর্তকতামূলক জরিমানা করা হয়েছে। তারা সংশোধিত না হলে পরবর্তীতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত রোহিঙ্গার ভুয়া পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তাকারীরা ও কুমিল্লায় ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে গ্রেফতারকৃত এক রোহিঙ্গাসহ চারজনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ সময় গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১৪টি পাসপোর্টসহ অন্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে এসব তথ্য জানান জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেস বড়ুয়া।
পুলিশ জানায়, মিয়ানমারের বলিবাজার থেকে কক্সবাজার হয়ে কুমিল্লায় এসে ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট করার সময় এক রোহিঙ্গা তরুণকে আটক করা হয়। পাসপোর্টের জন্য ছবি তোলার সময় কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সন্দেহ হলে তাঁরা তাঁকে আটক করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করেন।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়। এ মামলার মূল আসামি রোহিঙ্গা নাগরিক মো. ইয়াছিরের তথ্যর ভিত্তিতে আজ ডিবি ও কোতোয়ালি থানা-পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইওরা এলাকার মো. মোশারফ হোসেন (৪২), একই জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ (২২) ও ব্রাহ্মণ চাপিতলা এলাকার মো. ফয়সাল মিয়া (২৮)।
অভিযানে আসামি মোশারফকে কুমিল্লা সদরের নোয়াপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতারের সময় তাঁর প্রতিষ্ঠান আল-মদিনা ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস থেকে ছয়টি ভুয়া পাসপোর্ট ও পাসপোর্ট জমার স্লিপ উদ্ধার করা হয়।
ভুয়া পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তাকারী অপর আসামি কম্পিউটার অপারেটর শরিফকে (২৫) মুরাদনগর কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় নকিব ট্রাভেলস থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে আটটি ভুয়া পাসপোর্ট ও কিছু পাসপোর্ট জমার কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটক ইয়াছির মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে। তিনি মিয়ানমার থেকে ২০ দিন আগে কক্সবাজারের বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-৯-এ আসেন।
কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেস বড়ুয়া জানান, ভুয়া পরিচয়ে জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়ে পাসপোর্ট করার সময় গ্রেপ্তারকৃত রোহিঙ্গা নাগরিক ও রোহিঙ্গা নাগরিকের ভুয়া পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তাকারী আরো তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে এবং দেশের কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নিয়োগকর্তাদের অঙ্গীকার দৃঢ় করতে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে একদিনের প্রতিবন্ধী চাকরিমেলা।
আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটে এ মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন)।
এতে অর্থায়ন করে দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস পার্টনারশিপ অন দ্য রাইটস অব পার্সনস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিস মাল্টিপার্টনার ট্রাস্ট ফান্ড।
জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত এ মেলায় ৪০ জন প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেয় নিয়োগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
নিয়োগপত্র দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- টিম গ্রুপ, স্বপ্ন, সিআরপি, ই-শিখন, এক্সেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, শেলটেক ও উর্মী গ্রুপ।
মেলায় এসব প্রতিষ্ঠানসহ আরএমজি সেক্টর, আইটি সেক্টর, পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রি, এনজিওর জাতীয় ও বহুজাতিক ৩১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার ১ হাজার ২০০ প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থী মেলায় অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করলেও অংশ নেয় মাত্র ২৫০ জন।
মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থী আবু বকর সিদ্দিক ১১ বছর বয়সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই হাত হারান। তার বাম হাত বাহু থেকে আর ডান হাত কবজি থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে।
আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমি এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। আমার বাবা বিদেশে ছিলেন। করোনার সময় চাকরি হারিয়ে দেশে আসার পর এখন কৃষিকাজ করেন। তাই চাকরির চেষ্টা করছি। আমি ব্র্যাক থেকে কম্পিউটার গ্রাফিক্সের কোর্স করেছি। এ মেলায় অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠানে সিভি দিয়েছি। যদি চাকরি হয় তাহলে নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারকেও সাপোর্ট দিতে পারবো।
চাকরিমেলায় মো. রকিবুল ইসলামকে কাস্টমার এক্সিকিউটিভের নিয়োগপত্র দিয়েছে ই-শিখন। তিনি বলেন, আমার শরীরের বাম পাশ জন্ম থেকে ঠিকভাবে কাজ করে না। আমি অ্যাকাউন্টিংয়ে স্নাতক করেছি। এ চাকরিমেলা থেকে চাকরি পাওয়ায় খুবই ভালো লাগছে। আরও অনেক কোম্পানিতে সিভি দিয়েছি। আশা করি, আরও ভালো কোম্পানিতেও ডাক পাবো। এ মেলা আমাদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম।
চাকরিমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে দেশের উন্নয়ন যজ্ঞে শামিল হতে পারে। আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। তাদের পেছনে ফেলে আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর সুযোগ নেই।
এ সময় বিবিডিএনের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন কাসেম খান, প্রধান নির্বাহী (সিইও) মুর্তজা রাফি খান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর পিটার, সৈয়দ সাদ হোসেন গিলানী, টিম গ্রুপের এইচআর প্রধান খন্দকার ইমাম, এক্সেস বাংলাদেশের ইনক্লোশন লিড তাসলিম জাহানসহ মেলায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা ভোট চোর, ভোট ডাকাত ছিল- তারাই এখন গণতন্ত্র চায়! ভোটের অধিকারের কথা বলে! যাদের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে, তাদের কাছ থেকে এসব কথা শুনতে হয়। এগুলো মাঠের কথা, মাঠেই থাকবে। আমরা জনতার সঙ্গে থাকব। জনতার পাশে থাকব। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করব। জনগণের জন্য কাজ করে যাব।
তিনি বলেন, জণগণের আস্থা বিশ্বাস অর্জন করে তাদের ভোটের মাধ্যমেই তো আমরা ক্ষমতায় এসেছি। মানুষের বিশ্বাস ও আস্থাটাই আমাদের একমাত্র শক্তি। আর কোনো শক্তি নাই। বাংলাদেশের জনগণই আওয়ামী লীগের একমাত্র বন্ধু- এটা মনে রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী হাসিনা তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ ১৭ মে বুধবার গণভবনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে সেটাও কার্যকর করে যাচ্ছি। খুব স্বাভাবিকভাবেই এ অর্জনগুলো নৎসাত করতে, যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে তাদের একটা ষড়যন্ত্র চলতেই থাকবে। কিন্তু অনেস্টি (সততা) থাকলে এবং পারপাস (উদ্দেশ্য) যদি সততার সঙ্গে হয় তাহলে যেকোনো জায়গায় সাফল্য আনা যায়। এই কথাটাই সব সময় মনে রাখি। লক্ষ্য একটাই- দেশের মানুষের জীবনটা উন্নত করা, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেওয়া। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন- দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। সেই হাসি ফোটানোটাই আমার একমাত্র কর্তব্য এবং সেটাই করে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আজকে যখন ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে ঘর দেই, ঘর পাওয়ার পরে তার মুখের হাসির চেয়ে বড় পাওয়া বা স্বার্থকতা আর কিছু নেই।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা। সেই সঙ্গে গণতন্ত্র, এটা নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার কবে ছিল? পঁচাত্তর সালের পর থেকে জিয়াউর রহমান ভোট চুরি, ভোট কারচুপি, ভোট নিয়ে খেলা, মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলা করেছে বরং আওয়ামী লীগেরই নানা পদক্ষেপের ফলে আজকে বিভিন্ন সংস্কার করে করে নির্বাচন পদ্ধতিটাকে গণমুখী করা, জনগণের ভোট সম্পর্কে তাদের সচেতন করা হয়েছে। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’- স্লোগান দিয়ে মানুষকে ভোট সম্পর্কে সচেতন করা- এটা তো আওয়ামী লীগই করেছে, আর কেউ না। নির্বাচন কমিশন করার জন্য আইন করা হয়েছে, যেখানে ভুয়া ভোটার দিয়ে তালিকা হতো, সেখানে ছবিসহ ভোটার তালিকা হয়েছে, আইডি কার্ড- সবই তো আওয়ামী লীগেরই করে দেওয়া। সবই করে দিয়েছি আমরা। তারপরও যখন কেউ ভোট, গণতন্ত্র আর নির্বাচন নিয়ে আমাদের সবক দিতে আসে, সেখানে আর কিছু বলার নেই।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা বিএনপি নেতাদের হিপোক্রেসি বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ৩১ মার্চ রবিবার রাজধানীর পূর্ত ভবনে গণপূর্ত অধিদপ্তরের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির একজন নেতা গায়ের চাদর খুলে ফেলেছেন, কিন্তু উনি ভারতীয় কিসমিস, জিরা, এলাচ, দারুচিনি, পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্য ঠিকই ব্যবহার করছেন এবং করবেন। তাহলে জনসমক্ষে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা হিপোক্রেসি ছাড়া আর কি হতে পারে।’
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি বিশেষ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান কখনো সম্মুখ সমরে যাননি, তিনি মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায়ও বিশ্বাস করতেন না। শোষণহীন, বৈষম্যহীন, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল জিয়াউর রহমান তার কোনোটিতেই বিশ্বাস স্থাপন করেননি। তিনি তার মন্ত্রিসভায় এমন লোকদের স্থান দিয়েছিলেন যারা ভারতে গিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য, যারা জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওকালতি করতে গিয়েছিলেন এমন লোকদেরকে।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ দুজনেই স্বৈরশাসক ছিলেন।
অনেকেই জিয়াউর রহমান ও এরশাদকে এক পাল্লায় মাপতে চান না। এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। জিয়াউর রহমান জীবনে একটা ভালো কাজও করেননি। অনেকে বলে থাকেন জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক।
কিন্তু এটাও সঠিক না। জিয়াউর রহমান নিছক একজন স্বৈরশাসক ছিলেন। পক্ষান্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায?িক চেতনায় বিশ্বাস করতেন বলে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন।’
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যে বিতর্কের অবতারণা অনেকে করতে চান তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে নির্ধারিত হয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অধিকার কার। বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতার ঘোষক এ নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই।’
বর্তমান বাজার ব্যবস্থা এবং দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, যাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই, যারা একাত্তরের শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, এমনকি সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে, তারাই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে অধিক মুনাফা অর্জন করে এবং সে মুনাফার টাকা খরচ করে আবার হজ করতেও যায়। মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থে কোন ধর্মীয় কাজই সিদ্ধ হবে না।’
হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ। হিন্দু ধর্মেও রয়েছে যে, স্বর্গের দেবীর চেয়েও দেশ মহিমামণ্ডিত।’ তাই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের কল্যাণে সঠিকভাবে নিজের কাজ করার জন্য সবার উদ্দেশ্যে তিনি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক, শিক্ষাবিদ ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আক্তারের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ নবীরুল ইসলাম ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান। অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, চুকনগর বধ্যভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আজ ৬ জুলাই শনিবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’ এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করতে হবে। পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ এদেশের একটি গোষ্ঠী স্বীকার করতে চায় না। তারা জাতীয় সংগীত গাইতে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে অনীহা প্রকাশ করে। তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও দেশবিরোধী নানা ধরনের চক্রান্তে লিপ্ত। তাদের সব চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বর্তমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আরও সমুন্নত করতে হবে, তার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
বধ্যভূমি সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে চুকনগর ছিল ভারতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশে আগত ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষকে ১৯৭১ সালের ২০ মে এখানে হত্যা করে তাদের লাশ স্থানীয় ভদ্রা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ইতিহাসে এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নজির বিরল। শুধু চুকনগর নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার গোষ্ঠী এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে যার বেশিরভাগই এখনও পর্যন্ত অজানা। প্রয়োজনীয় গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এসব ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী বধ্যভূমির মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, জেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম ৭১ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মাহবুব জামান ও হেলাল ফয়েজী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দলীয় কার্যক্রম গতিশীল এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তারা দলের নেতা কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
দুপুরে মন্ত্রী খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাসকে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুনু রেজা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মিরাজুল ইসলাম, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জিওবি এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ অর্থায়নে ৭১৭ কোটি ৮০ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে উল্লিখিত প্রকল্পের আওতায় তিনটি লিংক রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে সিটি বাইপাস পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার (প্রথম লিঙ্ক রোড), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায় মহল পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ৪.৯০ কিলোমিটার (দ্বিতীয় লিংক রোড) এবং বাস্তুহারা থেকে পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক সংযোগ সড়ক ২.৭০ কিলোমিটার (তৃতীয় লিংক রোড) মোট ১০.১০ কিলোমিটার দুই লাইন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হবে। ২০২৫ সালে ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।