চলারপথে রিপোর্ট :
যশোর সদর উপজেলার যশোর-বেনাপোল রেলপথের ধোপাখোলায় ট্রেনে কেটে চাচা আমিরুল ইসলাম (৫৫) ও তার ভাতিজা দেড় বছর বয়সী মোহাম্মদ ইউসুফ নিহত হয়েছে।
নিহত আমিরুল ইসলাম ধোপাখোলা গ্রামের মৃত আনোয়ার বিশ্বাসের ছেলে। আর শিশু মোহাম্মদ ইউসুফ একই গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে।
আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মইনুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে আমিরুল ইসলাম তার দেড় বছর বয়সী ভাতিজা ইউসুফকে নিয়ে শামুক কুড়াতে যায়। শিশু ইউসুফকে ধোপাখোলা রেল ব্রিজের ওপর বসিয়ে পাশের জলাশয়ে নামেন তিনি। এ সময় বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলে আসে। আমিরুল ট্রেন আসতে দেখে ছুটে গিয়ে ইউসুফকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। এ সময় ইউসুফ ব্রিজের ওপর থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যায় এবং আমিরুল ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সাথে সাথে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে শিশু ইউসুফকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই ইউসুফের মৃত্যু হয়।
যশোর রেলওয়ে পুলিশের এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শিশু ইউসুফের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে এবং আমিরুলের মরদেহ ঘটনাস্থলে আছে বলে জানান তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৩ জুন রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি।
প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে দ্বিতীয়বার শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ দলের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাগেরহাটের রামপালে মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তামার তার চুরির মামলার দুই পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রামপাল থানা পুলিশ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আসামিদের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
আজ ৫ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে গ্রেফতারকৃতদের বাগেরহাট আদালতে পাঠালে বিচারক তাদের করাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের নিজাম ফকিরের ছেলে সোহাগ ফকির (৩০) ও রামপাল উপজেলার সিকিরডাঙ্গা গ্রামের আবু জাফর শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২২)।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আশরাফুল আলম জানান, রামপালে মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তামার তার চুরির মামলার দুই পলাতক আসামি বাড়িতে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আসামিদের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বুধবার সকালে গ্রেফতারকৃতদের বাগেরহাট আদালতে পাঠালে বিচারক তাদের করাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে পবিত্র মক্কায় ওমরাহ শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত তিন বাংলাদেশির পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তান, নাতি-নাতনিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বৃদ্ধা মা আলেয়া বেগম। শুধু অবাক চোখে চেয়ে রয়েছেন ছেলে, নাতি-নাতনির ছবির দিকে; আর তার দুই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি।
সরেজমিনে আজ ৬ আগস্ট রবিবার নিহত মোবারক হোসেনের শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলীর বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান, নাতি-নাতনিকে হারিয়ে বৃদ্ধা আলেয়া বেগমের শুধু চোখ বেয়ে পানি ঝড়ছে। অসুস্থ আলেয়া বেগম কোনো কথাই বলতে পারছেন না। মোবাইলে ছেলে, নাতি নাতনিদের ছবির দিকে চেয়ে আছেন। এ ছাড়া বড় ভাইকে হারিয়ে ভাই-বোনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।
সৌদি আরবে পবিত্র মক্কায় ওমরাহ পালন শেষে দাম্মামে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে আরবের আল-কাসিম এলাকায় ৫ আগষ্ট বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিন বাংলাদেশি মারা যান। নিহতরা হলেন মোবারক হোসেন (৪৮), তার ছেলে তানজিল আব্দুল্লাহ মাহি (১৫) ও মেয়ে মাহিয়া (১৩)। মাহি ওই দেশের নবম শ্রেণিতে ও মাহিয়া সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো।
একই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন মোবারক হোসেনের স্ত্রী শিখা আক্তার (৪০) ও বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীম (১৯)। উচ্চ শিক্ষার জন্য চলতি মাসের ২৩ তারিখ মীমের কানাডা যাওয়ার কথা ছিল। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলিতে ২০০৬ সাল থেকে বসবাস করে আসছেন শেখ মোহাম্মদ আলী। তিনি ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক। ভাই বোনদের মধ্যে দ্বিতীয় মোবারক হোসেন।
পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, মোবারক হোসেন দারিদ্রতা ঘুচাতে বিশ বছর আগে পাড়ী জমান সৌদি আরবে। এরপর দুই ভাইকে নিয়েছেন সৌদি এবং এক ভাইকে পাঠিয়েছেন দুবাইয়ে। মোবারক হোসেন স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে বসবাস করতেন। সেখানে তার কার রিপেয়ার শপ (গাড়ী মেরামতের দোকান) রয়েছে।
মোবারক হোসেনের ছোট ভাই জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ৬ মাস আগে বড়ভাই ও তার স্ত্রী সন্তান দেশে এসে কিছুদিন থেকে পুনরায় সৌদি চলে যান। ভাইয়ের বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীমের ২৩ আগস্ট উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল। এ কারণে স্ত্রী, ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে ওমরাহ করতে যান তিনি। ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মোবারক হোসেনের বাবা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার মোবারকের জন্যই আজ আমাদের অবস্থার উন্নতি। কি করলে আমরা একটু ভালো থাকবো, সব সময় ওর মাথায় এই চিন্তাই থাকতো। বলতো আব্বা আপনি কোনো চিন্তা করবেন না, যখন যা লাগবে আমাকে জানাবেন। আমার কোনো কিছুই চাওয়া লাগতো না ওর কাছে।
তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর আমার ছেলের শ্যালক সৌদি চলে গেছেন। আমার ছেলে, নাতি-নাতনিদের মরদেহ দেশে আনার কথা বলেছি। ওদের এক নজর শেষ দেখা দেখতে চাই। সরকার যেন আমার ছেলে ও নাতিদের মরহেদ দেশে আনার ব্যবস্থা করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ল ব্যক্তি করদাতাদের। নভেম্বর ৩০ তারিখ থেকে ২ মাস বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া কোম্পানি করদাতাদের রিটার্ন জমার মেয়াদ ১৫ জানুয়ারি থেকে দেড় মাস বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে।
আজ ২৯ নভেম্বর বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনকে সামনে রেখে সময় বাড়ানো হলো।
উল্লেখ্য, ৩০ নভেম্বর রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্ধিত সময় অনুসারে করদাতারা ৩০ নভেম্বরের পরিবর্তে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। কোম্পানি করদাতাদের জন্য রিটার্ন জমার নির্ধারিত সময় ছিল ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি; এই সময় বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে।
চলতি নভেম্বর মাসজুড়ে ছলছে আয়কর সেবা মাস, যা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ আয়কর রিটার্ন জমা হয়েছে। এ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে চার হাজার ২০০ কোটি টাকা।
হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান দেশে টিআইএন নম্বরধারীর সংখ্যা প্রায় ৯৪ লাখ। এর মধ্যে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ছিল ২২ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৫টি। তার আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ছিল ২২ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৫টি। এ বছর ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেখানে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে দুই-তৃতীয়াংশ।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ চলছে । কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু সারা দেশের মানুষ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রমেই নিচের দিকে নামছে পারদের কাঁটা। ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ এলাকায়ই সূর্যের দেখা নেই কদিন থেকে। অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে রাজধানীতেও।
কলকারখানা-গাড়ির ধোঁয়া, মানুষের কর্মচাঞ্চল্য, কোলাহল সবকিছুকে পেছনে ফেলে সকাল-সন্ধ্যা কুয়াশায় চাদরে ঢাকা পড়ছে ঢাকা শহর। তবে সুসংবাদ নেই। চলমান এই শৈত্যপ্রবাহ আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে শীত বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এমন অবস্থায় শীত নিবারণে রাজধানীজুড়ে চাহিদা বেড়েছে গরম কাপড়ের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বিপণী বিতান, শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতে বেচাকেনা হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের শীতের কাপড়।
আজ ১৩ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর রোডের গোল্ডেন গেট শপিং সেন্টার, খান প্লাজা, কাদের অর্কেড, প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টার, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মার্কেট, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, নেহার ভবন, নুরজাহান সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূর ম্যানশন সুপার মার্কেট, নিউ সুপার মার্কেটসহ সবগুলো মার্কেটেই শীতের কাপড়ের ব্যাপক সমাহার। ব্যবসায়ী ও দোকানিরা ক্রেতাদের চাহিদা আর রুচির কথা মাথায় রেখে পসরা সাজিয়েছেন এসব পোশাকের। এরমধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, হুডি, ফুল স্লিভ টি-শার্ট, ব্লেজার, স্লিভলেস কোট, কটি, জিন্সের মোটা শার্ট-জ্যাকেট, ডেনিম শার্ট, উইন্টার কোট, উলের তৈরি শাল, খাদির শাল, মাফলার, কানটুপি, হাত-পায়ের মোজা অন্যতম।
ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের অধিকাংশ ক্রেতাই তরুণ-তরুণী। সেজন্য তাদের পছন্দের কথা চিন্তা করে দোকানে ক্যাজুয়াল ফ্যাশনের কালেকশনই বেশি রাখা হয়েছে। এরমধ্যে এবার জ্যাকেটের চাহিদা বেড়েছে। এরমধ্যে জেন্টস লেদার জ্যাকেট, জেন্টস ফুল স্লিভ জ্যাকেট, লেডিস ফিট ফুল স্লিভ জ্যাকেট, জেনস কটন জ্যাকেট, ফুল স্লিভ জেন্টস ক্যাজুয়াল জ্যাকেট, জেন্টস হুডি জ্যাকেট অন্যতম। নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের কথা মাথায় রেখে এসব জ্যাকেটের প্যাটার্নেও এখন আনা হয়েছে বেশ নতুনত্ব। সিনথেটিক এবং মিক্সড লেদারের জ্যাকেটও রয়েছে দোকানগুলোতে। এছাড়াও ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন প্যাটার্ন স্টাইল এবং গুণগত মানের কাপড় দেখা গেছে দোকানগুলোতে।
চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী বাপ্পি হাওলাদার বলেন, নিউমার্কেটসহ আশপাশের এলাকার অধিকাংশ ব্যবসায়ীরাই মৌসুমভিত্তিক কাপড়ের ব্যবসা করেন। সে অনুযায়ী এখন অধিকাংশ দোকানেই শীতের পোশাক। তবে এক্ষেত্রে আমরা তরুণ-তরুণীদের পছন্দকে প্রাধান্য দেই। কারণ বয়স্ক মানুষজন একটি শীতের কাপড়ের একাধিক বছর চালালেও তরুণ-তরুণীদের প্রতি বছর নতুন কাপড় কেনার প্রবণতা বেশি। সেজন্য আমরা তাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই শীতের পোশাক সংগ্রহ করে থাকি। এবছর বিক্রি খুবই ভালো হচ্ছে। সম্প্রতি শীত বাড়ার কারণে দোকানে ক্রেতার পরিমাণও বেড়েছে। সবমিলিয়ে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার শীতের পোশাকের বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্টির কথাও জানান তিনি।
রবিউল হুসাইন নামের আরেক বিক্রেতা শীতের পোশাকের দাম সম্পর্কে বলেন, গুণগত মান এবং ব্র্যান্ডের উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারিত হচ্ছে। দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি ভালো কোয়ালিটির জ্যাকেট ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আবার এক্সপোর্ট কোয়ালিটি কিংবা চায়না জ্যাকেট দেড় থেকে আড়াইহাজার টাকায় বিক্রি করছি। লেদার জ্যাকেটের দাম নির্ধারিত হচ্ছে গুণগত মানের উপর। সোয়েটার এবং হুডি ৮শ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করছি। মূলত, এবছর টেক্সটাইল এবং সব ধরনের গার্মেন্টস পণ্যের উপাদানের দাম বাড়ার কারণে এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েছে। তবে বেশি বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কাছে স্বল্প লাভেই বিক্রি করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট ফুটপাতের বিক্রেতারাও। মেয়েদের ওলের ওড়না, জ্যাকেট, চাদর থেকে শুরু করে ছোট বাচ্চাদের বিভিন্ন শীতের পোশাকের পসরা নিউমার্কেটের ফুটপাতজুড়ে। দামেও কিছুটা কমের কারণে সেসব দোকান ঘিরে ভিড় করছেন মানুষজন। অনেক দোকানে আবার চাদর, হুডি, হাতাওয়ালা টিশার্ট তাল মিলিয়ে ‘বাইচ্ছা লন, তিনশ’, ‘দেইখা লন, তিনশ’ এভাবে ডেকে বিক্রি করতে দেখা যায়।
আব্দুল ওয়াহাব নামের ফুটপাতের এক বিক্রেতা বলেন, বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। কমদামে ভালো কাপড় দিচ্ছি। আমাদের তো দোকান ভাড়া দিতে হয়না। কর্মচারী বিল নাই। সেজন্য অল্প লাভেই মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারছি। আজকে ছুটির দিন হওয়ার কারণে সকাল থেকেই ক্রেতা সমাগম বেশি।
আবার নিউমার্কেটের ভেতরে দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, মানুষজন বেশি কেনাকাটা করছেন তাদের এলাকায় থাকা আত্মীয় স্বজনদের কাছে পাঠানোর জন্য। বাড়ির ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্কদের জন্য শাল, মাফলার, হাত-পায়ের মোজার ক্রেতার পরিমাণ বেশি। ভেতরের দোকানগুলোতে শাল চাদর মানভেদে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, মাফলার ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে তিনশো টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার বাচ্চাদের পোশাকও গুণগত মান ও বয়সভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে।
কেনাকাটা করতে আসা তাসলিমা বেগম বলেন, আমার বাড়ি গাইবান্ধা। সেখানে প্রচুর শীত পড়েছে। বাবা-মায়ের জন্য শীতের পোশাক আগেই পাঠিয়েছি। তারপরও এখন আবার মোটা খাদি কাপড়ের শাল চাদর, মাফলার এবং হাত পায়ের মোজা বেশি করে কিনে বাড়িতে পাঠাচ্ছি। দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশিই। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে কেনাকাটা তো করতেই হচ্ছে।
ইউসুফ মিয়া নামের আরেকটা ক্রেতা বলেন, শীত একটু বেশি পড়েছে। সেজন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে কেনাকাটা করছে। ক্রেতা যেহেতু বেশি তাই দোকানিরা দাম একটু বেশি চাইছে। তবে নিউমার্কেটের ফুটপাতে সাশ্রয়ী মূল্যে শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। আর মার্কেটগুলোতে দাম কিছুটা বেশি। দেখেশুনে কেনাকাটা করতে হচ্ছে।
কম্বল-লেপের বিকল্প হিসেবে চাহিদা বেড়েছে কম্ফোর্টারের
শীতে আরামদায়ক ঘুমের জন্য উঞ্চতা বৃদ্ধিতে বর্তমানে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করেছে কম্ফোর্টার। লেপ কিংবা কম্বলের তুলনায় দ্রুত উষ্ণতা পেতে এর জুড়ি নেই। তাইতো কম্বল ও লেপের তুলনায় এখন চাহিদা বেড়েছে কম্ফোর্টারের। আবার বিদেশি কম্ফোর্টারের পাশাপাশি দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কম্ফোর্টার তৈরি করে স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করার কারণে দামও হাতের নাগালে রয়েছে। কম্ফোর্টার তৈরিতে এগিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানিও। তাই স্বল্প দামে ভালো মানের কম্ফোর্টারের দিকে ঝুঁকেছেন মানুষজন।
বিক্রেতারা জানান, অনলাইনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার কারণে মানুষ এখন দোকানে এসেই কম্ফোর্টার খুঁজেন। স্থানীয়ভাবে তৈরি ফাইবারের এসব কম্ফোর্টার সিঙ্গেল, সেমি ডাবল ও ডাবল হিসেবে দাম ঠিক করা হয়। আবার কম্ফোর্টারের পুরুত্বের ওপরও নির্ভর করে গুণগত মান।
নীলক্ষেত সিটি কর্পোরেশন মার্কেটের বেডশিট ব্যবসায়ী ইলিয়াস খান বলেন, কম্বল ও লেপের তুলনায় কম্ফোর্টারের ওজন একেবারেই হালকা। তবে এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দ্রুততম সময়ে উষ্ণতা পাওয়া যায়। আমাদের দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ড যেমন কমফি, বেক্সি ফেব্রিকসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কম্ফোর্টার তৈরি করছে। এসব কম্ফোর্টার আকারভেদে এগারোশ টাকা থেকে আড়াইহাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও কোরিয়ান, চায়নাসহ অন্যান্য বিদেশি কম্ফোর্টার সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে কম্বলের বেচাকেনা আহামরি না হলেও অন্যান্য বছরের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।