চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে পুকুরের এক ফুট পানির নিচে ঝুলে রয়েছে পিডিবির বৈদ্যুতিক লাইন। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন সেখানকার বিদ্যুৎ গ্রাহক ও স্থানীয়রা।
সরেজমিন ঘটনাস্থল ঘুরে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার এলাকায় বিদ্যুতের এ বেহাল দশার অবস্থা। পিডিবির বৈদ্যুতিক লাইন পুকুরের এক ফুট পানির নিছে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পড়ে রয়েছে। প্রায় এলাকাতেই জরাজীর্ণ তার এলোমেলোভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ তারে টানানো এই লাইনে মেরামতের অভাবে বৈদ্যুতিক তার ঝুলে রয়েছে। দেখে মনে হয় যেন বৈদ্যুতিক লাইন পানির নিচ দিয়ে টানানো হয়েছে।
এ অবস্থায় পুকুরের পানিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ সৃষ্টি হয়ে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কিত রয়েছেন স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একাদিকবার অবহিত করা হলেও তেমন কোনো প্রতিকার হচ্ছে না বলে জানান তারা।
এদিকে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার, আইরল, আঁখিতারা ও বছিউড়া এই ৪টি গ্রামের মানুষ বৈদ্যুতিক লো-ভোল্টেজ সমস্যায় চরম দুর্ভোগে আছেন। একদিকে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ মানুষ, অন্যদিকে লো-ভোল্টেজের কারণে অচল হয়ে পড়ছে জনজীবন।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য ফারুক মিয়া বলেন, পুকুরের পানিতে বিদ্যুতের তার পরে রয়েছে। এ বিষয়ে অফিসে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা ছেলেমেয়ে নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছি ভয়ে কেউ পুকুরে গোসল করতে নামছে না।
নাজমুল মিয়া বলেন, লো-ভোল্টেজের কারণে আমার ফ্রিজের মাছ মাংস প্রায় সময় পচে যায়। আর ফ্যান ও বাতি কোনো রকমে চলে। বুঝার উপায় নেই যে বিদ্যুৎ আছে।
এ বিষয়ে সরাইল পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ বিতরণ) মো. আব্দুর রউফ যুগান্তরকে বলেন, নোয়াগাঁও ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় আমি অনেক কাজ করেছি। কাটানিশার ও আইরল এলাকায় বিদ্যুৎ কিছুটা দুর্বল রয়েছে। কাটানিশারে একটা ট্রান্সফরমার দরকার। ট্রান্সফরমার বসানো গেলে বিদ্যুতের লাইন ঠিক হয়ে যাবে। আমি সামনের বাজেটে চেষ্টা করব ট্রান্সফরমার দিতে। আর কোনো পুকুরে বিদ্যুতের তার পড়ে রয়েছে আমার জানা নেই। খবর নিয়ে দেখব।
চলারপথে রিপোর্ট:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথ্য অফিসের ব্যবস্থাপনায় ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ)’র আওতায় আজ ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পাকশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে নারী সমাবেশের অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তথ্য অফিসার দীপক চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে নারী সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সায়মা শাবরীন, প্রধান শিক্ষক পাকশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রেভা দাস, সমাজ কর্মী মোঃ শিব্বির আহমেদ শাওন এবং সমাজ কর্মী হাজী আইয়ুব আলী। শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড আখ্যা দিয়ে প্রধান অতিথি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুর রহমান বলেন, দারিদ্র পীড়িত আমাদের দেশে শতকারা ৯৭% শিশু প্রতি বছর শিক্ষা অর্জনের জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হচ্ছে যা আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন।
তিনি আরো বলেন শুধু শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে নিজেকে সীমাবদ্ব রাখলে চলবে না তারা যাতে যথার্থ বিদ্যা অর্জনের মাধ্যমে দেশের কাজে এগিয়ে আসতে পারে তার জন্য শিক্ষকদের পাশাপাশি মায়েদের অনস্বীকার্য ভুমিকা পালন করতে হবে। মোবাইল ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক উল্লেখ করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন বর্তমান যুগ মোবাইলের যুগ, মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে বাচ্চাদের ব্যাপক শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। তাই আমাদের সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে মোবাইল ব্যবহারের ব্যাপারে।
তিনি আরো বলেন অশিক্ষাই সকল অজ্ঞতার মূল। আমরা বর্তমান সমাজে যে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা দেখতে পায় যেমন বাল্য বিবাহ, মাদক আসক্ত, চুরি, ডাকাত, ছিনতাই, রাহাজানি ইত্যাদি তার মুলে আছে প্রকৃত নৈতিকতা সর্ম্পূন শিক্ষার অভাব। যদি আমরা এসব সামাজিক সমস্যার মূলোৎপাটন করতে চায়, একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করতে চাই তাহলে নৈতিকতা সর্ম্পূণ শিক্ষার কোন বিকল্প নাই।
উক্ত নারী সমাবেশে বাল্য বিবাহ ও মাদক আসক্তকে একটি সামাজিক সমস্যা হিসাবে আখ্যা দিয়ে অন্যান বক্তারা বলেন, বাল্য বিবাহ ও মাদক আসক্ত আমাদের জন্য একটি ভয়াভহ সমস্যা। এ সমস্যা দূর করার জন্য একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একটি বাল্য বিবাহ শুধু একটি মেয়ের জীবন ধ্বংস করেন তা নয় বরং দুটি পরিবারই শেষ হয়ে যায়, ঠিক তেমনি মাদক আসক্ত ব্যক্তি পুরো সমাজের জন্য হুমকি স্বরুপ।
জেলা তথ্য অফিসার দীপক চন্দ্র দাসের সমাপনী বক্তৃতার মাধ্যমে নারী সমাবেশ সমাপ্তি হয়। উক্ত নারী সমাবেশে প্রায় চার শতাধিক নারী উপস্থিত ছিল।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে অজ্ঞাত এক পরিবহনের সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে আশিষ চন্দ্র দাস (২০) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সরাইল নোয়াগাঁও গোগদ (ইসলামাবাদ) এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেলটি আশিষ নিজেই চালাচ্ছিল। আশিষ চন্দ্র দাস সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের বড় ধীতপুর গ্রামের দাসপাড়া এলাকার শচীন্দ্র চন্দ্র দাসের ছেলে।
হাসপাতাল সূত্রে ও পুলিশ জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোগত (ইসলামাবাদ) এলাকায় অজ্ঞাত এক পরিবহনের সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় আশিষ চন্দ্র দাস গুরুতর আহত হয়। তারপর রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা পিকআপের চালক আলম আহত আশিষ চন্দ্র দাসকে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আওয়াতিফ ইবনে মাতিন তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে জরুরি বিভাগে চিকিৎসক মো. আওয়াতিফ ইবনে মাতিন বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশিষ চন্দ্র দাস মারা যায়। পরে লাশ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করি।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুখেন্দু বসু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পিকআপ ও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছি। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নিখোঁজের এক দিন পর কচুক্ষেত থেকে মো. রাহিম নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ২০ জুন শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া এলাকার জাফর খালেরপাড় থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মো. রাহিম (১০) সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া এলাকার আসাদ আলীর ছেলে।
সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শিশু রাহিম সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়ার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এরপর থেকে স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে শিশুটিকে খুঁজতে থাকেন। পরে ২০ জুন শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয়রা বাড়ির কাছে সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া এলাকার জাফর খালেরপাড়ের কচুক্ষেতে শিশুটির মরদেহ দেখতে পান। পরে তারা শিশুটির স্বজন ও পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
শিশুর বাবা আসাদ আলী জানান, বছর খানেক আগে তার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এরপর শিশুটি তার নানি বাড়িতে থাকতেন। শিশুটির মা জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তার ছেলেকে কারা কী কারণে হত্যা করে থাকতে পারে – এ ব্যাপারে তিনি কিছুই বলতে পারছেন না। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা কামনা করে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল হাসান জানান, নিহত শিশুটির মুখ এবং নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে দুস্থ অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে সরাইল ব্যাটালিয়ন ২৫ বিজিবি।
২৬ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে সরাইল সরকারি ডিগ্রী কলেজ মাঠে ৫ শত মানুষের মাঝে এ ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সরাইল সদর দপ্তর রিজিয়নের ডেপুটি রিজিয়ন কমান্ডার কর্নেল কাজী শামীম হাছান। ইফতার ও খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, চিনি, সয়াবিন তৈল ও আলু এবং ইফতার সামগ্রী। এছাড়াও বয়স্কদের যাতায়াতের গাড়ি ভাড়াবাবদ কিছু অর্থ দেয়া হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল সৈয়দ আরমান আরিফ এবং রিজিয়ন ও ব্যাটালিয়নের অন্যান্য অফিসারবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছে।
আজ ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের চান্দার গোষ্ঠী ও বারেকের গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রমজানের শেষ দিকে তেরকান্দা গ্রামের নানু মিয়ার ছেলে শাহরুলের একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চুরি হয়। অভিযোগ ওঠে বারেকের গোষ্ঠীর লোকজন এই চুরির সঙ্গে জড়িত। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। সোমবার রাতে এই নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় চান্দার গোষ্ঠী ও বারেকের গোষ্ঠীর লোকজন। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণে আনলেও আজ সকাল থেকে ফের সংঘর্ষে জড়ায় তারা। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা আরো জানায়, সংঘর্ষের ভয়াবহতা আরো বাড়ে এই দুই গোষ্ঠীর পক্ষ নিয়ে মঙ্গলের গোষ্ঠী, সরদার বাড়ি ও হাজী বাড়ির লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায়। ধানি জমি, ভিটা বাড়িসহ সড়কের ওপর চলে এই সংঘর্ষ। বৃষ্টির মত ছোঁড়া হয় ইটপাটকেল। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫টি বাড়িঘরে ভাঙচুর লুটপাটসহ আগুন দেওয়া হয়। এ সময় ৩০ জন আহত হন।
সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আটক করা হয় চারজনকে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সেনাবাহিনী।