ট্রেনের ধাক্কায় কিশোর নিহত

জাতীয়, 7 September 2023, 643 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত পরিচয়(১৪) এক কিশোর নিহত হয়েছেন। আজ ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী- জয়দেবপুর রেললাইনের উপজেলার বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি রেল স্টেশনে ট্রেন থেকে নামার সময় ঢাকাগামী অপর একটি ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। পড়নে সাদা পায়জামা পাঞ্জাবী ছিল। পোশাক দেখে ধারনা করা সে কোন মাদ্রাসার ছাত্র।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রেলওয়ে পুলিশ সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা গামী লোকাল ট্রেন ৯৯ বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি রেল স্টেশনের প্লাটর্ফমে এসে দাড়ায়। এ সময় ওই লোকাল ট্রেন থেকে অজ্ঞাত পরিচয় ওই কিশোর নামতেছিল। এ সময় ঢাকাগামী বনলতা এ·প্রেস নামের অপর একটি ট্রেন দ্রুতগতিতে ওই রেলষ্টেশন অতিক্রম করার সময় ট্রেনের ধাক্কায় কিশোর ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। পরে খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শাহীদ তাজউদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় ।

গাজীপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ পরিদর্শক মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ জানান, ছেলেটি স্টেশনে দাড়ানো লোকাল ট্রেন থেকে নামার সময় ঢাকাগামী চলন্ত বনলতা এ·প্রেসের সাথে ধাক্কা খেয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। তবে পোশাক দেখে ধারনা করা হচ্ছে সে কোন মাদ্রাসার ছাত্র হতে পারে।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

মোটর সাইকেল আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে বাস উল্টে নিহত ৩

জাতীয়, 12 September 2023, 587 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি বাসের চাপায় দুই পথচারী ও এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বাসের আরও ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন।

আজ ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার হারিখোলা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির সার্জেন্ট (এসআই) নাজমূল হুদা।

নিহতরা হলেন- চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গণিপুর গ্রামের মৃত মমতাজ খলিফার ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৮), হারিখোলা বেদে পল্লীর আদম আলীর ছেলে বাহরাম মিয়া (৬০) ও মোটরসাইকেল চালক আবুল কালাম।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সকাল পৌনে ১০টার দিকে চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী একটি বাস হারিখোলা মাজার এলাকায় পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেলকে রক্ষা করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি মহাসড়কে উল্টে পড়ে। এসময় মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুই পথচারী ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে গুরুতর অবস্থায় মোটরসাইকেল চালক আবুল কালামকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ দুর্ঘটনায় বাসের আরো ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন।

হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির সার্জেন্ট (এসআই) নাজমূল হুদা জানান, দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। আহতদের চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ছিনতাইকারী চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার

জাতীয়, 16 October 2023, 552 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সংঘবদ্ধ চোর ও প্রতারক চক্রের ৬ নারীকে পুলিশে সোর্পদ করেছে স্থানীয়রা। আজ ১৬ অক্টোবর সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে জানায় পুলিশ ।

আটককৃতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার দৌলতপুর (ধরমন্ডল) গ্রামের সারোয়ারের স্ত্রী আয়শা বেগম (২০), বজলু মিয়ার কন্যা তছলিমা বেগম (২৫), আহাদ আলীর কন্যা আখি আক্তার (১৬), ফুকরু মিয়ার কন্যা শিরিন আক্তার (২২), সালেহ উদ্দীনের কন্যা সালে আকতার (২৬) ও রিপন মিয়ার স্ত্রী নাছিমা বেগম (১৯)।

স্থানীয়রা জানান, গত রোববার কামারদহ ইউপির সতীতলা গ্রামের কাজী মো. রওশন হায়দারের স্ত্রী সুলতানা বেগম প্রতিদিনের ন্যায় নিজ কর্মস্থল তালুককানুপুর ইউপির তালতলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জরুরি প্রয়োজনে ছুটি নিয়ে দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ বন্দরে আসেন। সেখানে আদর্শ ওষুধের গলির ভ্যান স্ট্যান্ডে নুনু শেখের গাড়িতে চড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এসময় ওই গাড়িতে ছিনতাইকারী মহিলারাও যাত্রীবেশে ওঠেন। তারা পথিমধ্যে তুলশীপাড়া এলাকায় পৌঁছলে কৌশলে সুলাতানার গলায় থেকে ৮ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়রা ওই ছয় নারীকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশ। রাতে সুলতানা বেগম বাদী হয়ে আটককৃতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম জানান, উপজেলার কামারদহ ইউপির তুলশীপাড়া থেকে তাদের আটক করা হয়। স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করার সময় স্থানীয়রা তাদের হাতে-নাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। আজ সোমবার দুপরে আদালতের মাধ্যমে ৬জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

২৫ মার্চের কালরাত স্মরণে সারাদেশে ব্ল্যাকআউট পালন

জাতীয়, 25 March 2023, 1133 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকাসহ সারাদেশে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে দিনটিকে ‘জাতীয় জেনোসাইড দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।

আজ ২৫ মার্চ শনিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত ২৫ মার্চের কালরাত স্মরণে সারাদেশে এক মিনিট আলো বন্ধ রেখে প্রতীকী ব্ল্যাকআউট পালন করা হয়। তবে কেপিআই ও জরুরি স্থাপনাগুলো এ কর্মসূচির আওতামুক্ত ছিল।

সকাল সাড়ে ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গীতিনাট্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনের মিনিপোলগুলোতে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে জোহরের নামাজের পর বা সুবিধাজনক সময়ে দেশের সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্য উপাসনালয়গুলোতে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোতে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

অভ্যুত্থানে শহীদ ৪২২ জন বিএনপির: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

জাতীয়, রাজনীতি, 15 September 2024, 123 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যায়’ ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র দেশে শহীদ হয়েছেন ৮৭৫ জন মানুষ। যার মধ্যে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পথযাত্রায় বিএনপির ভূমিকা, অবদান ও প্রত্যাশা’ বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ফখরুল বলেন, আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগণকে বারবার ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতাকে যখনই গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র, প্রতিবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। বাকশালের পর বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের পর সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, দেশের মানুষের অধিকার ও মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়া।

‘সেই ধারাবাহিকতায়, ১৬ বছরের স্বৈরাচারী দুঃশাসনকে চূর্ণ করে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তির স্বাদ পায়, গণতন্ত্রের পথ সুগম করে। অসংখ্য ব্যক্তি ও পরিবার রয়েছে, যাদের বছরের পর বছর ধরে ত্যাগের মহিমায় আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। ’

ফখরুল বলেন, বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই গণহত্যায় ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে শহীদ হন ৮৭৫ জন মানুষ, যার মধ্যে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দেশজুড়ে শহীদ সব শ্রেণি-পেশা-রাজনীতির মানুষগুলোর এ বিশাল অংশ যে বিএনপিরই নেতা-কর্মী, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং আমাদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের অনিবার্য ফল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, পোশাক শ্রমিক কিংবা রিকশাচালক, পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র; বাম কিংবা ডান আদর্শের অনুসারী; সব মত ও পথের রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতাহতের পরিচয় যাই হোক না কেন, প্রতিটি প্রাণের মূল্য ও রক্তের মর্যাদা সমান। আর তাই সমান গুরুত্বের সঙ্গেই প্রণয়ন করতে হবে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তালিকা। নিশ্চিত করতে হবে সুবিচার। শেখ হাসিনার পদত্যাগের জন্য যে জাতীয় ঐক্য আমরা দেখতে পাই, তা কিন্তু হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি মূলত অবৈধ সরকারের অত্যাচার-অবিচার, দুর্নীতি-দুঃশাসন, বঞ্চনা-অবজ্ঞা এবং শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। যাতে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল নয়, বিএনপির উদ্দেশ্য ছিল সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। আর তাই বিএনপির যে ৬০ লাখ সদস্যের নামে ফ্যাসিবাদের সময় মিথ্যা মামলা হয়েছে, তার সুবিশাল অংশ সাধারণ মানুষের পাশে থেকে, রাষ্ট্রযন্ত্রের যড়যন্ত্র ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে রুখে দাঁড়ায়। ফলে যার-যার অবস্থান থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসে বিএনপি ও সমমনা সব রাজনৈতিক দল, তথা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিসমূহ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে নির্মমভাবে হত্যা করে পুলিশ। একই দিন চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরামকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডগুলোতে সমগ্র বাংলাদেশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, বেগবান হয় আন্দোলন।

বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে ১৬ বছর ধরে আওযামী লীগের বিচারবহির্ভূত হত্যা, গায়েবি মামলা ও নৃশংস নিপীড়ন দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এর ফলস্বরূপ জাতিসংঘসহ স্বীকৃত মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নীতির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ায়। তৃণমূলের স্পন্দন ও গণমানুষের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে, অবিরাম জুলুম-অবিচারের মাঝেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য অবিচল সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকে। সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের অবদানে গড়ে ওঠা দীর্ঘদিনের ঐক্যকে ধারণ করে গণতন্ত্রের পক্ষের সব শক্তির বলিষ্ঠ ভূমিকায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে।

‘বাংলাদেশের জনগণের এ বিজয় শুধুই দেশের মালিকানা ফিরে পাওয়ার বিষয় নয়। বরং এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার প্রতিশ্রুতি, যা অসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত। ’

তিনি বলেন, বিজয়ের পেছনে রয়েছে অসংখ্য নির্যাতিত মানুষের বেদনার অপ্রকাশিত ইতিহাস, গুম হওয়া ছেলের ফেরার প্রতীক্ষায় ব্যথাতুর মায়ের ডাক, স্বামী হারানো বেদনাবিধূর স্ত্রীর অনন্ত আর্তনাদ, পঙ্গু বাবার জন্য সন্তানের হৃদয়বিদারক হাহাকার, আর কারাগারে বন্দী ভাইয়ের জন্য বোনের নীরব প্রার্থনা। তাদের সবার ১৬ বছরের রক্ত, শ্রম ও অশ্রু দিয়ে প্রতিটি পরিবারের ক্ষোভ, ক্রোধ ও অব্যক্ত বিস্ফোরণ বুকে ধারণ করে চলমান ছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। বস্তুত ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে শহীদ ৪২২ জন, ২০২৩ সাল পর্যন্ত শহীদ এক হাজার ৫৫১ জন, গুম ৪২৩ জন (সব রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মিলিয়ে প্রায় ৭০০ জন), আসামি ৬০ লাখ, এবং মামলা দেড় লাখ—এসব কেবল বিএনপির ত্যাগের পরিসংখ্যানই নয়, বরং বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পথে দলটির অবিচল সংগ্রাম ও অবদানের প্রতিফলন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে যুক্ত ছিল, গণতান্ত্রিক প্রতিটি ব্যক্তি, দল, সংগঠন ও গোষ্ঠী- তাদের সবার আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি না দিলে তা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার। সব শ্রেণি-পেশা-মতের মানুষের অংশগ্রহণকে সম্মান জানিয়ে জনগণের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সেই পথযাত্রায় ও রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে গড়ে তুলতে হবে একটি নিরাপদ ও মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিফলন ঘটবে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

নারীদের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ, নারীসহ যুবক গ্রেফতার

জাতীয়, 5 May 2023, 1065 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
তিন স্ত্রী তাকে পরিত্যাগ করে চলে যাওয়াই নারীদের প্রতি আসক্ততা থেকেই রাতের আধারে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাফখোলা গ্রামের ঘুমন্ত নারীদের নগ্ন ভিডিও ধারণ করতেন তিনি। যার লক্ষ্য ছিল অন্য নারীদের সাথে ব্লাক মেইল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও অর্থ আত্মসাৎ।

আজ ৫ মে শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন তথ্য জানান পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাফখোলা গ্রামে প্রায় দুই বছর ধরে রাতের আধারে নারীদের নগ্ন ভিডিও ধারন ও ছবি তোলার বিষয়টি জানাজানির পর স্থানীয় গ্রামবাসীরা শৈলকুপা থানায় চলতি মাসের ৪ তারিখ রাতে পর্নোগ্রাফী আইনে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। সেই মামলার আসামি জুলকার খাঁ ও জান্নাতী খাতুনকে শুক্রবার ভোর রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনবেস্টিগেশন সেল।

গ্রেফতারকৃতরা হল- উপজেলার সাফখোলা গ্রামের আদিল উদ্দিন খাঁর ছেলে জুলকার খাঁ (৩৫) এবং ওই গ্রামেরই শামসুল বিশ্বাসের কন্যা জান্নাতী খাতুন (২০)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শৈলকুপা উপজেলার সাফখোলা গ্রামে রাতের আধারে কিছু মানুষ নারীদের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করার ঘটনা সামনে আসে। বিষয়টি তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। পরে থানায় মামলার পর মোবাইলে পাওয়া সিম কার্ড থেকে সুত্র ধরে মালিক সনাক্ত করা হয়। এরপর কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ঘটনায় জড়িত জুলকার খাঁ ও জান্নাতী খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের মোবাইলে প্রায় ৫০টির মত ভিডিও পাওয়া গেছে, রয়েছে নগ্ন ছবি। তবে অন্য মোবাইলে আরো ভিডিও আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই গ্রেফতারকৃত জুলকার খাঁ ওই গ্রামের এক নারীকে ব্লাক মেইল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। তবে অন্য নারীদের বিষয়ে জানা যায়নি এবং ব্লাক মেইল করে অর্থ আত্মসাতের পরিকল্পনা তাদের ছিল যেটা জ্ঞিাসাবাদে আসামিরা বলেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ইতোপুর্বে জুলকার খাঁর তিন স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। পরে ওই গ্রামের জান্নাতীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর জান্নাতী তার বাবার নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম কার্ড তাকে দেয় ব্যবহারের জন্য।

উল্লেখ্য, সাফখোলা গ্রামে একটি বাড়িতে এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ রাতে জানালা দিয়ে নারীদের ভিডিও ধারনের সময় বাড়ির লোকজন ব্যক্তিটিকে হাতে আঘাত করে। সেসময় ওই ব্যক্তি মোবাইল ফোনিটি ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি জানাজানি হয়।