চলারপথে রিপোর্ট :
পথ হারানো বাংলাদেশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও সঠিক পথে নিয়ে এসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
আজ ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চত্বরে শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর দেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। যেসব রাজাকার, আলবদররা মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, মা-বোনদের সম্ভ্রম নষ্ট করেছে তারাই আবার বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছে। পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পরেও তারা ক্ষমতায় এসে দাপটের সঙ্গে দেশকে লুণ্ঠন করেছে। তারা ইতিহাস বিকৃত করে, বঙ্গবন্ধুর সঠিক জায়গা দিতে চায়নি।
তিনি বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও এই দেশকে সঠিক পথে নিয়ে এসেছেন। এই পথ ধরেই তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন।
অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য র,আ,ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম মাহমুদুর রহমান।
পরে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জেলার ছয় উপজেলায় ৩৩০ জন এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মধ্যে এক লাখ ১২ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মো. মুমিনুল ইসলাম চৌধুরীকে চাঁদপুর জেলা জজ আদালতে বদলি করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি রবিবার তিনি চাঁদপুরে যোগদান করেছেন।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত আন্তঃজেলা বদলিসংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘প্রশাসনিক কারণ’ দেখিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মো. মুমিনুল ইসলাম চৌধুরীকে চাঁদপুর জেলা জজ আদালতে বদলি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে মুমিনুল ইসলামের বদলিকে অভিহিত করা হয় ‘মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফার’ হিসেবে। এর অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মো. ছানাউল্যা তালুকদার তার স্থলাভিষিক্ত হবেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে বদলি এবং নাজির মো. মুমিনুল ইসলাম চৌধুরীর শাস্তির দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা দুই আদালত বর্জন করে আসছিলেন। এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার থেকে সব আদালত বর্জন শুরু করেন আইনজীবীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারও বিচারপ্রার্থী।
চলারপথে রিপোর্ট :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি উদ্ভট উদ্ভট কথা বলে। যে আইন আমাদের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করে দিয়েছে। যে আইন সংসদে পাশ করে উল্টাইয়া গেছে ওই টেক ব্যাক থিউরি থেকে এখন বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে।
গতকাল সোমবার বিকেলে আখাউড়ায় উপজেলা শ্রমিক লীগ আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি নিজেরা কিছু করতে পারে না। তারা নকল করায় ওস্তাদ। তারা আমেরিকা থেকে টেক ব্যাক থিউরি এনেছে। তারা বলছে টেক ব্যাক বাংলাদেশ। তার মানে হচ্ছে বিএনপি আমাদেরকে যে আস্তাকুড়ে রেখেছিল, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হয়েছে সব মুছে দিয়ে আমাদের সেই গর্তে ভরতে হবে। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, বাংলাদেশের সংবিধানে যেভাবে নির্বাচন হওয়ার কথা সেভাবে আগামী নির্বাচন হবে। তার এক ইঞ্চি তারতম্য হবে না।
বিএনপির টেক ব্যাক বাংলাদেশের সমালোচনা করে মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা বাংলাদেশের মেহনতী মানুষের টাকায় পদ্মা সেতু করেছি। এখন টেক ব্যাক বাংলাদেশ হলে তাহলে তো পদ্মা সেতুন ভাঙতে হবে। ওই নদীতে সেতু থাকতে পারবে না। শেখ হাসিনার আমলে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। এগুলো অন্ধকার করে দিতে হিবে। যে রাস্তাঘাট হয়েছে, সবগুলো সড়কে ড্রেন কাটতে হবে। কারণ টেক ব্যাক বাংলাদেশ।
রেলওয়ে স্টেশন সড়কে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ইবনে মাসুদ খলিফা লাকসু।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজল, শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক বশির খান, ধরখার ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি হাবিবুল্লা বাহার সাচ্ছু, সাধারণ সম্পাদক শেখ ইকবাল, উপজেলা ভ্যান শ্রমিকলীগ সভাপতি মোঃ মুসলিম উদ্দিন প্রমুখ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এমজি হাক্কানি, এম এ আজিজ, মনির হোসেন বাবুল, মো. সেলিম ভূইয়া, সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি করার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগ মনোননীত প্রার্থী ও এই আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ২৯ নভেম্বর বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে তিনি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের কাছে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এসময় তাঁর সহধর্মীনি, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও মাউশির সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম খোকন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ. এইচ মাহবুব আলমসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন অগ্রগতির বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করে যাচ্ছেন। চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের অসমাপ্ত কাজ গুলো সমাপ্ত করার জন্য তিনি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন।
র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী তার নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন। তিনি বলেন, আমি জনগণের জন্য কাজ করেছি। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
উল্লেখ্য, র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি টানা চতুর্থবারের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধা। সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ছিলেন।
২০১০ সালের ২২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট লুৎফুল হাই সাচ্চু মৃত্যুবরণ করলে উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি জাতীয় সংসদদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টানা তিনবার বিজয়ী হয়ে তিনি তার সংসদীয় এলাকায় বিপুল উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ৪০ দিনে মোট ৪২২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। অবশ্য এসব ডেঙ্গু রোগীদের বেশিরভাগই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে আসা। তবে জেলায় এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ি সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুইজন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চারজন, বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন, নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন, নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন, আখাউড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ভর্তি হয়েছেন। ২৪ ঘন্টায় চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩ জন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ি, সবচেয়ে বেশি ২২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ২১ জন ভর্তি আছে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। জেলায় মোট ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ৬৯ জন। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এর আগে গত ৪ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথম ডেঙ্গু রোগী ধরা পড়ে। আজ ১২ আগস্ট শনিবার বিকেলে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চতুর্থ তলায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নতুন একটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে। তবে, তাদের জন্য কোনো শয্যা নেই। নিজেদের আনা শয্যা মেঝেতে বিছিয়ে তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন। সব রোগীর উপরেই মশারি টানানো রয়েছে।
ওয়ার্ডটিতে ঢোকার পথে চোখে পড়ে এক যুবকের মাথায় পানি দেওয়া হচ্ছে। জানা গেলো তার নাম সোলেমান। বাড়ি সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের বাকাইল গ্রামে। মা-বাবা মিলে তার মাথায় পানি ঢালছেন। ঘিরে আছেন অন্য স্বজনরাও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাকাইল গ্রামের যুবক সেলুনকর্মী সোলেমান ৮/১০ দিন আগে ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন বলে জানান তার বাবা জয়নাল মিয়া। বাড়িতে আসার দিন থেকেই তার পেটে ব্যথা ও বমি বমি ভাব। পরীক্ষা করিয়ে ডেঙ্গু ধরা পড়লে তাকে এক সপ্তাহ আগে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
কসবার উপজেলার ধর্মনগর গ্রামের সুফিয়া বেগম নামে এক নারী জানান, তার মেয়ে নাসিমা কয়েকদিন ধরে জ¦রে আক্রান্ত। পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়লে শনিবার তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। জ¦রসহ বমির উপক্রম আছে নাসিমার।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, জেলার সব কয়টি সরকারি হাসপাতালেই প্রতিদিন নতুন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তাদের চিকিৎসা বিষয়ে সার্বিক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের বেশিরভাগই ঢাকা থেকে আসা বলে জানান তিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনিই প্রথম বাঙালি, যিনি সর্বপ্রথম পাশ্চাত্যে উপমহাদেশের রাগসঙ্গীতকে পরিচিত করান।
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৮৬২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন খ্যাতনামা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ও সরোদবিশারদ। বাবা সঙ্গীতজ্ঞ সবদর হোসেন খাঁ ওরফে সদু খাঁ, মা সুন্দরী বেগম। ছোটবেলায় তার বড় ভাই ফকির (তাপস) আফতাব উদ্দিন খাঁর কাছে সঙ্গীতের হাতেখড়ি। সুরের সন্ধানে মাত্র ১০ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক যাত্রাদলে যোগ দিয়ে ঘুরে বেড়ান গ্রামে গ্রামে। ওই সময় তিনি জারি-সারি, বাউল, ভাটিয়ালি, কীর্তন, পাঁচালি প্রভৃতি গানের সাথে পরিচিত হন। পরে কলকাতায় গিয়ে প্রখ্যাত সঙ্গীত সাধক গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য ওরফে নুলো গোপালের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বাঁশি, পিকলু, সেতার, ম্যান্ডোলিন, বেঞ্জো ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখেন সঙ্গীত পরিচালক অমৃত লাল দত্ত ওরফে হাবু দত্তের কাছে। সেই সাথে তিনি লবো সাহেব নামে এক গোয়ানিজ ব্যান্ডমাস্টারের কাছে পাশ্চাত্য রীতিতে এবং বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ অমর দাসের কাছে দেশীয় পদ্ধতিতে বেহালা শেখেন। এ ছাড়া হাজারী ওস্তাদের কাছে শেখেন মৃদঙ্গ ও তবলা। ১৯১৮ সালের পর তিনি ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘খাঁ সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করে। আলাউদ্দিন খাঁ ১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের মাইহারে মদিনা ভবনে মারা যান। রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতে তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জন্ম কিংবা মৃত্যু কোনো দিবসই পালন করা হয় না। অপর দিকে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে নামে-বেনামে বেদখল হয়ে যাচ্ছে জমিজমা, বাড়িঘর, নিজ হাতে তৈরি করা মসজিদের জায়গা ও পুকুর। সবমিলিয়ে নিজ জন্মভূমিতেই অবহেলিত উপমহাদেশের সঙ্গীতজগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ।