চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে যাত্রীবাহী ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রবিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার অরুয়াইল বাজার এলাকায় তিতাস নদীতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ডাকাতরা যাত্রীদের কাছ থেকে মুঠোফোন সেট, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
নৌকার যাত্রী ও ভুক্তভোগী মোকাদ্দেস এবং হাবিব মিয়া জানান, রবিবার রাত ৮টার দিকে অরুয়াইল ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের কাশেম মিয়ার যাত্রীবাহী ট্রলারটি ১০-১২ জন যাত্রী নিয়ে উপজেলার অরুয়াইল বাজার নৌ-ঘাট থেকে বারপাইকা গ্রামে যাচ্ছিল। ট্রলারটি তিতাস নদী দিয়ে উপজেলার পাকশিমুল ও বারপাইকা এলাকায় আসার পর আরেকটি ট্রলারে করে ৮-১০ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাতদল হামলা চালায়। যাত্রীবাহী ট্রলারের কয়েকজনকে মারধরও করে ডাকাতেরা। আহতদের মধ্যে কয়েকজন জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
ট্রলারের মালিক মো. কাশেম মিয়া বলেন, ট্রলারটি অরুয়াইল স্পিডবোট ঘাট থেকে ছেড়ে পাকশিমুল ও বারপাইকা গ্রামের মাঝামাঝি যাওয়ার পর নৌকায় করে একদল ডাকাত আমাদের নৌকাটি আক্রমণ করে যাত্রীদের মারধর করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মোবাইল নিয়ে যায়। যারা চিৎকার দিতে চাইছে তাদেরকে বেশী করে মারধর করে করেছে।
সরাইল থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) ও অরুয়াইল বিটের বিট কর্মকর্তা নুরুল করিম বলেন, আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আহতদের সাথে কথা বলেছেন।
অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ডাকাতরা ডাকাতি করে সব নিয়ে যায় তাহলে আমরা যাবো কোথায়? অরুয়াইল বাজারে পুলিশ ফাঁড়ি থাকলে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটতো না।
চলারপথে রিপোর্ট :
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার বাদ এশা পরমানন্দপুর ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে আজ ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত ৩টায় রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার বলেন, ‘বাবা দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে এক সপ্তাহ আগে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিলেন। শুক্রবার রাত ৩টা ২ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।’
এর আগে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার প্রথম জানাযা শনিবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়। পরে সড়কপথে মরদেহ সরাইল উপজেলা সদরে আনা হয়। শনিবার বাদ আসর সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হয় অরুয়াইল আব্দুস সাত্তার ডিগ্রি কলেজ মাঠে। বাদ মাগরিব তৃতীয় জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় পরমানন্দপুর গ্রামে। শনিবার বাদ এশা পরমানন্দপুর ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
এ দিকে সরাইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, নাসিরনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. রাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা প্রমুখ। এ সময় সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদ উপস্থিত ছিলেন। তবে জানাজায় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতা উপস্থিত ছিলেন না।
উকিল আব্দুস সাত্তারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার।
জানা যায়, আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতিও ছিলেন।
আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ২ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন এ নেতা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ৫ প্রতিষ্ঠানকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল রবিবার বিকেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান উপজেলার চুন্টা ও ভুইশ্বর বাজারে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা আদায় করেন।
এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান জানান, পবিত্র রমজান মাসে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার চুন্টা ও ভুইশ্বর বাজারে অভিযান চালিয়ে চুন্টা বাজারে নামহীন, অস্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকর শিশু খাদ্য বিক্রয়ের অপরাধে মেসার্স জয় দূর্গা স্টোরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি শিশু খাদ্যগুলো জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়।
এছাড়াও মেয়াদোর্ত্তীন ঔষধ বিক্রয়, দোকানে মূল্য তালিকা না থাকা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি উৎপাদন ও বিক্রয়ের অপরাধে ভুইশ্বর ও চুন্টা বাজারের আরো ৪টি দোকানকে ১১ জরিমানা করা হয়। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
হার্ট অ্যাটাকে সরাইল সার্কেল অফিসে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল (ড্রাইভার) মো. জাহেদুল আলমের মৃত্যু হয়েছে। ২৮ আগস্ট সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
জাহেদুল চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পূর্ববড়িয়া গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে। ৬ বছর আগে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তার সাড়ে চার বছর ও আড়াই বছরের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন জাহেদুল আলম। এরপর তাকে দ্রুত ঘাটুরা মেডিকেলে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে বিকেলে জাহেদুলের মরদেহ গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে শিক্ষার্থীদের মাঝে দুর্নীতি বিরোধী চেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে সরাইল উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১০ জুলাই সোমবার স্থানীয় অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বির্তক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহম্মদ সরওয়ার উদ্দিন।
সরাইল উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোঃ আইয়ুব খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার সহিদ খালিদ জামিল খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরজু মিয়া, সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার, সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক মমিন হোসেন, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারন সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা ইসমত আলী ও সাংবাদিক সফিকুর রহমান।
প্রতিযোগীতায় উপজেলার সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়, শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়, শাহজাদাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও পাকশিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, সঞ্জীব কুমার দেবনাথ, প্রধান শিক্ষক শেখ সাদী।
প্রতিযোগিতায় অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন ও সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় রানারআপ হয়। অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দলের প্রধান নাদিরা আক্তার শ্রেষ্ঠ বক্তার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতা শেষে প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন লঙ্ঘনের দায়ে অবৈধ ইটভাটার এক মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় ইট ভাটার আগুন নিভিয়ে দেওয়া হয়।
১৮ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ‘ভিআইবি ব্রিকস’ নামে অবৈধ ইটভাটায় এ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক রাকিবুল হাসান, সরাইল ফায়ার সার্ভিস, থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। অভিযুক্ত ইটভাটার মালিক হলেন উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মো. আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসাইন গণমাধ্যমকে জানান, অভিযানে দেখা গেছে ভিআইবি ব্রিকসের কর্তৃপক্ষ পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং লাইসেন্স দেখাতে পারেনি। এ কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩-এর ৪ ধারার লঙ্ঘনের দায়ে ১৪ ধারায় এই মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।তিনি আরো বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।