৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি রাখতে পারবে না কেউ : ভূমিমন্ত্রী

জাতীয়, 13 September 2023, 933 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ব্যক্তি পর্যায়ে ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি ভোগ-দখলে রাখা যাবে না। এর বেশি থাকলে সরকারের কাছে ঘোষণা দিতে হবে। সরকার যথাযথ ক্ষতিপুরণ প্রদান করে বাড়তি জমি খাস করবে। কোন কোম্পানি বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে জমির পরিমাণের সিলিং থাকবে না। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা, জালিয়াতির দায়ে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। আজ ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস, যুগ্ম সচিব মো. খলিলুর রহমান প্রমুখ।

banner

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে সবার সম্মতিক্রমে ওই আইনটি পাস হয়। বেশকিছুদিন ধরেই ভূমি মন্ত্রণালয়ের আইনটি নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। ভূমিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে স্বার্থান্বেষী, ভূমিদস্যু, জালিয়াতচক্র, কোটারি গ্রুপ পরোক্ষভাবে এই আইনের বিরোধিতা করেছে। সরকারের সম্মতি ও ভূমিমন্ত্রীর শক্ত অবস্থানের কারণে অবশেষে আইনটি প্রণয়ন হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভূমিমন্ত্রী বলেন, “আইনটি নিয়ে কাজ করার সময় অনেকেই তাকে বলেছেন, ‘এই আইনে হাত দিলে হাত পুড়েও যেতে পারে। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার হওয়ার পর অবশেষে আইনটি বাস্তবে রূপ নিয়েছে। দেশের মানুষের জন্য, দলিল যার, জমি তার– এটি কার্যকর করার জন্য এই আইনটি খুব প্রয়োজন ছিলো। এটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিরাট একটি সাফল্য।”

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘কিভাবে মানুষকে ভূমির হয়রানি, ভোগান্তি থেকে রেহাই দেওয়া যায়– এই চিন্তা মাথায় রেখেই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। ভূমি নিয়ে এখন কেউ জবরদস্তি করলে, কোনো অন্যায় করলে তার বিচার হবে ফৌজদারি আইনে। হোল্ডিং কোম্পানি হোক আর যেই হোক বেআইনিভাবে কেউ কোন জমি দখল, বেহাত করতে পারবে না। আগে ওইসব অন্যায়কারীদের বিচারের মুখোমুখি করতে কোনো আইন ছিল না, এখন হয়েছে।’

মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, ‘এই আইনের আওতায় ব্যক্তি পর্যায়ে কোনোভাবেই ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি নিজ নামে রাখেতে পারবে না। উত্তরাধিকার, দান, হেবা বা অন্য যেকোনো প্রক্রিয়ায় পাওয়া জমি হলেও ৬০ বিঘার বেশি নিজের নামে রাখতে পারবে না। যাদের নামে এর চেয়ে বেশি জমি থাকবে তাদেরকে অবশ্যই সরকারের কাছে বাড়তি জমির ঘোষণা দিতে হবে। সরকার ওইসব এলাকার মৌজা রেট অনুযায়ি ক্ষতিপুরণ দিয়ে ওই জমি খাস করে নেবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইনটিতে ভূমি সংক্রান্ত আট ধরনের অপরাধের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতারণা, জালিয়াতির ক্ষেত্রে সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। পুরো আইন ফৌজদারি আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শান্তিতে রাখতে এ ধরনের একটি যুযোপযোগী আইন করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ডেভেলপাররা কোনো কথা নেই অন্যের জমিতে মাটি ফেলা শুরু করে– এটা এখন ফৌজদারি অপরাধ হবে। এ ক্ষেত্রে আগে তাদেরকে প্রতিরোধ করা কঠিন ছিল।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ব্যক্তিপর্যায়ে একশ বিঘা কৃষিজমির মালিকানার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরশাদ সরকারের আমলে একটি আদেশ জারি করে ব্যক্তি পর্যায়ে ৬০ বিঘা জমির মালিকানা কথা বলা হয়। এরশাদ সরকারের ওই আদেশটিই এবার আইনে পরিণত করা হলো।’

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রতিনিধিদলের আগরতলায় গমন

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 1 September 2023, 1747 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা গেছেন বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের নেতৃত্বে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রতিনিধি দল।

banner

আজ ১ সেপ্টম্বর শুক্রবার দুপুরে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলটি আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে আগরতলায় গমন করেন। আগরতলা প্রেসক্লাবের আমন্ত্রনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আগরতলায় যান। আগামীকাল শনিবার বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাব ও আগরতলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মধ্যে একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের নেতৃত্বে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ স্থলবন্দরে পৌছলে জিরো পয়েন্টে তাদেরকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান আগরতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত দে। এ সময় আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারি হাই কমিশনের প্রথম সচিব আল-আমিন সীমান্তের জিরো পয়েন্টে সাংবাদিক প্রতিনিধিদলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সৌহার্দপূর্ন সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আগরতলার সাংবাদিক বন্ধুদের সাথে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচে অংশ নিবো। আগরতলায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এলাকা ঘুরে দেখবো। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথেও আলোচনা করবো।

আগামী চার সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সাংবাদিকগন দেশে ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

মুক্তিযুদ্ধে অভিনেতা ফারুকের ভূমিকা অবিস্মরণীয়: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 31 May 2023, 1151 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
মো: আব্দুর রাজ্জাক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন।

banner

ফারুকের মৃত্যুতে বুধবার সংসদে শোকপ্রস্তাবের আলোচনায় যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ফারুক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে তিনি যথার্থ সাহসিকতার সঙ্গে অবদান রেখেছেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা কখনই ভোলার নয়। তার মৃত্যু আমাদের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি।

তিনি বলেন, ফারুক শুধু রাজনীতিবিদ হিসেবেই অবদান রাখেননি, তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও অবদান রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মীরা আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়েছেন এবং এর নেতাকর্মীদের সাহস জুগিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হচ্ছিল এবং সবাই তার নাম উচ্চারণ করতে সাহস পাচ্ছিল না, তখন সংস্কৃতিকর্মীরা এগিয়ে আসেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (ফারুক) বঙ্গবন্ধুর নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠন ও দেশাত্মবোধক গানকে সামনে নিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন। সুতরাং তিনি এ দেশের জন্য বিরাট অবদান রেখেছেন।

এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনের (বাজেট অধিবেশন) শুরুতে সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

এ নিয়ে আলোচনা শেষে বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।

সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আসাদুজ্জামান নূর, মেহের আফরোজ ও হাবিব হাসান, বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আলোচনায় যোগ দেন।

আকবর হোসেন পাঠান গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান।

এছাড়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির সংসদ সদস্য কবির হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঐক্য-ন্যাপের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্য, প্রখ্যাত লেখক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকিয়া আফজাল রহমান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির মা রহিমা ওয়াদুদ ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে সংসদে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।

সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে এবং দেশ-বিদেশে দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে সংসদ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

পরে এক মিনিট নীরবতা পালন ও রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাফিজ রুহুল আমিন মাদানী।

প্রথা অনুযায়ী, বর্তমান সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবটি গৃহীত হলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সংসদের দিনের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।

গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা হারিয়ে যাচ্ছে

জাতীয়, বিনোদন, 22 January 2024, 1367 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আধুনিকতার স্পর্শ আর সভ্যতার ক্রমবিকাশে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রযুক্তির দাপটে অস্তিত্ব হারিয়েছে অধিকাংশ খেলা। একটা সময় গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত শিশু ও যুবকরা পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় অভ্যস্থ ছিল। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা অবসরে দলবেঁধে খেলতো নানা প্রকারের খেলা। এসব খেলা বাড়ির উঠান থেকে শুরু করে রাস্তার আনাচে-কানাচে, খোলা মাঠে কম পরিসরেই খেলা যেত।

banner

কিন্তু বর্তমান সময়ে মাঠ, বিল-ঝিল হারিয়ে যাওয়া, আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া ও প্রযুক্তির বিকাশে মহাকালের ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে জনপ্রিয় এসব গ্রামীণ খেলাধুলা। এখানকার দিনে শহরের শিশুরা ঘরের কোণে বসে বিভিন্ন ডিভাইস নিয়ে পড়ে থাকে। যার কারণে তাদের মেধার বিকাশও সঠিকভাবে হয় না।

গ্রামবাংলার এক সময়ের জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে ছিল: হা-ডু-ডু, কাবাডি, ঘুড়ি খেলা, দাঁড়িয়াবান্ধা, ডাংগুলি, গোল্লাছুট, কুস্তি, গোশত চুরি, কুতকুত, চোর-পুলিশ, হাড়িভাঙা, ইচিং বিচিং, ওপেন টু বায়োস্কোপ, কড়ি খেলা, সাপ খেলা, কানামাছি, লাঠি খেলা, ষাড়ের লড়াই, বউ-ছি, বলী খেলা, টোপাভাতি, নোনতা খেলা, নৌকা বাইচ, লুডু খেলা, রুমাল চুড়ি, পুতুল বৌ, ফুল টোক্কা, বাঘ ছাগল, বরফ পানি, মার্বেল, মোরগ লড়াই, লাটিম, লুডু, ষোল গুটি, এক্কা দোক্কা, সাত পাতা, বটি বটি, দাপ্পা, রস-কস, চারগুটি, চেয়ার সিটিংসহ আরো হাজারো প্রকার খেলা। বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের জনপ্রিয় এসব গ্রামীণ খেলাধুলা আজ প্রায় বিলুপ্ত।

গ্রামীণ এসব খেলাধুলা হলো বিনোদনমূলক, স্বাস্থ্য সচেতনমূলক ও প্রতিভা বিকাশের অন্যতম। যা আমাদের আদি ক্রীড়া সংস্কৃতি। এসব খেলাধুলা এক সময় আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করতো। বর্তমানে গ্রামীণ খেলাগুলো বিলুপ্ত হতে হতে অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্তমান প্রযুক্তির সুবিধা ও এর ব্যবহারে এগিয়ে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। তখন কেন পিছিয়ে থাকবে আমাদের প্রাণের খেলাগুলো? আমাদের সবার একটু চেষ্টাই পারে নতুন প্রজন্মকে এসব খেলার সঙ্গে পরিচিত করাতে। যা আমাদের ইতিহাস আর শিকড়কে টিকিয়ে রাখতে শক্তিশালী একটা মাধ্যম। সরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে এসব খেলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যায়। স্কুলে শিশুদের এসব খেলার সঙ্গে পরিচয় করানোর সুযোগ আছে। চাইলেই বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানো যায় এসব খেলাধুলায় যুক্ত করে।

অতীতের সময়ে প্রতিবছর সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাগুলোতে নানা ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা হতো। বর্তমানে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোনো খেলার মাঠও নেই। ফলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশ ঘটছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়ত অচিরেই গ্রামীণ খেলাধুলা আমাদের সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাবে। পরিণত হবে রূপকথার গল্পে।

এখন, মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে প্রজন্মকে রক্ষা ও গ্রামীণ খেলাকে বাঁচাতে এদেশের সচেতন ব্যক্তিদের এগিয়ে এসে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে। এরসঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ বৃদ্ধির মাধ্যমেই কেবল অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

জাতীয়, 14 June 2025, 153 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাজ্যে চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ ১৪ জুন শনিবার সকালে দেশে ফেরেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি আজ ১৪ জুন শনিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

banner

এর আগে প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী ফ্লাইটটি শুক্রবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

ড. ইউনূস গতকাল শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে বৈঠক করেন। এছাড়া তিনি সফরকালে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সাথেও একান্ত বৈঠকে মিলিত হন।

এ সফরে অধ্যাপক ইউনূস ‘কিং চার্লস তৃতীয় হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ সম্মাননা গ্রহণ করেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

চার দিনের সরকারি সফরে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমেন্সের স্পিকার ছাড়াও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাথে বৈঠকে মিলিত হন এবং বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

নিয়োগ পরীক্ষায় ফি’র কমিশন ও ভ্যাট প্রার্থীকেই দিতে হবে

জাতীয়, 24 August 2023, 973 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
সরকারি জনবল নিয়োগে পরীক্ষার নির্ধারিত ফির ওপর সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন পাবে মোবাইল অপারেটর টেলিটক। একই সঙ্গে এ কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হবে। কমিশন এবং এ ভ্যাট চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে কাটা হবে। আজ ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।

banner

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনবল নিয়োগে পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু ওই প্রজ্ঞাপনে কমিশন চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান না চাকরিপ্রার্থী– কার কাছ থেকে কাটা হবে স্পষ্ট করা হয়নি। তাতে ভ্যাটের কথাও উল্লেখ ছিল না। নতুন প্রজ্ঞাপনে সেটি স্পষ্ট করা হলো। তবে পরীক্ষা ফি আগের মতোই রাখা হয়েছে।

নবম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব গ্রেডের (নন-ক্যাডার) নিয়োগ পরীক্ষার ফি ৬০০ টাকা, দশম গ্রেডে ৫০০ টাকা, ১১তম এবং ১২তম গ্রেডে ৩০০ টাকা, ১৩তম থেকে ১৬তম গ্রেডে ২০০ টাকা এবং ১৭তম থেকে ২০তম গ্রেডে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা রয়েছে।

নতুন প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, নিয়োগ কর্তৃপক্ষ টেলিটকের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষা ফি নিতে পারবে। তারা পরীক্ষা ফি বাবদ সংগৃহীত অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে দিতে পারবে টেলিটককে। একই সঙ্গে কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা যাবে।

এ প্রসঙ্গে উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, ১৩তম থেকে ১৬তম গ্রেডে পরীক্ষার ফি বাবদ নির্ধারিত ২০০ টাকার সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ অর্থাৎ ২০ টাকা পর্যন্ত টেলিটককে কমিশন হিসেবে প্রদান করা যাবে এবং ওই ২০ টাকার ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩ টাকা ভ্যাট হিসেবে আদায় করা যাবে। অর্থাৎ পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে সর্বোচ্চ আদায়যোগ্য টাকার পরিমাণ হবে ২২৩ টাকা।

টেলিটকের মাধ্যমে পরীক্ষা ফি বাবদ অর্থ নেওয়ার পরবর্তী তিন কর্ম-দিবসের মধ্যে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে জমা দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠান দ্রুত চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা করবে, তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সে অর্থ নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে জমা করতে পারবে।

অনলাইন আবেদন গ্রহণ না করা হলে পরীক্ষা ফি বাবদ অর্থ চালানের মাধ্যমে নিতে হবে। তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারে অর্থ নিতে পারবে।

পরীক্ষা ফি বাবদ আদায় করা অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৩ ডিজিট প্রাতিষ্ঠানিক কোড এবং ৭ ডিজিট নতুন অর্থনৈতিক কোড-১৪২২৩২৬ এ অটোমেটেড চালানে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল চালানে (টিআর ফরম) পরীক্ষা ফি জমা করতে চাইলে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তা জমা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।