চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ১০ কেজি গাঁজাসহ ৪ নারী মাদক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে নবীনগর থানা পুলিশ।
১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে উপজেলার শিবপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আক্কাস আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ শিবপুর সিএনজি স্টেশনে রাস্তার উপর চেক পোষ্টে ডিউটি করার সময় বিশেষ অভিযানে তাদের গাঁজাসহ আটক করে।
আটককৃত আসামিরা হচ্ছে, কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানার উত্তর কান্দা গ্রামের মো.রুবেল মিয়ার স্ত্রী মোসাঃ বৃষ্টি আক্তার প্রঃ সনিয়া (১৯) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার চর চন্নিপুর গ্রামের সোহেল ওরফে সোহাগের স্ত্রী, সিমা আক্তার (২০), আখাউড়া উপজেলার রাজাপুর (আশ্রয়ন প্রকল্প) গ্রামের মো.শাকিল ওরফে রুবেলের মেয়ে মোসাঃ তামান্না আক্তার (১৪) এবং মো.আবুল কাশেমের মেয়ে মোসাঃ সাদিয়া আক্তার (১৭)।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুব আলম জানান, তাদের হেফাজত হতে ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার পূর্বক নবীনগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করে আজ ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুবিন্যস্থ বেণি জুড়ে গাছে দুলছে আশ্চর্য সুন্দর হিজল ফুল। দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের হাওড় বেষ্টিত ভাটির অঞ্চলে এ ফুলের দেখা মিলে, এখন সেই সময়। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরে ফিরেই এসেছে হিজলের কথা। কবির ভাষায়- “চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম/চিতা জ্বলে”। একই ভাবে হিজল বনে ঘুঘু দেখে উচ্ছ্বসিত কবি লিখেছেন- “পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে”। অবশ্য কবিতার বাইরে বাস্তবে হিজল গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গণসংগীত শিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাস সুরে সুরে বলেছেন- “হাওড়ের পানি নাই রে হেথায়, নাই রে তাজা মাছ/বিলের বুকে ডালা মেলা, নাই রে হিজল গাছ”। অর্থাৎ দিন দিন হিজল গাছের সংখ্যা কমছে। বর্তমানে গাছটি প্রায় দুর্লভ। এ গাছটি সংস্কৃত নাম নিচুল, এ ছাড়াও জলন্ত ও নন্দীক্রান্ত নামেও পরিচিত। হিজল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম- Barringtonia acutangula। এটি Lecythidaceae পরিবারের সদস্য। এটি বাংলাদেশের ভাটির অঞ্চলে বহুকাল ধরে টিকে থাকলেও এর আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং ভারত। গাছ মাঝারি আকারের, উচ্চতা ৫-১০ মিটার পর্যন্ত, এর ডালপালা থাকে ছড়ানো, বাকল যথেষ্ট পুরো, ঘনছাই রঙের হয়ে থাকে, বীজ থেকে গাছ হয়। খাল, বিল, নদী, ডোবা, হাওর ইত্যাদি জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। এটি পানির নিচে কয়েক মাস জীবিত থাকতে পারে। এ গাছের মূল আকর্ষণ লাল ও গোলাপি রঙের ছোট ছোট ফুল, ফুলের আছে মিষ্টি ঘ্রাণ। উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মার বর্ণনা মতে- “ফুলের মঞ্জুরী ৬-১৫ ইঞ্চি লম্বা। বহুপুষ্পিক ফুলের বৈশিষ্ট্যে হিজল অনন্য”।
হিজল বীজের অনেক ঔষুধি গুনাগুন আছে- মাথা ও কপাল ব্যথা হলে হিজল বীজ শুকিয়ে গুড়া করে দুই চামচ পরিমাণ এক কাপ দুধসহ সকালে এবং বিকেলে খেলে মাথা ব্যাথা কমে যায়। পেটে গ্যাস হলে, ঢেকুর উঠলে, পেট ফাঁপা হলে হিজল বীজ চূর্ণ করে গরম মসলা সহ খেলে কিছুক্ষনের মধ্যে সেই সমস্যা চলে যায়। চোখ উঠলে, চোখ লাল হলে, চুলকায়, পানি পড়ে। সেই সময় বীজ নিয়ে পাথরে ঘসে চন্দনের মত চোখের চারি পাশে লাগিয়ে দিলে কিছুক্ষণ রাখার পর ছোট নেকড়া ভিজিয়ে মুছে দিলে যন্ত্রণা কমে যায়। হিজল ফুল গভীর রাতে ফুটে, সকাল হতে না হতেই ঝড়ে যায়। হিজল সাধারণত জলমগ্ন বা জলসংলগ্ন অঞ্চলে ভাল হয়। তাই নবীনগরের ভাটির অঞ্চলের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে টিকে আছে হিজল গাছ। নদী সংলগ্ন গ্রাম গুলোতে নৌকা দিয়ে গেলে চোখে পড়ে অপূর্ব হিজল গাছের সারি কারন- হিজলের আবাস নিচু এলাকা/ হাওড় অঞ্চল।
নবীনগরের মত দেশের হাওড় বেষ্টিত সাত জেলার ৪০টি উপজেলায় কম বেশি প্রায় প্রতি গ্রামেই দেখা যায় হিজল। নিচু জলাঅঞ্চলে মাছের অভয়রাণ্য তৈরিতে এই গাছের ডাল ব্যবহৃত হয়। ভরা বর্ষায় নবীনগরের ভাটি অঞ্চলে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার সময় নৌকা থেকে চারপাশে তাকালে থৈ থৈ জলের মধ্যে দেখা যায় হিজল গাছ। যেন ঘাটে নৌকা লাগতেই স্বাগত জানাচ্ছে হিজলের ফুল। স্থানীয়দের খুব চেনা এ গাছটি শুকনো মৌসুমেও দিব্যি থাকে। এমনকি রাজধানী শহরের একাধিক উদ্যানেও দেখা যায় হিজল গাছ। বর্তমানে কিছু সরকারি বেসরকারি প্র্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ গাছ লাগানো হচ্ছে। হিজলের প্রাণশক্তি অনেক বেশি, দীর্ঘজীবী গাছ, বিধ্বংসী বন্যা কিংবা তীব্র খরাও একে কুপোকাত করতে পারে না। জল এবং স্থল দুই জায়গাতেই এরা সাবলীল, এদের এই আলাদা বৈশিষ্ট্য ও অভিযোজনের কারনে হিজল সবার দৃষ্টি কাড়ে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের নারুই গ্রাম থেকে জামায়াত ইসলামী ও শিবিরের ৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ৩১ মে শুক্রবার সকাল ১১টায় ওই এলাকার আব্দুর রশিদের বাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো: নবীনগর উপজেলার আব্দুর রশিদ (৬৫), বাদল মিয়া (৪৮), শাহিন ইসলাম (২৪), সদর উপজেলার ডা. আবু হানিফ (৬৫), সাহেদ আলম (২১), বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আলম (৫৩) ও আশুগঞ্জ উপজেলার মো. মামুন মিয়া (৩৭)।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, এলাকায় নাশকতা সৃষ্টি ও আসন্ন নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য উপজেলার নারুই গ্রামের রশিদ মিয়ার বাড়িতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করা জামায়াত-শিবিরের নেতারা একত্রিত হয়ে গোপন বৈঠক করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই গ্রামে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামায়েত ইসলামী ও শিবিরের ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে কয়েকজন পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে বৈঠকর ব্যানার, নির্বাচন বিরোধী লিফলেট জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নবীনগর থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মামুনুল হকসহ সকল কারাবন্দী আলেমদের মুক্তির দাবিতে নবীনগরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৪ আগস্ট শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থানা গেইটের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে মুফতি বেলায়েতুল্লাহ কাসেমীর সভাপতিত্বে ও মাওলানা মেহেদী হাসান এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম নবীনগর উপজেলার সভাপতি মাওলানা আমিরুল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল কাঈয়্যুম ফারুকী, নবীনগর দাওয়াতুল হক পরিষদের সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা মাকবুল হোসাইন, মাওলানা ফোরকান উদ্দিন নবীপুরী, হাফেজ মাওলানা সানাউল্লাহ, মাওলানা মুমিনুল হক ভূইয়া, মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা মোকতার হোসাইন আমিনী, মাওলানা ফরহাদ হোসাইন ফরিদী, মাওলানা আব্দুর রউফ, হাফেজ সাদ-উল্লাহ, মুফতি আবু সুফিয়ান, মাওলানা মোফাজ্জল, হাফেজ রাকিবুল ইসলাম তাজ, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, মোঃ নিয়ামুল হুদা, মাওলানা কাউছার, হাফেজ কামরুল ইসলাম, মাওলানা রবিউল্লাহ, মাওলানা খালিদ সায়ফুল্লাহ প্রমুখ।
বক্তারা আল্লামা মামুনুল হক সহ মাজলুম কারাবন্দি আলেমদের মুক্তির দাবি সহ আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে পথচারী হাফেজ রেজাউল করিমকে নির্মমভাবে পিঠিয়ে হত্যার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানান, অভিলম্বে অপরাধীদের কে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে বিধিনিষেধ অমান্য করে কৃষিজমির মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। নবীনগর উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় ফসলি জমির এসব মাটি দিচ্ছেন সাতজনের ওই সিন্ডিকেট। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য কৃষি জমির মাটি কাটার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িঘর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবনির্মিত সড়ক দিয়ে সারিবদ্ধভাবে জমির মাটি নিয়ে যাচ্ছে বেশ কয়েকটি ট্রাক্টর। নিয়মিত এ সড়ক দিয়ে ট্রাক্টর চলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যান চলাচল কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের পাশের কৃষি জমি থেকে বেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে ট্রাক্টরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আশপাশের অন্তত ছয়টি ইট ভাটায়। প্রতিটি জমি থেকে ৩ থেকে পাঁচ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রকাশ্যে শত শত একর কৃষি জমি থেকে মাটি পুড়ানো হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সালাম, সুমন, জাহান, মক্কা, প্রভাতি ও তিতাস নামক ইটভাটায় হাসান, আনিস, শাহ আলম, হাকিম, মোবারক, সৈয়দ ও মজিদ মাটি সরবরাহ করছেন।
জমিতে বেকু দিয়ে মাটি উত্তোলনের সময় দুজন ট্রাক্টরচালক জানান, আমরা মাটি নিচ্ছি প্রতিদিন ৮০০ টাকা বেতনে। মাটি জমির মালিক থেকে কিনে মক্কা ও তিতাস নামের দুটি ইটভাটায় বিক্রি করেছেন মজিদ ও শাহ আলম।
আলফাজ নামের এক ট্রাক্টর চালক জানান, আমরা শুধু মাটি পরিবহন করছি। কৃষিজমি থেকে মাটি কিনেছেন হাসান।
মজিদ নামে ইটভাটায় মাটি সরবরাহকারী বলেন, মাটিতো অনেকে কাটছেন। তাতে কোনো সমস্যা নাই। আমরা মাটি কিনেছি জমির মালিক থেকে।
হাসান নামের আরেক মাটি সরবরাহকারী বলেন, আমিও কিছু কেটেছি। অনেকেই তো ইটভাটায় মাটি দিচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, আমরা ইটভাটায় মাটি দিতে একজনকে কন্ট্রাক্ট দিয়েছি। সে মাটি দিচ্ছে।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অ্যাসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বলেন, মাটি কেটে টপ সয়েল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা অত্যন্ত খারাপ কাজ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রশাসন থেকে অভিযান পরিচালনা করে ৭-৮টি বেকু জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন করা উচিৎ।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে জোয়ারের পানিতে ডুবে নাহিদ মিয়া (৪) নামে এক শিশু মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু নাহিদ ওই গ্রামের শহিনুর আলমের ছেলে।
নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নাহিদসহ আরও কয়েকজন শিশু বাড়ির পূর্বপাশের একটি জমিতে বর্ষার জোয়ারের পানিতে গোসলে করতে যায়। গোসল শেষে অন্য শিশুরা বাড়িতে চলে আসলেও নাহিদ আসেনি। এর কিছুক্ষণ পর নাহিদের মরদেহ জোয়ারের পানিতে ভেসে উঠলে স্থানীয়রা দেখতে পায়।
পুলিশের কর্মকর্তা আরো বলেন, শিশুর মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।