চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর পূর্বাঞ্চলে নবীনগর টু রাধিকা সড়ক ও বিটঘর টু রসুলপুর মহেশ রোডে সিএনজি ভাড়া অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
জানা যায়, মহেশ রোড ও রাধিকা সড়ক পূর্বে বেহাল দশা ছিল, তাই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতো যাত্রীদের কাছ থেকে। বর্তমানে রাধিকা সড়ক ও মহেশ রোড এর রাস্তার কাজ হয়েছে, যার ফলে অল্প সময়ে জেলা সদরে ও নবীনগর সদরে যাতায়েত করা যায়।বর্তমানে এই নতুন সড়কে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অনিচ্ছুক যাত্রীরা। ভাড়া নিয়ে ড্রাইভার আর যাত্রীদের মধ্যে তর্কবিতর্ক যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। ড্রাইভার আর যাত্রীদের মধ্যে তর্ক বিতর্কই থেমে যায় না, হাতাহাতি— মারামারির ঘটনাও অনেক সময় হয়ে থাকে এই অতিরিক্ত ভাড়া কে কেন্দ্র করে। তাই অতিবিলম্ব এই রাধিকা সড়কে ও মহেশ রোডের যাতায়াতের জন্য বিটঘর, শিবপুর, ব্রাহ্মণহাতা, কুড়িঘর স্টেশনের নতুন ভাড়া নির্ধারণ করিয়া দিতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।
বিটঘর ইউনিয়নের গুড়িগ্রামের মোশারফ হোসেন বলেন, আমি বিটঘর পুকুরপাড় সিএনজি স্টেশন থেকে ৪৫ বা ৫০ মিনিটে নতুন রাধিকা সড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যায় কিন্তু ভাড়া দিতে হয়েছে সেই চারগাছ—তিললাখপীর সড়ক হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই ঘন্টা সময় লাগার ১৩০ টাকা ভাড়া। ৪৫/৫০ মিনিটে আসা ভাড়া কিভাবে ১৩০ টাকা নিল, তা আমার বোধগম্য নয়। আমি মেনে নিতে পারছি না, তবুও ১৩০ টাকা ভাড়া দিলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা যাত্রী বলেন, আগে বিটঘর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতাম,তখন রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়া নিয়েছে ১৩০ টাকা। এখন মহেশ রোড ও রাধিকা রোড এর রাস্তার কাজ হয়েছে। এখন বিটঘর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে সময় লাগে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট কিন্তু ভাড়া কমানো হয়নি পূর্বের যে বাড়া নির্ধারন ছিল, সেই ভাড়া নিচ্ছে তারা। কখনো কখনো অতিরিক্ত টাকাও দিতে হচ্ছে তাদের। এই লাগামহীন ভাড়া আদায়ের, যেন দেখার কেউ নাই। এই রোডে সঠিক তদারকির অভাব বলে দাবি করছি আমরা। তাই এই রোডের সিএনজি ভাড়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বিটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী জাফর দস্তগীর এবিষয়ে বলেন, এই অতিরিক্ত ভাড়া কিছুতেই গ্রহনযোগ্য নয়, এখানের মত এত বেশি ভাড়া বাংলাদেশে কোথাও নাই আমার জানা মতে। এই রোড পরিচালনায় দায়িত্বরত সকলকে নিয়ে ও শিবপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ কামাল হোসেন ভাইকে সাথে নিয়ে বসব, সকলের পরামর্শক্রমে অচিরেই নতুন করে ভাড়া নির্ধারণের ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে পুলিশ। গতকাল ২৮ জুলাই রোববার সকালে পৌর এলাকার বিজয়পাড়ার বসতঘর থেকে তাদের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন, সোহাগ মিয়া (৩৩), তার স্ত্রী জান্নাত বেগম (২৫), কন্যা ফাহিমা আক্তার (৪) ও সাদিয়া আক্তার(২)। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শোকের ছায়া নেমেছে পুরো নবীনগরে। সর্বত্রই আলোচনার কেন্দ্র এই একটি পরিবার কীভাবে শেষ হয়ে গেলো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশের ধারণা স্ত্রী-সন্তানদের হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন সোহাগ। তবে পরিবার ও প্রতিবেশীরা সেটি মানতে নারাজ।
পারিবারিক সূত্র জানায়, নবীনগর পৌর এলাকার বিজয়পাড়ার আমির মিয়ার ছেলে ও নবীনগর নিউ মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া স্ত্রী ও দুই কন্যা নিয়ে বিজয় পাড়ার নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় ব্যবসায়িক কাজ শেষে স্ত্রী জান্নাতকে নিয়ে নবীনগরের বাইরে রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে বাসায় ফেরেন। রাতে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসতঘরে ঘুমিয়ে পড়েন সোহাগ মিয়া। রোববার সকালে তারা ঘুম থেকে না ওঠায় পরিবারের সদস্যরা তাদের ঘরের দরজায় গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন। পরে তাদের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তাদের সবার মরদেহ দেখতে পান। এরমধ্যে সোহাগ ও এক কন্যার মরদেহ ঘরের তীরের কাঠে ঝুলছিল। স্ত্রী জান্নাত ও অপর কন্যার মরদেহ খাটে পড়ে ছিল।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশের ধারণা পারিবারিক কলহের জের ধরে বা আর্থিক লেনদেনের কারণে সোহাগ মিয়া তার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে হত্যা শেষে আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা জানিয়েছেন সোহাগ অত্যন্ত বিশ্বস্ত একটি ছেলে ছিলেন। তিনি একটি মসজিদের কোষাধ্যক্ষও ছিলেন। তার কাছে টাকা-পয়সা জমা থাকতো। এছাড়াও একটি সমিতির মতো করে আর্থিক লেনদেনের দায়িত্ব ছিল তার কাছে। আত্মীয়-স্বজনসহ অনেকের সঙ্গেই লেনদেন ছিল তার। লোকমুখে শোনা যাচ্ছে তিনি লেনদেন নিয়ে ইদানিং চাপে ছিলেন। কিন্তু এই কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পারিবারিক অশান্তির কারণেও আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্ত শেষে বলা যাবে এটি আত্মহত্যা না কি হত্যা।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিবি) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার শচিন চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পিবিআইয়ের একটি টিম। যেহেতু মরদেহ যে ঘরে ছিল তা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল, তাই কেউ হত্যা করে ভিন্ন উপায়ে দরজা-জানালা লাগিয়ে পালিয়ে গিয়েছে কিনা এসব খতিয়ে দেখছেন তারা। কিন্তু তেমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধারণা করা যায় সোহাগ তার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, সোহাগের বড় কোনো লেনদেন ছিল না, যার কারণে সে আত্মহত্যা করবে। সোহাগের স্ত্রী জান্নাতের বড় বোন তাসলিমা বেগম বলেন, আমাদের বাড়ি পাশাপাশি। সোহাগ অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিল। আমার বোনের সঙ্গে কোনোদিন দেখিনি ঝগড়া বা বকাবকি করতে। তার ব্যবসায়িক কারণে লেনদেন করায় অল্প ঋণ ছিল। তা একেবারে কম। এছাড়া তার সৎ মা এক লাখ টাকা পেতেন। কিন্তু এই কারণে আত্মহত্যা করবে বলে বিশ্বাস করা যায় না। সোহাগের বোন ইয়াছমিন আক্তার বলেন, আমার ভাই ব্যবসা করলে ঋণতো থাকতেই পারে। তার ঋণ ছিল ৪-৫ লাখ টাকা। কিন্তু এই টাকার জন্য এ ধরনের কাজ করতে পারে না।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে অবৈধ অস্ত্র, মাদক পাচারকারী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আসিফ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৯ অক্টোবর বুধবার গভীর রাতে গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর গ্রামে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে মোঃ আলী আকবর (৫৫) এবং মোঃ মতি মিয়া (৪৫) নামে দুজনকে আটক করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সম্মিলিত যৌথ বাহিনী।
এ সময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৪টি রামদা, ২টি চাকু, ১টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলাসহ মোট ৫টি মামলা রয়েছে। পরে তাদেরকে নবীনগর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যৌথ বাহিনীর নবীনগর ক্যাম্প ইনচার্জ ক্যাপ্টেন আসিফ চৌধুরী জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আটক না করা পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে নবীনগর থানার অফিসার ইনর্চাজ মাহাবুব আলম নেতৃত্বে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষে মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাত শেষে মোহাম্মদ এবাদুল করমি বুলবুল এম.পি’র নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পর্যায় ক্রমে উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রশাসন, বাংলাদশে আওয়ামী লীগ, পৌরসভা, বীর মুক্তেিযাদ্ধাগণ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতকি সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন দপ্ত রের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অপর্র্ণ শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও জীবনভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতা তানভীর ফরহাদ শামীমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্র্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল।
বিশেষে অতিথি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মরিুজ্জামান মনির, পৌরসভার মেয়র অ্যাড. শিব শংকর দাস, নবীনগর সার্কলের অতিরিক্ত পুিলশ সুপার সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসনে সাদেক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলি রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন, সহকারী কমিশনার মাহমুদা জাহান, নবীনগর থানার অফিসার ইনর্চাজ মাহবুব আলম, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা শামীম আহমেদ, পৌর আওয়ামী লীগের, সম্পাদক শুক্কুর খান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম নজু, উপপ্রচার সম্পাদক প্রণয় কুমার ভদ্র পিন্টু, কার্যকরী সদস্য সাইফুর রহমান সোহেল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুিক্তযোদ্ধা শামসুল আলম শাহন, ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম সরকার, বীর মুুক্তিযোদ্ধা আজহারুল ইসলাম, ছাত্রলীগের আহবায়ক আবু সাঈদ প্রমুখ।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধুর জীবনের উপর রচনা, কবিতা আবৃত্তি চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার:
ভূমি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে বিভিন্ন সময় নানা উদ্যোগ নেয় সরকার। এবার ভূমি কর দেওয়া সহজ করার লক্ষ্যে সরাসরি ভূমি অফিসে গিয়ে কর দেওয়া বন্ধ করে অনলাইনে জমার নিয়ম চালু হচ্ছে। আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে দেশের কোথাও ভূমি কর অনলাইন ছাড়া দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে। ভূমি নিয়ে নাগরিকদের দ্বন্দ্ব কমাতে সব জমির মালিকদের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ঘুষ বাণিজ্যের লাগাম টানতে সব এসিল্যান্ড অফিস সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সব ভূমি মালিককে একটা স্মার্ট কার্ড দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছি। সেখানে সব ডেটা থাকবে। এই যে ঝগড়া-ঝাটি, তার কার্ডটা দিলেই সব বের হয়ে আসবে- তার কী পরিমাণ জমি আছে, কী পরিমাণ জমি ছিল, তিনি কী পরিমাণ জমি বিক্রি করেছেন। বিক্রি করা জমি অটোমেটিক ডিডাকশন হয়ে যাবে, অ্যাডজাস্ট হয়ে যাবে। ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব আমরা অনেকটা সাকসেসফুল বাট মাঠ পর্যায়ে সমস্যা এখনও রয়ে গেছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে এমনও কমপ্লেইন আসবে যে ৫০০ টাকা কর দিত আর কিছুটা আলাদা করা হতো। এখনও কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম ৩১ ডিসেম্বর থেকে ম্যানুয়ালি ভূমিকর নেওয়া বন্ধ করতে। কিন্তু সচিব বললেন, এটা বাংলা মাসের সঙ্গে হিসাব-নিকাশ। আমরা যদি বাংলা নববর্ষ থেকে এটা করি ভালো হয়। সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘তাই আগামী ১ বৈশাখের পর থেকে আর কেউ ম্যানুয়ালি ভূমি দিতে পারবে না। তাহলে আমার এটা বন্ধ হয়ে গেলো, তাহলে তো সে (ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা) কিছু করতে পারবে না। কারণ সে ম্যানুয়ালি নিতেই পারবে না। আমরা চাইছি মাঠ পর্যায়ের সমস্যাকে মিনিমাম লেভেলে নিয়ে আসতে।’
এসময় মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় পার্বত্য এলাকায় জমি জরিপের অগ্রগতির বিষয়ে। জবাবে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি রয়েছে। এখানে কাজ করতে আমাদের একটু কষ্ট হচ্ছে। সেখানে জরিপের কাজ করাটা, সেখানে কিছু জটিলতা রয়েছে। আমরা চাচ্ছি একটু স্লোলি, গ্র্যাজুয়ালি, কনফিডেন্স রেখে কাজটা করতে। সেখানে একটা কমিশন রয়েছে। কাজ করতে গেলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমি এখানে দিতে এসেছি। আমার কাছে অভিযোগ আসলেই আমি বলি, তদন্ত করুন এবং ব্যবস্থা নিন এবং আমাকে জানান কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অফিসারদের মধ্যে আমি একটা প্যানিক রেখেছি। আমি এসব ক্ষেত্রে খুবই রূঢ়।
মন্ত্রী আরও বলেন, এখানে বসেছি সম্মান কামানোর জন্য। এত কষ্ট করে যদি ওদের জন্য দুর্নাম কামাতে হয়, তাহলে লাভটা কী? এ মেসেজ অলরেডি মাঠে আছে, তারপরও ওই যে কথা আছে না, চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনি। বাট নো প্রবলেম তারা তাদের মতো চলুক, আমি আমার মতো চলব। সিস্টেম ডেভেলপ করেছে সিস্টেমের মধ্যে আটকাব। সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। আমরা আউটসোর্সিং করে সারাদেশে সব এসিল্যান্ড অফিসে সিসি ক্যামেরা বসাব। এ প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
চলারপথে রিপোর্ট:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর বাজারে জমে উঠেছে মৌসুমী ফল তালের শাঁস বিক্রির ধুম। এদিকে বারছে বজ্রপাত, কমছে তাল গাছ। নবীনগর পৌরশহরের নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ রোড, উপজেলা গেইট, সরকারি কলেজ গেইট, সরকারি হাইস্কুল গেইট, বাজারের বিভিন্ন মোড়ে প্রতিদিন কাঁচা তাল নিয়ে বসছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি পিস তালের শাঁস (কাঁচা তাল) বিক্রি হচ্ছে ৪০/৫০ টাকা, এক কুড়ি তালের শাঁস ৪০০-৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যেখানে এক কুড়ি পাকা তাল ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার ২১ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৭ হাজার ৫০০ টি তাল গাছ রয়েছে। এর মধ্যে শ্যামগ্রাম, রছুল্লাবাদ, রতনপুর, সাতমোড়া, লাউর-ফতেহপুর, বিটঘর, শিবপুর, বড়িকান্দি, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নে বেশী তাল গাছ রয়েছে। নবীনগর বাসিন্দা আব্দুল রহিম জানান- এখন আর আগের মত তাল পাওয়া যায় না। আগে রাস্তার পাশে তালের রস নিয়ে বসত, সেটি এখন আর দেখা যায় না। এখন কাঁচা তালের শাঁস খাচ্ছি। কিছু দিন পর এটিও আর খেতে পারব কিনা জানি না। কেননা যে ভাবে তালের গাছ কাটা হচ্ছে, তাতে বেশি দিন আর এ গুলো খাওয়া যাবে না। আগে এক হালি (৪টি) তাল কিনতে পারতাম ৫০-৮০ টাকায়, এখন ২০০ টাকায়ও মিলছে না। ক্রেতা মাজেদুল ইসলাম বলেন, তাল একটি মৌসুমী ফল, এটি অনেক সুস্বাদু ও উপকারী। তাল গাছ কমে যাওয়ায় আগের থেকে এখন দাম বেশী। নবীনগর পৌরসভার মাঝিকাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী আবুল মিয়া – এখন সরকারি হাইস্কুল গেটের পাশে প্রতিদিন তাল বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, আমি পাঁচ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। গত দুই বছর করোনার কারণে ভাল ভাবে ব্যবসা করতে পারিনি আশা করি এ বছর আমি স্বাবলম্বী হব। এ বছর তালের দাম বেশী । ১২ বছর ধরে নবীনগর সরকারি কলেজ গেইটে তালের ব্যবসা করেন আব্দুর মোতালিব, তিনি বলেন- তখন তালের কুড়ি ছিল ১৭০ টাকা। এরপর বাড়তে বাড়তে বর্তমানে এক কুড়ি তাল বিক্রি হচ্ছে ৪০০/৫০০ টাকায়। আমি প্রতিটা গাছ কিনেছি ২৫০০ টাকায়। সেই গাছের তাল বিক্রি করছি ৬৫০০-৭৫০০ টাকায়। প্রতিটা গাছে ৩০০-৩৫০০ টাকা লাভ হয়। নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকতা জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, তালের শাঁস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর, তালের রসও অনেক উপকারী। তালের রস দিয়ে গুড়, মিছরি তৈরি হয়। বৈশ্বিক আবহাওয়ার কারণে তাল গাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাল গাছ বাড়ানোর জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। নবীনগর কৃষি অফিস জানায় “দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা” মন্ত্রাণালয় একটি লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে বজ্রপাত সহনশলী এই তাল গাছের বীজ ও চারা রোপণ করার উদ্দোগ নিয়েছে। দিন দিন তালগাছ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষ তালগাছের গুরুত্ব না বুঝে কেটে ফেলছে। যেহেতু তাল গাছে বছরে একবার ফলন হয়, লাভ কম, সে কারণে তালগাছ কেটে ফল বা কাঠের গাছ রোপন করছে, সে কারণে তালগাছ কমে যাচ্ছে। তালগাছে ফলন কম হলেও দুর্যোগ (বজ্রপাত) থেকে মানুষকে রক্ষা করে।