চলারপথে রিপোর্ট :
প্রায় ৫০ ফুট উঁচু সিঁড়ি। মাঝখাতে দুটি ধাপ। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের আখাউড়া রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনে অত্যাধিক উঁচু সিঁড়িতে লাগানো হচ্ছে টাইলস্। জনবহুল এ ষ্টেশনের সিঁড়িতে উঠা-নামার সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ট্রেন যাত্রীরা। তাছাড়া, পানি জমে বা কলার খোসা পরে সিঁড়ি পিচ্ছিল হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে, রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের দাবি, টাইলস্-এ কোন সমস্যা হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আখাউড়া-লাকসাম রুটে ডাবল ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। প্রতিটি রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। আধুনিকায়ন আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের পারাপারের জন্য বিশাল একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এই ওভার ব্রিজের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯০ ফুট এবং উচ্চতা ৩০ ফুট। ওই ওভার ব্রিজে উঠা-নামার জন্য দুই পাশে ৩টি করে ৬টি সিঁড়ি করা হয়েছে। তবে কোনো র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এসব সিঁড়ি প্রায় ৫০ ফুট লম্বা। অত্যাধিক উঁচু এসব সিঁড়িতে টাইলস্ ফিটিং করা হচ্ছে। ব্যস্ততম জংশন ষ্টেশনে এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ট্রেন যাত্রীরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সিঁড়িতে অফ হোয়াইট কালারের টাইল্স ফিটিং করা হচ্ছে। টাইলসের সামনের দিকে কয়েকটি খাঁজ কাটা রয়েছে।
কাউছার আহমেদ ভূঁইয়া নামে এক যাত্রী বলেন, টাইলস দিয়ে এমনিতে সতর্কভাবে হাঁটতে হয়। তাছাড়া পানি পড়ে টাইল্স পিচ্ছিল হয়ে যেতে পারে। কলার খোসা পড়ে থাকতে পারে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী কাজী মাহমুদুল হাসান খাদেম বলেন, এরকম জায়গায় এই ধরনের টাইল্স ব্যবহার বিপজ্জনক। পাবলিক ওভার পাসে সাধারণত রাবার ফ্লোরিং করা হয়। এটা শিশু, প্রতিবন্ধি এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করে। শীতের পরিস্থিতিতে ঠান্ডা হয়ে ভিজে যায় না।
জানতে চাইলে, আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ওয়ার্কস) মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, আখাউড়া-লাকসাম সেকশনে কুমিল্লাসহ ১০টি ষ্টেশনে ওভারব্রীজে টাইলস্ ফিটিং করা হয়েছে। প্রায় ২ বছর হয়েছে এখনও কোন দুর্ঘটনা ঘটে। আখাউড়া ষ্টেশনেও সমস্যা হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে চলতি বছর জুলাইয়ে কাজটি শেষ হবার কথা ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরে আধুনিক যাত্রীসেবা দিতে হেল্প ডেস্ক চালু হয়েছে।
আজ ২৩ আগস্ট বুধবার দুপুরে ভার্চুয়ালি হেল্প ডেস্কটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান। এই হেল্প ডেস্ক থেকে যাত্রীরা সীমিত ফি দিয়ে বাগী কার, হুইলচেয়ার ও ট্রলি সার্ভিসসহ অন্যান্য সেবা নিতে পারবেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টুয়েলভ ইভেন্টস মিট গ্রেট এসিস্ট এ ডেস্ক খুলেছেন।
জানা যায়, অল্প খরচে মাধ্যমে ইলেকট্রিক্যাল বাগীকার দিয়ে শূন্য রেখা পর্যন্ত যেতে পারবে যাত্রীরা। সেই সাথে অসুস্থ রোগীদের জন্য হুইলচেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাত্রীদের সুবিধার্থে এখান থেকে বিমান ও ট্রেনের টিকেট কাটা যাবে বলে জানান আয়োজকরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হেল্প ডেস্ক স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক আতিকুল ইসলাম ও আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা, ৬০ বিজিবি সহকারী পরিচালক মতিউর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী, স্থলশুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ খান, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ হাসান আহমেদ ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যাজাই মারমা বলেন, আশা করছি যাত্রীরা এখন সহজেই পারাপার করতে পারবে।
উল্লেখ্য, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ১ হাজার থেকে ১২শ জন যাত্রী পারাপার করে থাকেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় বন্যাদুর্গত ৩শ জন মানুষকে বিনা মূল্যে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মাঝে বিনা মূল্যে বিভিন্ন রোগের ওষুধও বিতরণ করা হয়। বানভাসীদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৫ জন চিকিৎসকের মাধ্যমে বন্যার্তদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
আজ ৩১ আগস্ট শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়নের রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা এই আয়োজন করেন। ফ্রি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ক্যাম্পেইন-২০২৪ এর সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন আখাউড়া প্রেসক্লাব।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, সকাল ১০ থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত আখাউড়ার প্রায় ৮/১০ টি বন্যা কবলিত গ্রামের মানুষদের ফ্রি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিয়েছি। একই সঙ্গে তাদের মাঝে বিনা মূল্যে বিভিন্ন রোগের ওষুধও বিতরণ করা হয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বেশির ভাগই পানিবাহিক রোগে আক্রান্ত। দুপুরে আখাউড়া উপজেলা নিবার্হী অফিসার গাজালা পারভিন রুহী ফ্রি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ক্যাম্পেইন পরির্দশন করেন। এসময় তিনি বিভিন্ন রোগীর সঙ্গে কথা বলেন ও ক্যাম্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষজন পানিবাহিত রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই সময়ে তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা খুবই দরকার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ আব্দুল কাদির, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় শান্ত নামে এক স্কুল ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২১ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শান্ত উপজেলার তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। তার দাদা মোঃ শাহজাহান মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। গত ১৮ জানুয়ারি সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শীতকালীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। মামলার বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রশাসনের আয়োজনে খেলায় গিয়ে মারধর ও মামলার শিকার হওয়ায় আয়োজকদের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ ঝাড়েন অভিভাবকরা।
আজ ২৯ জানুয়ারি রবিবার দুপুরে আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ শফিকুল ইসলাম এ ঘটনার তদন্ত করতে রেলওয়ে স্কুলে যান।
মামলার অভিযোগ, উভয় স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ মাঠে তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয় ও রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে ভলিবল খেলা ছিল। এসময় ওজনে হাল্কা ও ভারী ‘বল’ নিয়ে দুই স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরে ১৮ জানুয়ারি প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে কয়েকজন কিশোর শান্তকে বেদম মারধর করে। পূর্বের বাক-বিতন্ডার জেরে রেলওয়ে স্কুলের ছাত্ররাই শান্তকে মারধর করেছে বলে শান্তর পরিবারের অভিযোগ। এ ব্যাপারে রেলওয়ে স্কুলের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের ছাত্ররা কাউকে মারধর করে থাকলে বিষয়টি আমাদেরকে জানাতে পারতো। সেরকম কিছু ঘটে থাকলে প্রশাসন সমাধান করতে পারতো। মামলা হওয়ায় ভয়ে ছাত্ররা স্কুলে আসছে না। আমরা বিব্রত বোধ করছি।
এদিকে মামলায় অভিযুক্ত এক ছাত্রের বাবা জাবেদ খান খাদেম বলেন, শিক্ষকরা আমার ছেলেকে খেলতে নিয়ে গিয়েছিল। তাদের উচিত ছিল ছাত্রদের দেখেশুনে রাখা। আমার ছেলে বলেছে সে কোন মারামারি করেনি। ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি দু:খজনক। এ ব্যাপারে মারধরের শিকার শান্তর দাদা মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন, পূর্বের ঝগড়ার জেরে রেলওয়ের ছাত্ররা আমার নাতিকে মেরেছে। তাকে কিল ঘুষি ও মাথায় আঘাত করেছে। ঘটনার এতোদিনও বিচার না পেয়ে আমি মামলা করেছি।
তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ সাজ্জাত হোসেন বলেন, আমি রেলওয়ে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম মিয়াকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি।
জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল হোসেন বলেন, মামলা হওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই। আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগে ঠিকানা না থাকায় এবং শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে রেলওয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার বলেন, আমি শুনেছি বিষয়টি তারা নিজেরা সমাধান করে নিবে। মামলা হওয়ার বিষয়টি আপনার কাছ থেকে শুনলাম।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ ও ভারতের বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল চলতি মাসেই হচ্ছে। আজ ২২ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আখাউড়-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া গণমাধ্যম কর্মীদের এ কথা জানান।
এর আগে দুপুরে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মো. আবু জাফর মিয়ার নেতৃত্বে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দুদেশের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল গ্যাংকারযোগে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। সকালে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে তা হয়নি। তবে প্রথমবারের মতো গ্যাংকারযোগে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অংশের প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, আমরা মূলত আজকে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরীক্ষামূলক ট্রায়াল করতে আসিনি। এ রেলপথ প্রকল্পের কাজটা দেখতে এসেছি, কাজটা কোন পর্যায়ে আছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে এবং শেষপর্যায়ের কাজ চলছে বলে তার দাবি। চলতি মাসের মধ্যেই দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ আখাউড়া-আগরতলা বহুল কাঙ্ক্ষিত রেলপথ প্রকল্পে পরীক্ষামূলক ট্রায়াল রান করা হবে।
এ রেলপথ স্থাপনের মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ আর ত্রিপুরাকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যবাসীও খুব উচ্ছ্বসিত। আর এর মধ্য দিয়ে দুদেশের মধ্যে কানেক্টিভিটি ও বাণিজ্য জোরালো হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক ও ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকৌশলী ভাস্কর বকশী বলেন, মঙ্গলবার সকালে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর কথা থাকলেও অনিবার্য কারণবশত তা হয়নি। তবে প্রথমবারের মতো গ্যাংকারযোগে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে এবং চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ট্রায়াল রান করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পটি আখাউড়া-ঢাকা হয়ে আগরতলা এবং কলকাতার মধ্যে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব কমিয়ে দেবে। প্রকল্পটি চালু হলে ৩১ ঘণ্টার পরিবর্তে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা এবং আগরতলা-কলকাতার দূরত্ব ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার থেকে দূরত্ব কমে দাঁড়াবে মাত্র ৫১৩ কিলোমিটার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে রেলপথে বাণিজ্যের দ্বার খুলবে, কমবে পরিবহণ খরচ- এমনটাই দাবি করছেন রেলপথ মন্ত্রী ও সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প কাজ প্রথমে পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। পরে পরিদর্শন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর। তারা দুজনই জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আখাউড়া থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। দুই দেশের এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এ রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলায় স্থাপন করা হচ্ছে একটি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। গত বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত তিনটি জায়গা পরিদর্শন করেছেন মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অতিরিক্তি সচিবসহ শিক্ষা প্রকৌশলী বিভাগের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল। এই পরিদর্শন টিমের সাথে ছিলেন আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: ফয়সল উদ্দিন, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ডা: এ এইচ মামুন।
আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অতিরিক্তি সচিব ড. মো: আয়েতুল ইসলামসহ শিক্ষা প্রকৌশলীর প্রতিনিধি দলটি প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাবিত তিনটি স্থান পরিদর্শন করেছেন। এর মধ্যে আখাউড়া পৌরসভার নারায়নপুর গ্রামে একটি ও দক্ষিণ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে দুইটি জায়গা ঘুরে দেখেন তারা। টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নির্মাণে সুবিধাজনক হওয়ায় এই তিনটি স্থানকে হাতে নেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত করতে কয়েক দিনের মধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, তিন একর জায়গা জুড়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। চলতি বছর জানুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহে জমি অধিগ্রহন করতে ভুমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা ইকরামুল হক নাহিদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেয়া হয়। সে অনুযায়ী সুবিধাজনক এই তিনটি স্থানকে বাছাই করা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত সাধারন শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত থাকবে। এসএসসি (ভোক) ও এইচ এস সি (ভোক) কোর্স চালুর মাধ্যমে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্প্রসারণ করা হবে। থাকবে ৪টি ট্রেড ও ৪টি স্বল্প মেয়াদী প্যারাট্রেড কোর্স। এই শিক্ষা গ্রহন করে যুবকরা দেশে বিদেশে চাকুরীর বাজারে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী করবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।