চলারপথে রিপোর্ট :
জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে নাসিরনগরে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকালে উপজেলার চাতলপাড় ওয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গনে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, ধর্মগ্রন্থ পাঠ এবং শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করণের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এসময় বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন ঘোষণা করেন উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল চন্দ্র চৌধুরী ।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক প্রভাষক শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। এছাড়া প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অসীম কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ লতিফ হোসেন, চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চাতলপাড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আব্দুল আহাদ ও চাতলপাড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল কাশেম ইদু মিয়া।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ালীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ লিয়াকত আব্বাস টিপু, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক রুবিনা আক্তার, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম শুভ সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক রাহুল রায়, হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিজানুর রহমান, মোঃ রবিউল ইসলাম, চিত্তরঞ্জন দত্ত, গোকর্ণ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোঃ শাহজালালসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবীত হয়ে সবাইকে জনগণের সেবার মন মানসিকতা নিয়ে এগুতে হবে এবং স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এছাড়াও এ সময়ে তিনি জনগণের সামনে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম তুলে ধরেন।
সন্ধ্যার পর সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ১নং চাতলপাড় ইউনিয়ন দক্ষিণ শাখায় আমিনুল হক চৌধুরীকে সভাপতি ও আব্দুল মজিদকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রার্থী বদরুদ্দোজ্জা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে হুমকি দেওয়া আওয়ামী লীগ নেত্রী রোমা আক্তারকে শোকজ করা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ সংসদীয় আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ রেজাউল হক এই বিষয়ে শোকজ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের পেশকার শাহজাহান বলেন, রোমা আক্তারকে ৩১ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অনুসন্ধান কমিটির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রোমা আক্তারের দেওয়া বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৭৭ (১) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১ বিধির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন মর্মে কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয়।
গত বুধবার রাতে নাসিরনগর উপজেলা সদরে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী সভা থেকে এ হুমকি দেওয়া হয়। সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। রোমা আক্তার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নাজির মিয়ার স্ত্রী।
এ সময় রোমা আক্তারকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা নাসিরনগরের মানুষ সহজ সরল মানুষ। দাঙ্গা হাঙ্গামা চাই না। আমাদের নেতৃবৃন্দ যে জেল খেটেছেন সেটা আমাদের কলঙ্ক। আপনাদের কাছে আকুল আবেদন ভোট দিয়ে অধিকার ছিনিয়ে নিবেন। উনি যে বেইজ্জতি করেছেন তার জন্য ধিক্কার জানাই। তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে হয়রানি করেছেন। উনি নাসিরনগর এসেছেন প্রবীণ নেতৃবৃন্দের নাম মুছে ফেলার জন্য। আরে নাম মুছে ফেলা এত সহজ নয়। এটা কাগজে লেখা নাম নয়। মানুষের হৃদয়ে লেখা নাম, মুছে ফেলতে পারবেন না। তবে আপনার নাম কেন, সাত তারিখের পর নাসিরনগরের মাটিতে আমরা আপনাকে পা রাখতে দেবো না।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নে ভূমি অধিগ্রহণ না করেই ব্যক্তিমালিকানা জায়গা চলছে সেতু নির্মাণের কাজ শুরুর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এক জমির মালিক ঠিকাদারকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামে। আরো অন্তত ছয়টি সেতুর কাজেও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
১৯ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হেলেনা পারভীন মামলাটি আমলে নিয়ে সেতু নির্মাণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ঠিকাদারকে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশও দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মামলা করা ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক সত্যরঞ্জন বিশ্বাস। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। অভিযুক্ত ঠিকাদার মো. কামাল মিয়া জেলা শহরের বাসিন্দা। তাঁর দাবি, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চলছে।
মামলা সূত্র ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ৯টি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নাসিরপুর গ্রামের সেতুটির কুকুরিয়া খালের পূর্ব পাশে ৬৯ শতাংশ জমির মালিক সত্যরঞ্জন বিশ্বাস। সত্যরঞ্জনের জমির পাশেই সরকারি খাস জায়গা রয়েছে। আদালত নির্মাণ বন্ধ রাখতে বললেও ঠিকাদার কাজ চালিয়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি নাসিরনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন সত্যরঞ্জন। পরে এসআই মো. ইছাক মিয়া কাজ বন্ধ করতে বলেন। এর পরও কাজ করছেন ঠিকাদার।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নাসিরনগর থেকে চাতলপাড় হয়ে সরাইলের অরুয়াইল পর্যন্ত তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯টি সেতু ও ২৩ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। সবক’টির দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরে। এর মধ্যে কুকুরিয়া খালের ওপর সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩০০ ফুট ও প্রস্থ ১৮ ফুট। এটি নির্মাণে বরাদ্দ ১২ কোটি টাকা। কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মামুন এন্টারপ্রাইজ। যার মালিক কামাল মিয়া।
সরেজমিনে ঘুরে ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইছাক মিয়ার তথ্য অনুযায়ী, কুকুরিয়া সেতুর পাশাপাশি আরও ছয়টির কাজ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ভলাকুট ইউনিয়নের ২ নম্বর সেতু নির্মাণের জন্য দু’পাশে নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে। ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্ভর কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে ভূমি অধিগ্রহণ না করায় কাজ শুরু করতে পারেননি ঠিকাদার। ৪ নম্বর সেতুটি হওয়ার কথা বালিখোলা গ্রামে। এ অংশে প্রায় ১৫ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। আগামী ৭ জুলাই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০ শতাংশ কাজও হয়নি।
চাতলপাড়’র চকবাজার এলাকায় ৫ নম্বর সেতুর জন্য ৩০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন। ভলাকুটের কান্দি গ্রামে ৬ নম্বরটির জন্য দুই বিঘা জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তবে ৮ ও ৩ নম্বর সেতুর অধিগ্রহণ হয়েছে। বাকি সাতটি সেতুর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। সেতুগুলোর মধ্যে ৫ ও ৭ নম্বর ছাড়া বাকিগুলোর কাজ চলমান।
ভলাকুট সেতু এলাকার জমির মালিক আব্দুল বাছির মিয়াসহ আরো চারজনের ২০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। আব্দুল বাছিরের দাবি, জমি অধিগ্রহণ না করেই উপজেলা প্রকৌশলী জোর করে সেতু নির্মাণ করতে চান। জমির মূল্য না দিলে পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।
সত্যরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, নাসিরপুর মৌজার ৬৯ শতাংশ জায়গা তিনি ক্রয়সূত্রে মালিক। পাশেই খাসজমি রয়েছে। সরকার এ জমিতে সেতু করতে পারে। কিন্তু কিছু অসাধু লোকের পরামর্শে এলজিইডির কর্তাব্যক্তিরা তাঁর জায়গায় সেতুর কাজ চলমান রেখেছেন। সরকারি উন্নয়নকাজ হোক, তবে ক্ষতিপূরণও দিতে হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা কারও জমিতে জোর করে সেতু নির্মাণ করার পক্ষে নই। কারও জমি সেতু এলাকায় পড়লে মূল্য পরিশোধ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলো নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলাম জানান কারও ব্যক্তিমালিকানার জমি সেতু ও সংযোগ সড়কের পাশে থাকলে তা অবশ্যই অধিগ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দৈনিক যায়যায়দিনের ১৯ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৬ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে যায়যায়দিনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরামের উদ্যোগে নাসিরনগর প্রেসক্লাবে বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যায়যায়দিনের নাসিরনগর প্রতিনিধি একেএম আমিনুল ইসলাম।
দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি মনির হুসাইনের সঞ্চালনায় নাসিরনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও কেক কাটা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া, বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাজী রবিউস সারোয়ার, নাসিরনগর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহাগ রানা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, নাসিরনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক সবুজ, সাবেক সভাপতি ও দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি আজিজুর রহমান চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক নয়া দিগন্ত প্রতিনিধি মোঃ আসমত আলী, দৈনিক কালবেলা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, দৈনিক আজকের পত্রিকা প্রতিনিধি বরুণ কান্তি সরকার, দৈনিক বর্তমান প্রতিনিধি আব্দাল মিয়া, দৈনিক রূদ্র বাংলা প্রতিনিধি আব্দুল কাদের সেন্টু, দৈনিক নবচেতনা প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম, গোয়ালনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজহারুল হক, ভলাকুট ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রুবেল মিয়াসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
আগত অতিথিরা যায়যায়দিনের সাফল্য কামনা করে বলেন, পূর্বের ন্যায় আগামীতেও যায়যায়দিন নিরপেক্ষ, সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকবে। দেশের উন্নয়নে অংশীদার হয়ে পিছিয়ে পড়া অধিকার বঞ্চিত জনতার ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
তীব্র গরম আর লোডশেডিং এর কারণে ক্লাসে যখন বসাই যায় না তখন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত গাছতলায় ক্লাস নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের একজন প্রভাষক। পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের ওই শিক্ষকের নাম মো. মানিরুল হোসাইন। একাডেমিক ভবনের সামনে গাছতলায় সোমবার বেলা ১টায় দেখা যায় ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।
জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কি.মি. দূরে অবস্থিত চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ হাওরের উচ্চ শিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সময়ে লোডশেডিং আর তীব্র গরমে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে যেতে চায় না। উপজেলা সদরের তুলনায় আশেপাশের ইউনিয়ন গুলোতে লোডশেডিং এর মাত্রাও ব্যাপক। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত গাছতলায় ক্লাস নিবেন ওই শিক্ষক।
২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মান্নান মিয়া জানান, সকালে কিছুটা তাপমাত্রা কম থাকলেও বেলা ১১টার পর আর ক্লাসে বসা যায় না। কারেন্ট তো থাকেই না। দুপুর বেলায় তো ক্লাস করার কথা ভাবাই যায় না। স্যার গাছ তলায় ক্লাস নেওয়ায় আমাদের গরম কম লাগে আর ক্লাসও মিস হয় না।
আরেক শিক্ষার্থী জোনাকী বেগম জানান, আমরা গরমের কারণে ক্লাসে বসতে পারি না। বিদ্যুৎ তো থাকেই না। অনেকে গরম সহ্য করতে না পেরে কলেজে আসে না আবার আসলেও চলে যায়। গাছ তলায় ক্লাস করলে এতটা গরম লাগে না।
শিক্ষক মো. মানিরুল হোসাইন বলেন, গরমের কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে বসতে পারে না। অনেকে আবার কলেজে আসতেও চায় না। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা হাতে সময় তেমন নেই। তাই গাছতলাই পড়াই, তবু পড়ুক।
চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওমর আলী বলেন, তীব্র গরমে আমার ওই শিক্ষক গাছ তলায় ক্লাস নেয়। আমি তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ॥ সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথরের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৭০০ টন পাথরের ধুলা (ডাস্ট)। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগে ছাড়পত্র মিলছে না কাস্টমসের। যে কারণে প্রায় এক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরে এই ডাস্ট বা ধুলাগুলো পড়ে আছে। কাস্টমসের গঠিত তদন্ত কমিটিও ডাস্ট উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দাবি করেছেন, এতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ জন্য তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় গত ১৩ নভেম্বর। এরপর কয়েক দফায় মোট ২৭০০ টন আমদানি করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য পাথর আমদানি করেছে। আমদানিকৃত চূর্ণপাথরগুলো প্রতি টন আমদানি হয়েছে ১৩ মার্কিন ডলারে। এগুলো বন্দর থেকে ছাড়ানোর কাজ পায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ। তবে কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতেই বাঁধে বিপত্তি। প্রথমবারের মতো আমদানি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানায় কাস্টমস। পরবর্তীতে এগুলো পরীক্ষা করে পাথরের বদলে ডাস্ট আনা হয়েছে জানিয়ে আটকে দেয়া হয়। ফলে প্রতিদিনই বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।
অভিযোগ উঠেছে- আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এজন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়। সিএন্ডএফ এর মালিক হলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.তাকজিল খলিফা কাজল।
খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিদিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম দফা আনার পর বলা হয় সব আনার পর অনুমতি দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে এ ধরণের পাথরের অনুমতি নেই। এখন পাথর আটকে থাকায় আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত করে আমদানি করা পণ্য ডাস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে। এ ধরণের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। এখন এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’