চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উগ্রবাদ প্রতিরোধে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে ও জেলা পুলিশের সহায়তায় উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম ও উগ্রবাদ দমনে স্পষ্ট ধারনা বিষয়ক তিনদিনব্যাপী সেমিনারের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় পর্বে আজ ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে “উগ্রবাদ প্রতিরোধে শিক্ষক/ শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের ভ‚মিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এ.এস.এম শফিকুল্লাহ, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোরায়রাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও কর্মশালার বিষয় বস্তু উপস্থাপন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি মো. জাহিদুল ইসলাম সোহাগ।
কর্মশালায় জানানো হয়, এক সময় মানুষের মধ্যে ধারনা ছিলো উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জড়িত। কিন্তু এই ধারনা সঠিক নয়। উগ্রবাদে জড়ানোদের মধ্যে পড়াশুনা জানেন না এমন লোকের সংখ্যা শতকরা এক ভাগ। আর জড়িতদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার শিক্ষার্থী ৭৪ ভাগ ও মাদরাসা শিক্ষার শিক্ষার্থী ২৩ ভাগ। জড়িতদের মধ্যে ১৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সিরা হলেন শতকরা ৬৮ ভাগ।
কর্মশালায় সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানানো হয়। সভায় বাসা ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে জেনে শুনে ও ভাড়াটিয়ার তথ্যাবলী নিকটস্থ থানায় জমা দেয়ার জন্য আহবান জানানো হয়। এ সময় জানানো হয়, সারাদেশেই এ ধরণের কর্মশালার আয়োজন করা হবে। ইতিমধ্যেই বরগুনায় এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, জঙ্গীবাদের প্রতি বর্তমান সরকারের যে জিরো ট্রলারেন্স আমরা আইন-শৃংখলা বাহিনী তা বাস্তবায়ন করবো। জিরো ট্রলারেন্স নীতিতে আমরা কাজ করে এখন আমরা অনেকটা সফল। বাংলাদেশ এখন অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত। আমরা জঙ্গীবাদ দেখতে চাই না। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই।
তিনি বলেন, সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে জঙ্গিবাদ মাথা নুইয়েছে। তবে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ এখনো আছে। উগ্রবাদ দমনে পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াট কাজ করছে। তিনি উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদ বিষয়ে সোয়াটেরটিমকে তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে তথ্য দেয়ার আহবান জানান। সেমিনারে সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনদিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
সেমিনারের শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিতব্য “উগ্রবাদ প্রতিরোধে আইন-শৃংখলা বাহিনীর করনীয় শীর্ষক সেমিনারে জেলায় কর্মরত চৌকিদার ও দফাদার এবং দ্বিতীয় পর্বে বেলা ১২টায় অনুষ্ঠিতব্য “উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধিদের ভ‚মিকা শীর্ষক সেমিনারে জেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ উপস্থিত থাকবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় তিতাস নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাতে গিয়ে নৌকা ভেঙে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নৌকায় থাকা ইউএনও, এসিল্যান্ড ও থানার ওসিসহ স্টাফরা পানিতে পড়ে যান। পরে তারা সাঁতরে তীরে উঠে প্রাণে রক্ষা পান। গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার কাঞ্চনপুরে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা কয়েকজন জানান, সদর উপজেলার কাঞ্চনপুরে তিতাস নদী থেকে রাতে অবৈধভাবে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া যায়। গোপন খবরের ভিত্তিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় সঙ্গে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসেন ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। ভ্রাম্যমাণ আদালতের দলটি নৌকাযোগে তিতাস নদীতে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের স্থানে যাচ্ছিল। নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পর মাঝে ভেঙে ডুবে যায়। এতে নৌকায় থাকা ইউএনও, এসিল্যান্ড ও ওসিসহ সবাই পানিতে পড়ে যান। মধ্যরাতে অন্ধকারে নদীতে এ ঘটনা ঘটায় এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। পরে তারা সাঁতরে নদীর তীরে ওঠেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, আমি ভেবেছিলাম কাছাকাছি কোনো জায়গায় যাবে। নৌকা উনারাই নিয়েছিলেন। তবে এ ঘটনায় কোনো জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, নৌকাটি অনেক নড়বড়ে ছিল। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিশ্ব নদী দিবসে তরী বাংলাদেশ এর র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন তরী বাংলাদেশ এর বর্ণাঢ্য র্যালি দানবীর লোকনাথ রায় চৌধুরী ময়দান থেকে শুরু হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে শেষ হয়। র্যালি শেষে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক শামীম আহমেদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের সকল নদ-নদী দখল-দূষণ, নাব্যতা সংকটসহ নদীর বালু লুন্ঠনের মহোৎসব এখনই থামানো না গেলে বাংলাদেশের নদ নদীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। যার জলন্ত উদাহরণ সাম্প্রতিক সময়ে হয়ে যাওয়া আকস্মিক বন্যার প্রকোপ। তিনি আরো বলেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান একজন পরিবেশ কর্মী এবং দীর্ঘদিন যাবৎ নদী-প্রকৃতি সুরক্ষায় কাজ করছেন। আমরা আশা করি তিনি নদী সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের কার্যকরী কমিটির সভাপতি এবিএম মোমিনুল হক, দৈনিক কুরুলিয়া সম্পাদক ইব্রাহিম খান সাদাত, সিনিয়র সাংবাদিক কাউসার ইমরান, কমরেড নজরুল ইসলাম, নারী নেত্রী ফজিলাতুন নাহার প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক কমিটির সদস্য খালেদা মুন্নী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, সাংবাদিক হারুন আল রশিদ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদীর শহরের অংশে সব ক’টি বাজারের বর্জ্য সরাসরি নদীতে যাচ্ছে এছাড়াও নদীর সাথে যুক্ত খালগুলো বিশেষ করে টাউনখাল দখল দূষণে বিলীন প্রায়।
পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন কর্তৃক দখলদারদের চিহ্নিত করে তালিকা ও আংশিক উচ্ছেদ অভিযান হলেও দীর্ঘদিন তদারকি না থাকায় দখলদারেরা পুনঃদখলের পাঁয়তারা করছে।
তিতাস নদীর শিমরাইলকান্দি থাকে মেড্ডা পর্যন্ত দখলদারদের চিহ্নিত করলেও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। অনুরূপ লালপুর সড়কের পাশে থাকা প্রায় ১৪ কিলোমিটার খালে দখলদারদের চিহ্নিত করা হলেও উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়নি।
বিরাশার মোড়ে সরকারি খাল দখল করে অবৈধভাবে টিনশেড মার্কেট নির্মাণের ফলে বারোমাস জলাবদ্ধতা লেগে থাকে। এতে মারাত্বক জনদূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা হলেও সমাধান পাওয়া যায়নি। পানি উন্নউন বোর্ড কর্তৃক তিতাস নদী খননের কথা শোনা গেলেও মূলতঃ নদী থেকে বালু উত্তোলন আর বালুর ব্যবসা হয়েছে। নদীর বালু দিয়ে বিল ভরাট করা হয়েছে। উপশহরের নামে বিল লুণ্ঠনের পরিকল্পনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। পৌরসভার পরিধি বৃদ্ধির জন্য শহরের উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও তিতাস নদীর পূর্বপাড় বিলের জায়গাকে অন্তর্ভুক্ত করার অপচেষ্টা চলছে। নদী রক্ষায় নদীর সীমানা নির্ধারণ, সঠিক খনন ও নৌপথ সচল রাখার গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। তাঁরা আরো বলেন বিলের মাঝ দিয়ে নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগর সড়কের পাশে ফসলী জমি প্লট হিসেবে বেচাকেনা হচ্ছে এবং চটকদার বিজ্ঞাপন নানা মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও প্লট ভরাটের কার্যক্রমও চলছে। যা পরিবেশ আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। পরিশেষে বক্তারা জেলা নদী রক্ষা কমিটির আহবায়ক ও জেলা প্রশাসক হিসাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে মহোদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবদুল মতিন শিপন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখায় দুই পোলিং এজেন্টকে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। চতুর্থ ধাপ ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আজ ৫ জুন বুধবার সকালে উপজেলার ৪৮ নম্বর ছতরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মহিলা ভোট কেন্দ্রে এ সাজা দেন নাসিরনগর ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নাসিরনগর ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া জানান, জেলার বিজয়নগর উপজেলার ৪৮ নম্বর ছতরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মহিলা ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশ অফিসার বারবার না করা সত্ত্বেও দুই পোলিং এজেন্ট মোবাইল নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। পরে দুই এজেন্ট হারুন মিয়া ও শাহানা বেগমকে মোবাইল ফোনসহ আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে হারুন মিয়া ও শাহানা বেগমকে ৩ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনলাইন ডেস্ক :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সময় মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহারের সময় আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে জব্দকৃত বিভিন্ন ধরনের প্রায় হাজারো যানবাহন খোলা আকাশের নীচে থাকায় রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, নবীনগর, কসবা, আখাউড়া, বিজয়নগর, নাসিরনগর, বাঞ্ছারামপুর, হাইওয়ে থানা ও বিআরটিএ অফিস প্রাঙ্গণে এসব যানবাহন পড়ে রয়েছে।
এসব যানবাহনের মধ্যে মোটর সাইকেল, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ, প্রাইভেটকার ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা। জব্দকৃত গাড়ির মধ্যে বিজয়নগর থানায় বিভিন্ন ধরনের ৫০টি, সরাইল থানায় বিভিন্ন ধরনের ৪৭টি, আখাউড়া থানায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ১২৩টি যানবাহন, আশুগঞ্জ থানায় রয়েছে জব্দকৃত বিভিন্ন ধরনের ১৮৫টি যানবাহন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় রয়েছে ১২৫টি যানবাহন। বাকী যানবাহনগুলো রয়েছে জেলার অন্যান্য থানা প্রাঙ্গনে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, হাইওয়ে থানার পুলিশসহ টাস্কফোর্সের অভিযানে এসব যানবাহনগুলো জব্দ করা হয়।
আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে জব্দকৃত এসব যানবাহন বছরের পর বছর থানা প্রাঙ্গনে খোলা আকাশের নীচে থাকায় রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি চুরি হচ্ছে এসব যানবাহনের মূল্যবান যন্ত্রাংশ। এছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন থাকায় থানাগুলোর সৌন্দর্য্য ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এমন অবস্থায় দ্রুত যানবাহনগুলোর মামলা নিষ্পত্তি করে এসব যানবাহন নিলামে বিক্রি করা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনিছুর রহমান চৌধুরী বলেন, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহারের সময় আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে জব্দ হয়ে বিভিন্ন যানবাহন জেলার বিভিন্ন থানায় পড়ে আছে। এসব গাড়ি রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে।
বিভিন্ন গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে। এসব গাড়িগুলো বছরের পর বছর থানা প্রাঙ্গনে পড়ে থেকে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা চাই এসব জব্দকৃত যানবাহনের মামলা গুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক। তিনি বলেন, এসব জব্দকৃত যানবাহনগুলো যদি আদালতের মাধ্যমে নিলামে বিক্রি করা হয় তাহলে সরকার রাজস্ব পাবে।
এ ব্যাপারে জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান তানিম বলেন, আমি চাই দ্রুত জব্দকৃত যানবাহনের মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা হোক। তিনি বলেন, এসব যানবাহন দীর্ঘদিন ধরে থানার সামনে খোলা আকাশের নীচে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। কিছু কিছু যানবাহনের যন্ত্রাংশ চুরিও হচ্ছে। তিনি বলেন, যদি এসব জব্দকৃত গাড়ি নিলামে বিক্রি করা হয় তাহলে সরকার রাজস্ব পাবে।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন জানান, তার থানায় জব্দকৃত বিভিন্ন ধরনের ৪৭টি যানবাহন রয়েছে।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রাজু আহমেদ জানান, তার থানায় জব্দকৃত বিভিন্ন ধরনের ৫০টি যানবাহন রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরানুল ইসলাম জানান, তার থানায় জব্দকৃত বিভিন্ন ধরনের ১২৫টি যানবাহন রয়েছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময় মামলার আলামত হিসেবে আমরা যে যানবাহনগুলো জব্দ করি সেই যানবাহনগুলো আমাদের বিভিন্ন থানায় রয়েছে। থানার সামনে খোলা আকাশের নীচে থাকায় অযত্নে অবহেলায় যানবাহনগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
এতে করে থানাগুলোর পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। যদি মামলা নিষ্পত্তির সময়ে আলামত গুলোও নিষ্পত্তি করা হয় অথবা জব্দকৃত যানবাহনগুলো নিলামে দেয়া হয় তাহলে আমাদের থানার পরিবেশও ভাল থাকবে। অন্যদিকে সরকারও রাজস্ব পাবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আমরা যে গাড়ি গুলো জব্দ করি সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব সড়ক নিরাপত্তা যে আইন আছে সে আইনে নিস্পত্তি করে ফেলি। কিন্তু জেলার ৯টি থানাসহ বিআরটিএ প্রাঙ্গনে যে গাড়িগুলো আছে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মামলা নিস্পত্তির অপেক্ষায়। এ বিষয়টি মহামান্য আদালতের বিষয়। বিষয়টি আমি জেলা জজ এর দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করব।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন বলেন, যে গাড়ি গুলোর কোনো প্রমানপত্র নেই সেগুলো দ্রুত প্রত্যেক থানাতেই নিলাম দেয়া প্রয়োজন। এই নিলাম বৈধভাবে পরিচালনা করার ক্ষমতা চীফ জুডিশিসালের আছে। আমরা আহবান জানবো দ্রুত সময়ের মধ্যে গাড়িগুলো নিলাম দিয়ে নিলামের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার।