চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় আরফিন ভূঁইয়া নামে এক স্কুল ছাত্রকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আরফিন ভূঁইয়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। সে ওই ইউনিয়নের বড় কুড়িপাইকা জমাদ্দার বাড়ির আল আমিন ভূঁইয়ার ছেলে।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত আরফিনকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরফিনের দাদা ওহিদ ভূঁইয়া বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কিছু যুবক প্রায়ই স্কুলের সামনে ছাত্রীদেরকে উত্যক্ত করে। রবিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রসহ কয়েকজন যুবক ছাত্রীদেরকে উত্যক্ত করলে আরফিনসহ কয়েকজন ছাত্র প্রতিবাদ করে।
এতে ওই যুবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের সাথেও খারাপ আচরণ করে। সোমবার সকালে আরফিন ভূইয়া স্কুলের যাওয়ার পথে ৪/৫ জন যুবক তাকে বেদম মারধর করে। এক পর্যায়ে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে এলে যুবকরা চলে যায়।
জানতে চাইলে অহিদ ভূঁইয়া বলেন, ছাত্রীদেরকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বখাটেরা আমার নাতিকে মারধর করেছে। নাদিম, রোমান, হৃদয়, শাকিল ও অন্তরকে আমার নাতি চিনতে পেরেছে।
এ ব্যাপারে হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, মোঃ সাজ্জাত হোসেন বলেন আরফিন ভূঁইয়া আমার স্কুলের ছাত্র। অত্র বিদ্যালয়ের ১০ ম শ্রেণীর ছাত্র হৃদয়সহ বহিরাগতরা আরফিনকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় হৃদয়ের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ২১ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যন পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যন (পুরুষ) পদে ৪ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যন পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যতই ভোটের দিন এগিয়ে আসছে ততই জমে উঠছে ভোটের লড়াই। শেষ মুহুর্তে প্রার্থীরা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিরামহীন ভাবে গণসংযোগ ও প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ভোটারদের মন জয় করতে চেষ্টার কোন কমতি রাখছেন না। প্রার্থীদের পাশাপাশি তাদের কর্মী সমর্থকেরা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেনা। নিজ প্রার্থীর জন্য ভোটাদের কাছে ভোট চাইছেন। করছেন উঠান বৈঠক, সভা-সমাবেশ। শহর থেকে গ্রামীন জনপদে প্রার্থীদের পোষ্টার শোভা পাচ্ছে। বেলা ২টার পর শুরু হয় মাইকের প্রচার।
জানা গেছে, এবার উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ও দলীয় মনোনয়ন দেয়নি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ রেখে নির্বাচন উন্মুক্ত রেখেছে।
সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চেয়ারম্যান প্রার্থী মুরাদ হোসেন ভূইয়া দুই বারের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়া সত্বেও উপজেলা পর্যায়ে তার পরিচিতি কম। ভোটারদের মধ্যে আলোচনা আছে, মুরাদ হোসেন মানুষের সাথে মিশেছেন কম।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মনির হোসেন তিন বার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। এসব কারণে উপজেলা জুড়ে মনির হোসেনের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। অভিজ্ঞতা ও পরিচিতির কারণে তিনি অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন।
এদিকে, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ত্রি-মুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। মোঃ জুয়েল রানা (টিউবওয়েল), সাহাবউদ্দিন বেগ (মাইক) ও মাজিদুল ইসলামের (চশমা) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে শোনা যাচ্ছে। ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ায় শাহাব উদ্দিন উপজেলা জুড়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে পরিচিত।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পিয়ারা বেগম পিওনা (হাঁস) এবং রোকসানা আক্তার (কলস) এর মধ্যে তীব্র লড়ায়ের আভাস পাওয়া গেছে। তবে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ায় এবং মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় পিওনা আক্তার সবার কাছে পরিচিত। রোকসানা আক্তারের বাড়ি ধরখার ইউনিয়নে এবং স্বামীর বাড়ি মনিয়ন্দ ইউনিয়নে। ওই দুই ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষের সমর্থন পেলে তিনি চমক সৃষ্টি করতে পারেন। এছাড়া তানজিনা আক্তার (ফুটবল) এবং রিনা আক্তার (পদ্ম ফুল) তারাও ভোটের লড়াইয়ে দাপটের সাথে লড়ছেন।
তবে ভোটের হিসাব যাই হোক, সাধারণ মানুষের ভাবনায় সুষ্ঠু ভোট। সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রয়োগ করতে চায়।
৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে আখাউড়া আখাউড়া উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৭০। এরমধ্যে পুরুষ ৬৫ হাজার ৯৭৬, মহিলা ৬১ হাজার ৮৯১ এবং হিজড়া ভোট ৩।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ॥ সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথরের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৭০০ টন পাথরের ধুলা (ডাস্ট)। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগে ছাড়পত্র মিলছে না কাস্টমসের। যে কারণে প্রায় এক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরে এই ডাস্ট বা ধুলাগুলো পড়ে আছে। কাস্টমসের গঠিত তদন্ত কমিটিও ডাস্ট উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দাবি করেছেন, এতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ জন্য তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় গত ১৩ নভেম্বর। এরপর কয়েক দফায় মোট ২৭০০ টন আমদানি করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য পাথর আমদানি করেছে। আমদানিকৃত চূর্ণপাথরগুলো প্রতি টন আমদানি হয়েছে ১৩ মার্কিন ডলারে। এগুলো বন্দর থেকে ছাড়ানোর কাজ পায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ। তবে কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতেই বাঁধে বিপত্তি। প্রথমবারের মতো আমদানি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানায় কাস্টমস। পরবর্তীতে এগুলো পরীক্ষা করে পাথরের বদলে ডাস্ট আনা হয়েছে জানিয়ে আটকে দেয়া হয়। ফলে প্রতিদিনই বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।
অভিযোগ উঠেছে- আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এজন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়। সিএন্ডএফ এর মালিক হলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.তাকজিল খলিফা কাজল।
খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিদিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম দফা আনার পর বলা হয় সব আনার পর অনুমতি দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে এ ধরণের পাথরের অনুমতি নেই। এখন পাথর আটকে থাকায় আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত করে আমদানি করা পণ্য ডাস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে। এ ধরণের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। এখন এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’
আখাউড়া প্রতিনিধি :
আখাউড়ায় আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার কারিমা রেষ্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টারে ভারত ত্রিপুরা রাজ্যের ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদ’র কমিটি নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গেয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
অনুষ্ঠানে আখাউড়া যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মমিন বাবুল’র সভাপতিত্বে ও ছাত্র নেতা মনির হোসেন’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদ’র সভাপতি ড. দেবব্রত দেবরায়, সাধারণ সম্পাদক ড. মুজাহিদ রহমান, আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মনির হোসেন বাবুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আবদুল্লাহ ভূইয়া বাদল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু।
বিশেষ করে, ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদ’র কমিটি দিয়ে দুই দেশে সু-সম্পর্ক হবে বলে বক্তরা মনে করেন।
ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদ’র পক্ষ থেকে দুই দেশের মধ্যে বই সহ উপহার সামগ্রী আদান-প্রদান করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদ’র বিশিষ্ট শিল্পী ও সহ সম্পাদক স্বর্ণিমা রায়, বিশিষ্ট চিত্র শিল্পী ও কোষাধ্যক্ষ নির্মল দেব, কবি গীতিকার ও কার্যকরী সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ, সমাজসেবী কবি ও সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী, বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী কুশল দেব, বিশিষ্ট ব্যাচিক শিল্পী শ্বেতা দেবরায়, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ইন্সা আক্তার, কবি গীতিকার ও সহ-সম্পাদক শ্যামল কান্তি দে, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী মনিদীপা দে, বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী শ্যামলীমা দে, বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী সাগরীমা দে, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী অমর ঘোষ, আখাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাছরীন সফিক আলিয়া, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কাওছার ভূঁইয়া, সাবেক দক্ষিণ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল পারভেজ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন নয়ন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ তজিবুর রহমান, আখাউড়া যুব মহিলা লীগের সভাপতি রোকসানা আক্তার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন, সাজ্জাদ মাস্টার, সেলিম মিয়া, ক্রিড়াবিদ মো: সাগর হোসেন, আখাউড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অমিত হাসান অপু, কার্যকরী সদস্য শাহাবুদ্দিন রিফাত প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় আলাউদ্দিন (২২) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রাম থেকে আলাউদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ওই গ্রামের আবুল কালাম মিয়ার ছেলে। পরিবারে তার স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাতের কোনো একসময় তিনি পরিবারের অজান্তে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন, তা জানা যায়নি। সকালে ঘরের লোকজন ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পায়। এরপর বিষয়টি পুলিশকে অবগত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহেল সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানান তিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি মাসে শেষ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের কাজ। প্রথমে ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক) ট্রেন চালানো হবে। যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে রেলপথটি চালুর আশা করছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পটি আখাউড়া-ঢাকা হয়ে আগরতলা এবং কলকাতার মধ্যে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব কমিয়ে দেবে। প্রকল্পটি চালু হলে ৩১ ঘণ্টার পরিবর্তে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা এবং আগরতলা-কলকাতার দূরত্ব ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার থেকে দূরত্ব কমে দাঁড়াবে মাত্র ৫১৩ কিলোমিটার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে রেলপথে বাণিজ্যের দ্বার খুলবে, কমবে পরিবহণ খরচ- এমনটাই দাবি করছেন রেলপথ মন্ত্রী ও সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা।
গেল মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প কাজ প্রথমে পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। পরে পরিদর্শন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর। তারা দু’জনই জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯০ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে এবং চলতি জুন মাসের মধ্যে বাকি কাজও সম্পূর্ণ হবে। তবে এ রেলপথটি চালু হলে প্রথমে শুধু দুই দেশে পণ্য পরিবহণ হবে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আখাউড়া থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু করে।
দুই দেশের এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬.৭৮ কিলোমিটার। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এ রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক ও ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকৌশলী ভাস্কর বকশী জানান, করোনার কারণে আমাদের দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। প্রকল্পের কাজের মালামালও ভারত থেকে আনা যায়নি। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও মালামাল আনার অনুমতি পেতে বিলম্ব হয়েছিল। এখন আমাদের শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে।
তার দাবি, বাংলাদেশ সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব।
গত ১৭ মে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করছি, চলতি জুন মাসের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। সেপ্টেম্বরের পরে জাতীয় নির্বাচন রয়েছে। তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে এ রেলপথ উদ্বোধন করবেন।