চলারপথে রিপোর্ট :
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মসজিদের ছাদে পাতা কুড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার হাজীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের হোসেন সর্দার বাড়ির মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের ছেলে ও ছমির হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মো. জিসান (১০) এবং একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে ও চরবাটা ইসমাইলিয়া ফাজিল মাদরাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র রাহাত হোসেন (১২)।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন জানান, নিহত দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে ছিল। তারা একই বাড়িতে পাশাপাশি ঘরে থাকত। সকালে তারা মক্তবে পড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়। কিন্তু তারা মক্তবে না গিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ৩ জন শিক্ষার্থী মিলে গাছের পাতা কুড়াতে গাছ বেয়ে স্থানীয় হাজীপুর গ্রামের আস্তানার জামে মসজিদের ছাদে উঠে। ওই সময় মসজিদের ছাদের পাশ দিয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে শিশু জিসান ও রাহাত গুরুতর আহত হয়। একপর্যায়ে তারা নিচে পড়ে গেলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মৃতদেহ তাদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
চলারপথে ডেস্ক :
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির আমন্ত্রণে দোহায় অনুষ্ঠেয় তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে অংশ নিতে আগামী ২৩-২৫ মে কাতার সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ১৮ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে একথা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।
তিনি জানান, দোহায় অনুষ্ঠেয় তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করবে।
সেহেলী সাবরীন আরো জানান, ব্লুমবার্গের সহায়তায় আয়োজিত কাতার ইকোনমিক ফোরামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, মন্ত্রী, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদসহ প্রযুক্তি, অর্থ ও ব্যবসা খাতের বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করবেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ইন্টেরিয়র আর্কিটেক্টের কাজ করেন নাহিদ হাজারিকা ইতি। পাশাপাশি নিয়মিত দেশে-বিদেশে ভ্রমণে আগ্রহ তার। ট্রিপকার্ট (Tripkart) নামের ফেসবুক ট্রাভেল এজেন্সির পেজে একটি অফার দেখতে পান তিনি। এজেন্সিটি মাত্র এক লাখ টাকায় দুবাই বা কাতারে ভ্রমণের সুযোগ উল্লেখ করে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দেয়। ট্রিপকার্টের এমন বিজ্ঞাপন দেখে নাহিদ হাজারিকা ইতি নামের এক নারী দুই জনের জন্য বুকিং মানির অগ্রিম এক লাখ টাকা জমা দেন। এরপর থেকে এজেন্সিটি তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে বনানী থানায় মামলা করেন ইতি। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। তদন্তে নেমে পর্যটকদের বিশ্বাসকে পুঁজি করে প্রতারণায় জড়িত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি।
গ্রেফতাররা হলেন চক্রের মূলহোতা সাইফুল আলম ওরফে অপু, আহাদ আলম ওরফে তালহা ও মো. আমিনুল ইসলাম।
ডিবি বলছে, চক্রটি সীমিত খরচে ট্যুর প্যাকেজ বিক্রির নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। গত এক বছরে চক্রের হাতে দুইশর বেশি মানুষ প্রতারিত হয়েছে। অপু ও তার চক্রের সদস্যরা গ্রেফতারের খবরে বহু ভুক্তভোগী গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে ভিড় করেন।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, ১৪টি পাসপোর্ট, ১০টি মোবাইল ফোন, ১৫টি সিমকার্ড, দুটি ল্যান্ডফোন, একটি ওয়াকিটকি সেট, একটি সিপিইউ ডেক্সটপ, পাঁচটি এটিএম কার্ড ও ছয়টি ব্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়।
আজ ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘ট্রিপকার্ড’র নামের কথিত এই ট্যুর অপারেটর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পেজে বিজ্ঞাপন দিত। তারা বিভিন্ন প্যাকেজের আওতায় দিন ও রাত থাকা, হোটেলে বুকিং, এয়ারপোর্ট পিকআপ, ড্রপআপ, গাইডের মাধ্যমে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের ট্যুর প্যাকেজ ঘোষণা করতো। একসঙ্গে ৪০ জনের ভিসা ও বিমানের টিকিট কাটাসহ সব দায়িত্ব নিজেরাই পালন করার আশ্বাস দিতো। এছাড়া প্যাকেজে আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ঘোষণাও থাকতো। এত কম টাকায় এমন অফার পেয়ে সাধারণ মানুষ তাদের ফাঁদে পা দিতো।
সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য রাজধানীর গুলশান, বারিধারা, ধানমন্ডিসহ অভিজাত এলাকায় অফিস নিয়ে প্রতারণা করতো চক্রটি। এক এলাকায় অফিস খুলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিত তারা। এরপর দুই মাস আত্মগোপনে থেকে ভিন্ন নামে অন্য এলাকায় একই কাজ করতো। গ্রেফতার সাইফুল আলম ওরফে অপুর নেতৃত্বে চক্রটি গত ছয় মাসে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ৫৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ‘ট্রিপকার্ড’র নামের ওয়েবসাইটের ড্যাশবোর্ডের তথ্যে গত ছয় মাসে শতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণার তথ্য পেয়েছে।
রাজধানীর গুলশান এলাকার বাসিন্দা জুই আক্তার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। সম্প্রতি ভ্রমণের উদ্দেশে মালদ্বীপের যাওয়ার জন্য ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান ‘ট্রিপকার্ড’র ফেসুবকের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম খরচে আকর্ষণীয় প্যাকেজ দেখে আকৃষ্ট হন জুই। এরপর ভিসা ও অন্যান্য খরচের জন্য অগ্রিম ৫৫ হাজার দেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার কিছুদিন পর দেখতে পান ‘ট্রিপকার্ড’র অফিস বন্ধ। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তারা অফিস ছেড়ে চলে গেছেন। নানাভাবে চেষ্টা করেও আর যোগাযোগ করতে পারেননি। পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার আশায় টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হন জুই। একইভাবে দীর্ঘদিন ধরে চক্রটির প্রতারণার শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
যেভাবে প্রতারণার শুরু
ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সাইফুল আলম ওরফে অপুর কথিত এই ‘ট্রিপকার্ড’ নামের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ট্যুর প্যাকেজ দিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। ট্যুরে যাওয়ার জন্য ওয়েবসাইটের নির্ধারিত টাকার পরিমাণের ৪০ শতাংশ অগ্রিম জমা দিয়ে বুকিং নিতে হতো। বুকিং মানি প্রতারকরা নির্ধারিত ব্যাংক অ্যকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করতো। পরে বিভিন্ন দেশের ট্যুর প্রসেসিংয়ের জন্য অফিসে ডেকে ট্যুর প্যাকেজের সম্পূর্ণ টাকা নিতো।
এভাবে কয়েকশো মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে অফিস পরিবর্তন করে ফেলত তারা। পরে দুই মাস নিজেরা আত্মগোপন থাকত। এরপর আবার অন্য নামে ফেসবুকে পেজ ও ওয়েবসাইট তৈরি করে আবারও প্রতারণা করত। বুকিং মানির সম্পূর্ণ টাকাই প্রতারক চক্র আত্মসাৎ করতো।
এ ধরনের চক্রের হাত থেকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, যে কোনো ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজের পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। আকর্ষণীয় ও কম মূল্যের বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ না হয়ে, বৈধ লাইসেন্সধারী ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে সেবা নিতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির মাধ্যমে এ ধরনের প্রতারণার শিকার হলে থানায় মামলা বা অভিযোগ দিতে হবে। এছাড়া নিজের পাসপোর্ট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির তৃতীয় দিনে ৭৩৩টি ফরম বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। এতে দলটির আয় হয়েছে তিন কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
আজ ২০ নভেম্বর সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তৃতীয় দিনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আজ সরাসরি ৭০৯টি ও অনলাইনে ২৪টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে।
শনিবার সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। মনোনয়নপত্র বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আট বিভাগের জন্য স্থাপন করা হয় ১০টি বুথ। সেখান থেকে ফরম বিক্রি করা হয়। মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা নেওয়ার কার্যক্রম চলবে ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারকের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত ও অশালীন আচরণে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে সংগঠনটির সভাপতি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবর রহমানের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কতিপয় আইনজীবী ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর এজলাস কক্ষে বেআইনিভাবে বিচারিক কাজে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করেন। একই সঙ্গে তাঁরা বিচারকের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত ও অশালীন আচরণ করেন; যা অনভিপ্রেত, ন্যক্কারজনক ও দুঃখজনক। এতে বিচার বিভাগের মর্যাদা ও সম্মান মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। শিষ্টাচারবহির্ভূত ওই আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের নিন্দনীয় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজ করার দুঃসাহস না দেখায়।
শিষ্টাচারবহির্ভূত ওই আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের নিন্দনীয় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজ করার দুঃসাহস না দেখায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে এজলাস চলাকালে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়াসহ কয়েকজন আইনজীবী বিচারককে গালিগালাজ করছেন। তবে তানভীর ভূঁইয়ার দাবি, তিনি বিচারককে গালি দেননি। ভিডিওটি সম্পাদনা করা হয়েছে।
এদিকে, আইনজীবী ও আদালত কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে স্থবির হয়ে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালত। বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ, কর্মচারীদের মারধর, মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আদালতের কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের অব্যাহত উন্নয়নে বিদেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে আগামী নির্বাচনে তার দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন।
কোনো লুটেরা যেন দেশকে ধ্বংস করার জন্য আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে জন্য বাংলাদেশের জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে নৌকায় ভোট চাওয়ার পাশাপাশি আমরা আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই।
প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নের অদম্য গতি যেন কোনক্রমেই ব্যাহত না হয়, সে জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশকে লুটেরাদের হাতে ছেড়ে দেবেন না, অন্যথায় দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত করুন যে, দেশের উন্নয়নের যাত্রা কোনো বাধা বিপত্তি ছাড়াই অব্যাহত থাকবে।
সরকারপ্রধান বলেন, দেশবাসী নৌকায় ভোট দিয়ে দেশের স্বাধীনতা পেয়েছে এবং অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হয়েছে অথচ বিএনপিকে ভোট দিয়ে লুটপাট, দুর্নীতি ও হত্যা করেছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমরা জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করছি, তাদের দুঃসময়ে পাশে থাকি এবং তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছি।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, উল্টো বিএনপি-জামায়াত জোট মানুষকে পুড়িয়ে মারার রাজনীতি করছে, টাকা কামাচ্ছে। দুর্নীতি, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, অর্থ পাচার, লুটপাট ও সারাদেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার ইতোমধ্যে কিছু টাকা ফেরত এনেছে যা খালেদা জিয়ার দুই ছেলে চুরি করে বিদেশে পাচার করেছিল এবং অবশিষ্ট টাকাও জব্দ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমি জানি না কোথা থেকে তারা অর্থ পাচ্ছেন যা ব্যবহার করে আবার পুলিশের গাড়ি ও যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়ে তারা ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, এবার বাড়াবাড়ি করলে দেশের মানুষ তাদের রেহাই দেবে না। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র ২০১৩-২০১৫ সাল পর্যন্ত অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে ৫শ’ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল। কিন্তু জনগণের প্রতিবাদের মুখে তারা অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
‘এতিমের টাকা আত্মসাতের কারণে খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে, তার ছেলে তারেক রহমান ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা এবং দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং তারেকের স্ত্রী দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দণ্ডপ্রাপ্তরা বিএনপির শীর্ষ নেতা এবং তাদের সামনে রেখে রাজনীতি করছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ তাদের ভোট দেবে না। জনগণ বিএনপিকে ক্ষমতায় আসার জন্য ভোট দেবে না। জনগণ অগ্নিসন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় আনবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশকে দরিদ্র ও প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এখন আওয়ামী লীগের সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিশ্ব বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশে রূপান্তরিত করেছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।
দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরির জন্য বিদেশে না যাওয়ার অনুরোধের পাশাপাশি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এটি চাকরি প্রার্থী এবং সরকার উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।
সরকারপ্রধান বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কোনো গ্যারান্টি ছাড়াই ঋণ নিয়ে দেশে ফিরে প্রবাসীরা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে পারবেন। এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাকরির জন্য বিদেশে ও যেতে পারেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. লুৎফর রহমান রূপকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল তানসেন। সূত্র : বাসস