চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিঃ এর উচ্চ চাপ ক্ষমতাসম্পন্ন সরবরাহ লাইনের উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে যানবাহন চলাচলের পাঁয়তারা করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে এলাকাবাসী।
আজ ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ভাদুঘর এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌর এলাকার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফের ছেলে ইমতিয়াজ মোহাম্মদ বাবুল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, জেলার ১৭ ও ১৮ নং গ্যাস কূপের আওতায় শহরের শিমরাইলকান্দি থেকে ভাদুঘর পর্যন্ত গ্যাস ফিল্ডের নিজস্ব জায়গার মাটির ৬ ফুট নীচ দিয়ে উচ্চ চাপক্ষমতা সম্পন্ন গ্যাসের উৎপাদন লাইন নির্মাণ করে এবং দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলার জন্য বিজিএফসিএল এর পক্ষ থেকে সাইন বোর্ড ও মাইকিং করে প্রচার করে। অথচ স্থানীয় হারুন মিয়া, রফিকুল ইসলাম, খোকন মিয়া, বশির মিয়া ও জালাল মিয়াসহ একটি স্বার্থন্বেষী ভূমি খেকো মহল প্রভাব খাঁটিয়ে এই পাইপ লাইনের উপর দিয়ে পায়ে হাঁটা এবং ভারীযান পরিবহনের জন্য রাস্তা নির্মাণের পায়তারা করছে। ওই রাস্তা দিয়ে ভারীযান চলাচল করলে যেকোন সময় গ্যাস পাইপ লাইনের বিষ্ফোরণের আশঙ্কার পাশাপাশি শহরের ঘনবসতি মানুষের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিস্ফোরণে তা যেন মাগুরছড়া ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর মতো ভয়াবহ বিপর্যয় না ঘটে। যেকোন ধরণের বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এসময় এলাকাবাসীর পক্ষে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন মোঃ সেলিম মিয়া, মোকলেছ মিয়া, আব্দুর রহিম প্রমুখ।
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানীর লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (এডমিন) মাহমুদুল নবী মিলন বলেন, সেখানের রাস্তা নির্মানের কোন সুযোগ নেই। আমাদের নিরাপত্তাকর্মীরা প্রতিনিয়ত দেখাশুনা করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার নবগঠিত এ্যাডহক কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২০ এপ্রিল রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার নবগঠিত এ্যাডহক কমিটির আহবায়ক ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম, এ্যাডহক কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার, এ্যাডহক কমিটির সদস্য মামুন খান, মো. আজিম, জাহাঙ্গীর আলী, মাইনুল ইসলাম চপল, তানিম শাহেদ রিপন, আকিব জাবেদ মুন্না ও আবুল হাসনাত মো. রাফি।
এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ক্রীড়ার উন্নয়নে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। কমিটির আহবায়ক জেলা প্রশাসক এ্যাডহক কমিটির সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কনটেইনার ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের ঘটনায় ১৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকার সঙ্গে আপলাইনে চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালীর রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে।
১৯ নভেম্বর রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনার ট্রেনটি ঢাকা অভিমুখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে কনটেইনার ট্রেনটিকে ২০ কিলোমিটার গতিতে ঢাকায় যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের আউটারে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী কনটেইনার ট্রেনের একটি বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় আপলাইনে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালীর ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি শতাধিক স্লিপার ভেঙে যায়। পরে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত এবং স্লিপার পরিবর্তন শেষে দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনার ট্রেনের বগিটি উদ্ধারে কাজ শুরু করে উদ্ধারকারী ট্রেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনার ট্রেনের বগিটি উদ্ধার কাজ প্রায় ১১ ঘণ্টা পর রাত ৭টা ৫ মিনিটে সম্পন্ন হয়। তবে, আপলাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় সাড়ে ১০টায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আলোচিত ও সমালোচিত ইসলামি বক্তা মুফতি গিয়াসউদ্দিন আত তাহেরী হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় তাকে বহনকারী গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তবে এ বিষয়ে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতে মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে জেলা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত। বিকেল ৫টায় মানববন্ধন হওয়ার কথা ছিল। মানববন্ধনে গিয়াসউদ্দিন আত তাহেরীর যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের নেতারা সেই কর্মসূচি বাতিল করেন।
এরমধ্যে তাহেরী সোমবার দুপুরের দিকে পৌর এলাকার ঘোড়াপট্টি সেতুর ওপর থেকে লোকজনকে সাথে নিয়ে গাড়িতে ওঠেন। কাউতলী যাওয়ার পথে টি এ রোড এলাকায় আগে থেকে উপস্থিত থাকা মাদরাসা ছাত্ররা চারদিক থেকে ঘেরাও করে তার গাড়িতে হামলা চালান। এসময় তাহেরী কোনো রকমে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।
তাহেরী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এক ভিডিও বার্তায় অভিযোগ করেন, ‘নিরাপত্তার হুমকি থাকায় আমাদের আয়োজন স্থগিত করা হয়। গাড়ি নিয়ে কাউতলী যাওয়ার পথে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা বরাবর সড়কে পৌঁছলে ছাত্ররা গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে।’ বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে তিনি অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ দেবেন।
এ সময় গিয়াসউদ্দিন তাহেরি তার বক্তব্যে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, এ বিষয়ে তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে তাহেরী হামলার শিকার হয়েছেন বলে মোবাইলে কল করে অভিযোগ করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবাগত জেলা প্রশাসক মো. দিদারুল আলম বলেছেন, দুর্নীতি ও জনদুর্ভোগের বিষয়ে জিরো টলারেন্স। আমার সময়কালে এই দুইটা জিনিস কখনোই হবে না। কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি দুর্নীতি অথবা কাউকে দুর্ভোগে ফেলার অভিযোগ আসে, সেটি ছাড় দেওয়া হবে না। তা ছাড়া জনভোগান্তি যেন না হয় সে জন্য সকল অফিসারদের বলা হয়েছে কেউ কাজ নিয়ে আসলে সবকিছু ঠিক থাকলে দ্রুত কাজ করে দেবেন, আর যদি না হয় তাহলে সেই কাজ হবে না বলে ভোক্তাকে ফেরত দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেন সময় ব্যয়ের মাধ্যমে ভোগান্তি না হয়।
২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
মতবিনিময়ের শুরুতে সকল সাংবাদিকদের সাথে পরিচিত হন নবাগত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. দিদারুল আলম। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রধান কিছু সমস্যা ও বিভিন্ন সেক্টরে ত্রুটি রয়েছে-এমন বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছ থেকে বক্তব্য শোনেন তিনি। পরে সেসব বিষয়গুলোর সমাধানের বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক।
চার লেন সড়কের প্রকল্প নিয়ে মো. দিদারুল আলম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যোগদানের পর মহাসড়কের অবস্থাটি আমি দেখেছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সড়কের কাজে সংযুক্ত লোকজন ভারতে চলে গেছে। পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা চারলেন সড়কের বাকি কাজগুলো সরকারি অর্থায়নে করার অনুমোদন দিয়েছে। তাই অতি দ্রুতই চার লেন সড়কের অসমাপ্ত কাজ শুরু হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ডায়রিয়ার প্রকোপ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেড়েছে। শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ৩০-৪০ জন রোগী। হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন ও পর্যাপ্ত বেড না থাকায় শীতে মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীর স্বজনরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বলছে, বেডের অভাব ও কলেরা স্যালাইন সাপ্লাই না থাকায় কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা।
সরেজমিনে ২৪ নভেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯৬ জন। সারি সারি চট-চাদর বিছিয়ে মাটিতে শুয়ে আছে রোগী ও স্বজনরা। সেখানেই চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আব্দুল্লাহ নামে এক শিশুর মা বলেন, গত দুদিন থেকে ছেলের পাতলা পায়খানা। ছেলেকে শুক্রবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু শীতের দিনে বেড না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছি। হাসপাতাল থেকে কলেরা সেলাইন দিচ্ছে না।
মানিক মিয়া নামে আরেক শিশুর বাবা বলেন, শুক্রবার সকালে ডায়রিয়া আক্রান্ত ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু বেড না থাকায় মেঝেতে কম্বল বিছিয়ে শুয়ে আছে আমার ছেলে ও স্ত্রী। চেষ্টা করেও শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা পাচ্ছি না।
শহরের পৈরতলার এলাকার জহিরের ছেলে ভর্তি আছে হাসপাতালে। তিনি বলেন, রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেছি ছেলেকে। কিন্তু বেড নাই। বারান্দাতেও কম্বল বিছিয়ে থাকতে হচ্ছে গাদাগাদি করে। এতে শিশুদের ডায়রিয়া ভালো করতে এসে ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুদের জন্য ২০টি বেড মজুদ আছে। কিন্তু এবছর বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। আর ডায়রিয়া ওয়ার্ডে যে বেড রয়েছে, তা মোট ২০-২৫ জনকে দেওয়া সম্ভব। তাই রোগীদের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাইজুর রহমান ফয়েজ বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার শীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে এবার বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা যাদের বয়স মাত্র ৬ মাস থেকে এক বছর। আগামী দু’একদিনের মধ্যে কলেরা স্যালাইন রোগীদের দিতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে বর্তমানে ৯৬ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে। শুধু আজ শুক্রবার ৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে তিনভাগের দুইভাগ রোগীই শিশু।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, শীতে প্রতিবছর শিশুদের ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ বাড়ে। এবারও বেড়েছে। তবে এবার শিশুর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইনসহ অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ আছে। সবাই চিকিৎসা পাচ্ছে।