চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন শেখ হাসিনা।
১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রথম সন্তান তিনি। ১৯৬৫ সালে ঢাকার আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬৭ সালে বকশীবাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শেখ হাসিনা কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এ সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। স্বামী ড. এম ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে জার্মানিতে ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাও। এরপর দীর্ঘ ছয় বছর প্রবাসে দুঃসহ জীবন কাটে তাদের।
১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে গত ৪২ বছর ধরে নিজ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূল স্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।
কেবল তাই নয়, বিশ্বের সমস্যা ও সংকট নিরসনের পাশাপাশি শোষিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অসামান্য অবদান রাখায় তাঁকে এখন বিশ্বনেতার মর্যাদা দেওয়া হয়ে থাকে। সর্বশেষ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনৈতিক সংকট এবং রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি।
তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক জোট ও দলগুলো ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে বিজয়ী হয়। ১৯৯৬ সালে তাঁর নেতৃত্বেই তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিজয় অর্জন করে আওয়ামী লীগ।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে ওই বছরের ১৬ জুলাই চাঁদাবাজিসহ দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হন শেখ হাসিনা। ওই সময় সংসদ ভবন চত্বরের বিশেষ কারাগারে দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস বন্দি ছিলেন। গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে এর আগেও কয়েক দফা গৃহবন্দি হয়েছেন তিনি।
এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন শেখ হাসিনার। সাফল্যগাথার এই কর্মময় জীবন ছিল কণ্টকাকীর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাঁকে কারা নির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বারবার তাঁর জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। কমপক্ষে ২০ বার তাঁকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এই পর্যন্ত চার মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছে। ১৯৯৬ সালে তাঁর নেতৃত্বে দীর্ঘ ২১ বছর পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় অর্জনের পর ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয় মেয়াদে শপথ নেয় তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার। এ নিয়ে মোট চারবার সরকারপ্রধানের দায়িত্বে এলেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম এবং ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে অর্থাৎ মোট তিন দফা বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
গণতন্ত্র এবং দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায়ও ব্যাপক সাফল্যের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার টানা প্রায় ১৫ বছরে দেশের বিশাল অগ্রগতি ও বিস্ময়কর উন্নতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ, কল্যাণকর ও নিরাপদ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জলবায়ুসহিষ্ণু বদ্বীপ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘ডেলটা প্ল্যান-২১০০’ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই অঞ্চলে গণতন্ত্র, শান্তি ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারী শিক্ষার বিস্তার, শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস ও দারিদ্র্য বিমোচনের সংগ্রামে অসামান্য ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে মাদার অব হিউম্যানিটি, চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ, লেডি অব ঢাকাসহ দেশি-বিদেশি বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিভিন্ন দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন করবে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে ওয়াশিংটনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হবে।
আওয়ামী লীগের দু’দিনের কর্মসূচিতে রয়েছে– আজ বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল; বাদ আসর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ও শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া এবং মিলাদ মাহফিল, সকাল ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, সকাল ৯টায় মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহার ও সকাল ৯টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে বিশেষ প্রার্থনা এবং আগামীকাল শুক্রবার বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা।
আওয়ামী লীগের সব সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন শুক্রবার ঢাকাসহ সারাদেশে আলোচনা সভা, আনন্দ শোভাযাত্রা, দোয়া মাহফিল, বিশেষ প্রার্থনা, আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য সারাদেশের দল ও সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সংস্থার নেতাকর্মী-সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ চায়না দোয়ারী, জাল, ঘন বেড় জাল ও কারেন্ট জাল ধ্বংস করা সহ আটককৃত ৫ জেলেকে জরিমানা করেছে গোয়ালন্দ উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে পদ্মা নদীর কুশাহাটা, অন্তারমোড়সহ বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, অভিযানকালে অবৈধভাবে পদ্মায় নদীতে মাছ শিকারের জন্য পেতে রাখা ৫০টি চায়না দোয়ারী, ১টি বড় ঘন বেড় জাল, ১ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ২৫ কেজি জাটকা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ জব্দ করা হয়। পরে দুপুওে দৌলতদিয়া ১ নম্বও ফেরিঘাটে জালগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং মাছগুলো স্থানীয় একটি এতিম খানায় বিতরণ করা হয়। আরো জানা যায়, ধ্বংসকৃত জালগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। এসময় উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৭ জন জেলের মধ্যে ৫জন জালের মালিক প্রত্যেককে ২ হাজার কওে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাকী ২ জন নাবালক হওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
দৌলতদিয়া ১ নম্বও ফেরিঘাটে আগুনে জাল পোড়ানোর সময় উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রিট মো. জাকির হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান প্রমুখ।
অভিযান পরিচালনায় অংশ নেন গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা রাজবাড়ী সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব, নৌপুলিশের একটি দলসহ উপজেলা মৎস্য অফিসের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা রাজবাড়ী সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, বুধবার সকাল থেকে আমরা পদ্মা নদীতে অবৈধ জাল দুয়ারী, কারেন্ট জাল ধ্বংসে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। তারই অংশ হিসাবে আজ সাড়ে ৫ লক্ষ টাকার অবৈধ জাল জব্দ করে তা আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছি এবং ৫ জন জেলেকে ১০ হাজার টাকা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, চায়না দুয়ারি দিয়ে দেশীয় মাছ ধ্বংস করে দিচ্ছে অসাধু জেলেরা। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ সময় গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছের জন্য হুমকি এই চায়না দোয়ারী। এ চায়না দোয়ারী সব ধরনের ছোট-বড় মাছ ধরা পড়ে। অবৈধ এই জাল ব্যবহারের ফলে মাছ ও জলজ প্রাণীর প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার পথে। এসব জাল ব্যবহারের ফলে খাল, বিলের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে এবং জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। তাই মৎস্য সম্পদ রক্ষার্থে এসব জাল ধ্বংসে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণুবিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮২তম জন্মবার্ষিকী আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ জামাতা। ১৯৪২ সালের এই দিনে ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘির ফতেহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
ওয়াজেদ মিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, এম এ ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, স্মৃতিচারণা, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল, গরিব ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
ওয়াজেদ মিয়া ১৯৫৬ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্রসংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার হন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দেন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন।
ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর স্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার মতোই তিনিও ’৭৫-পরবর্তী সামরিক শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হন। ২০০৯ সালের ৯ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে তাঁর মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
প্রয়াত এই বিজ্ঞানী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পদার্থবিজ্ঞান, ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্রদের জন্য দুটি গ্রন্থ রচনা করেন।
তাঁর লেখা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র’ নামের আরেকটি গ্রন্থ ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়।
আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রাণপুরুষ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণুবিজ্ঞানী হিসেবে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিজ্ঞান গবেষণার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ বিজ্ঞানাগার এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলার ভোটে তিনটি পদে এক হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আজ ১৫ এপ্রিল সোমবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হবে ১৭ এপ্রিল। আর মনোনয়ন প্রত্যাহার করা যাবে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ভোট গ্রহণ ৮ মে।
উল্লেখ্য, প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল সোমবার (১৫ এপ্রিল)। শেষ সময় মোট ১ হাজার ৮৯১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, এবার মোট চার ধাপে ৪৮০টি উপজেলা পরিষদে ভোট হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে পরে দুটি উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশেপাশের দেশ চাঁদে চলে যায়, আমরা কেন পিছিয়ে থাকব? ভবিষ্যতে বাংলাদেশ চাঁদেও যাবে। সেইভাবে আমরা দেশে দক্ষ ও স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলব।
আজ ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন শুরু করে। আকাশপথে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা আছে সরকারের। কেউ যশোর থেকে সৈয়দপুর যাবে, সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রাম যাবে, কেউ যশোর থেকে কক্সবাজার যাবে অথবা কক্সবাজার থেকে যশোর যাবে, বিমানের মাধ্যমে হবে- এমন পরিকল্পনা আমাদের আছে। আগামীতে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, মানুষের যোগাযোগ ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতি উন্নতির জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ সড়কপথ রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশপথ সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহন করে। বিশেষ করে, এদের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশ যাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাকে গুরুত্ব দেই।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকারে আসি তখন আমাদের বিমানবন্দরের কোনো বোডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং লোড ছিল না, কিছুই ছিল না। আমরা সরকারে এসে বিমানবন্দরের উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম ও সিলেটে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আমরা নির্মাণ করি। সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল এ সময়ে বিমানবন্দরের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি পারেন তাহলে ১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত কী উন্নয়ন ছিল, সেটা একটু দেখবেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এরিয়ায় এসে পৌঁছান।
এ সময় দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসংবলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩-এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমানসহ বেবিচক ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেছিলেন। তৃতীয় টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। এছাড়াও বহুতল কার পার্কিংয়ে রাখা যাবে এক হাজার ৪৪টি গাড়ি। নতুন টার্মিনালে এক কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
চলারপথে রিপোর্ট :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে আইন পাশ করে সংবিধান থেকে সেটা বের করে দিয়েছে। আর সেখানে ফিরে যাওয়া যাবে না।
তিনি আজ ২১ জুলাই শুক্রবার দুপুরে কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
খাড়েরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু আবদুল্লাহ ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ বর্ধিত সভায় আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের সৃষ্টি করা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পৌছে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর বিএনপি-জামায়াত দেশ চালিয়েছেন। তারা চেষ্টা করেছে যেন বাংলাদেশ যেন একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়। তারা চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের গ্যাস বিক্রি করে দেয়ার জন্য। তারা চেষ্টা করেছে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য। আমরা ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ভুলে যাইনি। তারা নির্বাচন করতে চায়না। তারা চায় পেছনের দরজা দিয়ে যদি কেউ তাদেরকে ক্ষমতায় ঢুকিয়ে দেয়। তিনি বলেন, আজকে বড় বড় শত্রুদের মোকাবেলা করতে হবে। আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে জামায়াত-বিএনপির ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ ভাবে মোকাবেলা করবেন।
তিনি আরো বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের ভবিষৎ অন্ধকার। বিএনপি যদি আবার ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আবার একটা নৈরাজ্যের দেশ হয়ে যাবে।
বিশেষ বর্ধিত সভায় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাউছার ভূঁইয়া জীবন, পৌরসভার মেয়র এমজি হাক্কানী, সাবেক পৌর মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মনির হোসেন, ছাত্রলীগের আহবায়ক আফজাল হোসেন রিমন প্রমুখ।