দৌড় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সী মানুষের অংশগ্রহণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 30 September 2023, 1078 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির বর্ষপূর্তিতে ফান রান দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে জেলা শহরের পৌর এলাকার লোকনাথ দীঘির ট্যাংকের পাড় থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে বিভিন্ন বয়সী দৌড়বিদেরা অংশগ্রহণ করেন।

banner

ভোরে সূর্যের আলো উঠার আগেই শুরু হয় এই প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন বয়সের দৌড়বিদরা লোকনাথ দীঘির ট্যাংকের পাড়ে জমায়েত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বিভূতি ভূষণ দেবনাথ, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান দিলারা আক্তার খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির প্রধান উদ্যোক্তা সংগঠনের এডমিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক রাজন মিয়া।

শহরের লোকনাথ দীঘির ট্যাংকের পাড়ের প্রধান ফটক থেকে প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে শহরের তিতাস নদীর বুক চিরে বের হওয়া নতুন সড়ক সীমনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের (শেখ হাসিনা সড়ক) তৃতীয় সেতু পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও বিজয়নগর উপজেলার মনিপুর থেকে শহরের শিমরাইলকান্দি সেতু পর্যন্ত আসা-যাওয়া ১০ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগিতা চলে। ফান রানে দুই কিলোমিটার দৌড়ে শিশুরা, ৪৫ বছর বয়স থেকে বয়োজ্যেষ্ঠরা ৫ ও ১০ কিলোমিটার এবং নারীরা ৫ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নেন। ৫ ও ১০ কিলোমিটার সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। ছয় ক্যাটাগরিতে মোট ৮৫ জন অংশ নেন।

দৌড় শেষে সীমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের শিমরাইলকান্দি সেতুতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক দিলারা আক্তার খান। অংশগ্রহণকারীদের একটি করে শুভেচ্ছা স্মারক, সনদ, টি-শার্ট দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারকারীদের চ্যাম্পিয়ান ও রানার্সআপ ট্রফি দেওয়া হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির সমন্বয়ক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. রাজন মিয়া বলেন, সুস্থ্য দেহ ও সবল মনের জন্য ২০২১ সালে এই সংগঠন করেছিলাম। নিজেদের সুবিধামতো জায়গায় সংগঠনের ৫০ সদস্য প্রতিদিন দৌড়ান। সংগঠনটির সক্রিয় রানার সংখ্যা এখন শতাধিক। এই সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন অন্তত আড়াই হাজার সদস্য। আগামী বছরের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক মানের বড় পরিসরে হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

উপদেষ্টা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের প্রফেসর দিলারা আক্তার জানান, প্রথমবারের মতো শিশুরা অংশগ্রহণ করেছেন এই প্রতিযোগিতায়। সকলকে এই সামাজিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।

Leave a Reply

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে স্থায়ীভাবে অপসারণ

অনলাইন ডেস্ক : দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ Read more

নিখোঁজের চার দিন পর যুবতীর বস্তাবন্দি…

অনলাইন ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের চার দিন পর কসটেপে Read more

বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলে Read more

মালয়েশিয়ায় দুই বাংলাদেশি যুবকের লাশ উদ্ধার

আল আমিন, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি : মালয়েশিয়ার মেলাকা রাজ্যের আলোর গাজাহ Read more

অবৈধ অস্ত্রসহ যুবক গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : দুটি অবৈধ অস্ত্র (৪.৫ মি.মি. ভারতীয় এয়ারগান) Read more

আশুগঞ্জে বিপুল পরিমাণ বিদেশি প্রসাধনীসহ দুই…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের Read more

নবীনগরে কৃষক মাঠ স্কুলে কৃষকদের সাথে…

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগর উপজেলায় “প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এন্ড রুরাল Read more

অস্ত্রসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের পাঁচ সদস্য…

চলারপথে রিপোর্ট : আন্তঃজেলা ডাকাত দলের পাঁচ সদস্যকে দেশীয় ধারালো Read more

নাসিরনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

চলারপথে রিপোর্ট : “সমন্বিত উদ্যোগ, প্রতিরোধ করি দুর্যোগ” প্রতিপাদ্যকে সামনে Read more

সরাইলে জেলি যুক্ত চিংড়ি বিক্রির দায়ে…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর Read more

আজ আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস

অনলাইন ডেস্ক : ‘সমন্বিত উদ্যোগ, প্রতিরোধ করি দুর্যোগ’ প্রতিপাদ্যে বিশ্বব্যাপী Read more

সাড়ে ৬ কোটি টাকার ক্যানসারের ইনজেকশন…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমান্তবর্তী বিজয়নগর থেকে চোরাচালানের সময় Read more

সংবর্ধনা আমাদের ঋণ শোধের ক্ষুদ্র একটি প্রয়াস : পুলিশ সুপার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 18 December 2024, 439 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬২ জন পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। আজ ১৮ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ এই বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জন্মগ্রহণকারী ৬২ জন পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান।

banner

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এসব বীর পুলিশ সদস্যরা তাঁদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের আত্মত্যাগ, অসম সাহসীকতা ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান জাতি চিরকাল স্মরণ করবে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান আরো বলেন, আজকের এই সংবর্ধনা আমাদের ঋণ শোধের ক্ষুদ্র একটি প্রয়াস। মুক্তিযুদ্ধের বীর পুলিশ সদস্যদের আত্মত্যাগের জন্য দেশের জনগণ চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা।

নন্দনপুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 31 December 2024, 447 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরীর ডেকো ফুডস্ কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরীর পরিত্যক্ত পণ্য ক্রয় নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন ও বুধল ইউনিয়নের দুই নেতা ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।

banner

৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফায়-দফায় এই সংর্ঘষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, নন্দনপুর বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত ডেকো ফুডস্ কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরী থেকে দুই থেকে তিন মাস পর পর কারখানার পরিত্যক্ত পণ্য নিলামে বিক্রি করা হয়। এসব পরিত্যক্ত পণ্য মাছের খাদ্য হিসেবে বিক্রি হয়। গত ১দশক ধরে এসব পণ্য কিনতেন সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিনের পক্ষের ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন এবং কৃষকদল নেতা মোরশেদ হাজারী।

গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর এই পণ্যগুলো ক্রয় করার জন্যে পাশের বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের সমর্থক আশরাফুল ইসলাম মাসুম পণ্য ক্রয়ের ব্যাপারে কারখানার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আসেন।

সকালে আগের ব্যক্তিদের কাছে পণ্য বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এমন খবর পেয়ে সেখানে দলবল নিয়ে ছুটে যান আশরাফুল ইসলাম মাসুম। সেখানে গিয়ে তিনি নাসির উদ্দিনের পক্ষের লোকজনের সাথে বাক বিতন্ডায় লিপ্ত হন।

পরে নাসির উদ্দিন ও হারুনুর রশিদের পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংর্ঘষে লিপ্ত হন। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এসময় ডেকো ফুডস্ ফ্যাক্টরীসহ বেশ কয়েকটি বাড়ী-ঘরে হামলা ও লুটপাট করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় খড়ের গাদা।

এ ব্যাপারে সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিনের পক্ষের মোরশেদ হাজারী বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কারখানার রেইট অনুযায়ী কাজটি পায় মেসার্স মোরশেদ এন্ড নাসির খন্দকার নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটি পাওয়ার পর বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও তার সমর্থক আশরাফুল ইসলাম মাসুম তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মঙ্গলবার সকালে তারা ৪০/৫০ জন লোক নিয়ে এসে তাদের উপর আক্রমণ করেন। এতে তাদের পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। এসময় বেশ কয়েটি বাড়ী-ঘর ভাংচুর করা হয়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের পক্ষের আশরাফুল ইসলাম মাসুম বলেন, আমি ইতিপূর্বে এক সময় ওই কারখানায় চাকরি করতাম। সেই সুবাদে কারখানার কর্তৃপক্ষের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডেকে নিয়ে পরিত্যক্ত পণ্যগুলো ক্রয় করার অফার দেয়। আমিও তাদের কথামতো পণ্যগুলো ক্রয় করার জন্য কথা বলে আসি। মঙ্গলবার সকালে জানতে পারি এই পণ্যগুলো পূর্বে যারা ক্রয় করতেন, তাদের কাছেই কারখানা কর্তৃপক্ষ গোপনে বিক্রি করছেন।

এমন খবর পেয়ে আমার কয়েকজন বন্ধুকে সাখে নিয়ে সেখানে যাই। সেখানে যাওয়া মাত্রই সেখানে থাকা সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাছির উদ্দিন ও তার পক্ষের মোর্শেদ হাজারি দলবল নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমি সহ আমার সাথে থাকা বেশ কয়েকজন আহত হয়। আমি এই ঘটনা তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে সুহিলপুর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি মোঃ মফিজ মিয়া জানান, বিস্কুট ফ্যাক্টরির পরিত্যক্ত পণ্য নিয়ে দুই ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দলের জন্য বদনাম হয়েছে। তিনি বলেন, এদেরকে থামানো না গেলে দলের আরো বদনাম হবে।

এ ব্যাপারে বিসিক শিল্পনগরীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক রোকন উদ্দিন ভূইয়া জানান, ঘটনার পর পরই তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও ডেকো ফুডস্ ফ্যাক্টরীর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন জানান, সংর্ঘষের খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

সংর্ঘষে আহদের মধ্যে পাঁচজনকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।

বিশ্ব রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস পালিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 8 May 2025, 271 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
৮ মে বিশ্ব রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস পালিত হয়েছে। আজ ৮ মে বৃহস্পতিবার দিবসটি উপলক্ষে আজ সকালে রেড ক্রিসেন্ট ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা ও রেড ক্রিসেন্টের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে শহরের পৌর মুক্ত মঞ্চ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়।

banner

র‌্যালিতে রেডক্রিসেন্ট সদস্যরা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সঙ্গীতাঙ্গনের মিলনায়তনে সরোদ মঞ্চে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম।

জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান শাহীনের সভাপতিত্বে ও যুব ইউনিট প্রধান-১ ফাহিম মুনতাসিরের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হোসেন, আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সোপানুল ইসলাম সোপান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, বিআরডিবির চেয়ারম্যান আলী আজম, জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান, জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট লেভেল অফিসার ইমরান হোসেন প্রমুখ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেড ক্রিসেন্ট এ্যাডহক কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন বেলাল, ডা. কাজী শান্তুনু সায়হাম অর্নব, আশরাফুল ইসলাম বাবু, মো. তানভীর রুবেল, শাহআলম পালোয়ান।

এ সময় বক্তারা বলেন, প্রতিটি দুর্যোগে আমাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা আর্তমানবতার সেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। মানবতাকে বাঁচিয়ে রাখতে জিন হেনরি ডুনান্টের প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন আরো অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। পরে রেড ক্রিসেন্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠান শেষে রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে একটি ফ্রি ব্লাড ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, রাজনীতি, 1 September 2025, 183 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। আজ ১ সেপ্টেম্বর সোমবার বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির উদ্যোগে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে কেক কেটে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এরপর একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে গিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

banner

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জহিরুল হক, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলি আজম, এবিএম মমিনুল হক প্রমুখ। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীকে ঘিরে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ঢাক-ঢোল বাজিয়ে র‌্যালিতে অংশ নেন। পুরো অনুষ্ঠানস্থল ছিল উৎসবমুখর পরিবেশে মুখরিত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আমি আবারো সকলের সহযোগিতা চাই

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 13 November 2023, 1051 Views,

দৈনিক সমতট বার্তা’র ৩৩ বছর পদার্পণ অনুষ্ঠানে জননেতা মোকতাদির চৌধুরী এমপি

চলারপথে রিপোর্ট :
সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সরোদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত পাঠক নন্দিত দৈনিক সংবাদপত্র সমতট বার্তা’র ৩৩ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে দৈনিক সমতট বার্তার আয়োজনে ৭ পর্বের সমতট উৎসবের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল সুধী সমাবেশ, গুণীজন সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তিতাস পাড়ে অভাবনীয় উন্নয়নের সফল রূপকার র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, মুখ্য আলোচক ছিলেন বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ফাখরুল আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এএসএম শফিকুল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষণ দেবনাথ।

দৈনিক সমতট বার্তার উপদেষ্টা ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ এর সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি বিশিষ্ট লেখক ও কবি জয়্দুল হোসেন। প্রধান অতিথি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি যখন ছোটবেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসতাম তখন কুসুমকুমার চক্রবর্তী নামে একজন বড় ডাক্তার ছিলেন। তিনি আমাকে কালো মেঘ ঔষধ খাওয়াতেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এসে দিনে দিনে গ্রামে ফিরে যাওয়া সম্ভব হতো না। সে সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের নিয়াজ পার্কে আমার ফুফুর বাসায় রাত্রিযাপন করতে হতো। তখন প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় আমি শুনতে পেতাম ঘরে ঘরে সুরের মূর্ছনা, ঝংকার। প্রায় সবার বাড়ি থেকে হারমোনিয়াম এর আওয়াজ ভেসে আসতো ওই সময়টাতে। এটি ছিল নিতান্তই তখন সুরের শহর। আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন নামে যেখানে আমরা আজকে দাঁড়িয়ে আছি এই বাড়িটি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ক্রয়কৃত বাড়ি। এ বাড়িটিতে তিনি নিজে এই সঙ্গীত একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আগের যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমরা দেখেছি সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এখন আর নেই। কিন্তু আমি আগের ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে খুঁজে পেতে চাই। আমি যখন এখানে রাজনীতি করতে এসেছি তখন আমি এই শহরকে ভালোবাসি বলেই এসেছি। কারণ, সমৃদ্ধ শিক্ষা-সংস্কৃতি, অনেক অনেক জ্ঞানী-গুণীজনদের এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনাম ছিল অনেক উপরে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, আরও ছিলেন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ব্যারিস্টার এ রসুল, নবাব শামসুল হুদা, মলয়া সংগীতের মনমোহন দত্ত, আফতাব উদ্দিন খাঁ, লব পাল এর মত অনেক গুণীজন। এখন আর সেই দিন নেই। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাজনীতি করতে এসে এখানে অনেক মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি সহমর্মিতা পেয়েছি। তাঁদের কথাতো আমি ভুলতে পারবো না। এরমধ্যে রয়েছে দৈনিক সমতট বার্তা এবং এর সম্পাদক মনজুরুল আলম। আর সেই জন্যেই এখানে আসার ব্যাপারে তার যে আহ্বান সেটাকে আমি উপেক্ষা করতে পারিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারই বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে। আর এসব প্রচার যখন উপর মহলে যায় তখন আমরা অবহেলার শিকার হই। করোনাকালীন সময়ে একজন জনপ্রিয় মাওলানার মৃত্যুতে তাঁর জানাজায় অনেক মানুষ হয়েছিল। এটি নিয়েও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই চট্টগ্রামে শফি নামে একজন আলেম সাহেবের মৃত্যু হয়। তার জানাজায়ও আরো অনেক বেশি মানুষ হয়েছিল। সেটিও ছিল করোনাকালেই। অথচ চট্টগ্রামের এ বিষয়টি নিয়ে কোন বিরূপ প্রচারণা কেউ করেনি। উপরন্ত চট্টগ্রামবাসীরাও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্পর্কে নেতিবাচক সমালোচনা করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে একজন মহিলা দু’দুবারে মহিলা মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন, সেই কথাটা কেউ বলে না। কিছু লোক সংঘবদ্ধ হয়ে, অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে এই আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেলস্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাসহ বেশ কিছু স্থানে বর্বর হামলা চালিয়ে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করলো, এ ব্যাপারে কেউ কিন্তু আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ঢাকা শহরে এত এত সাংস্কৃতিক সংগঠন, বড় বড় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন’ তারা কিন্তু এই তান্ডবের বিপক্ষে একটি মানববন্ধন করেননি। ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাত্র আড়াই ঘণ্টার পথ। এ সত্যেও এখানে কেউ আসেননি। আমি এই ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করার কথা বলেছিলাম। তাও হলোনা। এখানেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে নেতিবাচকতা হয়েছে। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হল এই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বাড়ি, এমন সাংবাদিকও ওই ঘটনা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর বিপক্ষে লিখেছেন। তাদের কেউ একবার এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, মিউনিসিপ্যালিটি সহ অন্যান্য স্থাপনার ধ্বংসরূপ দেখে যাননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতি তাদের বিরূপ ধারণা রয়েছে। এখানে রাজনীতিতে এসে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেছি, এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার এ প্রচেষ্টায় আমার পাশে আছে দৈনিক সমতট বার্তা এবং এর সম্পাদক মনজুরুল আলম। এখানকার অন্যান্য পত্রিকার মধ্যে দৈনিক সমতট বার্তা কিছুটা ব্যতিক্রম। জেলার শিল্প সংস্কৃতি এবং রাজনীতির প্রগতিশীল ভাবনাগুলোকে মর্যাদা দিয়ে তাঁরা পত্রিকাটি চালাচ্ছেন। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইনশাল্লাহ, একদিন অতীতের ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমরা অবশ্যই ফিরে পাবো। এ ব্যাপারে আমি আবারো আপনারা সকলের সহযোগিতা চাই।’ অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলামকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন প্রধান অতিথি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি, মুখ্য আলোচক বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ফাখরুল আরেফিনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন দৈনিক সমতট বার্তা পাঠক ফোরাম এর সভাপতি হাজী সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাফিরউদ্দিন চৌধুরী রনি। এর আগে মোরশেদুল ইসলাম ও ফখরুল ইসলামের জীবনচরিত ও কর্মকৃতি পাঠ করেন ফারিয়া বিনতে আলম ও ডাঃ ইশতি বিনতে আলম হৃদিলা। সংগীতানুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন নুসরাত জুহুরী প্রান্তি, পাপিয়া চৌধুরী, ডাঃ ইশতি বিনতে আলম হৃদিলা, মায়া চক্রবর্তী। নৃত্য পরিচালনা করেন নৃত্য প্রশিক্ষক যে আমিন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সংগীত সংগঠক আনিসুল হক রিপন। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন দৈনিক সমতট বার্তার সম্পাদক মনজুরুল আলম।