চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় প্রেমে ব্যর্থ হয়ে শাহিদ (১৫) নামে এক কিশোর কেড়ির বড়ি (ইঁদুর মারা ওষুধ) খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আজ ১ অক্টোবর রবিবার দুপুরের দিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম। এর আগে আখাউড়া পৌরসভার মসজিদপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কিশোর আখাউড়া উপজেলার মসজিদপাড়ার মো. নিজাম মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পরিবারের অজান্তে কেড়ির বড়ি খেয়ে ছটফট করতে থাকলে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসকরা জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেফার করে। সেখানে ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সে এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মাদক ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দের জের ধরে মো. মোরসালিন ভূঁইয়াকে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামীদের তিনটি ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশি পাহারার মধ্যেই আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল পৌণে নয়টার দিকে আসামী আব্দুল্লাহ, সেলিম ও শাহদুল এর তিনটি ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে পরিবারসহ হত্যা মামলার আসামীরা পলাতক থাকায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভায়। পরিস্থিতি বিবেচনায় ওই এলাকাতে এখনো পুলিশ মোতায়েন করা আছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গত রবিবার আখাউড়ায় দেনাদারের বাড়িতে মো. মোরসালিন ভূঁইয়া (২৬) নামে এক পাওনাদারের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর থেকে মো. আব্দুল্লাহ নামে অভিযুক্ত দেনাদার পরিবারসহ পালিয়ে গেছে। মোরসালিনের পরিবারের পক্ষ থেকে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতানামা কয়েকজনকে আসামী করে আখাউড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, আব্দুল্লাহর কাছে মোরসালিন দুই লাখ ৪০হাজার টাকা পেতেন। পরিকল্পিতভাবে তাকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তাকে তালাবদ্ধ ঘরে ফেলে রাখা হয়। পাশাপাশি অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ পরিবার নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত ও অভিযুক্ত দু’জনই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি। এসব নিয়ে দেওনা-পাওনা নিয়ে বিরোধেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। অভিযুক্ত আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৬টি মামলা আছে। মোরসালিনের বিরুদ্ধে আছে চারটি মামলা। তবে তারা একসঙ্গেই চলাফেরা করতো বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
নিহত মোরসালিন উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মিনারকুটগ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে। রবিবার বিকালে একই ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের মঙ্গল মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহর তালাবদ্ধ বসত ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়।
সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে তার লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে দাফন করা হয়।
মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল আলম চৌধুরী দীপক বলেন, আগুন লাগানোর বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি সেখানে যাবো। তবে কে বা কারা লাগিয়েছে সেটি বুঝতে পারছি না।
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশ একটু সরে অন্যদিকে যাওয়ার সুযোগে আগুন জ্বালিয়ে তিনটি ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে জানার চেষ্টা চলছে। তবে হত্যাকান্ড ঘটনো পরিবারটির উপর এলাকাবাসীরও ক্ষোভ ছিলো। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে। আগুন লাগার ঘটনায় অভিযোগ দিলে সে অনুযায়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেলিভারির পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এক প্রসূতি মা নব জাতকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ৫ মে শুক্রবার দুপুরে দুপুরে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত প্রসূতি সাহিদা আক্তার খুকি উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ছয়গড়িয়া গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং কসবা উপজেলার ধ্বজনগর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহীন মিয়ার স্ত্রী। স্বজনদের অভিযোগ, রক্তক্ষরণ বন্ধে এবং শিশুটির তাৎক্ষনিক সঠিক চিকিৎসা না দেওয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৮টার দিকে প্রসব ব্যথা উঠলে সাহিদাকে তার স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের মিড ওয়াইফ আমেনা আক্তার সুমনার তত্ত্বাবধানে বেলা সোয়া ১১টার দিকে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় সাহিদা আক্তার। সন্তান প্রসবের পর সাহিদার প্রচুর রক্ষক্ষরণ শুরু হয় এবং নবজাতকের শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ গোলাম মোস্তাফা এবং মিড ওয়াইফ আমেনা আক্তার তখন প্রসূতি সাহিদা আক্তার এবং নবজাতককে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। বেলা ১২টার পরে নিহতের স্বজনরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন সাহিদা ও নবজাতককে মৃত বলে ঘোষণা করে। পরে তাদেরকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও তাদেরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বেলা ৩টার দিকে স্বজনরা সাহিদার মরদেহ আখাউড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে।
সাহিদার বড় বোন মাহমুদা বেগম অভিযোগ করেন, চিকিৎসার অভাবে সাহিদা ও তার শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হিমেল খান বলেন, হাসপাতালে স্বাভাবিক ডেলিভারির পর রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছেন। শিশুটির শ্বাস কষ্ট হচ্ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। কোন চিকিৎসক এবং নার্সের কর্তব্যের অবহেলার জন্য যদি প্রসূতি ও তার সন্তানের মৃত্যু হয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম ইসলাম বলেন এ ব্যপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরের সাবেক ট্রাফিক পরিদর্শক আব্দুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ১৪ মে রবিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
ট্রাফিক পরিদর্শক আব্দুল কাদের জিলানী বর্তমানে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার আমড়াতলী গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আব্দুল কাদের জিলানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর বন্দরে ট্রাফিক পরিদর্শক ছিলেন। আখাউড়া স্থলবন্দরে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবেশ করে ২২ হাজার ৮৯০টি গাড়ি। কিন্তু অভিযুক্ত আব্দুল কাদের জিলানী ১১ হাজার ৯৮৩টি গাড়ির হিসাব রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করেছেন। বাকি ১০হাজার ৯০৭টি গাড়ি প্রবেশের তথ্য এন্ট্রি করেননি। গাড়িগুলো রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি না করে এর ফি ১২ লাখ ৬২ হাজার ৯০২টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না করে আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনায় রবিবার দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০ ধারা সহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুদক স্থলবন্দর ট্রাফিক পরিদর্শক আব্দুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় বিপুল পরিমাণ ভারতীয় স্কাফ সিরাপসহ আঁখি আক্তার নামে এক নারীকে আটক করেছে আখাউড়া থানা পুলিশ। তবে আঁখি আক্তার মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও মাদক ব্যবসায়ীর গচ্ছিত রাখা স্কাফ সিরাপ তার গোসলখানায় পাওয়ায় আঁখি আক্তারকে আটক করা হয়। এসময় তার গোসলখানায় থাকা ১০০ বোতল ভারতীয় স্কাফ সিরাপ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের ভারত সীমান্ত সংলগ্ন আনোয়ারপুর গ্রামের আঁখি আক্তারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আঁখি আক্তার ওই গ্রামের ওমান প্রবাসী সুমনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের পুলিশ প্রবাসী সুমনের বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় বাড়ির গোসলঘর থেকে ১০০ বোতল ভারতীয় স্কাফ সিরাপ পাওয়া যায়। পরে স্কাফ সিরাপসহ আঁখি আক্তারকে আটক করা হয়।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুল ইসলাম জানায়, আটককৃত আঁখি আক্তার মূলত মাদক ব্যবসায়ী না। তার বাড়িটি সীমান্ত লাগোয়া হওয়ায় ওপার থেকে আসা মাদকের চালান তার বাড়িতে রেখে সুযোগমত অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হত। বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আঁখি আক্তার টাকা নিতেন। কিছুদিন থেকে এমন একটি খবর আমাদের কাছে ছিল। রবিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে স্কাফ সিরাপসহ তাকে আটক করি। তার বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে সোমবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
মসজিদে আছরের নামাজ আদায় করে বাসায় ফিরছিলেন বৃদ্ধ নাসির মিয়া। রাস্তা পারাপারের জন্য দাঁড়িয়ে সুযোগের অপেক্ষা করছিলেন। আচমকা বেপরোয়া গতির একটি মোটরসাইকেল এসে থাক্কা দেয় তাকে। সড়কে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এতে ডান পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত পান তিনি।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ দিন পর ১১ জুন মঙ্গলবার দুপুরে নাসির মিয়া মৃত্যুবরণ করেন। প্রবাস ফেরত নাছির মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় পৌরশহরের রেলওয়ে কুমার পাড়া বাইপাস এলাকার বাসিন্দা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আখাউড়া-সুলতানপুর ফোরলেন সড়কের পাশে নাসির মিয়ার বাড়ি। প্রতিদিনের মতো গত ২ জুন খড়মপুর দক্ষিণ পাড়া মসজিদে আছরের নামাজ পড়তে যান তিনি। নামাজ শেষে ফেরার পথে বাসার সামনে সড়কের অপর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন পারাপারের জন্য। ব্যস্ত সড়কে হঠাৎ পশ্চিম দিকে আসা একটি মোটর সাইকেল তাক্কে সজোড়ে থাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তার ডান পা, পাজড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান তিনি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করান। চিকিৎসা শেষে সোমবার বাড়িতে নিয়ে আসেন তাকে। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত নাসির মিয়ার ছেলে ইসমাইল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের আঘাতেই আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে। সড়ক দূর্ঘটনা রোধে গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করা দরকার। তাহলে এভাবে কারও স্বজনকে অকালে প্রাণ দিতে হবে না।