চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের আব্দুল মজিদ (৭০) নামে এক হাজতি মারা গেছেন। আজ ১ অক্টোবর রবিবার বিকেলে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আব্দুল মজিদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের শিবপুর ইউনিয়নের জুলাইপাড়ার মৃত হরন আলীর ছেলে। তিনি একটি হত্যা মামলায় জেলা কারাগারে হাজতি হিসেবে ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের সুপার মো. ইকবাল হোসাইল বলেন, চলতি বছরের ২৩ জুন হওয়া একটি হত্যা মামলায় আব্দুল মজিদ কারাগারে হাজতি হিসেবে ছিলেন। রবিবার সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেওয়া হয়। সেখানে তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। পরে বিকেলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো বলেন, তার মরদেহ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের খবর পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুবিন্যস্থ বেণি জুড়ে গাছে দুলছে আশ্চর্য সুন্দর হিজল ফুল। দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের হাওড় বেষ্টিত ভাটির অঞ্চলে এ ফুলের দেখা মিলে, এখন সেই সময়। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরে ফিরেই এসেছে হিজলের কথা। কবির ভাষায়- “চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম/চিতা জ্বলে”। একই ভাবে হিজল বনে ঘুঘু দেখে উচ্ছ্বসিত কবি লিখেছেন- “পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে”। অবশ্য কবিতার বাইরে বাস্তবে হিজল গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গণসংগীত শিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাস সুরে সুরে বলেছেন- “হাওড়ের পানি নাই রে হেথায়, নাই রে তাজা মাছ/বিলের বুকে ডালা মেলা, নাই রে হিজল গাছ”। অর্থাৎ দিন দিন হিজল গাছের সংখ্যা কমছে। বর্তমানে গাছটি প্রায় দুর্লভ। এ গাছটি সংস্কৃত নাম নিচুল, এ ছাড়াও জলন্ত ও নন্দীক্রান্ত নামেও পরিচিত। হিজল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম- Barringtonia acutangula। এটি Lecythidaceae পরিবারের সদস্য। এটি বাংলাদেশের ভাটির অঞ্চলে বহুকাল ধরে টিকে থাকলেও এর আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং ভারত। গাছ মাঝারি আকারের, উচ্চতা ৫-১০ মিটার পর্যন্ত, এর ডালপালা থাকে ছড়ানো, বাকল যথেষ্ট পুরো, ঘনছাই রঙের হয়ে থাকে, বীজ থেকে গাছ হয়। খাল, বিল, নদী, ডোবা, হাওর ইত্যাদি জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। এটি পানির নিচে কয়েক মাস জীবিত থাকতে পারে। এ গাছের মূল আকর্ষণ লাল ও গোলাপি রঙের ছোট ছোট ফুল, ফুলের আছে মিষ্টি ঘ্রাণ। উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মার বর্ণনা মতে- “ফুলের মঞ্জুরী ৬-১৫ ইঞ্চি লম্বা। বহুপুষ্পিক ফুলের বৈশিষ্ট্যে হিজল অনন্য”।
হিজল বীজের অনেক ঔষুধি গুনাগুন আছে- মাথা ও কপাল ব্যথা হলে হিজল বীজ শুকিয়ে গুড়া করে দুই চামচ পরিমাণ এক কাপ দুধসহ সকালে এবং বিকেলে খেলে মাথা ব্যাথা কমে যায়। পেটে গ্যাস হলে, ঢেকুর উঠলে, পেট ফাঁপা হলে হিজল বীজ চূর্ণ করে গরম মসলা সহ খেলে কিছুক্ষনের মধ্যে সেই সমস্যা চলে যায়। চোখ উঠলে, চোখ লাল হলে, চুলকায়, পানি পড়ে। সেই সময় বীজ নিয়ে পাথরে ঘসে চন্দনের মত চোখের চারি পাশে লাগিয়ে দিলে কিছুক্ষণ রাখার পর ছোট নেকড়া ভিজিয়ে মুছে দিলে যন্ত্রণা কমে যায়। হিজল ফুল গভীর রাতে ফুটে, সকাল হতে না হতেই ঝড়ে যায়। হিজল সাধারণত জলমগ্ন বা জলসংলগ্ন অঞ্চলে ভাল হয়। তাই নবীনগরের ভাটির অঞ্চলের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে টিকে আছে হিজল গাছ। নদী সংলগ্ন গ্রাম গুলোতে নৌকা দিয়ে গেলে চোখে পড়ে অপূর্ব হিজল গাছের সারি কারন- হিজলের আবাস নিচু এলাকা/ হাওড় অঞ্চল।
নবীনগরের মত দেশের হাওড় বেষ্টিত সাত জেলার ৪০টি উপজেলায় কম বেশি প্রায় প্রতি গ্রামেই দেখা যায় হিজল। নিচু জলাঅঞ্চলে মাছের অভয়রাণ্য তৈরিতে এই গাছের ডাল ব্যবহৃত হয়। ভরা বর্ষায় নবীনগরের ভাটি অঞ্চলে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার সময় নৌকা থেকে চারপাশে তাকালে থৈ থৈ জলের মধ্যে দেখা যায় হিজল গাছ। যেন ঘাটে নৌকা লাগতেই স্বাগত জানাচ্ছে হিজলের ফুল। স্থানীয়দের খুব চেনা এ গাছটি শুকনো মৌসুমেও দিব্যি থাকে। এমনকি রাজধানী শহরের একাধিক উদ্যানেও দেখা যায় হিজল গাছ। বর্তমানে কিছু সরকারি বেসরকারি প্র্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ গাছ লাগানো হচ্ছে। হিজলের প্রাণশক্তি অনেক বেশি, দীর্ঘজীবী গাছ, বিধ্বংসী বন্যা কিংবা তীব্র খরাও একে কুপোকাত করতে পারে না। জল এবং স্থল দুই জায়গাতেই এরা সাবলীল, এদের এই আলাদা বৈশিষ্ট্য ও অভিযোজনের কারনে হিজল সবার দৃষ্টি কাড়ে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে লাইফ জ্যাকেট বিহীন স্পীডবোট চালানোসহ অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে নৌ-যান চলাচলের অভিযোগে ৮টি মামলায় ১৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় উপজেলার মধ্যপাড়ায় একটি অবৈধ খনন যন্ত্র জব্দ করা হয়।
২ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও নবীনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন নবীনগর লঞ্চঘাট থেকে স্পীডবোট ও নৌ-যানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর, নবীনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, বাঞ্ছারামপুর, আশুগঞ্জ, নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় যাতায়ত করে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। প্রতিনিয়তই নবীনগর লঞ্চঘাট থেকে যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায় চালকেরা। এছাড়া লঞ্চঘাট থেকে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে বিভিন্ন ধরণের নৌযান চলাচল করে।
এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান নবীনগর লঞ্চঘাটে অভিযান পরিচালনা করে। এসসয় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে নৌযান চলাচল এবং লাইফ জ্যাকেটবিহীন যাত্রী বহনের দায়ে ৮টি মামলায় আটজনকে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। একই দিন বিকেলে উপজেলার মধ্যপাড়া এলাকায় অবৈধ খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলনে দায়ে একটি খনন যন্ত্র জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানা গেছে, গত বুধবার বিকেলে উপজেলার লঞ্চঘাট থেকে অতিরিক্ত মালামাল ও যাত্রীবোঝাই করে একটি ট্রলার নরসিংদী জেলার মির্জারচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। বেলা তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের তিতাস নদের সীতারামপুর এলাকার সেতুর পিলারের সাথে ধাক্কা লেগে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে এক তরুনীসহ দুই যাত্রী মারা যায়।
এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান বলেন, অভ্যন্তরীন নৌ চলাচাল অধ্যাদেশ, ১৯৭৬ অনুযায়ী আটটি মামলায় সাড়ে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই দিন বিকেলে একটি অবৈধ খননযন্ত্র জব্দ করা হয়েছে। জনস্বার্থে এই ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে সহকারি অধ্যাপক ডা. মনির হোসেন শিশু বিশেষজ্ঞ এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ৩ হাজারের বেশি মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধ বিতরণ করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কালঘড়া হাফিজ উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পে এই চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। চিকিৎসা সেবা পেয়ে রোগিরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরুর আগে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কালঘড়া আমেনা মেমোরিয়াল হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও কালঘড়া হাফিজ উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. সুলতান আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উস্থিত ছিলেন নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ শফিকুর রহমান, রসুলাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মনির হোসেন, নবীনগর প্রেস ক্লাবের সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ চক্রবর্তী, মডেল প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ আবু কাওসার, প্রেসক্লাবে সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম ভূইয়া মিনাজ, সহ সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর দেলুয়ার হোসেন, প্রধান শিক্ষক মো. ইয়ার হোসেন, দূর দূরান্তক আগত ৩৪ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, এলাকার যুব সমাজ ও বিভিন্ন সুধী মহল।
বক্তারা বলেন সমাজের মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের অনেক মানুষ টাকার অভাবে সঠিক চিকিৎসা পায় না। সেখানে অত্র এলাকার কৃতি সন্তান ডাঃ মনির হোসেনের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। এভাবে সমাজের উচ্চবিত্তরা এগিয়ে আসারও আহ্বান করেন। ডাক্তার মনির হোসেন বলেন, ৩৪ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে আজকের এই চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু। ভবিষ্যতে এমন সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরসহ সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও আন্যান্য শিক্ষকদের বল প্রয়োগে পদত্যাগ করানোর প্রতিবাদে আজ ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরে নবীনগর প্রেসক্লাব চত্বরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
নবীনগর ইচ্ছাময়ী পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সদস্য সচিব মোসাম্মৎ কাউসার বেগমের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মোর্শেদুল ইসলাম লিটন, ইব্রাহিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস রহমান, শিক্ষক শাজাহান কবির, শিক্ষক ইয়ার হোসেন, শিক্ষক পার্থ পালসহ প্রমুখ। নবীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সদস্য সচিব প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ কাউসার বেগম বলেন, সারাদেশে আমাদের শিক্ষক সমাজের উপর অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। শিক্ষকদের বল প্রয়োগ করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে। এসব বলপ্রয়োগ বন্ধ করে শিক্ষকগণের কর্মস্থলে ফিরিয়ে আনা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আমরা শিক্ষক সমাজ কর্মবিরতিতে যাবো।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষক সমাজ। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভির ফরহাদ শামীম বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যসস্থা নেওয়ার আশ^াস প্রদান করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনিই প্রথম বাঙালি, যিনি সর্বপ্রথম পাশ্চাত্যে উপমহাদেশের রাগসঙ্গীতকে পরিচিত করান।
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৮৬২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন খ্যাতনামা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ও সরোদবিশারদ। বাবা সঙ্গীতজ্ঞ সবদর হোসেন খাঁ ওরফে সদু খাঁ, মা সুন্দরী বেগম। ছোটবেলায় তার বড় ভাই ফকির (তাপস) আফতাব উদ্দিন খাঁর কাছে সঙ্গীতের হাতেখড়ি। সুরের সন্ধানে মাত্র ১০ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক যাত্রাদলে যোগ দিয়ে ঘুরে বেড়ান গ্রামে গ্রামে। ওই সময় তিনি জারি-সারি, বাউল, ভাটিয়ালি, কীর্তন, পাঁচালি প্রভৃতি গানের সাথে পরিচিত হন। পরে কলকাতায় গিয়ে প্রখ্যাত সঙ্গীত সাধক গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য ওরফে নুলো গোপালের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বাঁশি, পিকলু, সেতার, ম্যান্ডোলিন, বেঞ্জো ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখেন সঙ্গীত পরিচালক অমৃত লাল দত্ত ওরফে হাবু দত্তের কাছে। সেই সাথে তিনি লবো সাহেব নামে এক গোয়ানিজ ব্যান্ডমাস্টারের কাছে পাশ্চাত্য রীতিতে এবং বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ অমর দাসের কাছে দেশীয় পদ্ধতিতে বেহালা শেখেন। এ ছাড়া হাজারী ওস্তাদের কাছে শেখেন মৃদঙ্গ ও তবলা। ১৯১৮ সালের পর তিনি ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘খাঁ সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করে। আলাউদ্দিন খাঁ ১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের মাইহারে মদিনা ভবনে মারা যান। রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতে তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জন্ম কিংবা মৃত্যু কোনো দিবসই পালন করা হয় না। অপর দিকে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে নামে-বেনামে বেদখল হয়ে যাচ্ছে জমিজমা, বাড়িঘর, নিজ হাতে তৈরি করা মসজিদের জায়গা ও পুকুর। সবমিলিয়ে নিজ জন্মভূমিতেই অবহেলিত উপমহাদেশের সঙ্গীতজগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ।