চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাত ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আজ ৯ অক্টোবর সোমবার দুপুরে পৌর শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা না থাকা, বি এস টি আই এর অনুমোদন ব্যতীত মালামাল বিক্রি এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্য তৈরি করার দায়ে এ জরিমানা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহ্ সোয়াইব মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সেনেটারী কর্মকর্তা মৃনাল চন্দ্র দেবনাথ, কলাপাড়া পুলিশ সদস্যরা।
অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা হলো আমির বেপারী পাঁচ হাজার টাকা, মো.ইব্রাহিম পাঁচ হাজার, আরিফুল ইসলাম দুই হাজার, গাজী আনোয়ার এক হাজার পাঁচশত, আবুবক্কর আড়াই হাজার টাকা, আল মদিনা হোটেল আট হাজার এবং আনিকা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টকে ছয় হাজার টাকা।
অনলাইন ডেস্ক :
পাহাড়ি অস্ত্রধারী কেএনএফের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, জঙ্গি হোক আর যাই হোক, যে নামেই আসুক তারা অস্ত্রধারী। তাদেরকে আমরা প্রতিহতের চেষ্টা করছি।
জঙ্গিরা কোন নামে আসছে, সেটা কোন বিষয় না। এছাড়া যারা এই জঙ্গিবাদের জড়িয়েছে তারা যদি এখনও সুপথে ফিরে আসতে চায়। তাহলে সরকার তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আজ ৭ মে রবিবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ – বিজিবির ৯৯তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সকালে বিজিবির ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিএন্ডসি) বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তিনটি জেলা যেহেতু দুর্গম এলাকায় পড়ে। এই জেলাগুলোতে বর্ডারও অনেকটাই দুর্গম এলাকায় সে কারণে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা সবসময় প্রয়োজন। এজন্য আমাদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ভিজিলেন্স টিম কাজ করছে এবং তাদের সক্ষমতা অর্জনের জন্য তাদেরকে হেলিকপ্টার দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বর্ডার রোড তৈরি করতে যাচ্ছি। আমাদের বর্ডার রোডগুলো প্রস্তুত হয়ে গেলে জঙ্গিবাদের উত্থানের যে কথা বলা হচ্ছে সেগুলো থাকবে না। আমাদের বিজিবি-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুর্গম এলাকাগুলোতে আমরা নতুন নতুন বিওপি করার চেষ্টা করছি। এছাড়া বিজিবিতে লোকবল বৃদ্ধি করে তাদের উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ওই জায়গাগুলোতে স্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিজিবির যেসব ইকুইপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) দরকার আমরা তা দেওয়ারও চেষ্টা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশান উড়িয়ে/ দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।
বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকেরা শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।
প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদযাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।
এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। জনতার সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল তাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।
কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।
কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।
কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।
সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।
অনলাইন ডেস্ক :
ঈদুল-আজহা উপলক্ষে এক কোটি ৫১ হাজার ভিজিএফ কার্ডধারীর প্রত্যেকে ১০ কেজি করে চাল পাবেন। ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এক লাখ ৫১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে এ বরাদ্দ দিয়ে সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) চিঠি পাঠানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের আসন্ন পবিত্র ঈদুল-আজহা উপলক্ষে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় সারাদেশের ৬৪ জেলায় ৪৯২ উপজেলার জন্য ৮৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৪৯টি এবং ক, খ ও গ ক্যাটাগরির ৩২৯টি পৌরসভার জন্য ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫১টিসহ সর্বমোট এক কোটি ৫১ হাজার ৫০০টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে কার্ডপ্রতি ১০ কেজি হারে এক লাখ ৫১৫ মে. টন ভিজিএফ চাল শর্তাবলী অনুসরণ করে বিভাজন অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হলো।
বরাদ্দ দেওয়া ভিজিএফ চাল ২০ জুনের মধ্যে উত্তোলনসহ বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে বলেও চিঠিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এছাড়া বরাদ্দের শর্তে বলা হয়, এসব ভিজিএফ বরাদ্দের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অবহিত করবেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৬ এর তথ্য অনুযায়ী ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক বরাদ্দ করা ভিজিএফ কার্ডধারীদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। www.bbs.gov.bd ওয়েবসাইটে লগইন করে জনসংখ্যার তথ্য পাওয়া যাবে। দুস্থ, অতিদরিদ্র ব্যক্তি ও পরিবারকে এ সহায়তা দিতে হবে। তবে সম্প্রতি বন্যাক্রান্ত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুস্থ ও অতি-দরিদ্রকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
তবে, নিচের শর্তাবলীর মধ্যে কমপক্ষে চারটি শর্ত পূরণ করে এমন ব্যক্তি ও পরিবার, সহায়তা পাওয়ার জন্য গণ্য হবে-
১. যে পরিবারের মালিকানায় কোনো জমি নেই বা ভিটাবাড়ি ছাড়া কোনো জমি নেই।
২. যে পরিবার দিন মজুরের আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
৩. যে পরিবার নারী শ্রমিকের আয় বা ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল।
৪. যে পরিবারের উপার্জনক্ষম পূর্ণবয়স্ক কোনো পুরুষ সদস্য নেই।
৫. যে পরিবারে স্কুলগামী শিশুকে উপার্জনের জন্য কাজ করতে হয়।
৬. যে পরিবারে উপার্জনশীল কোনো ব্যক্তি নেই।
৭. যে পরিবারের প্রধান স্বামী পরিত্যক্তা, বিচ্ছিন্ন বা তালাকপ্রাপ্তা নারী।
৮. যে পরিবারের প্রধান অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা।
৯. যে পরিবারের প্রধান অসচ্ছল ও অক্ষম প্রতিবন্ধী।
১০. যে পরিবার কোনো ক্ষুদ্র ঋণ প্রাপ্ত হয়নি।
১১. যে পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে চরম খাদ্য অর্থ সংকটে পড়েছে।
১২. যে পরিবারের সদস্যরা বছরের অধিকাংশ সময় দুই বেলা খাবার পায় না।
অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ত্বকের একটি ক্ষত অপসারণের চিকিৎসা নিয়েছেন। ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার এ অস্ত্রোপচার করা হয়। আজ ১৮ অক্টোবর শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার ঢাকার সিএমএইচে ত্বকের একটি ক্ষত অপসারণের জন্য একটি ছোট চিকিৎসা পদ্ধতি দিয়ে গেছেন। আজও ফের চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার সকালে তিনি ফের দায়িত্ব পালন করেন। চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে ১৯ অক্টোবর শনিবার কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
তিতাস নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা ওয়াই সেতুর কোটি টাকার জমি দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। আরো দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় সেতুর জায়গা দখলমুক্ত করতে ইউএনওর কাছে আবেদন করেছেন হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আহসান উল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ী। গত ১৫ মার্চ আবেদন করলেও রহস্যজনক কারণে বন্ধ হচ্ছে না দোকান নির্মাণের কাজ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর ও কুমিল্লার হোমনা উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ রক্ষা করতে নির্মাণ করা হয় শেখ হাসিনা ওয়াই সেতু। এই সেতুর নিচের এলজিইডির জায়গায় দোকানঘর তুলে দখল করে নিয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি। কয়েকজন ব্যক্তি দোকানঘর নির্মাণ করে দখল কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বাধা দিতে গেলে উল্টো হুমকি-ধমকি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখানোর ঘটনা ঘটছে। সেতুর পিলার ঘেঁষে দোকানপাট নির্মাণ করার কারণে বহু বছরের পুরোনো রামকৃষ্ণপুর বাজারে যাওয়ার রাস্তা বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন কি, মানুষের চলাচলের রাস্তাও বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুর নিচে সরকারি জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছে ১২-১৫ জন। পিলার ঘেঁষে এসব দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, দোকান নির্মাণে ভূমি অফিস থেকে বাধা দেওয়া হলেও মানছে না কেউ।
অভিযোগদাতা আহসান উল্লাহ বলেন, ‘রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ আলম এলজিইডির জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। এতে আমার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, হাঁস-মুরগি ও গরুবাজারের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমি বাদী হয়ে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছি। ভূমি অফিস থেকে বাধা দিলেও মানছেন না শাহ আলম গংরা।’
জানা গেছে, ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের একমাত্র ওয়াই আকৃতির শেখ হাসিনা তিতাস সেতুটি ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়। আগে সেতুটি দেখার জন্য আসতেন দর্শনার্থীরা। কিন্তু সেতুর জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করায় সৌন্দর্য ফিকে হয়ে গেছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবারের ঈদের সময় সেতু এলাকায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।
স্থানীয়দের জোর দাবি, ভূমিখেকোদের কবল থেকে জমি উদ্ধার করে রামকৃষ্ণপুর বাজার রক্ষা ও সেতুর সৌন্দর্য ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
রামকৃষ্ণপুর বাজারের ইজারাদার সফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, সেতুটি নির্মাণের পরে বাঞ্ছারামপুর, হোমনা ও মুরাদনগরে যাতায়াতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টিকে পুঁজি করে সেতুর জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করছেন রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ আলম। এ কারণে আমি ইজারা নিয়েও গরুবাজার বসাতে জায়গা পারছি না। অবৈধ দখল বন্ধ না হলে সেতুর দুই পাশের আরও জায়গা বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে শাহ আলম বলেন, ‘শুধু আমি না, অনেকেই দোকানঘর নির্মাণ করে দখল করছেন। তাদের দেখে আমিও দোকানঘর নির্মাণ করেছি। সরকারের প্রয়োজন হলে জায়গা ছেড়ে দেব।’
চান্দেরচর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) আমান উল্লাহ জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে সরকারি জমি দখলকারী শাহ আলমকে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু বাধা অমান্য করে দোকানঘর নির্মাণ করছে।
হোমনা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, সেতুর জায়গা অধিগ্রহণ করেছে এলজিইডি বিভাগ। জমির মূল্যও পরিশোধ করা হয়েছে। এ জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইউসুফ হাসান জানান, অভিযোগ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে নিষেধ করা হয়েছে। সমস্ত স্থাপনার তালিকা করে উচ্ছেদ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমার দাবি, অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জমিটি এলজিইডি বিভাগের হওয়ায় সরাসরি ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছে। দখল বন্ধ না হলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ওয়াই সেতুর নিচের বাঞ্ছারামপুর অংশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হোমনা অংশে অবৈধ দখলদার থাকলে তা দ্রুত অপসারণ করার জন্য হোমনা উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হবে।