চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৫ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে আজ ১১ অক্টোবর বুধবার আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টির প্রার্থীসহ বিভিন্ন পার্টির ৬জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। প্রার্থীরা সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাচনে সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
মনোনয়নপত্র দাখিলকারীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত মোঃ শাহজাহান আলম, জাতীয় পার্টি মনোনীত মোঃ আবদুল হামিদ, জাকের পার্টি মনোনীত জহিরুল ইসলাম জুয়েল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মনোনীত মোঃ রাজ্জাক হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইব্রাহিম।
বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাচনে সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোঃ আবদুল হামিদ, দুপুর পৌনে ১টার দিকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ শাহজাহান আলম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, পরে পর্যায়ক্রমে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মনোনীত মোঃ রাজ্জাক হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইব্রাহিম।
অপরদিকে দুপুর সোয়া ১টার দিকে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল।
মনোনয়রপত্র দাখিল শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ শাহজাহান আলম বলেন, ১৯৭৩ সালের পর এই আসনে আওয়ামীলীগের কোন প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেনি। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছে মহাজোটের শরীকদল জাতীয় পার্টির প্রার্থী। উপ-নির্বাচনে দল আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীরা খুশী। জনগনের দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করে আসনটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিব ইনশাল্লাহ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা বলেন, আমার অসমাপ্ত কাজগুলোসমাপ্ত করার জন্য উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমি জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদের অনুসারী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। জাতীয় পার্টিতে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা আছে। যার কারনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আশা করি নির্বাচনে জনগণের দোয়া এবং ভালোবাসা নিয়ে আমি বিজয়ী হবো।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, এক মাসের জন্য নির্বাচন হলেও এটি সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আমার বিশ্বাস। কেননা এর পরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আশা করি নির্বাচন কমিশন এবং সরকার চাইবেনা নির্বাচনটি বিতর্কিত হোক। আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হবো।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার মোঃ শাহগীর আলম বলেন, উপ-নির্বাচনে ৬জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ি ১২ অক্টোবর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই, বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপীল ১৩ থেকে ১৭ অক্টোবর, আপীল নিষ্পত্তি ১৮ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ২০ অক্টোবর ও আগামী ৫ নভেম্বর ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির কারণে সরাইল উপজেলায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিদ্যুতের প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর টানা ২৩ ঘণ্টা পর রবিবার রাত ১১টার দিকে পুরো উপজেলায় একযোগে বিদ্যুৎ আসে। এরপরও চলতে থাকে লোডশেডিং। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলাবাসী।
বিদ্যুৎ না থাকার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃপক্ষের ‘খামখেয়ালি’কে দায়ী করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্যদিকে বিউবোর কর্মকর্তারা সঞ্চালন লাইনে ‘সমস্যা’ হওয়ার কথা জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা সদরের বড় দেওয়ানপাড়া বাসিন্দা কলেজশিক্ষক মাহবুব খান বলেন, ‘এখানে বৃষ্টির দু-চারটি ফোঁটা পড়লেই টানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণেই এমনটি হয়ে থাকে। এখন চলছে রোজার মাস। এ সময়ে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি।’
সরাইল শতভাগ বিদ্যুৎ–সুবিধার আওতায় আসা একটি উপজেলা। এর নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে সদরসহ সাতটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের আওতাধীন। এখানে গ্রাহকসংখ্যা ৪৪ হাজার ৫০০। বিউবোর এ বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের অধিকাংশই শনিবার রাত ১২টার পর থেকে টানা ২৩ ঘণ্টার বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সামান্য হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাতের কারণে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলা সদরসহ পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ চলে যায়। শাহবাজপুর ও কালীকচ্ছ ইউনিয়নে বিকেল চারটার দিকে বিদ্যুৎ আসে। এ দুটি ইউনিয়নে আবার বিদ্যুৎ চলে যায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। এরপর সরাইল সদর, পানিশ্বর, চুন্টা, শাহজাদাপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নে রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাবে উপজেলাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকের বাসাবাড়ি কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ফ্রিজে রাখা খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়।
শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল হুদা চৌধুরী বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। রবিবার বিকেল চারটার দিকে আসে। কিছুক্ষণ পর আবার চলে যায়। এখানে আকাশে মেঘ দেখা দিলেই এমনটি হয়ে থাকে, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না।
ছোট দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা সমাজকর্মী রওশন আলী বলেন, ‘সরাইল বিদ্যুৎ কার্যালয়ে কর্মচারীদের মধ্যে গ্রুপিং আছে। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে সহ্য করতে পারে না। কেউ কাউকে সহায়তা করে না। এ কারণে এখানে আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে আরও বেশি।’
স্বল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন বিউবোর সরাইল উপজেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) আবদুর রউফ। তিনি বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাতের প্রচণ্ড বজ্রপাতের প্রভাবে সঞ্চালন লাইনে সমস্যা হয়। এ সমস্যা চিহ্নিত করতে সময় লেগেছে। এ জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে অনেক দেরি হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে আগুনে পুড়ে একটি বসতঘর ও একটি রান্না ঘর ছাই হয়ে গেছে। এতে আনুমানিক প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা কর হচ্ছে।
১১ অক্টোবর বুধবার বিকালে রাজাবাড়িয়া কান্দি গ্রামের মোঃ মজিবুর রহমানের বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সরাইল ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে আগুনে বসতঘর ও রান্না ঘরে থাকা মালামাল ভস্মিভূত হয়ে যায়।
সরাইল ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার রিয়াজ বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেড় লাখ টাকার মত হবে বলে অনুমান করা যাচ্ছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত করার লক্ষ্যে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৪ অক্টোবর শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো: শাহগীর আলম।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা শারমিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ। এসময় বক্তারা বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত করার লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
সমাবেশে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, ইমাম, পুরোহিত ও শিক্ষকসহ সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন।