মদের চালানসহ ৩ যুবক গ্রেফতার

জাতীয়, 18 October 2023, 555 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় ৪২ বোতল মদসহ ৩ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে হালুয়াঘাট থানা পুলিশ। মঙ্গলবার উপজেলার সমানিয়াপাড়া বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আজ ১৮ অক্টোবর বুধবার দুপুরে গ্রেফারকৃতদের বিরুদ্ধে অত্র থানায় মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এসআই জাহেদুল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের দক্ষিণ লামুক্তা গ্রামের আব্দুল রাজ্জাক এর পুত্র কবীর হোসেন (২৪), ইয়াকুব আলীর পুত্র সোয়েব (২০) ও তোফাজ্জল হোসেনের পুত্র মকবুল হোসেন (৩৮)। এরা এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং অত্র থানায় এদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হালুয়াঘাট থানার সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে তল্লাশি চালিয়ে বিশেষ কায়দায় বস্তায় মোড়ানো আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় ৪২ বোতল মদসহ ৩ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হালুয়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় জানান, চলমান বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ৪২ বোতল ভারতীয় মদসহ ৩জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের পর আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Leave a Reply

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

সঠিকভাবে নির্বাচিত সরকার গঠিত হয়, তাহলে…

চারপথে রিপোর্ট : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, Read more

শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যম প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর উপলক্ষে Read more

১৫ বছর পর হারানো ছেলেকে ফিরে পেলেন বাবা-মা

জাতীয়, 21 July 2023, 725 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মাত্র ১২ বছর বয়সে চট্টগ্রামে খালাতো ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিক। দীর্ঘ ১৫ বছর পর সেই আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিককে ফিরে পেল তার পরিবার।

আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিক নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বিষ্ণপুর গ্রামের নোয়াবাড়ির রফিক উল্লার ছেলে। এক ভাই তিন বোনের মধ্যে সে সবার বড়।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের বটতলি রেলস্টেশনে খালাতো ভাই মোহরার সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যায় ১২ বছর বয়সের আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিক। তখন থেকেই শিশুসন্তানকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবার। এর পর থেকে ছেলের সন্ধানে বাবা-মা এমন কোনো চেষ্টা বাকি রাখেননি।

সম্প্রতি আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিককে চট্টগ্রামের বটতলি রেলস্টেশনে দেখেন তার চাচাতো ভাই নুর মোহাম্মদ। সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে তার বাড়িতে পরিবারকে জানায় বিষয়টি। এর পর তার বাবা রফিক উল্লা ও মা আয়েশা খাতুন চট্টগ্রামে পৌঁছে চাচাতো ভাই নুর মোহাম্মদের সহযোগিতায় আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিককে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন।

আবদুল্লাহ আল মামুনের মা-বাবা বলেন, আমাদের সন্তানকে পেয়ে আল্লাহর দরবারে লাখো শুকরিয়া। এখন আর তাকে কোথাও হারিয়ে যেতে দেব না।

ভোক্তা অধিকারের অভিযানে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা

জাতীয়, 23 August 2023, 629 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ভোক্তা অধিকারের অভিযানে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা প্রদান করা হয়েছে। আজ ২৩ আগস্ট বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পৌর শহরে এ অভিযান পরিচালনা করে মোট ২১ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়।

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অপরাধে লোকনাথ মেডিকেল হলকে ৩ হাজার, পণ্যের গায়ে মূল্য তালিকা না থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রাখার অপরাধে তৃষ্ণা বেকারিকে ৮ হাজার এবং সরদার স্টোরসকে ১০ হাজারসহ মোট ২১ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়।

অভিযান পরিচালনার সময় শাহ মোহাম্মদ শোয়াইব মিয়া ফার্মেসি, ডিমের দোকান, মুদি দোকান, মিষ্টির দোকান, মাছ বাজার ও কাঁচা বাজারগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এ সময় তিনি সকলকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সব কিছু বিক্রি করার নির্দেশ প্রদান করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর শুভঙ্কর চন্দ্র দাস ও গলাচিপা থানার এসআই মো. বশির।

জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহ মোহাম্মদ শোয়াইব মিয়া বলেন, বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

অবসরপ্রাপ্তদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করলেন গণপূর্ত মন্ত্রী

জাতীয়, 10 February 2024, 425 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার ধানমন্ডির সুলতানা কামাল উইমেন্স ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী।

উদ্বোধনী বক্তব্য তিনি বলেন, ‘কর্মজীবনে আমি একজন সরকারি কর্মচারী ছিলাম।

আজ আমি অবসরপ্রাপ্ত এবং সরকারের একজন মন্ত্রী। এখানে যারা উপস্থিত আছেন তারা অনেকেই আমার প্রত্যক্ষ সহকর্মী। অনেকে অনেকে আবার কর্মক্ষেত্রে আমার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন।’
অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে রাজধানীর সুলতানা কামাল উইমেন্স ক্রীড়া কমপ্লেক্সে আয়োজিত এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেশের প্রতিথযশা প্রবীণ কর্মকর্তাদের মিলন মেলায় পরিণত হয়।

প্রবীণ এই কর্মকর্তাদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নির্মল আনন্দ উপভোগ করেন। প্রতিযোগিতার শুরুতেই শিশুদের মোরগ লড়াই এবং পঁয়ষট্টি বছরের অধিক বয়স্কদের বেলুন ফাটানো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া স্কিপিং, বালিশ বদল, মেধা পরীক্ষা, ভারসাম্য দৌড়, রশি টানাটানি ও টেনিস বল নিক্ষেপসহ মোট ১৮টি ইভেন্টে পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক পৃথক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সমিতির পতাকা উত্তোলন করেন সাবেক সচিব ও সমিতির মহাসচিব আবু আলম মো. শহিদ খান এবং ক্রীড়া পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুজ্জামান ভূঁইয়া।

টিকিট কালোবাজারিতে সহজ ডটকম ও রেলের কর্মচারীদের সিন্ডিকেট

জাতীয়, 26 January 2024, 454 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ট্রেনের টিকিট কাটার ক্ষেত্রে নানা কড়াকড়ি ও তদারকির পরও থেমে নেই কালোবাজারি। এই কালোবাজারির কারণে সাধারণ ক্রেতারা সহজে টিকিট পান না বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

আদতে টিকিট কাটার পুরো প্রক্রিয়া রক্ষণাবেক্ষণে যারা দায়িত্বরত, তারাই জড়িত এই কালোবাজারির সিন্ডিকেটে।

এই চক্রটি বিভিন্ন কারসাজি করে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে স্বাভাবিক সময়ে দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে থাকে। আর ঈদের ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটিকে কেন্দ্র করে টিকিটপ্রতি দাম বেড়ে যায় ৩-৪ গুণ পর্যন্ত।

বাড়তি এই লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ পায় সরাসরি সিন্ডিকেটে জড়িত সদস্যরা। আর বাকি ৫০ শতাংশ চলে যায় কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আইটি বিশেষজ্ঞদের হাতে। যাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় শুধু দুটি সিন্ডিকেটের হাতেই প্রতিদিন চলে যাচ্ছে প্রায় ৫০০ টিকিট।

দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ১৪ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব। আজ ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক হাজার ২৪৪টি আসনের টিকিট, ১৪টি মোবাইল ফোন এবং টিকিট বিক্রির নগদ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সেলিম (৫০), আনোয়ার হোসেন ওরফে কাশেম (৬২), অবনী সরকার সুমন (৩৫), হারুন মিয়া (৬০), মান্নান (৫০), আনোয়ার হোসেন ওরফে ডাবলু (৫০), ফারুক (৬২), শহীদুল ইসলাম বাবু (২২), জুয়েল (২৩), আব্দুর রহিম (৩২), উত্তম চন্দ্র দাস (৩০), মোর্শিদ মিয়া ওরফে জাকির (৪৫), আব্দুল আলী (২২) ও জোবায়ের (২৫)।

এদের মধ্যে সেলিম ও উত্তম চন্দ্র দাস ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির দুই হোতা, যাদের নিজেদের নামে ‘সেলিম সিন্ডিকেট’ ও ‘উত্তম সিন্ডিকেট’ পরিচিত।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কমলাপুর রেলস্টেশনে সেলিম এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনে উত্তমের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে মহানগর প্রভাতী, তূর্ণা নিশিথা, চট্টলা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।

সেলিম ও উত্তমের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা উপযুক্ত সময় বুঝে সংগ্রহকৃত টিকিট নিয়ে রেলস্টেশনের ভেতরে অবস্থান করতেন। রেলস্টেশনে এসে টিকিট না পাওয়া সাধারণ যাত্রীদের কাছে তারা টিকিট বিক্রির জন্য ঘোরাঘুরি করতেন এবং অধিক মূল্যে টিকিট বিক্রি করতেন।

এছাড়া ট্রেন ছাড়ার সময় যতো ঘনিয়ে আসতো তাদের মজুদকৃত কালোবাজারি টিকিটের দাম তত বাড়তো। সুযোগ বুঝে অনেক ক্ষেত্রে টিকিটের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে দিতেন তারা।

ঈদসহ বিভিন্ন উপলক্ষে ছুটিকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তাররা প্রতিটি টিকিট ৩-৪ গুণ বেশি মূল্যে বিক্রি করতেন। সাধারণত প্রতিটি টিকিট তারা দেড় গুণ থেকে দুই গুণ বেশি দামে বিক্রি করতেন। এই লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ গ্রেপ্তাররা নিতেন এবং বাকি ৫০ শতাংশ কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আইটি বিশেষজ্ঞদের দেওয়া হতো।

গ্রেফতার উত্তম ও সেলিম সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন যাবত টিকিট কালোবাজারির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

যেভাবে টিকিট যেতো সিন্ডিকেটের হাতে
র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার সেলিম এবং উত্তমের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা প্রথমত ট্রেনের কাউন্টারে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, স্টেশনের আশেপাশের এলাকার টোকাই, রিকশাচালক ও দিনমজুরদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতেন। যেহেতু প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে চারটি টিকিট দেওয়া হয়। এই ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে চারটি করে টিকিট সংগ্রহ করার বিনিময়ে ১০০ টাকা করে দেওয়া হতো।

এছাড়া, কাউন্টারে থাকা কিছু অসাধু টিকিট বুকিং কর্মচারীর যোগসাজশে তারা বিভিন্ন সাধারণ যাত্রীর টিকিট কাটার সময় দেওয়া এনআইডি সংগ্রহ করে রাখতেন। পরে সেগুলো ব্যবহার করে সংরক্ষণকৃত প্রতিটি এনআইডি দিয়ে চারটি করে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতেন। এভাবে তারা প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক টিকিট সংগ্রহ করতেন।

অনেক ক্ষেত্রে টিকিট কাউন্টারে নিজেরা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতেন চক্রের সদস্যরা। আবার অনেক সময় কৌশলে লাইনে অপেক্ষমাণ টিকিটপ্রত্যাশী সাধারণ যাত্রীদের এনআইডি ব্যবহার করে চারটি টিকিট ক্রয় করিয়ে তিনটি টিকিট নিজেরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনে নিতেন।

এছাড়া, ঈদ, পুজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে গ্রেফতারকৃতরা রেলস্টেশনে কর্মরত কিছু অসাধু কর্মচারী এবং অনলাইনে টিকিট ক্রয়ের জন্য ব্যবহৃত ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সার্ভার রুম বা আইটির সদস্যদের সহযোগিতায় তাদের কাছে সংরক্ষিত জনসাধারণের এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে এমনকি সার্ভার ডাউন করে তারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতেন।

পাশাপাশি চক্রটি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দিয়ে অনলাইনে টিকিট কেটে সেগুলো তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতো। এমনকি স্টেশনে থাকা তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে কাউন্টার থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিটও সংগ্রহ করতো। সেসব টিকিটের মূল্য কাউন্টারের বুকিং কর্মচারীদের সঙ্গে তারা ভাগ করে নিতো।

এভাবে গ্রেফতারকৃতরা অবৈধভাবে বিভিন্ন পন্থায় বিপুল সংখ্যক ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতেন। যার ফলে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি রেলওয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

র‌্যাব বলছে, গ্রেফতার সেলিম দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর ধরে টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় টিকিট কালোবাজারির দায়ে ৭টি মামলা রয়েছে এবং এসব মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন। তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত হন।

গ্রেফতার আনোয়ার হোসেন ওরফে কাশেম প্রায় ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি সেলিমের অন্যতম প্রধান সহযোগী। মূলত তার দায়িত্ব ছিল কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করা।

গ্রেফতার উত্তম প্রায় ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তার সহযোগী গ্রেফতার আলী ও ফারুকসহ রাজধানীর আশকোনা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং এই বিষয়টি কাজে লাগিয়ে রেলস্টেশন এলাকায় সব সময় অবস্থান করে টিকিট কালোবাজারি চক্র গড়ে তোলেন।

গ্রেফতার বাকিরা দেশের বিভিন্ন রুট সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন, যার ফলে তারা সেসব রুটের যাত্রীদের ম্যানেজ করে টিকিট বিক্রি করতেন।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা এই কালোবাজারির বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি, যারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত এমন কিছু নামও পেয়েছি। তাদের বিষয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবো। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাউন্টারম্যান, সহজ ডটকমের কর্মচারীসহ বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এমনকি স্টেশনে যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত এমন কয়েকজনেরও এই সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

পতাকার কাপড়ে স্কুলড্রেস পাচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা

জাতীয়, 13 December 2022, 1001 Views,

স্টাফ রিপোর্টার:
বিশ্বকাপ উপলক্ষে বাংলাদেশে প্রিয় দলের পতাকা টানানো যেন খুবই নিয়মিত ও সাধারণ ঘটনা। বিশ্বকাপ শেষে সে পতাকা কেউ নামিয়ে ফেলে; তবে অধিকাংশ পতাকাই নামানো হয় না। যার ফলে তা রোদ-বৃষ্টির কারণে মলিন হতে থাকে। তবে এবার দেশের তরুণদের উদ্যোগে পতাকায় তৈরি হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের ‘স্কুলড্রেস’। আর ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে দেশের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিদ্যানন্দ’। সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি বলছে, পতাকা থেকে আমরা সেলাই খুলে কিংবা কেটে কাপড় উদ্ধার করি। সে কাপড় দিয়ে তৈরি করা স্কুল পোশাক দেখে কেউ বুঝবে না যে এটা পতাকার অংশ। আর বিদেশে পতাকার ডিজাইনে পোশাক তৈরির প্রচলন সাধারণ বিষয় বলেও জানায় সংগঠনটি। তারা বলছে, এতে কেউ কেউ জাতীয় পতাকার অপমান, কাপড়ের কোয়ালিটি কিংবা টাকার অপচয় বললেও অধিকাংশ মানুষই এমন উদ্যোগের প্রশংসা করছে।


বিদ্যানন্দের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ছবি শেয়ার করে জানানো হয়েছে, ড্রেস না থাকায় স্কুলে যেতে না পারা সাজেদার বাবা ট্রাকে কুলীর কাজ করতে গিয়ে পড়ে পা ভেঙে ফেলছেন। তাই স্কুলের খরচ মেটাতে পারছেন না। সেখানে স্কুলের পোশাকের আবদার জানায় কীভাবে? সে সাজেদার স্কুল ড্রেস বানানো হয়েছে ব্রাজিলের পতাকায়। আবার সে স্কুলে যাবে, হাসবে তার সহপাঠীর সঙ্গে। তারা আহ্বান করেছে, কেউ তাদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে চাইলে পতাকা কুরিয়ার করতে পারবেন। তারা চান শত শত স্কুল ড্রেস বানাতে। সঙ্গে আপনি তাদের সঙ্গে এ উদ্যোগে যুক্ত হতে পারবেন সেলাইয়ের টাকা দিয়েই।
বিদ্যানন্দের জনসংযোগ প্রধান সালমান খান ইয়াছিন বলেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে পতাকা সংগ্রহের কাজে নেমেছে বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবকরা। আমাদের উদ্দেশ্য বিশাল আকারের পতাকাগুলো সংগ্রহ করা। বিদ্যানন্দের অফিসিয়াল নম্বর ০১৮৭৮-১১৬২৩৪ নম্বরে যোগাযোগ করে যেকোনো এলাকা থেকে পতাকা পাঠানো যাবে।