চলারপথে রিপোর্ট :
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুটি চলমান কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস আঞ্চলিক বিক্রয় ও বিপণন বিভাগ টঙ্গী। আজ ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টঙ্গীর সিলমুন এলাকায় চলা এ অভিযানে এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সংস্থাটি।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ইউরো ফ্যাশন লিমিটেড ও ইয়েলো কালার ক্রিয়েশন নামক দুইটি ওয়াশিং কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ থাকায় কারখানা দুইটির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘আমরা দুইটি ওয়াশিং কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। পরবর্তীতে তিতাস কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে।’
অভিযানে আরো উপস্থিত ছিলেন তিতাস আঞ্চলিক বিক্রয় ম্যানেজার আনোয়ারুল আজিম, নির্বাহী ম্যানেজার শাহ এমদাদুল হোসেন, প্রকৌশলী নিজামুদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক গোলাম রাব্বানী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাঈম হাসান রানা প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
৭ এপ্রিল থেকে ঈদযাত্রার ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে। কাউন্টারে লাখো যাত্রীর ভিড়ে ভোগান্তি হয়- এ কারণ দেখিয়ে ঈদযাত্রার আন্তঃনগর ট্রেনের সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে। জনগোষ্ঠির বড় অংশ ইন্টারনেট সুবিধা বাইরে থাকলেও, কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করবে না রেলওয়ে।
আজ ২১ মার্চ মঙ্গলবার রেলভবনে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে সভায় শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুধবার মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন। তাই রেলের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ করে আগাম মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে, সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সব টিকিট অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামী ২২ এপ্রিল ঈদ হবে ধরে টিকিট বিক্রির সূচি তৈরি হয়েছে। ৭ এপ্রিল দেওয়া হবে আগামী ১৭ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট। ৮ এপ্রিল ১৮ এপ্রিলের, ৯ এপ্রিল ১৯ এপ্রিলের, ১০ এপ্রিল ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল ২১ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে। ১৭ এপ্রিল ফিরতি যাত্রার ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে।
রেল সূত্র জানিয়েছে, ২৩ এপ্রিল ঈদ হলে ২২ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট একদিন আগে ছাড়া হবে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও ১০ জোড়া বাড়তি ট্রেন থাকবে ঈদযাত্রায়। চাঁদপুর-সিলেট এবং ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটে দুটি বিশেষ আন্তঃনগর ট্রেন চলবে। বাকি সাত বিশেষ ট্রেন অন্যান্য বছরের মতো চলবে।
কালোবাজারি ঠেকাতে ১ মার্চ থেকে নতুন পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রি করছে রেলওয়ে। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়ে নিবন্ধন করে টিকিট কিনতে হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শীদের এতে ব্যাপক সুবিধা হলেও, ভুগছেন অজ্ঞরা। স্টেশনের কাউন্টার থেকে হাজারো যাত্রী খালি হাতে ফিরছেন, নিবন্ধন না থাকায়। পারদর্শীদের জন্য নিবন্ধন খুব সহজ হলেও, বয়স্ক, অশিক্ষিত এবং শ্রমজীবী যাত্রীরা তা করতে পারছেন না। স্টেশনে হেল্প ডেস্ক থাকলেও তারা ভুগছেন।
প্রশ্ন আসছে, যারা নিবন্ধনই করতে পারছেন না প্রযুক্তি জ্ঞানের অভাবে, তারা ইংরেজি ভাষার ওয়েসাইট থেকে কীভাবে টিকিট কিনবেন? কীভাবেই মোবাইল বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ে দাম পরিশোধ করবেন? প্রতি বছর ঈদে দেখা যায়, বিক্রির শুরুর মিনিটের মধ্যেই অনলাইনের সব টিকিটি শেষ। দ্রুতগতির ডিভাইস ও ইন্টারনেট না থাকলে, টিকিট মেলে না। তাই ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে থাকা কোটি মানুষ কী করে টিকিট পাবেন- এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই।
নিবন্ধিত যাত্রীদের জন্য কাউন্টারে টিকিট রাখলে কি অসুবিধা- এ প্রশ্নে মঙ্গলবার বৈঠকে যোগ দেওয়া এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ঈদযাত্রার টিকিটের জন্য লাখো মানুষ ভিড় করেন। এতে ওই দিনের এবং পরবর্তী পাঁচ দিনের ট্রেনের টিকিট প্রত্যাশীদের মারাত্মক ভোগান্তি হয়। তা ঠেকাতে অনলাইনে সব টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ নীতিতে ট্রেনে চড়তে যাত্রীকে সঙ্গে পরিচয়পত্র রাখতে হবে। টিকিটে থাকা নামের সঙ্গে পরিচয়পত্রের মিল না থাকলে বিনা টিকিটের যাত্রী বলে গণ্য হবেন। এ নীতি কার্যকরে ৬ মার্চ থেকে অভিযান চালাচ্ছে রেলওয়ে। অভিযোগ আছে, রেলের কর্মীরাই টাকা নিয়ে বিনা টিকিটের যাত্রী তুলছেন। অনলাইন থেকে টিকিট কিনে কালোবাজারিরা চড়া দামে বিক্রি করছে। নামের মিল না থাকলেও, তা দিয়ে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা। কিন্তু রেলের ‘বিশেষ অভিযানে’ ধরা পড়ছে না।
মঙ্গলবারের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঈদযাত্রায় কড়াকড়ি থাকবে। তবে ঈদের ভিড়ে এ সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হবে- তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এবারও রেল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ছাদে কোনো যাত্রী উঠবে না। গত বছরও এ সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু ছাদে চড়া যাত্রীর চাপে বগির স্প্রিং বসে গিয়ে কয়েকটি চলন্ত ট্রেন বিকল হয়েছিল।
চলারপথে রিপোর্ট :
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় ৪২ বোতল মদসহ ৩ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে হালুয়াঘাট থানা পুলিশ। মঙ্গলবার উপজেলার সমানিয়াপাড়া বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আজ ১৮ অক্টোবর বুধবার দুপুরে গ্রেফারকৃতদের বিরুদ্ধে অত্র থানায় মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এসআই জাহেদুল ইসলাম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের দক্ষিণ লামুক্তা গ্রামের আব্দুল রাজ্জাক এর পুত্র কবীর হোসেন (২৪), ইয়াকুব আলীর পুত্র সোয়েব (২০) ও তোফাজ্জল হোসেনের পুত্র মকবুল হোসেন (৩৮)। এরা এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং অত্র থানায় এদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হালুয়াঘাট থানার সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে তল্লাশি চালিয়ে বিশেষ কায়দায় বস্তায় মোড়ানো আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় ৪২ বোতল মদসহ ৩ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হালুয়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় জানান, চলমান বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ৪২ বোতল ভারতীয় মদসহ ৩জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের পর আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোট
নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রাম ও মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজবাড়ীয়া গ্রামের একমাত্র সংযোগ সেতুটি ১০ বছর ধরে ভেঙে থাকার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষকে। সেতুটি ভাঙার প্রায় ১০ বছর পার হলেও এখনো সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। নারী-পুরুষ, বয়স্ক মানুষ, রোগীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দায়িত্বশীল কেউ উদ্যোগ নেয়নি সেতু মেরামতের বা নির্মাণের। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার বাসিন্দা সেতুটি পারাপার হয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে দুই ইউনিয়নের সংযোগ এই সেতু ভেঙে আছে। লোকজন থেকে কিছু টাকা তুলে কাঠ দিয়ে সেতুটি প্রতিবছর সংস্কার করা হয়। কিন্তু অনেক গাড়ি ও লোকজন চলাচল করায় কাঠ দিয়ে সংস্কার করলে বেশিদিন টিকে না। ফলে গ্রামীণ জনপদের লোকজন ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। এই সেতুটি বছরের পর বছর পার হলেও নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙা ওই সেতু দিয়ে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যানগাড়িসহ যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ ছাড়াও ভারী যানবাহন চলাচল না করতে পারায় অনেকেই দুর্ভোগে পড়ছেন।
মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজা বাড়িয়া গ্রামের আব্দুল বারেক হাওলাদার বলেন, ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটা অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসার জন্য শহরে নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে আর ভোগান্তি থাকবে না।
রানাপাশা ইউনিয়নের ইসালাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আবু সাঈদ বলেন, সেতুটির জন্য হাজার হাজার মানুষ বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তবে কেউ নতুন করে সেতু তৈরির জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে না।
অটোরিকশা চালক দেলোয়ার হাওলাদার ও রাজ্জাক ফকির বলেন, আমাদের প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশা পারাপার করতে হয়। এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়নে যেতে এই সেতুটি ব্যবহার করতে হয়। কিছুদিন আগে এই সেতু দিয়ে একটি টমটম পার হতে গিয়ে উল্টে যায়। আমরা গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে তারপর গাড়ি পার করি। এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মোল্লারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেএম মাহাবুবুর রহমান সেন্টু বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ইউনিয়নে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু কিছু কাছ অসমাপ্ত রয়েছে। এই সেতুটির কারণে দুই ইউনিয়নের মানুষের দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নলছিটি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইকবাল কবীরের সঙ্গে সেতুর বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
ঝালকাঠি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকার বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবে আন্ডার হান্ড্রেড মিটার প্রকল্পের আওতায় ওই সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনুমোদন পেলেই আমরা কাজ শুরু করব।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের আকাশে আজ ৩০ মার্চ রবিবার ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল ৩১ মার্চ সোমবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে।
সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি ও ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।
এদিকে, সৌদি আরবে আজ পালিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। গতকাল শনিবার হিজরি ১৪৪৬ সালের পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে পবিত্র রমজান। দুই মসজিদভিত্তিক ওয়েবসাইট ইনসাইট দ্য হারামাইন ও ফেসবুক পেজ হারামাইন শরিফাইনে এ ঘোষণা আসে।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় হতাহতের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এরা হলেন ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৫) ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১২) এবং ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৭)।
তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামে।
তারা ঢাকার মগবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সৈয়দ মোবারক হোসেন ইতালির সাবুনা শহরে ব্যবসা করতেন। সেখানে ৪টি কসমেটিক দোকান পরিচালনা করতেন। তার বড় মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর ইস্পাহানী স্কুলে এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ মগবাজারের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন।
আজ ১ মার্চ শুক্রবার তাদের গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা লাশ হয়ে একে একে এ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামের নিজ বাড়ির উঠোনে ফিরলেন।
নিহতদের স্বজনরা জানান, সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মগবাজারে থাকতেন। গত বৃহষ্পতিবার রাতে বেইলী রোডে অগ্নিকান্ড সংঘঠিত হওয়া ভবনটিতে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। সেখানেই আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ বাড়িতে আসার পর বাদ আসর খন্দকার মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাযা শেষে বাড়ির পাশে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে। তাদের মৃত্যুর খবরে শাহবাজপুর ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ইতালিতে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশি সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার। পরিবারের সবাই ভিসাও হয়েছিল। চলতি মাসে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু পুরো পরিবার আর ইতালিতে পাড়ি জমানো হলো না। সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান।
নিহত মোবারকের খালাতো ভাই আলমগীর হোসেন জানান, মোবারক প্রথমে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তিনি ইতালি পাড়ি দেন। তার দেশে আসা যাওয়া ছিল। গত দেড় মাস আগে প্রায় দুই বছর পর ইতালি থেকে দেশে ফিরেন মোবারক। স্ত্রী-সন্তানদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা ও টিকিটও সংগ্রহ করেছিলেন। আগামী ২০ মার্চ ইতালিতে যাওয়ার দিন নির্ধারিত করেছি।
নিহত মোবারের স্বজন মো. ফয়সাল বলেন, ইতালিতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবারটি। ভিসাও হয়েছিল। পরিবারের সকলে খেতে যাওয়াটাই কাল হলো তাদের। ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন অপূরণীয় রয়ে গেলো। ওই পরিবারে আর কেউ বেঁচে রইল না।
নিহত সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসারের শ্বশুর একই গ্রামের মুন্সী বাহার উদ্দিন জানান, তার মেয়ের জামাই মোবারক ঢাকার মগবাজার এলাকায় থাকতেন। তার মেয়ে স্বপ্না আক্তার, দুই নাতনি সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর এবং একমাত্র নাতি সৈয়দ আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে রাতের খাবার খেতে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সবাই পুড়ে মারা গেছেন। পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল।