চলারপথে রিপোর্ট :
পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিলেন বায়ান্নর ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া আব্দুল মতিন ভূঁইয়া। আজ ২১ অক্টোবর শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মিয়া আব্দুল মতিনের বাড়ি আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী টনকী গ্রামে। তার বাবার নাম মুত হাসিম ভূঁইয়া। তারা চার ভাই ও এক বোন ছিলেন। আর তার মধ্যে মিয়া আব্দুল মতিন ছিলেন সবার বড়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও ৫ মেয়ে রেখে গেছেন।
আব্দুল মতিন ভূঁইয়া তখন আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তখন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য আটজনের মিছিলে আব্দুল মতিন নেতৃত্ব দেন। সেই মিছিলটি আখাউড়া উপজেলার মোগড়া বাজার ও গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। ‘উর্দু ভাষায় লাথি মার, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চালু কর’, ‘রাষ্ট্রভাষা চাই’, ‘আমাদের ভাষা বাংলা ভাষা’ এমন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে মিছিলটি এগিয়ে যেতে থাকে। সে সময় ওই মিছিলে বিদ্যালয়ের ৮০০-এর মতো শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনের জন্য মিয়া আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে শুরু করা আন্দোলনটি গণবিক্ষোভে রূপ নেয়। আর সেই বিষয়টি জেনে যায় তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার। নেতৃত্ব দেওয়ার অপরাধে ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আব্দুল মতিন ভূঁইয়াকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। টানা দুই মাস কারাভোগ শেষে জেল থেকে তিনি ছাড়া পান।
১৯৫৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা সৈনিক মিয়া মতিনসহ আরো কয়েকজনকে ঢাকায় ডেকে পাঠান এবং সাহসিকতার জন্য তাদের উপহার দেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘গুজবকাণ্ডের’ এক সপ্তাহ পর ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা পথে চলাচলকারী শ্যামলী পরিবহনের বাস আজ ৭ ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। বাসে দুই দেশের মিলিয়ে ২৪ জন যাত্রী ছিল।
৩০ নভেম্বর শ্যামলী পরিবহনের ওই বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে ভারতের কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বাসটিতে হামলা হয়েছে। ভারতীয় যাত্রীদেরকে গালমন্দ করা হয়। তবে একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।
১ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাসের চালক মো. আসাদুল হক ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। ঘটনার সময় যাত্রীদের সঙ্গে কারও কোনো ধরনের বিবাদ তো দূরে থাক কথাও হয়নি বলে তিনি জানান। অটোরিকশা চাপার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মীমাংসা হয়।
একাধিক সূত্র জানায়, বাসটি ৩০ নভেম্বর শনিবার সকাল ১১টার দিকে আগরতলা থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। দুপুর ১২টার দিকে বাসটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সুহিলপুর এলাকায় আসার পর একটি ট্রাক উল্টোদিক থেকে অতিক্রম করতে গেলে বাসটি ইমার্জেন্সি ব্রেক কষে থামানোর চেষ্টা করে ও সড়কের একপাশে সরে পড়ে। এসময় পেছনে থাকা পণ্যবাহী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বাসের সঙ্গে চাপা খেয়ে সড়ক বিভাজকে আটকা পড়ে। এতে সামান্য ব্যথা পান অটোরিকশার চালক। পরে একটি রেকার এসে বাস থেকে অটোরিকশাটিকে সরিয়ে দেয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বাসটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বাসটিতে ভারতীয়সহ ২৬ জন যাত্রী ছিল। এর মধ্যে ১৬ জন ভারতীয় নাগরিক।
শ্যামলী পরিবহনের ওই বাসের চালক মো. আসাদুল হক আজ শনিবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে বলেন, ওই ঘটনার এক সপ্তাহ পর বাস নিয়ে আগরতলা থেকে এসেছেন। যাত্রাপথে কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। বাসে ২৪ জন যাত্রী রয়েছে।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া :
পুরুষশূণ্য বাড়িতে পানি পানের অজুহাতে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে বেঁধে স্বর্ণালঙ্কার লুটের চেষ্টা করে এক যুবক-যুবতী। আজ ২৩ মে শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌর এলাকার নারায়ণপুরে জয়নাল মিয়ার বাড়িতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। পালানোর সময় এক যুবক ও এক যুবতীকে আটক করে স্থানীয়রা। তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে কলেজপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন।
আটককৃতরা হলেন জেলার কসবার চন্ডিদার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম সানি (২৪) এবং তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী সুমাইয়া আক্তার একই উপজেলার চকচন্দ্রপুর গ্রামের নাসির মিয়ার মেয়ে।
জানা যায়, জুমার নামাজের সময় জয়নাল মিয়ার পুরুষ সদস্যরা মসজিদে চলে যায়। এসময় এক তরুনী পানি পান করার অজুহাতে জয়নাল মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করেন। তখন গৃহবধু একাই ঘরে ছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই এক যুবক ঘরে প্রবেশ করে। ওই যুবক ও যুবতী মিলে দড়ি দিয়ে গৃহবধূকে বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে দেন। এরপর তারা ঘরের স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালানোর চেষ্টা করেন। গৃহবধূ কোনোভাবে নিজেকে মুক্ত করে রাস্তায় বের হয়ে চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে এসে দুই যুবক-যুবতীকে ধরে ফেলেন এবং পরে তাদের আখাউড়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। বাড়ির মালিক জয়নাল মিয়া বলেন, জুমার নামাজে সবাই মসজিদে ছিলাম। এই সুযোগে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তারা বাড়িতে ঢুকে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। আমার স্ত্রী চিৎকার করলে স্থানীয়রা এসে তাদের আটক করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ছমিউদ্দিন বলেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নোয়াখালী-ঢাকা পথে চলাচলকারী আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন ১১ জানুয়ারি শনিবার সকালে আখাউড়ায় আসার পর একটি যন্ত্র (কাপলিং) ভেঙে যায়। মেরামত শেষে প্রায় ২০ মিনিট পর ট্রেনটি আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়।
উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের সেবামূলক ফেসবুক গ্রুপ ও এর সাথে জড়িত একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে যাত্রাবিরতি দেয়। এসময় সংশ্লিষ্টরা ‘ঠ’ ও ‘ড’ বগির মাঝের কাপলিং ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে যান্ত্রিক বিভাগের লোকজন এসে এটি মেরামত করেন। পরে ৯টা ৪৩ মিনিটে আখাউড়া ছেড়ে যায়। সব মিলিয়ে ট্রেনটি এক ঘণ্টা পর যাত্রা করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া তিতাস ব্রীজের পশ্চিমে উত্তর-দক্ষিণে জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন প্রবাহিত হয়েছে। কৃষি জমিতে গ্রীডের টাওয়ারটির উচ্চতা প্রায় ১৭০ ফুট। এই লাইন দিয়ে সঞ্চালিত হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ। সেই টাওয়ারের উপরে ৩০-৩২ বছরের এক যুবক বসে জিকির করছে। মাঝে মাঝেই এপাশ থেকে ওপাশে যায়।
আতঙ্ক নিয়ে নিচ থেকে সেই দৃশ্য দেখছে উৎসুক জনতা। চিৎকার করে লোকজন তাকে নেমে আসার অনুরোধ করছে। কিন্তু সেই যুবকের কোন ভ্রুক্ষেপ নাই। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী ঘটনাস্থলে হ্যান্ড মাইকে তাকে নেমে আসতে বলে। প্রায় ৩ ঘন্টা পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মী হ্যান্ড মাইকে আযান বাজানোর পর সেই যুবক টাওয়ার থেকে নেমে আসে। আজ ২৫ মে বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
উদ্ধারকৃত যুবক নিজেকে নাসির উদ্দিন বলে পরিচয় দেয়। সে নোয়াখালী জেলার সেনবাগের ইয়ারপুর গ্রামের সিরাজ বাবুর্চির পুত্র। যুবকের হাতে এবং পেটে ব্লেডের কাটা দাগ রয়েছে। তার পড়নে ছিল গোলাপী রংয়ের পায়জামা পাঞ্জাবি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রুবায়েদ বলেন, আমি ৯টার দিকে খবর পেয়ে এসে দেখি একজন যুবক বিদ্যুতের উঁচু টাওয়ারের উপরে বসে জোরে জোরে আল্লাহু আল্লাহ করছে। কখনও জিকিরের ধ্বনি করছে। সবাই তাকে নেমে আসার অনুরোধ জানালেও সে নামেনি।
নাসির উদ্দিন বলেন, জ্বীনে তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে গাছে উঠায়, টাওয়ারে উঠায়। পানিতে চুবায়। রক্ত খায় মারে, কষ্ট দেয়। আযান দিলে ছেড়ে দেয়। এইডির লাইগা আমি নিজেও শান্তি পাই না। প্রশাসনও শান্তি পায় না।
আখাউড়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা মুনিম সারেয়ার বলেন, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি এক যুবক ভোরে বিদ্যুতের টাওয়ারের উপরে উঠে বসে আছে। সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী নাজমুল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে টাওয়ার থেকে নেমে আসতে বলে। বেলা ১১টার দিকে মোবাইল থেকে হ্যান্ড মাইকে আজান বাজালে সে টাওয়ার থেকে নেমে আসে।
তিনি আরও বলেন এর আগের দিন বিকালেও ওই যুবক টাওয়ারে উঠেছিল। আমরা তাকে নামিয়ে এনেছি। ২০ দিন আগেও জেলার সদর উপজেলার বরিশল এলাকায় বিদ্যুতের টাওয়ারে উঠেছিল সে। তার মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে মনে হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাওয়ার গ্রীড কোম্পানীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী সাইমুন আলম বলেন, টাওয়ারটির উচ্চতা ১৭০ ফুট। এখানে জাতীয় গ্রিডের ১ লাখ ৩০ হাজার কেবির বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন গেছে। বিদ্যুতের তার অনেক দূরে থাকে কেউ চাইলেও সেখানে যেতে পারবে না। আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। কিভাবে টাওয়ারে উঠল।
চলারপথে রিপোর্ট :
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে আটক করা দুই বাংলাদেশি তরুণ-তরুণী কারাভোগ শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন। ৯ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়।
দেশে ফেরা তরুণ তরুণীরা হলেন, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সুব্রত ভট্টাচার্য্য (২১) ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা জান্নাত আক্তার (১৯)।
ভারতের ত্রিপুরার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্ত দিয়ে তারা দেশে ফেরেন।
এদিকে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সজিব মিয়া, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মো. খাইরুল আলম, বিজিবির আইসিপি পোস্ট কমান্ডার মো. রুহুল আমিনের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তা মো. ওমর শরীফ।
এসময় গণমসাধ্যমকে সুব্রত ভট্টাচার্য্যের মা বলেন, ‘আমি পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ বিধায় ছেলেকে একটা আশ্রমে পড়াশোনা করার জন্য দেওয়া হয়। একদিন রাতে ফোন আসে আমার ছেলে ভারতে। ফোন পেয়ে আমি দিশাহারা হয়ে যাই। সে ওখানে থাকার প্রায় দশ মাস আমি পাগলপ্রায় ছিলাম। আমার স্বামীও অসুস্থ। কোথায় যাবো, কী করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এতোদিন পর ছেলেকে পেয়ে আমি আনন্দিত।’
দেশে ফেরা সুব্রত ভট্টাচার্য্য জানান, তিনি দশ মাস আগে রামগড় সীমান্তপথে পুরোহিত বিদ্যার্জনে ভারত যান। সেখানে তিনি বিএসএফের হাতে আটক হন।
এদিকে জান্নাত আক্তার জানান, পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য দালালের মাধ্যমে তিনি ভারতে যান। সিলেটের খোয়াই সীমান্তপথে তিনি গিয়েছিলেন। দেশে ফিরতে পেরে তিনি খুব খুশি।