চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালুর মধ্য দিয়ে দু’দেশের বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে-এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতিমধ্যে এ লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে অনুমতি মিলেছে ভুটানে উৎপাদিত সব (সুতা ও আলু ব্যতীত) পণ্য ও ভারতের ৬০টি পণ্য। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের পণ্য উল্লেখিত রেলপথ দিয়ে রপ্তানি করা যাবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এর এক প্রজ্ঞাপন থেকে আমদানির-রপ্তানির এ তথ্য জানা গেছে।
গত ৩১ অক্টোবর এ প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। আজ ৬ নভেম্বর সোমবার এ প্রতিবেদকের হাতে প্রজ্ঞাপনটি আসে। একই প্রজ্ঞাপনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আরো চারটি পণ্য আমদানির অনুমতি মিলেছে। এসব পণ্য হচ্ছে, ভুষি, ডাল, বুট ও বাঁশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেও নতুন এ প্রজ্ঞাপন জারির কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎসাহ বিরাজ করছে। রেলপথের আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ হলে কয়েক মাসের মধ্যেই ভারত থেকে পণ্য আমদানি শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মো. মনির হোসেন বাবুল সোমবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আখাউড়া স্থলবন্দরের বাণিজ্য খেই হারিয়ে ফেলেছে। রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি মেলায় এখন বাণিজ্যে নতুন ধারা ফিরে আসবে। ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।’
আখাউড়া স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন চালু হলে দু’দেশের বাণিজ্যে আরো গতি বাড়বে। বিশেষ করে পাথর ও গম আমদানি আমাদের সহজ হবে। ভারতের ট্রেন বাংলাদেশে চলে আসবে বলে কমে আসবে পরিহন ব্যয়। ইতিমধ্যেই পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তবে, ভারতের অংশে রেললাইনের কিছু কাজ বাকি থাকায় এখনই বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করা যাবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া সীমান্ত হয়ে দু’দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগের উদ্বোধন হয়েছে বুধবার। বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়ালি আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আরো একটি রেল যোগাযোগ স্থাপন হলো।
এদিকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য মুখিয়ে আছেন ভারতীয়রা। বিশেষ করে সেখানকার ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ মনে করছে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে কলকতা হয়ে সেদেশের বিভিন্নস্থানে গেলে তাদের অনেক সময় বেঁচে যাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার যাওয়াটা তাদের জন্য সহজ হবে।
তবে এখনই এটা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ হয়ে আগরতলা-কলকাতা ট্রেন চলাচল। এ ক্ষেত্রে বাধা মিটার গেজ রেললাইন। কেননা, আখাউড়া থেকে ভৈরব পর্যন্ত ব্রডগেজ (ডুয়েল গেজ) হলেও ভৈরব থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পুরোটাই এখনো মিটার গেজ রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে যতক্ষণ না পর্যন্ত ওই পথটুকু ব্রডগেজ লাইনে পরিণত না করা হয় ততক্ষণ বাংলাদেশ হয়ে সরাসরি আগরতলা থেকে কলকাতা যাওয়া সম্ভব না। ভারতের অভ্যন্তরের পুরোটাই ব্রজগেজ বিধায় বাংলাদেশ থেকেও গাড়ি যাওয়া সম্ভব না।
আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. আবু জাফরও জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে আগরতলা থেকে কলকাতা ট্রেন চলাচল হুট করেই সম্ভব না। তবে এক্ষেত্রে আগে ভৈরব থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পুরো অংশে ব্রডগেজ লাইন করতে হবে।
একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশ এর মধ্যে রেলওয়ের এ সংযোগ প্রকল্পটি চালু হলে মূলত ভারতীয়রা ব্যবসায়িরাই বেশি লাভবান হবেন। এক্ষেত্রে তারা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ থেকে আনা পণ্য ট্রেনে করে ত্রিপুরাসহ আশপাশের সাতটি রাজ্যে সহজেই নিয়ে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম থেকে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন থাকায় ট্রেন চলাচলের কোনো অসুবিধা হবে না।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় মাটির নীচ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি মর্টারশেল বিষ্ফোরণ ঘটনো হয়েছে। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুর দেড়টার সময় সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপাড়া গ্রামের হেলিপ্যাডে মর্টার শেলটির বিস্ফোরণ ঘটায়।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে উত্তর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের একটি জমি থেকে ড্রেজারে মাটি কাটার সময় প্রায় সাড়ে তিন কেজি ওজনের এই মর্টার শেলটি উদ্ধার করা হয়েছিল। দুপুরে মেজর ফৌজিয়া সুলতানার নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল শেলটির বিস্ফোরণ ঘটায়। তিনি বলেন, ধারনা করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই মর্টার শেলটি এখানে পড়েছিল। যা অবিস্ফোরিত অবস্থায় থেকে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ৯ হাজার ৩৯৫ ইয়াবাসহ তাজুল ইসলাম নামে এক মাদক পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি। আজ ১৩ নভেম্বর বুধবার সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন ৬০ বিজিবির টহল দল মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী খারকুট এলাকা থেকে তাকে ইয়াবাসহ তাকে আটক করে। আটক তাজুল ইসলাম মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের বাসিন্দা।
বিকেলে ৬০ বিজিবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। এর আগে মামলা দায়ের করে থানায় সোপর্দ করে বিজিবি। এসময় একটি সিএনজি আটক করা হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে মাদক বিরোধী অভিযানে উপজেলার ভারত সীমান্ত পিলার ২০২৫/২৫-এস থেকে আনুমানিক ৬০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে খারকোট এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি সিএনজি তল্লাশি করে ৯ হাজার ৩৯৫ ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়।
সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন ৬০ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্ণেল এ এম জাবের বিন জব্বার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় জাতীয় যুব দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ ১ নভেম্বর শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা, ঋণের চেক ও প্রশিক্ষণের সনদ ও উপকরণ বিতরণ করা হয়।
আখাউড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসের আয়োজনে অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, যুব, যুবতীসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভিন রুহি।
বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ সজিব মিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার তানিয়া তাবাসসুম, আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ রওশন আলী প্রমুখ।
বক্তারা ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-যুব-জনতার আন্দোলনের ফসল আমাদের নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।
যুব-যুবতীদেরকে বেকার না থেকে যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজের মেধা শ্রম কাজে লাগিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠার আহবান জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া প্রেসক্লাবে সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন, সহ-সভাপতি কাজী হান্নান খাদেম প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ ইফতাখারুল আলম শিমুল।
সবশেষে ৪০ প্রশিক্ষণগ্রহণকারী যুবক-যুবতীকে সনদ ও উপকরণ প্রদান এবং ২ জনকে ঋণের চেক দেওয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বুক ভরা আশা নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়া ফরিদ মিয়া বাড়ি ফিরেছেন ঠিকই কিন্তু জীবিত নয় কফিনবন্দি হয়ে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১৮ দিনের মাথায় ৮ জুলাই সোমবার রাতে তার মরদেহ নিজ জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের তুলাবাড়ি গ্রামে আসলে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিলেন আত্মীয়-স্বজনসহ পাড়া প্রতিবেশীরা।
ধার-দেনা করে ভাগ্য বদলের আশায় সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন ফরিদ মিয়া। সেখানে রিয়াদ শহরে বড় একটি কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। দেশে আসার আনন্দে স্ত্রী, সন্তানসহ মায়ের জন্য কেনাকাটার পর ল্যাগেজ বেঁধে সব প্রস্তুতি শেষ করেন। প্রতিক্ষার পালা যেন তার শেষ হচ্ছে না, কবে দেশে ফিরবেন। এরই মধ্যে দেশে আসার ৩ দিন আগে হঠাৎ গত ২০ জুন সৌদি আরবের রিয়াদে স্ট্রোক করে তিনি ইন্তেকাল করেন।
এদিকে আজ ৯ জুলাই মঙ্গলবার বাদ জোহর তুলাবাড়ি জামে মসজিদ মাঠে জানাযা শেষে ধাতুরপহেলা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এর আগে, রাতে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ গ্রহণ করেন। এরপর সড়ক পথে মরদেহ লাশবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে শুরু হয় শোকের মাতম। পরিবার পরিজন আর স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এক নজর দেখতে পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনসহ এলাকার শতশত লোকজন তার বাড়িতে ভিড় করেন।
নিহত ফরিদ মিয়া ওই গ্রামের মৃত ছায়েদ মিয়ার ছেলে। তার পরিবারে মা, স্ত্রী, ১ মেয়ে ও ২ ছেলে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ থেকে প্রায় ৭ বছর আগে ফরিদ মিয়া সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে রিয়াদ শহরে তিনি একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করতেন। সর্বশেষ গত প্রায় ২ বছর আগে দেশে আসেন। গত ২৪ জুন দেশে আসার কথা ছিল। বাড়িতে আসার ৩ দিন আগে স্ট্রোক করে মায়াভরা এ পৃথিবী থেকে না ফেরার দেশে চলে যান।
ইউপি সদস্য মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ফরিদ খুবই একজন কর্মঠ লোক ছিলেন। দেশে থাকতে কাজ ছাড়া কিছুই বুঝতেন না। পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোঁটাতে অনেক কষ্ট করে বিদেশে যান। এরপর পরিবারটা ভালোই চলছিল। হঠাৎ স্ট্রোক করে এভাবে তিনি মারা যাবেন তা কখনো ভাবিনি। বাদ জোহর জানাজার শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।