চলারপথে ডেস্ক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে জানানো হয়েছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি এবং তপশিলের সম্ভাব্য দিনক্ষণ জানাতে বঙ্গভবনে যান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী নির্বাচন নিয়ে তাঁরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করেন।
বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে সিইসি বলেন, শীঘ্রই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। আমরা রাষ্ট্রপতিকে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছি। উনি শুনেছেন, সন্তুষ্ট হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেছেন, আসন্ন নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। এ ব্যাপারে উনার সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সে ব্যাপারে উনি আশ্বাস দিয়েছেন। আমরাও বলেছি, প্রয়োজনে আপনার সহযোগিতা আমরা কামনা করি। রাষ্ট্রপতি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে যেকোনো রকমের সহযোগিতা দিতে তিনি প্রস্তুত থাকবেন। গণতান্ত্রিক যে ধারাবাহিকতা, সাংবিধানিক যে ধারাবাহিকতা সেটা যেকোনো মূল্যে অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন।
সিইসি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি, সাংবিধানিকভাবে দায়িত্ব অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে বদ্ধপরিকর। আমরা সকল রাজনৈতিক দল, সরকার ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করে যাচ্ছি। আমরা আশ্বস্ত করেছি, সকলের সহযোগিতায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবিধানিক যে বাধ্যবাধকতা আছে তার আলোকে যথাসময়ে নিষ্কণ্টকভাবে সম্পন্ন করব।
তিনি বলেন, তফসিল ও নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি আমরা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি। যেকোনো মূল্যে ২৯ জানুয়ারির আগেই নির্বাচন করতে হবে। আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আজকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গেলাম। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সম্ভাব্য সময়সূচি নির্ধারণ করব। আমরা যেটা বলেছি, প্রথম সপ্তাহে বা দ্বিতীয় সপ্তাহে; এখনও সেই অবস্থানে আছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের বহুল আলোচিত পাগলা মসজিদের ৮টি দানবাক্সের এবার মিলেছে ১৯ বস্তা টাকা। আজ ৬ মে শনিবার সকাল ৮টায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। এরপর সেখানে রূপালী ব্যাংকের ডিজিএম শাহীদুর রহমান এবং ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ও এজিএম রফিকুল ইসলামও উপস্থিত হন।
টাকাগুলো মসজিদের দোতলার ফ্লোরে ঢেলে মূল্যমান অনুযায়ী পৃথক করা হচ্ছে। পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্সের ছাত্র-শিক্ষক এই কাজে অংশ নিয়েছেন। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। সঙ্গে ছিল বিদেশী মুদ্রা এবং সোনা ও রূপার গহনা। এবারও বিদেশী মুদ্রা এবং গহনা পাওয়া গেছে। তিনমাস অন্তর দান বাক্সগুলো খোলার রেওয়াজ রয়েছে। কখনও বিভিন্ন কারণে কিছুটা বিলম্বও হয়। গণনাশেষে এসব টাকা রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা করা হবে। বিভিন্ন এলাকার মানুষজন মানত হিসেবে পাগলা মসজিদে এসব টাকা ও সোনাদান দান করে থাকেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। একইসঙ্গে আইনটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয়, বরং সাইবার অপরাধ দমনের জন্য করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আজ ৩ মে বুধবার দুপুরে রাজধারীর ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) হলরুমে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৩ উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজিত হয়।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় সম্পাদক পরিষদের দাবির প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না। এখন এই আইনে কেউ অভিযোগ করলেই মামলা নেওয়া হয় না। এটি প্রথমে পর্যবেক্ষণের জন্য আমাদের নির্ধারিত সেলে পাঠানো হয়। সেখানে বিষয়টি যুক্তিযুক্ত মনে হলে পরে এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয় বা আদালতে পাঠানো হয়। মামলা হতে পারে এমন কিছু প্রতিষ্ঠিত না হলে গ্রেপ্তার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ ভবিষ্যতে প্রণয়ন করা প্রত্যেক আইনে সাংবাদিকদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায়িত্বশীলতার ঘাটতি রয়েছে। যার মাধ্যমে সাইবার অপরাধ সংগঠিত হতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাইবার অপরাধ দমনে আইন রয়েছে। বাংলদেশেও এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয় তখন গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের কার্যকর পদক্ষেপের কারণে এখন আইনটির অপব্যবহার কমেছে। এটিকে আরও পরিশুদ্ধ করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি, যাতে আইনটির সমস্যাগুলো সমাধান করে সকলের গ্রহণযোগ্য একটা আইন করা যায়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয় দাবি করে আনিসুল হক বলেন, এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে সাইবার অপরাধ দমনের জন্য। প্রধানমন্ত্রী কখনো সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করবেন না, তিনিও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চান। এখন ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। স্বাধীনতা না থাকলে এগুলো নিয়ে আলোচনায় যেতাম না। আইন হচ্ছে ডাটা প্রোটেক্ট করার জন্য, নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়। মুক্তগণমাধ্যম নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গিকারবদ্ধ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করার সময় মতামত নেওয়া হয়নি, সম্পাদক পরিষদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, আইনটি যখন করা হয় তখন তারা আমার সঙ্গে আলোচনা করতে আসে। যে পর্যায়ে আলোচনা করতে আসে তখন আইনটি সংসদে চলে যায়। কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটিতে তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন, তাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সবাই আইনটির ব্যপারে ঐক্যমত ছিলেন। তাদের মতামত অনুযায়ী ২১ ধারায় শাস্তি কমানোর বিষয়টি গ্রহণ করা হয়, জামিনযোগ্য এবং অজামিনযোগ্যের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, আমি নিজ উদ্যোগে ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যাব। প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট নিয়েও আলোচনা হবে। আমরা সবসময় আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে চাই, আলোচনা না করে কিছু হবে না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। এ আইনে কারো অভিযোগ পর্যবেক্ষণের জন্য যে সেল করা হয়েছে সেটি আইসিটি মন্ত্রণালয় বা আইন মন্ত্রণালয়ে পাবেন না, সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাবেন।
স্বাধীন সাংবাদিকতা করার অধিকার সবার আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সত্য তুলে ধরার দায়িত্ব আপনাদের। প্রত্যেকটা জিনিসেরই দুইটা দিক থাকে, আপনারা দুটোই তুলে ধরবেন যাতে জনগণ বুঝে নিতে পারে।
মুক্তগণমাধ্যমের সূচকে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের নিচে অবস্থান করছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে নীর্ণায়কে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের নিচে থাকে, আমার বিষয়ে সেই নির্ণায়কের বিষয়েই সকলের প্রশ্ন থাকা উচিৎ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় এ সময় আরো বক্তব্য দেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ইউনাইটেড ন্যাশনস ইন বাংলাদেশের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর জিউন লিউইস, ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের অফিসার ইন চার্জ সুজান ভিজ।
চলারপথে ডেস্ক :
পঞ্চাশ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে।
আজ ৭ এপ্রিল শুক্রবার জাতীয় সংসদ সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৪৭ বিধিতে (সাধারণ প্রস্তাব) আনা প্রস্তাব উত্থাপনকালে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভাষণ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব উত্থাপন করলে তার ওপরে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য ও সরকারি দলের আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত প্রস্তাবে বরা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে সংসদের অভিমত এই যে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুরূপে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হবে সুসংহত, শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, সকলের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সংবিধানের এ অঙ্গীকারসমূহ পূরণে আমরা সকলে একযোগে কাজ করবো, গড়ে তুলবো আগামীর সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা- এই হোক আমাদের প্রত্যয়।’
প্রস্তাব উত্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে পথ চলি। তাই ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সালের পরে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত আছে। যার ফলে একটা স্থিতিশীলতা আছে। মাঝে মাঝে আমাদের প্রতিবন্ধকতা, অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়। তারপরও বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
তিনি বলেন, ৫০ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। ৫০ বছরের পথপরিক্রমা অনেক ক্ষেত্রেই মসৃণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বার বার সামরিক ফরমান জারি করে সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। গণতন্ত্র ও জাতীয় সংসদের ওপর আঘাত হেনেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল সামরিক ও স্বৈরশাসনের পালাবদলের মধ্য দিয়ে সংবিধানের চার মুলনীতিতে আঘাত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে কালো আইনে পরিণত করা ছিল সংসদীয় ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। পরবর্তী সময়ে সপ্তম সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ সুগম করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে। সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
?প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রণালয়ের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে মন্ত্রীর পরিবর্তে সদস্যদের নির্বাচিত করা হচ্ছে। বিরোধী দলের সদস্যদের থেকে স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হচ্ছে। সিপিএ ও আইপিউতে সভাপতিত্ব ছিল বাংলাদেশের সংসদের প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের আস্থার প্রতীক।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সংসদ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত- একথা উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, বর্তমান সংসদে স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলের নেতা, একজন হুইপ, চারজন স্থায়ী কমিটির সভাপতির ভূমিকা পালন করছেন নারী। জাতীয় রাজনীতিকে নারীদের উৎসাহিত করতে সংসদে নারী আসন ৫০-এ উন্নীত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত তিন মেয়াদে জাতীয় সংসদের ধারবাহিক অগ্রযাত্রা, সংসদীয় গণতন্ত্রের স্থায়ীত্ব ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ক্ষেত্র রচনা করেছে। জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। দারিদ্র বিমোচন, দুর্যোগ মোকাবিলা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল।
শেখ হাসিনা বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের মঞ্চ মহান জাতীয় সংসদ সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশীদার এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অর্জনসমূহ সংসদে আলোচনার মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটি বিরল দৃষ্টান্ত জাতির সামনে রেখে গিয়েছিলেন জাতির পিতা যে, ইচ্ছা থাকলে কত দ্রুত একটা দেশকে পুনর্গঠন, পুনর্বাসন এবং উন্নয়ন করা যায়। আজকে তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠতো।
আলোচনায় অংশ নিয়ে গণপরিষদ এবং প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি লক্ষ্য নিয়েই রাজনীতি করেছিলেন- দেশের স্বাধীনতা এবং মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা আছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দেওয়া হয়। সে পতাকা হাতে নিয়ে তিনি যত্ন সহকারে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।
প্রথম জাতীয় সংসদের আরেক সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ষড়যন্ত্র নানা দিকে বিস্তৃত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
তিনি সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চান। কিন্তু সেখানে বাধা আছে। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশে চাকরি দিয়েছিল তারা বাধা।
সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সরকারি দলের এই জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য বলেন, গ্রামের মানুষ এখন একবেলাও অভুক্ত থাকে না। সংসদ সদস্যরা এর সাক্ষী।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আর যাতে কোনো সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসতে না পারে সেইদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
সংসদ সদস্যদের আলোচনা শেষে রোববার এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ব্যক্তি পর্যায়ে ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি ভোগ-দখলে রাখা যাবে না। এর বেশি থাকলে সরকারের কাছে ঘোষণা দিতে হবে। সরকার যথাযথ ক্ষতিপুরণ প্রদান করে বাড়তি জমি খাস করবে। কোন কোম্পানি বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে জমির পরিমাণের সিলিং থাকবে না। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা, জালিয়াতির দায়ে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। আজ ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস, যুগ্ম সচিব মো. খলিলুর রহমান প্রমুখ।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে সবার সম্মতিক্রমে ওই আইনটি পাস হয়। বেশকিছুদিন ধরেই ভূমি মন্ত্রণালয়ের আইনটি নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। ভূমিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে স্বার্থান্বেষী, ভূমিদস্যু, জালিয়াতচক্র, কোটারি গ্রুপ পরোক্ষভাবে এই আইনের বিরোধিতা করেছে। সরকারের সম্মতি ও ভূমিমন্ত্রীর শক্ত অবস্থানের কারণে অবশেষে আইনটি প্রণয়ন হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভূমিমন্ত্রী বলেন, “আইনটি নিয়ে কাজ করার সময় অনেকেই তাকে বলেছেন, ‘এই আইনে হাত দিলে হাত পুড়েও যেতে পারে। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার হওয়ার পর অবশেষে আইনটি বাস্তবে রূপ নিয়েছে। দেশের মানুষের জন্য, দলিল যার, জমি তার– এটি কার্যকর করার জন্য এই আইনটি খুব প্রয়োজন ছিলো। এটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিরাট একটি সাফল্য।”
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘কিভাবে মানুষকে ভূমির হয়রানি, ভোগান্তি থেকে রেহাই দেওয়া যায়– এই চিন্তা মাথায় রেখেই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। ভূমি নিয়ে এখন কেউ জবরদস্তি করলে, কোনো অন্যায় করলে তার বিচার হবে ফৌজদারি আইনে। হোল্ডিং কোম্পানি হোক আর যেই হোক বেআইনিভাবে কেউ কোন জমি দখল, বেহাত করতে পারবে না। আগে ওইসব অন্যায়কারীদের বিচারের মুখোমুখি করতে কোনো আইন ছিল না, এখন হয়েছে।’
মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, ‘এই আইনের আওতায় ব্যক্তি পর্যায়ে কোনোভাবেই ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি নিজ নামে রাখেতে পারবে না। উত্তরাধিকার, দান, হেবা বা অন্য যেকোনো প্রক্রিয়ায় পাওয়া জমি হলেও ৬০ বিঘার বেশি নিজের নামে রাখতে পারবে না। যাদের নামে এর চেয়ে বেশি জমি থাকবে তাদেরকে অবশ্যই সরকারের কাছে বাড়তি জমির ঘোষণা দিতে হবে। সরকার ওইসব এলাকার মৌজা রেট অনুযায়ি ক্ষতিপুরণ দিয়ে ওই জমি খাস করে নেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইনটিতে ভূমি সংক্রান্ত আট ধরনের অপরাধের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতারণা, জালিয়াতির ক্ষেত্রে সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। পুরো আইন ফৌজদারি আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শান্তিতে রাখতে এ ধরনের একটি যুযোপযোগী আইন করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ডেভেলপাররা কোনো কথা নেই অন্যের জমিতে মাটি ফেলা শুরু করে– এটা এখন ফৌজদারি অপরাধ হবে। এ ক্ষেত্রে আগে তাদেরকে প্রতিরোধ করা কঠিন ছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ব্যক্তিপর্যায়ে একশ বিঘা কৃষিজমির মালিকানার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরশাদ সরকারের আমলে একটি আদেশ জারি করে ব্যক্তি পর্যায়ে ৬০ বিঘা জমির মালিকানা কথা বলা হয়। এরশাদ সরকারের ওই আদেশটিই এবার আইনে পরিণত করা হলো।’
চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ার শিবগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস উল্টে এক কিশোরসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো দুইজন। আজ ২৮ জুন বুধবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চন্ডিহারাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, রংপুরের মিঠাপুকুরের বাসিন্দা আল আমিন (১৫) ও অজ্ঞাত এক যুবক (২৫)। আহত দুইজনকে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে ছুটি দিয়েছেন চিকিৎসক।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, ঢাকা থেকে আসা রংপুরগামী বৈশাখী পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের রোড ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। নিহত কিশোরের মরদেহ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছেন। এছাড়াও অজ্ঞাত ওই যুবকের মরদেহ থানা হেফাজতে রাখা আছে। তার পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে।
ওসি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।