চলারপথে রিপোর্ট :
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে সদ্য উদ্বোধন হওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ব্যবহারকারী যানবাহন সংখ্যা লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪ দিনে এই টানেল ব্যবহার করেছে ৯৭,১৪৫টি যানবাহন। এসব যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ২৪ লাখ ১৫ হাজার ৬০ টাকা। রবিবার দিবাগত রাতের মধ্যে ব্যবহারকারী যানবাহন সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘টানেল ব্যবহারকারী যানবাহন সংখ্যা লাখ ছুঁই ছুঁই। গত ১৪ দিনে যে হারে যানবাহন চলেছে সে হিসেবে রবিবার মধ্যে ব্যবহারকারী যানবাহন লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। এখানে প্রতিদিন রাত ১২টায় যানবাহন ও টোলের হিসেব করা হয়।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন সকাল ৬টা থেকে সাধারণের চলাচলের জন্য টানেলটি খুলে দেওয়া হয়।
চলারপথে রিপোট
নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে অনিয়মের অভিযোগে পাঁচ ফার্মেসিকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে উপজেলার বসুরহাট বাজারের কলেজরোড ও হাসপাতাল গেইট এলাকায় উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পিয়াস চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায, দুপুরের দিকে উপজেলার বসুরহাট বাজারের কলেজরোড ও হাসপাতাল গেইট এলাকার বিভিন্ন ওষুধ দোকানে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ড্রাগ লাইসেন্স না থাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ রাখা, অনিবন্ধিত ওষুধ মজুদ রাখা, খুচরা মূল্যে ঘষামাজা করার অপরাধে ৫ টি ফার্মেসি দোকারদারকে ১ লাখ ৩৫হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং তাৎক্ষণিক আদায় হয়। অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন ড্রাগ সুপার নোয়াখালী ও কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল।
চলারপথে ডেস্ক :
পঞ্চাশ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে।
আজ ৭ এপ্রিল শুক্রবার জাতীয় সংসদ সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৪৭ বিধিতে (সাধারণ প্রস্তাব) আনা প্রস্তাব উত্থাপনকালে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভাষণ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব উত্থাপন করলে তার ওপরে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য ও সরকারি দলের আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত প্রস্তাবে বরা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে সংসদের অভিমত এই যে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুরূপে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হবে সুসংহত, শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, সকলের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সংবিধানের এ অঙ্গীকারসমূহ পূরণে আমরা সকলে একযোগে কাজ করবো, গড়ে তুলবো আগামীর সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা- এই হোক আমাদের প্রত্যয়।’
প্রস্তাব উত্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে পথ চলি। তাই ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সালের পরে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত আছে। যার ফলে একটা স্থিতিশীলতা আছে। মাঝে মাঝে আমাদের প্রতিবন্ধকতা, অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়। তারপরও বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
তিনি বলেন, ৫০ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। ৫০ বছরের পথপরিক্রমা অনেক ক্ষেত্রেই মসৃণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বার বার সামরিক ফরমান জারি করে সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। গণতন্ত্র ও জাতীয় সংসদের ওপর আঘাত হেনেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল সামরিক ও স্বৈরশাসনের পালাবদলের মধ্য দিয়ে সংবিধানের চার মুলনীতিতে আঘাত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে কালো আইনে পরিণত করা ছিল সংসদীয় ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। পরবর্তী সময়ে সপ্তম সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ সুগম করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে। সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
?প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রণালয়ের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে মন্ত্রীর পরিবর্তে সদস্যদের নির্বাচিত করা হচ্ছে। বিরোধী দলের সদস্যদের থেকে স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হচ্ছে। সিপিএ ও আইপিউতে সভাপতিত্ব ছিল বাংলাদেশের সংসদের প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের আস্থার প্রতীক।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সংসদ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত- একথা উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, বর্তমান সংসদে স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলের নেতা, একজন হুইপ, চারজন স্থায়ী কমিটির সভাপতির ভূমিকা পালন করছেন নারী। জাতীয় রাজনীতিকে নারীদের উৎসাহিত করতে সংসদে নারী আসন ৫০-এ উন্নীত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত তিন মেয়াদে জাতীয় সংসদের ধারবাহিক অগ্রযাত্রা, সংসদীয় গণতন্ত্রের স্থায়ীত্ব ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ক্ষেত্র রচনা করেছে। জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। দারিদ্র বিমোচন, দুর্যোগ মোকাবিলা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল।
শেখ হাসিনা বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের মঞ্চ মহান জাতীয় সংসদ সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশীদার এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অর্জনসমূহ সংসদে আলোচনার মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটি বিরল দৃষ্টান্ত জাতির সামনে রেখে গিয়েছিলেন জাতির পিতা যে, ইচ্ছা থাকলে কত দ্রুত একটা দেশকে পুনর্গঠন, পুনর্বাসন এবং উন্নয়ন করা যায়। আজকে তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠতো।
আলোচনায় অংশ নিয়ে গণপরিষদ এবং প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি লক্ষ্য নিয়েই রাজনীতি করেছিলেন- দেশের স্বাধীনতা এবং মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা আছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দেওয়া হয়। সে পতাকা হাতে নিয়ে তিনি যত্ন সহকারে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।
প্রথম জাতীয় সংসদের আরেক সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ষড়যন্ত্র নানা দিকে বিস্তৃত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
তিনি সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চান। কিন্তু সেখানে বাধা আছে। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশে চাকরি দিয়েছিল তারা বাধা।
সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সরকারি দলের এই জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য বলেন, গ্রামের মানুষ এখন একবেলাও অভুক্ত থাকে না। সংসদ সদস্যরা এর সাক্ষী।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আর যাতে কোনো সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসতে না পারে সেইদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
সংসদ সদস্যদের আলোচনা শেষে রোববার এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ ৯ জুন রবিবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং সম পর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ১৬তম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার সমৃদ্ধ অর্থনীতির শক্র হিসেবে খ্যাত খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায়। তাই ঋণখেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিকে আরও কার্যকরভাবে অনুসরণ করতে হবে। এই মামলার শুনানি পর্যায়ে বিবাদীর অযৌক্তিক কালক্ষেপণ রোধ করতে হবে। তিনি বলেন, ঢাকায় বিদ্যমান চারটি অর্থঋণ আদালতের পাশাপাশি আরও তিনটি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে আরও দুটি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রয়োজনে আদালত সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। আনিসুল হক বলেন, সরকারি চাকরিজীবী কেউ দুর্নীতি করলে ছাড় পাবে না। দুদক স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, যে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটউটের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক শেখ আশফাকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তব্য রাখেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি দফার বিভ্রান্তিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। কখনো ১০ দফা, কখনো ২৭ দফা, কখনো ১ দফা, আবার কখনো ৩১ দফা! বিএনপি কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে ঘোষিত এসব দফা জনগণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
আজ ১৩ জুলাই বৃহষ্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্তৃক উত্থাপিত রূপরেখাকে অন্তঃসারশূন্য ও অকার্যকর বলে প্রত্যাখ্যান করে এই বিবৃতি প্রদান করা হয়।
ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, বিএনপি কিছু দিন পর পর নতুন নতুন দফা নিয়ে রাজনীতিতে টিকে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। বিএনপির এই দফা জনগণের চাহিদা বিবেচনা করে নয় বরং ঐতিহ্যগতভাবে তাদের দুর্নীতি, লুটপাটতন্ত্র এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের স্বৈরতান্ত্রিক অপরাজনীতি ফিরিয়ে আনার কূটকৌশল।
তিনি বলেন, তাদের এসব দফা ও রূপরেখায় জনকল্যাণের সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মপন্থা নেই। জনগণ তাদেরকে আস্থায় না নিলেও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা মরিয়া হয়ে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আজ যেসব রূপরেখা ও দফা তুলে ধরছে, প্রকৃতপক্ষে তারা তা বিশ্বাস ও ধারণ করে না। কারণ তারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এসব নীতির বিরুদ্ধে সব ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র’-কে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে তারা দুর্নীতির বরপুত্র, একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিএনপি জনগণকে সেই ‘হাওয়া ভবন’-এর দুঃশাসনের যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়। আজ তারা দুর্নীতির শে^তপত্র প্রকাশের কথা বলছে! অথচ বিএনপির শাসনামলে টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নের কলঙ্কের কথা জনগণ ভুলে যায়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের তথাকথিত রূপরেখায় ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলেছে! শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির কথা বলেছে! কৃষকের অধিকারের কথা বলেছে! -এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানই এদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর প্রথম আঘাত হেনেছিল এবং বিএনপির এমপি, মন্ত্রী ও ক্যাডারবাহিনী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীদের উপর পাশবিক ও বর্বর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছিল। তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর বার বার আঘাত হেনেছে বিএনপি। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের শাসনামলে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে কিছুই করেনি, বরং তাদের হাত শ্রমিকের রক্তে রঞ্জিত। এমনকী পবিত্র রমজান মাসে বেতন-বোনাসের দাবীতে আন্দোলন করায় ১৭ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, কানসাটে বিদ্যুতের দাবীতে আন্দোলনরত মানুষকে গুলি করে হত্যা এবং সার ও তেলের দাবীতে আন্দোলন করায় কৃষকের বুকে বুলেট বিদ্ধ করেছিল বিএনপি। তাদের অতীত অপকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হয়ে, জাতির সামনে ক্ষমা প্রার্থনা না করে আজ তারা বিভ্রান্তির রূপরেখা উপস্থাপন করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে! আসলে গণতন্ত্রের মোড়কে তারা তাদের সেই হিং¯্র রাজনীতির পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায়। গণতান্ত্রিক পন্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রধানতম অন্তরায় বিএনপি এবং তার দোসররা।
তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী সকলের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে।
আজকের বাংলাদেশে কৃষক, শ্রমিক, জনতার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছে। যে কয়বার শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে। কৃষি খাতে ব্যাপক প্রণোদনা ও কৃষি গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ক্ষুধা ও চরম দারিদ্র্যের অভিঘাত থেকে মুক্তি পেয়েছে জাতি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমানের উন্নতি ঘটেছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় মানুষের মাথা গোঁজার ঠাই এবং অর্থনীতির মূলধারায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামীর উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে জনকল্যাণের এই ধারা অব্যাহত থাকবে। বিএনপির এই ধরনের তথাকথিত রূপরেখা ও আন্দোলনের হুমকি বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। বাংলাদেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে। বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সমতাভিত্তিক ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধানের দিকে সবাইকে এগোতে হবে। আর তা হবে সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্য।
আজ ২৬ জুলাই বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার এবং কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলন ২০২৩’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্পিকার এ কথা বলেন। রাইট টু ফুড বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, রাইট টু ফুড বাংলাদেশ এ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অনেক সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের সম্মেলন আয়োজন খুবই ফলপ্রসূ। এ সম্মেলন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খাদ্যচক্রের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। এখান থেকে অনেক পরামর্শ আসবে, যা ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে। পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ‘খাদ্য নিরাপদ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল’ নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান স্পিকার।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৃষি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কৃষকের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা, কৃষি ও সারে ভর্তুকি প্রদানসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ আজ চাল উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
রাইট টু ফুড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, নেপালের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সঞ্জীভ কুমার কার্না, কেয়ার-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রামেশ সিং এবং রাইট টু ফুড বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দেন।
সূত্র : বাসস