চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুরে কাঠের রেকের চাপায় নারায়ণ চন্দ্র দাস (৬০) নামে এক নৈশপ্রহরীর মৃত্যু হয়েছে।
২১ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উলজেলার রূপসদী ইউনিয়নের বাল্লাকান্দি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। দুপুরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
নারায়ণ চন্দ্র দাস উপজেলার রুপসদী ইউনিয়নের আশ্রাফপুর গ্রামের দক্ষিণ দাস পাড়ার মৃত দেবেন্দ্র চন্দ্র দাসের ছেলে।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নারায়ণ গত দুই বছর যাবত রূপসদী ইউনিয়নের বাল্লাকান্দি বাজারের নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করছিল। প্রতিদিনের মত সোমবার রাতে প্রতিদিনের মতো ডিউটিতে যায় নারায়ণ। ভোরে একটি দোকানের সামনে বসলে ভারি কাঁচযুক্ত কাঠের একটি রেক নারায়ণের উপর পড়ে গেলে এতে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নারায়ণ মারা যান। পরে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আকাশে মেঘ দেখলেই আঁতকে উঠছে শিশু শিক্ষার্থীরা। এই বুঝি ঝড় এলো, নামল বৃষ্টি। কালবৈশাখীতে উড়ে গেছে বিদ্যালয়ের একমাত্র টিনের ঘরের চালা। বিকল্প নেই বলে ভাঙা ঘরেই চলছে পাঠদান।
শনিবার রাতে কালবৈশাখীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র টিনের ঘরের চালা উড়ে গেছে। চালাবিহীন ঘরে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। রোদ ও বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করে ক্লাস করছে তারা। প্রখর রোদে ক্লাস বন্ধ, বৃষ্টি এলে তো কথাই নেই।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের একমাত্র টিনের ঘরের চালা উড়ে সামনেই পড়ে রয়েছে। অফিস কক্ষের সব মালপত্র লন্ডভন্ড। বিধ্বস্ত টিনের ঘরেই চলছে পাঠদান। স্কুল ভবন বিধ্বস্ত হওয়ায় অনেকটাই কম শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। বিদ্যালয়ে একমাত্র শৌচাগারটিও বিধ্বস্ত। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পাশের বাড়িতে যেতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়হান মোল্লা বলেন, ‘স্কুলে আসলে ভয়ে থাকি কখন আবার ঝড় আসে। রোদের মধ্যেই আমরা ক্লাস করছি, বৃষ্টি আসলে আমাদের ছুটি। স্কুল ভবন ভেঙে যাওয়ায় অনেকে স্কুলে আসছে না।’
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসফিয়া সোমাইয়া বলেন, রোদের মধ্যে ক্লাস করতে অনেক কষ্ট হয়। আবার ভয়ে থাকতে হয় কখন আবার ঝড়-বৃষ্টি আসে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক রায়হানা ইয়াসমিন বলেন, ‘শনিবারের ঝড়ে আমাদের একমাত্র স্কুল ভবনটির চালা বিধ্বস্ত হয়েছে। আমাদের অন্য কোনো ভবন না থাকায় বাধ্য হয়ে রোদের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছি। বৃষ্টি হলে ছুটি হয়ে যাচ্ছে স্কুল।’
প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন জানান, কালবৈশাখীতে স্কুলঘরের চালা উড়ে গেছে। বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। বিশেষ বরাদ্দ পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বরাদ্দ পেলে মেরামত করা হবে। এখন বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় চালাবিহীন স্কুলঘরে পাঠদান করাতে হচ্ছে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘স্কুল ভবনের চালা বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টা শুনেছি। বিষয়টি ডিপিওকে জানানো হয়েছে। বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ভবনটি সংস্কার করা হবে। আমরা বলেছি, প্রধান শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের বিকল্প কোনো জায়গায় পাঠদান করাতে।’
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল মনসুর জানান, বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তবে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুরে ১ সন্তানের জননী, আছমা বেগম (২৭) নামে এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আছমা বেগম রাধানগর গ্রামের প্রবাসী ইয়াছিন মিয়ার স্ত্রী।
এ ব্যাপারে উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী জাদিদ আল রহমান জনি বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এটি হত্যাকান্ড বলে স্থানীয়রা আমাকে জানিয়েছেন। পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছেন। ওই মহিলার ৪ বছর বয়সী একটা কন্যা সন্তান রয়েছে।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম জানান, এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছি। তিনি বলেন, স্থানীয়দের কাছে শুনেছেন আছমা বেগম সকাল ১০টার দিকে তার শ্বশুরকে পানি দিয়ে নিজ ঘরে চলে আসেন। সকাল ১১টার দিকে তার ৪ বছরের মেয়ে মাদরাসা থেকে ঘরে এসে দেখে তার মায়ের গলাকাটা লাশ পড়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করছি পারিবারিক কলহের জের ধরে ওই গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব মো. জামাল মিয়ার উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ এবং গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৫ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শ্রমিক দলের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে উপজেলা বিএনপির ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত নেতাকর্মীরা দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করে হুঁশিয়ারি প্রদান করেন
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জিসান সরকার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক ওমর ফারুক, উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এস এ শাওন, বাঞ্ছারামপুর পৌর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ইব্রাহিম সরকার, সাবেক সদস্য সচিব মনিরুল হাসান আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও পৌর বিএনপির মধ্যে বিরোধের জেরে হওয়া সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে ।
গতকাল ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সম্মেলনস্থলসহ পুরো পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবুল মুনসুর মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টায় দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই এ আদেশ কার্যকর করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে। ওই সময় উল্লেখিত স্থানের মধ্যে কোথাও কোনো ধরণের সভা-সমাবেশ করা যাবে না।
আজ ২০ নভেম্বর বুধবার সকালে এসএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলন হওয়ার কথা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর উপস্থিত থাকার কথা ছিলো। এরই মধ্যে সোমবার সম্মেলন বিরোধী পক্ষ মিছিল বের করলে এতে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করে। পরে দু’পক্ষের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন। এক পক্ষ সম্মেলন করার বিষয়ে ও অন্য পক্ষ প্রতিহতের বিষয়ে অনঢ় থাকে। এ অবস্থায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করল।
গত ২৩ অক্টোবর বাঞ্ছারামপুর, কসবা, আখাউড়া পৌর ও উপজেলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ওই চারস্থানেই বিএনপি’র একাধিক পক্ষ রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আবদুল আহম্মদ ওরফে রুবেল নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শকসহ (তদন্ত) তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
গতকাল রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রুবেলের মা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে, এএসআই আল আমিন মানিক ও উপজেলার মধ্যপাড়ার রবি উল্লাহকে। ভুক্তভোগী রুবেল বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের লিল মিয়ার ছেলে।
মামলার আর্জি সূত্রে জানা যায়, মামলার তিন নম্বর আসামি রবি উল্লাহর সঙ্গে রুবেলের পরিবারের লোকজনের আগে থেকে বিরোধ ছিল। রবি উল্লাহর বিরুদ্ধে তারা আদালতে মামলাও করেছেন, যা চলমান রয়েছে। ১৪ মার্চ বিকাল ৪টার দিকে তারই প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কোনো কারণ ছাড়াই এক নম্বর আসামি এএসআই আল আমিন অপর ৪ পুলিশ সদস্যকে নিয়ে বাড়ি থেকে রুবেলকে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুসি, লাথিসহ লাঠি দিয়ে মারধর করে তারা। থানায় নিয়ে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে ও এএসআই আল আমিন আবারও তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায়। এতে রুবেলের পুরো শরীর মারাত্মক জখম হয়। থানায় নির্যাতনের বিষয়ে রুবেলের মা আমেনা বেগম সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিলে ১৬ মার্চ দুপুর ২টায় রুবেলকে একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
রুবেলের মা আমেনা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে ১৪ মার্চ বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয় অথচ ১৬ মার্চ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ২৪ ঘণ্টার বেশি হেফাজতে রেখে আমার ছেলেকে নির্যাতন করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদুর রহমান বলেন, বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ধারায় দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আদেশ দেওয়ার জন্য রেখেছেন। ২০ মার্চ সোমবার আদেশ দিতে পারেন। এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম বলেন, শুনেছি আদালতে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তবে আমাদের পুলিশের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা। এএসআই আল আমিন মানিক বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।