আবার পেছাল প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা

জাতীয়, 21 November 2023, 792 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
দ্বিতীয়বারের মতো পেছানো হলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা।

banner

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষা হবে।

আজ ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়র জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন।

মাহবুবুর রহমান তুহিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেথ তরা হয়, আগামী ৮ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের প্রথম পর্বের (রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ) নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আরো বলা হয়, প্রথম পর্বের রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮টি জেলার ৫৩৫টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১ ঘণ্টার এ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে বলা হয়েছিল, চলতি মাসের ২৪ নভেম্বর প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তা পিছিয়ে আগামী ১ ডিসেম্বর পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মার্চ ময়মনসিংহ, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য গত ১৮ জুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

এবারই প্রথম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বিভাগ ধরে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। গুচ্ছভিত্তিক এ নিয়োগে তিন ধাপে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষাও আলাদাভাবে নেওয়া হবে।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

সৌদিতে একই পরিবারের ৩ জন নিহত

জাতীয়, 6 August 2023, 1002 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে পবিত্র মক্কায় ওমরাহ শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত তিন বাংলাদেশির পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তান, নাতি-নাতনিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বৃদ্ধা মা আলেয়া বেগম। শুধু অবাক চোখে চেয়ে রয়েছেন ছেলে, নাতি-নাতনির ছবির দিকে; আর তার দুই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি।

banner

সরেজমিনে আজ ৬ আগস্ট রবিবার নিহত মোবারক হোসেনের শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলীর বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান, নাতি-নাতনিকে হারিয়ে বৃদ্ধা আলেয়া বেগমের শুধু চোখ বেয়ে পানি ঝড়ছে। অসুস্থ আলেয়া বেগম কোনো কথাই বলতে পারছেন না। মোবাইলে ছেলে, নাতি নাতনিদের ছবির দিকে চেয়ে আছেন। এ ছাড়া বড় ভাইকে হারিয়ে ভাই-বোনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।

সৌদি আরবে পবিত্র মক্কায় ওমরাহ পালন শেষে দাম্মামে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে আরবের আল-কাসিম এলাকায় ৫ আগষ্ট বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিন বাংলাদেশি মারা যান। নিহতরা হলেন মোবারক হোসেন (৪৮), তার ছেলে তানজিল আব্দুল্লাহ মাহি (১৫) ও মেয়ে মাহিয়া (১৩)। মাহি ওই দেশের নবম শ্রেণিতে ও মাহিয়া সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো।
একই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন মোবারক হোসেনের স্ত্রী শিখা আক্তার (৪০) ও বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীম (১৯)। উচ্চ শিক্ষার জন্য চলতি মাসের ২৩ তারিখ মীমের কানাডা যাওয়ার কথা ছিল। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলিতে ২০০৬ সাল থেকে বসবাস করে আসছেন শেখ মোহাম্মদ আলী। তিনি ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক। ভাই বোনদের মধ্যে দ্বিতীয় মোবারক হোসেন।

পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, মোবারক হোসেন দারিদ্রতা ঘুচাতে বিশ বছর আগে পাড়ী জমান সৌদি আরবে। এরপর দুই ভাইকে নিয়েছেন সৌদি এবং এক ভাইকে পাঠিয়েছেন দুবাইয়ে। মোবারক হোসেন স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে বসবাস করতেন। সেখানে তার কার রিপেয়ার শপ (গাড়ী মেরামতের দোকান) রয়েছে।

মোবারক হোসেনের ছোট ভাই জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ৬ মাস আগে বড়ভাই ও তার স্ত্রী সন্তান দেশে এসে কিছুদিন থেকে পুনরায় সৌদি চলে যান। ভাইয়ের বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীমের ২৩ আগস্ট উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল। এ কারণে স্ত্রী, ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে ওমরাহ করতে যান তিনি। ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মোবারক হোসেনের বাবা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার মোবারকের জন্যই আজ আমাদের অবস্থার উন্নতি। কি করলে আমরা একটু ভালো থাকবো, সব সময় ওর মাথায় এই চিন্তাই থাকতো। বলতো আব্বা আপনি কোনো চিন্তা করবেন না, যখন যা লাগবে আমাকে জানাবেন। আমার কোনো কিছুই চাওয়া লাগতো না ওর কাছে।

তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর আমার ছেলের শ্যালক সৌদি চলে গেছেন। আমার ছেলে, নাতি-নাতনিদের মরদেহ দেশে আনার কথা বলেছি। ওদের এক নজর শেষ দেখা দেখতে চাই। সরকার যেন আমার ছেলে ও নাতিদের মরহেদ দেশে আনার ব্যবস্থা করেন।

অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রি, ডিলারকে জরিমানা

জাতীয়, 12 October 2023, 890 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মেহেরপুরে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রয়ের অপরাধে বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স মাসুদ আল নুরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

banner

আজ ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুর সদর উপজেলার নতুন মদনাডাঙ্গা বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন মেহেরপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সজল আহমেদ।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সজল আহমেদ জানান, সরকার নির্ধারিত ২৭ টাকা কেজির টিএসপি সার ৩৯ টাকা, ২১ টাকা কেজির ডিএপি সার ৩০ টাকা, ২০ টাকা কেজির এমওপি সার ৩০ টাকা কেজি এবং ২৭ টাকা কেজির ইউরিয়া সার অধিক দামে বিক্রয়, সার ক্রয়-বিক্রয়ের ভাউচার প্রদান ও সংরক্ষণ না করা, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রাখার অপরাধে বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স মাসুদ আল নুরকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ও ৪৫ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এসময় জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ও নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা রিয়াজ মাহমুদ এবং মেহেরপুর পুলিশ লাইনের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপরে

জাতীয়, 13 July 2023, 1034 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যায় ৬টায় সেটি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

banner

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডালিয়া পয়েন্টে পানি পরিমাপক কর্মকর্তা নূর ইসলাম।

এ দিকে পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়ায় ব্যারেজের ভাটিতে থাকা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসব এলাকায় বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের মানুষ।

বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস আজ

জাতীয়, 17 April 2025, 150 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস ১৭ এপ্রিল। হিমোফিলিয়া রক্তক্ষরণজনিত জন্মগত রোগ, যা বংশানুক্রমে ছেলেদের হয়ে থাকে। শরীরের কোনো জায়গায় আঘাত পেলে বা সামান্য কেটে গেলে স্বাভাবিকভাবে ওই স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে, যা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু হিমোফিলিয়া রোগীর ক্ষেত্রে সহজে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না অথবা বিলম্বিত হয়।

banner

১৯৮৯ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। সারা বিশ্বে এই দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হলো রক্ত সংক্রান্ত রোগ হিমোফিলিয়া সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করা। এছাড়াও ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ হিমোফিলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ফ্রাঙ্ক শ্নাবেলকে স্মরণ করার জন্য তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই দিনটি পালিত হয়। তাই হিমোফিলিয়া কী ও কেন এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

হিমোফিলিয়া কী?
দুটি গ্রিক শব্দ হাইমা এবং ফিলিয়া থেকে হিমোফিলিয়া শব্দটি এসেছে। হাইমা অর্থ রক্ত ও ফিলিয়া অর্থ আকর্ষণ। দেহের কোনো অংশে রক্তপাত শুরু হলে সাধারণত সেখানে রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে। মেডিকেলের ভাষায় এই প্রক্রিয়াকে ক্লটিং বলে।

ক্লটিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রক্ত জমাট বেঁধে ধীরে ধীরে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের দেহে কোথাও কোনো ক্ষত তৈরি হলে সেই ক্ষতস্থান সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শুকিয়ে যাওয়াকেই ক্লটিং বলে। যে পদার্থ রক্তক্ষরণে বাঁধা দেয় তাকে ক্লট বলে। কিন্তু কোনো কারণে ক্ষতস্থানে এই ক্লট তৈরি না হলে সেখান থেকে একাধারে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। একজন হিমোফিলিয়া আক্রান্ত রোগীর দেহে এই ক্লট সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক নয়।

ব্যাপারটি আসলে এমন নয় যে, রোগীর দেহ থেকে অঝোরে এবং খুব দ্রুত রক্তক্ষরণ হতে থাকবে। মূলত একজন হিমোফিলিয়াক (যারা হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত) ব্যক্তির দেহ থেকে দীর্ঘ সময় ধরে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

অনেকে হয়তো এখন মনে করছেন যে, এই রোগ হলে হাত, পা, হাঁটু ইত্যাদির কোথাও কেটে গেলেই তা থেকে অনবরত রক্ত ঝরতে থাকবে। ব্যাপারটি তা নয়। দেহের বাইরের কোনো ছোটখাটো আঘাত এখানে খুব একটা চিন্তার বিষয় নয়। আসল চিন্তার বিষয় হলো ইন্টারনাল ব্লিডিং বা দেহের অভ্যন্তরীণ কোনো অংশে রক্তক্ষরণ। এই ধরণের রক্তক্ষরণকে হ্যামোরেজ বলে। এটি মূলত দেখা যায় দেহের ভেতরে কোনো সন্ধি যেমন হাঁটু ও গোড়ালিতে। এছাড়া দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন টিস্যু ও পেশীর মিলনস্থলেও রক্তক্ষরণ হতে পারে। দেহের ভেতরে এমন রক্তক্ষরণ অনেক যন্ত্রণাদায়ক হয় এবং আক্রান্ত অংশ বেশ ফুলতে শুরু করে।

হিমোফিলিয়া কেন হয়
মানবদেহে একটি X ও অন্যটি Y ক্রোমোজম থাকলে সে হয় ছেলে (46,XY) আর যদি দুটিই X ক্রোমোজম থাকে তাহলে সে হয় মেয়ে (46,XX)। X ক্রোমোজমে F8 ও F9 নামক জিন থাকে, যা F-VIII ও F-IX নামক ক্লোটিং প্রোটিন তৈরি করে। এই ক্লোটিং প্রোটিন রক্তের সাদা অংশে পরিমাণমতো থাকে। ফলে আপনাআপনি রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। যাদের রক্তে এই ক্লোটিং প্রোটিন কম থাকে, তাদের রক্ত পড়া বন্ধ হয় না অথবা বিলম্বিত হয়। তারাই হিমোফিলিয়ার রোগী।

ছেলেদের দেহে যেহেতু একটামাত্র X ক্রোমোজম থাকে এবং এই একমাত্র X ক্রোমোজম যদি অসুস্থ/defect থাকে, তাহলে F-VIII/F-IX তৈরি হয় না। ফলে ছেলেরাই হিমোফিলিয়ার রোগী হয়। আর মেয়েদের দেহে যেহেতু দুটি X ক্রোমোজম থাকে, তাই একটি X অসুস্থ/defect হলেও অন্য X সুস্থ থাকায় পর্যাপ্ত F-VIII/F-IX তৈরি হয়। তাই সাধারণত মেয়েরা হিমোফিলিয়ার রোগী হয় না, রোগের বাহক হয়।

তবে ১. Lyonisation/inactivation of healthy X chromosome হলে, ২. বাবা রোগী ও মা বাহক হলে অথবা ৩. Turner syndrome (45,XO) হলে মেয়েরাও রোগী হতে পারে। তাই হিমোফিলিয়ার রোগীর সঙ্গে মামাতো, খালাতো প্রভৃতি বোনের বিয়ে হলে ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই রোগী হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি তিনজন হিমোফিলিয়ার রোগীর মধ্যে অন্তত একজন বংশানুক্রমে সঞ্চারিত না হয়ে নতুনভাবে আক্রান্ত হয়।

হিমোফিলিয়া কত প্রকার?
হিমোফিলিয়া এ এবং বি দুই ধরনের। হিমোফিলিয়া-এ-তে, ফ্যাকফোর-৮ মাত্রা কম বা অনুপস্থিত। হিমোফিলিয়া-বি ফ্যাকফোর-৯ এর ঘাটতি রয়েছে। বেশিরভাগ মানুষেরই হিমোফিলিয়া-এ আছে। এটি শরীরের ক্রোমোজোম সিস্টেমের অবনতির কারণেও হয়। আর চিকিৎসকদের ধারণা, বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। আর বিশ্বব্যাপী প্রায় চার লাখ মানুষ হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত।

হিমোফিলিয়ার লক্ষণ :
যদি কোনো সাধারণ আঘাত বা ক্ষত থেকে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ বন্ধ না হয় তাহলে বুঝবেন এটি হিমোফিলিয়ার কারণে হয়েছে। এই রোগের ক্ষেত্রে রক্তে প্লেটলেট কাউন্ট, প্রোথ্রোমবিন, প্লেটলেটের অসুস্থতা ইত্যাদি কমে যেতে পারে। এছাড়াও ক্ষতস্থানে বিলম্বিত রক্তপাত হয়। আর অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ বা কেটে গেলে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়াটাই হিমোফিলিয়ার মূল লক্ষণ। শিশু বয়সেই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে রক্তক্ষরণ, শরীরের আঘাত লাগলে সেই জায়গাটি নীলচে হয়ে ফুলে যায় অর্থাৎ চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ; মাংসপেশিতে এবং অস্থিসন্ধিতে রক্তক্ষরণ; হাঁটু, কনুই ও অন্যান্য অস্থি সন্ধি ফুলে যাওয়া; শরীরের কোথাও কেটে গেলে দীর্ঘক্ষণ রক্ত ঝরা; দাঁত তোলার পর বা সুন্নতে খাতনা করার পর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়া, শিশু হামাগুড়ি দেওয়ার সময় হাঁটুতে কালচে দাগ হওয়া, নবজাতকের নাভি কাটার সময় দীর্ঘক্ষণ রক্তক্ষরণ হওয়া ইত্যাদি।

হিমোফিলিয়ার বংশগতি :
বাবা সুস্থ ও মা বাহক হয় তবে ছেলে সন্তানের রোগী হওয়ার সম্ভাবনা ৫০% আর মেয়ে সন্তানের বাহক হওয়ার সম্ভাবনা ৫০%। বাবা রোগী এবং মা সুস্থ হয় তবে সব ছেলে সন্তানই সুস্থ হবে এবং সব মেয়ে সন্তানই বাহক হবে। বাবা রোগী এবং মা বাহক হয় তবে ছেলে সন্তানের রোগী হওয়ার সম্ভাবনা ৫০%। আর মেয়ে সন্তানের রোগী হওয়ার সম্ভাবনা ২৫% ও বাহক হওয়ার সম্ভাবনা ২৫%। সুতরাং প্রত্যেক হিমোফিলিয়া পুরুষ রোগী বিয়ে করতে পারবে, তবে সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সাধারণত শুধু পুরুষরাই এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং নারীরা এই রোগের বাহক। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে নারীরাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বাবা রোগী ও মা বাহক হলে মেয়েরাও রোগী হতে পারে। হিমোফিলিয়া রোগীর সঙ্গে আত্মীয় যেমন খালাতো, মামাতো বা ফুপাতো বোনের বিয়ে হলে দুজনেই রোগী হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ-গুরুতর হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত কিছু লোকের মাথায় সামান্য আঘাতের পরে মস্তিষ্কে রক্তপাত হতে পারে। যদিও এটি প্রায়শই ঘটে না, এটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সমস্যাগুলির মধ্যে একটি যা উঠতে পারে।

কিছু সতর্কতা চিহ্ন এবং উপসর্গ হলো :
* একটি গুরুতর

* চলমান মাথা ব্যাথা

* বারবার বমি হওয়া

* অলসতা বা তন্দ্রা

* দ্বৈত উপলব্ধি

* হঠাৎ আনাড়ি বা দুর্বলতা

* হৃদরোগের আক্রমণ বা কম্পন

পরীক্ষা ও প্রতিরোধ

রক্তের ফ্যাক্টর দুটির পরীক্ষা। রক্তের জমাট বাঁধার ক্ষমতা পরীক্ষা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের genetic testing, genetic counseling I prenatal test (amniocentesis) করে অনাগত সন্তান রোগী না বাহক তা নিশ্চিত হয়ে হিমোফিলিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা কমানো যায়। দেশেই এসব পরীক্ষা করা হচ্ছে।

হিমোফিলিয়া রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করানোর কোনো চিকিৎসা এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে সম্ভব। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে যেমন নিয়মমাফিক, সঠিক ব্যায়াম করে মোটামুটিভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা গেলেও চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল, যা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তাই সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিরোধ করাই উত্তম।

১১০ বোতল ভারতীয় মদসহ দুই চোরাকারবারি আটক

জাতীয়, 4 October 2023, 900 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পুর্বধলায় ১১০ বোতল ভারতীয় মদসহ দুই কারবারিকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ ব্যাপারে ডিবি’র এস আই সঞ্জয় সরকার বাদী হয়ে আটককৃত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে বুধবার বিকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে।

banner

আটককৃতরা হচ্ছে- জেলার দূর্গাপুর উপজেলার চন্ডীগড় গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. মাহফুজুল ইসলাম (২২) এবং পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নারায়ণ ডহর গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে মো. বোরহান উদ্দিন (৩৮)।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ এর তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এর দিক নির্দেশনায় ওসি, ডিবি (পশ্চিম) মোহাম্মদ শাহনূর আলমের নেতৃত্বে এস আই সঞ্জয় সরকার, এ এস আই ম. মফিজুল হক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ৪ অক্টোবর (বুধবার) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পূর্বধলা চৌরাস্থার ইলাশপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ ১১০ বোতল ভারতীয় মদসহ দুই চোরাকারবারিকে আটক করে।