অনলাইন ডেস্ক :
ইসরায়েল সফরে গিয়ে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল সফর করেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। সফরের পর হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধ বিরতিতে অগগ্রতির আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আজ ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার লাইভ আপডেট প্রোগ্রামে এ তথ্য জানায় আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়, দক্ষিণ ইসরায়েলের কিবুতজ বেইরি শহর পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। আজ ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবারই তিনি ইসরায়েলে পৌঁছান। এরপর তিনি ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনসহ কিবুতজ বেইরি পরিদর্শনে যান।
গত ৭ অক্টোবর কিবুতজ বেইরি শহরে হামলা চালায় হামাস। ওই হামলায় প্রায় ১০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল। পরিদর্শনের সময় এলি কোহেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে হামলার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানান।
পরে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে নিজের পরিদর্শনের বিষয়ে একটি পোস্ট দেন ডেভিড ক্যামেরন। তিনি লেখেন, আমি নিজের জন্যই জায়গাটি পরিদর্শনে আসতে চেয়েছিলাম। আমি এমন কিছু শুনেছি এবং দেখেছি যা কখনই ভুলব না।
ওই পোস্টে তিনি হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতিতে ‘অগ্রগতির’ আশা প্রকাশ করেন। ক্যামেরন লিখেছেন- আজ এমন একটি দিন যেখানে আমরা মানবিক বিরতির অগ্রগতি দেখতে আশা করি। এটি জিম্মিদের বের করে আনা ও গাজায় সাহায্য করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। এটি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সাহায্য করার সুযোগ, যেখানে মানুষ ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল পরিদর্শন করবেন বলেও পোস্টে জানান পশ্চিমা বিশ্বের এ নেতা।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো বলছে, ডেভিড ক্যামেরন তার সফরের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ ও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তবে, কখন, কোথায় তাদের এ সাক্ষাৎ হবে সে ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
হাকিকুল ইসলাম খোকন
কয়েক বছর ধরেই গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তিনি সবসময় এই পথে হাঁটেন না। তবে যখন ব্যবস্থা নেন, তখনই ব্যর্থ হন। কিন্তু সম্প্রতি এবিসি নিউজ ১৫ মিলিয়ন ডলারের বদলে ট্রাম্পের সাথে একটি মানহানির মামলা মিটমাট করেছে।
এ ছাড়া আরো অসংখ্য গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি ও তাঁর সহযোগীরা, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে– দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর মুক্ত সাংবাদিকতার স্বাধীনতা খর্ব করবেন তিনি।
এতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তাঁর নেতৃত্বে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারকে নিয়ে গণমাধ্যমগুলো স্বাধীনভাবে হয়তো কাজ করতে পারবে না। ট্রাম্প ইতোমধ্যে বলেছেন, যারা তাঁর সাথে অন্যায় করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবেন।
গণমাধ্যম সুরক্ষা আইনজীবী ডেভিড কোরজেনিক বলেছেন, এই দেশে আইনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু যা পরিবর্তিত হয়েছে, তা হলো সাংবাদিকতার পরিবেশ ও এটির বিরুদ্ধে বিদ্যমান শত্রুতার তীব্রতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাম্পের দুই সহযোগী ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, গণমাধ্যমের ওপর ট্রাম্প এবং তাঁর মিত্রদের চাপ বাড়ছে, এটির তীব্রতা বাড়তে থাকবে।
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য বক্তৃতায় গণমাধ্যমকে ১০০ বারের বেশি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে বিষোদ্গার করেছেন। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে ট্রাম্প নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প ওয়াশিংটন পোস্টের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেয়। এ ছাড়া কমলা হ্যারিসকে নিয়ে সিবিএস নিউজের একটি অনুষ্ঠানে প্রতারণার অভিযোগ আনেন ট্রাম্প।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা অব্যাহত রাখবেন। তিনি বলেন, এটি করতে আমাদের অনেক অর্থ খরচ হবে। কিন্তু আমাদের গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করতে হবে। ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টেভেন চিয়ুং বলেন, প্রেসিডেন্ট মিথ্যা ও অনৈতিক প্রতিবেদনের ওপর নজর দেবেন। যেগুলোতে সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হয় না, যেগুলো শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের প্রতিনিধি সভায় সরকারের অর্থ ব্যয়-সংক্রান্ত একটি বিল আটকে দেন ট্রাম্প। এতে ট্রাম্পের সাথে জড়িত ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। ওই ঘটনার পর প্রশ্ন ওঠে, ট্রাম্পকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্টের সব দায়িত্ব মাস্ক পালন করবেন নাকি। তবে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছেন, না সে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছে না। আমি তাঁর কাছে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব অপর্ণ করেছি– এমন তথ্য বিরোধীদের গুজব। আপনারা জানেন কেন মাস্ক প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না? কারণ তিনি এ দেশে জন্মগ্রহণ করেননি।
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার আগেই বিতর্কের সৃষ্টি করছেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে তিনি পানামা খাল দখলের হুমকি দেন। এবার তিনি হুমকি দিয়েছেন ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দখলের। নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে ট্রাম্প বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং পুরো বিশ্বের স্বাধীনতার জন্য, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
১৯৭৯ সালে ডেনমার্ক থেকে স্বায়ত্তশাসন পেলেও বৈদেশিক সম্পর্ক, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে এখনও তাদের ওপর নির্ভরশীল ডেনমার্ক। ১৯৪৬ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান গ্রিনল্যান্ডকে কেনার জন্য ডেনমার্ককে ১০০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের স্বর্ণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর পর ২০১৯ সালে ট্রাম্পও এই দ্বীপটি কেনার প্রস্তাব দেন। এতে করে ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। এর জেরে ট্রাম্প ডেনমার্কে তাঁর আনুষ্ঠানিক সফরও বাতিল করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনলাইন ডেস্ক :
ইতিহাসের ভয়াবহতম অর্থনৈতিক বিপর্যয় পেরিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার পথে আরো এক ধাপ এগিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ঋণের বিপরীতে সুদের হার কমানোর যে নির্দেশনা বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে— তাতেই মিলেছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটির অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ১ জুন বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রী ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণের বিপরীতে সুদের হার ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশ করার নির্দেশনা দিয়েছে। অর্থাৎ শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন থেকে ঋণের বিপরীতে আড়াই শতাংশ কম হারে সুদ কেটে রাখবে।
সামঞ্জস্য রক্ষা করতে অবশ্য সমপরিমাণ সুদের হার হ্রাস করা হয়েছে স্থায়ী আমানতের বিপরীতেও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ১৩ শতাংশ সুদ দেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। আগে এই হার ছিল ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক (সিবিএসএল) জানিয়েছে, ২৫০টি বেসিস পয়েন্টে ঋণের বিপরীতে সুদের হার কমানো হয়েছে। মূলত জাতীয় অর্থনীতিকে আরও সচল করতেই নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ।
অযৌক্তিক কর কাট-ছাঁট, অব্যবস্থাপনা, আয়ের তুলনায় ব্যয় বৃদ্ধি ও করোনা মহামারির সময়কার অর্থনৈতিক স্থবিরতার জেরে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে নেমে যাওয়ায় ২০২১ সালের শেষ দিকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে শ্রীলঙ্কা। দেশটির মূল্যস্ফীতি পৌঁছে যায় ৭০ শতাংশে। ডলারের মজুত না থাকায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল সে সময়।
রাজাপাকসে ভাইদের নেতৃত্বাধীন সরকারের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনাই মূলত এজন্য দায়ী। জনগণের প্রবল বিক্ষোভে গত জুন মাসে রনিল বিক্রমাসিংহের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় রাজাপাকসে সরকার। সেই থেকে একই সঙ্গে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও অর্থমন্ত্রী উভয় পদে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন বিক্রমাসিংহে।
দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে জরুরিভিত্তিতে ২৯০ কোটি ডলার ঋণের (বেইল আউট ঋণ) আবেদন করে বিক্রমাসিংহের সরকার। দেশটির অর্থনীতির গতিবিধি যাচাই শেষে গত মার্চে সেই ঋণ মঞ্জুর করে আইএমএফ।
কলোম্বভিত্তিক এশিয়া সিকিউরিটিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জীওয়া ফেরনান্দো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ এই পদক্ষেপ নিয়ে রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা সম্ভবত চলমান এই অর্থনৈতিক সংকটের শেষ পর্যায়ে আছি।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিবিএসএল’র গভর্ণর পি. নন্দলাল বীরাসিংহে রয়টার্সকে বলেন, ‘আসলে সংকট থেকে উত্তরণের ব্যাপারটি ধাপে ধাপে ঘটে। আমরা কেউই বলতে পারি না যে আগামী কাল কিংবা আজ থেকে এক বা দু’সপ্তাহের মধ্যে আমরা সব ঠিক করে ফেলতে পারব।’
‘তবে বর্তমানের যে পরিস্থিতি, তা বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি – শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি সংকট থেকে উত্তরণের ধারাবাহিক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে কিংবা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক গতি ফিরে পাচ্ছে।’
অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বব্যাপী শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলার প্রয়াসে সামাজিক ন্যায়বিচারে বিনিয়োগ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একমাত্র সামাজিক ন্যায়বিচারই স্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করতে পারে। বিশ্বব্যাপী শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের প্রয়াসে সামাজিক ন্যায়বিচারকে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।’
আজ ১৪ জুন বুধবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্যালেস ডি নেশনস-এ ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট-২০২৩’ এর পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে একটি বৈশ্বিক জোট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসহ সকল আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এজেন্ডার কেন্দ্রে সামাজিক ন্যায়বিচারকে স্থান দেওয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে পাঁচটি পরামর্শ দেন।
শেখ হাসিনা তার প্রথম পরামর্শে বলেন, এই জোটটিকে একটি মান-নির্ধারক বা দরকষাকষির ফোরামের পরিবর্তে একটি পরামর্শমূলক বা অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয় হবে। দ্বিতীয়ত, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক ন্যায়বিচারকে এক আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক অন্য মহলের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে এই জোটকে সতর্ক থাকতে হবে। তৃতীয়ত, এই জোটকে একটি নিয়মতান্ত্রিক বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার আওতায় সামাজিক ন্যায়বিচারকে একটি সংরক্ষণবাদী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে, বরং এর ব্যাপক প্রসারে ভূমিকা রাখার বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে। চতুর্থত, শোভনকর্ম এবং উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার জন্য এ জোটের বিষয়ে আইএলও’র নিজস্ব অংশীজনদের থেকে ব্যাপক সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে। পরিশেষে, আমাদের তরুণ সমাজকে সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রবক্তা হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ জোটকে মনোযোগী হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান শতাব্দীর বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বের জন্য আমাদের একটি নতুন সামাজিক চুক্তি তৈরি করতে হবে। এই সামাজিক চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হবে- টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।’
উল্লেখ্য যে, শ্রম অধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ আইএলও’র দশটি মৌলিক সনদের মধ্যে আটটিতে অনুস্বাক্ষর করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ক দুটি নতুন মৌলিক আইএলও সনদ অনুস্বাক্ষরের বিষয়টিও আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, শ্রম অধিকার নিয়ে সোচ্চার কয়েকটি উন্নত দেশ এখন পর্যন্ত নিজেরা অধিকাংশ মৌলিক আইএলও সনদ অনুস্বাক্ষর করেনি। যেমন, একটি বড়ো শিল্পোন্নত দেশ মাত্র দুটি মৌলিক সনদ অনুস্বাক্ষর করেছে।’
শিশুশ্রমের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণে বাংলাদেশ সম্প্রতি আইএলও সনদ ১৩৮ অনুস্বাক্ষর করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার আটটি ঝুঁকিপূর্ণ খাতকে শিশু শ্রমমুক্ত ঘোষণা করেছে। এছাড়া, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত এক লাখ শিশুকে উপানুষ্ঠানিক ও কারিগরি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমি একটি সুস্থ ও নিরাপদ আগামী প্রজন্মের স্বার্থে শিশু শ্রমের অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইএলও’র সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৩ ও ২০১৮ সালে দুইবার বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধন করেছে। অধিকন্তু, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫-এ সংশোধন করা হয়েছে। এ বছর নাগাদ শ্রম আইন, ২০০৬-এ আরও সংশোধনী আনার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ প্রয়োগর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ও সাতটি শ্রম আদালতের সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আরও ছয়টি শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠা করেছে। এ ছাড়া, সামাজিক অংশীদারদের অংশগ্রহণে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) কার্যক্রম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জোরদার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, দেশের কারখানাগুলোর জন্য একটি ‘শিল্প পুলিশ’ ইউনিট গঠন করা হয়েছে।
সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে আরো মার্কিন ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তার সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং দেশের ব্যবসায় পরিবেশ উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আজ ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকায় একটি মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা সঠিক সময়ে এদেশে এসেছেন।’
এক্সিলারেট এনার্জির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান স্টিভেন কোবোসের নেতৃত্বে মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করে স্টিভেন কোবোস বলেন, এটি বাংলাদেশে ব্যবসায় আস্থা বাড়াবে।
তিনি বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশে আগ্রহ অনেক বেড়েছে।’
কোবোস আরও জানান, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্যসহ শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কোম্পানিগুলো দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে ব্যবসার সম্ভাবনা নিয়ে অনেক আগ্রহী।
এক্সিলারেট এনার্জির সিইও কোবোস বলেন, তার কোম্পানি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে আরও বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, কোম্পানিটি দেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ বৃদ্ধি করতে চায়। বর্তমানে এক্সিলারেট বাংলাদেশের দু’টি অফশোর ফ্লোটিং স্টোরেজ এবং রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) বিনিয়োগ করেছে, যা প্রতিদিন ১.১ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। দেশের দৈনিক গ্যাস সরবরাহের প্রায় ৩৪ শতাংশ এখান থেকে আসে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় প্রধান উপদেষ্টা ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সেখানে এ সংগঠনের ৫০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে কিছু শীর্ষস্থানীয় আমেরিকান বহুজাতিক কোম্পানিও ছিল। ড. ইউনূস উপস্থিত মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
সাক্ষাৎকালে স্টিভেন কোবোসের সঙ্গে প্রতিনিধিদলে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ এক্সিলারেট এনার্জির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। পিটার হাস সম্প্রতি এক্সিলারেট এনার্জিতে স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজার হিসেবে যোগদান করেছেন। এছাড়া প্রতিনিধিদলে কোম্পানিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেরেক ওয়ং ও র্যামন ওয়াংডি এবং বাংলাদেশের আবাসিক ব্যবস্থাপক হাবিব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও জ্বালানি সচিব সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস।
অনলাইন ডেস্ক :
পশ্চিম উগান্ডার একটি স্কুলে ইসলামিক স্টেট গ্রæপের হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছে। এমপন্ডওয়ের লুবিরিহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই হামলায় আরও আটজন গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। খবর বিবিসি।
পুলিশ বলছে শুক্রবারের হামলাটি অ্যালাইড ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এডিএফ) দ্বারা পরিচালিত হয়। এটি ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো (ডিআরসি) ভিত্তিক উগান্ডার একটি গ্রুপ।
পুলিশ জানায়, ডিআরসি-তে বিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের দিকে পালিয়ে যাওয়া দলটিকে সেনারা তাড়া করছে।
জাতীয় পুলিশের মুখপাত্র ফ্রেড এনাগা আজ শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, দএখন পর্যন্ত স্কুল থেকে ২৫ টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং বেভেরা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, শুক্রবার রাতে হামলার সময় স্কুলের একটি ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং একটি খাবারের দোকান লুট করা হয়।
উগান্ডার সীমান্ত থেকে দুই কিলোমিটারেরও কম (১.২৫ মাইল) দূরে অবস্থিত স্কুলে হামলা। অনেক বছর পর উগান্ডার স্কুলে এই ধরনের হামলা হলো।
এর আগে ১৯৯৮ সালের জুনে , ডিআরসি সীমান্তের কাছে কিচওয়াম্বা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে হামলায় ৮০ জন ছাত্রকে তাদের ছাত্রাবাসে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। অপহরণ করা হয়েছিল শতাধিক শিক্ষার্থীকে।