রবিবারের মধ্যে ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা: সেতুমন্ত্রী

জাতীয়, রাজনীতি, 24 November 2023, 738 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী রবিবারের মধ্যে ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। সেভাবেই সবকিছু এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

আজ ২৪ নভেম্বর শুক্রবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, চারটি বিভাগের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে। নতুন অনেকে এসেছেন, কিছু বাদও পড়েছে। উইনেবল (সম্ভাব্য জয়ী) প্রার্থী আমরা বাদ দেইনি।

কাদের বলেন, ‘আমরা যখন বিভাগের নাম ঘোষণা করি তখন ভিড় বেড়ে যায়, নির্দিষ্ট বিভাগ শুনলে পিড়াপীড়ি শুরু হয়ে যায়। কীভাবে নাম বাহির করা যায়। সে কারণে বিভাগের নাম ঘোষণা করছি না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা মনোনয়নের ব্যাপারটা সুনির্দিষ্ট করে এখন বলছি না, কারণ এর মধ্যে আমরা যে সকল প্রার্থী দিয়েছি, সেসব মনোনয়নে ভুলত্রুটিও থাকতে পারে। সেটাও সংশোধনের একটা সুযোগ রেখেছি। এ কারণে আমরা ঠিক করেছি- ভিন্নভাবে, জেলাভাবে বা বিভাগভাবে প্রার্থিতা ঘোষণা করবো না। একসঙ্গে ৩০০ আসনের প্রার্থিতা ঘোষণা করতে চাই।’

এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

সঠিকভাবে দোষী নির্ণয়ে প্রয়োজনে সময় দিতে হবে: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, 1 February 2024, 453 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনী হত্যার ঘটনায় সঠিকভাবে দোষী নির্ণয়ে তদন্তের জন্য প্রয়োজনে ৫০ বছর সময় দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

একটি ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচারের কথা বলছেন। কিন্তু সাগর-রুনির হত্যার বিচার কেন হচ্ছে না- এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেখেন, সাগর-রুনিকে নিয়ে কথা বলবেন, আমি বুঝলাম। কিন্তু এই মামলায় যদি পুলিশ তদন্ত শেষ না করতে পারে, তাহলে জোর করে সেই তদন্ত সমাপ্ত করে একটা চূড়ান্ত প্রতিবেদন কিংবা অভিযোগপত্র দেওয়ানো কি ঠিক?’

তিনি বলেন, ‘তাদের তদন্তে যতদিন সময় লাগে সঠিকভাবে দোষী নির্ণয় করতে তাদেরকে ততটুকু সময় দিতে হবে, সেটা যদি ৫০ বছর হয়, ৫০ বছর দিতে হবে।’

তাহলে কি আমরা ৫০ বছর অপেক্ষা করবো এই রায়ের জন্য- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি নিয়ম নয়, এই মামলাটি ব্যতিক্রমী। যেসব মামলায় অপরাধীকে ধরা গেছে, সেগুলোর বিচার তড়িৎ হচ্ছে। যেখানে অপরাধীকে ধরা যাচ্ছে না, তদন্ত শেষ করতে পারছেন না, অবশ্যই তাদেরকে সময় দিতে হবে।’

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। এই হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।

সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে প্রায় এক যুগ হয়ে গেলেও এখনও এ মামলার বিচারই শুরু করা যায়নি। যদিও এই সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে বিভিন্ন সময় রাজপথে আন্দোলন করেছেন তাদের সহকর্মীরা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী আজ

জাতীয়, 17 March 2024, 350 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :

আজ ১৭ মার্চ, মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫তম জন্মদিন।

সেদিন ছিল মঙ্গলবার। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। রাত ৮ টার দিকে মা সায়েরা খাতুনের কোল আলোকিত করে আসেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে ডুবে থাকা বাঙালি জাতির মুক্তির দূত হয়ে পৃথিবীতে আসেন একটি শিশু।

সেদিনের সেই শিশুই আজ অবিসংবাদিত নেতা বাঙালি ও বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ সেই মহানায়কের জন্মশতবার্ষিকী। শুভ জন্মদিন জাতির পিতা। আজ বাঙালি জাতির আনন্দে পুলকিত হওয়ার দিন। দিনটি পরবর্তীতে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির এ জন্মদিনে দেশের ১৬ কোটি মানুষ বিনম্র শ্রদ্ধা, সালাম আর হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

খোকা থেকে জাতির পিতা : পিতা শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতা সায়েরা খাতুনের ঘর আলোকিত করে আসা শেখ মুজিবুর রহমান চার বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে ছিলেন তৃতীয়।

বাবা-মায়ের আদরের খোকা নামের ছোট্ট শেখ মুজিব ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলজীবন শুরু করেন। নয় বছর বয়সে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন।

পরবর্তীকালে তিনি গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪২ সালে শেখ মুজিব গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

একই বছরে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে এই কলেজ থেকেই স্নাতক সম্পন্ন করেন।

বিয়ে করেন শেখ ফজিলাতুননেছাকে (রেনু)। তারা দুই কন্যা- শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তিন পুত্র- শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের জনক-জননী ছিলেন।

১৯৪৩ বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের (অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের শাখা) কাউন্সিলর নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজন পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৬ সালে শেখ মুজিব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তানের পাশাপাশি তৃতীয় রাষ্ট্র হিসেবে স্বতন্ত্র, স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন।

যদিও এই উদ্যোগ বাতিল হয় কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটিই একজন জাতির পিতার স্বপ্নের রাষ্ট্র গড়ার ভিত্তি হয়ে ওঠে।

বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ৪ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রথম বিরোধীদলীয় ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।

২ মার্চ ফজলুল হক মুসলিম হলে অনুষ্ঠিত এক সভায় শেখ মুজিবুর রহমানের প্রস্তাবে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ (বর্তমান আওয়ামী লীগ) প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থাতেই তাকে যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।

১৯৫২ সালে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ আরও অনেকেই। জেল থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে শেখ মুজিব শহিদদের প্রতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানান।

একই বছর তিনি শান্তি সম্মেলন উপলক্ষ্যে চীন সফর করেন। শান্তি সম্মেলনে তিনি বাংলায় বক্তৃতা দেন, ভাষা আন্দোলনকে নিয়ে যান বৈশ্বিক অঙ্গনে।

১৯৫৩ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং একজন বাঙালি নেতা হিসেবে তার উত্থান হয়। ১৯৫৪ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ২৩৭টি আসনের মধ্যে ২২৩টি আসনে জয়লাভ করে।

আওয়ামী লীগ একাই পায় ১৪৩টি। বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জ থেকে নির্বাচিত হন এবং ১৫ মে নতুন প্রাদেশিক সরকারের সমবায় ও কৃষিমন্ত্রী হন।

৩০ মে ভারত স্বাধীনতা আইন-১৯৪৭, প্রয়োগ করে কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকার হঠাৎ করে যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভা ভেঙে দেয়। ১৯৫৬ সালে খান আতাউর রহমানের নেতৃত্বে প্রাদেশিক সরকারে তিনি মন্ত্রী হন।

মাত্র নয় মাস তিনি মন্ত্রী পদের দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে বাঙালির অধিকার আদায় আন্দোলনকে বেগবান করা এবং সংগঠনকে আরও সুসংহত করার উদ্দেশ্যে ১৯৫৭ সালের ৩০ মে স্বেচ্ছায় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন।

১৯৫৭ সালের ১৩-১৪ জুন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ মুজিবুর রহমান পুনরায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের উপস্থিতিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে এক বিশেষ সভায় আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়।

এই অধিবেশনে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট থেকে আলাদা হয়ে আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। ১১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি গঠিত হয়।

১৯৬৬ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলগুলোর জাতীয় সম্মেলনে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। প্রস্তাবিত ছয় দফা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ।

এই ছয় দফা মুক্তিকামী বাঙালি জাতির জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির বীজ বুনে দেয়। ১৮-২০ মার্চ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল মিটিংয়ে শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

ছয় দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি সারা বাংলায় গণসংযোগ সফর শুরু করেন। এ সময় তাকে আটবার গ্রেফতার করা হয় এবং সর্বশেষ ৮ মে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। প্রায় তিন বছর তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন।

১৯৬৮ সালে ৩ জানুয়ারি আইয়ুব সরকার মোট ৩৫ জন বাঙালির (রাজনীতিবিদ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সরকারি অফিসার) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগ এনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে।

জেলে বন্দি থাকা অবস্থাতেই ১৮ জানুয়ারি শেখ মুজিবের ওপর পুনরায় গ্রেফতার আদেশ জারি হয়। ভারতের সহায়তায় পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগে শেখ মুজিবুর রহমানকে ১ নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য’ মামলা দায়ের করা হয়।

বঙ্গবন্ধুসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্তদের মুক্তির দাবিতে সারা দেশে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯ জুন ঢাকা সেনানিবাসে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং তার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র গণআন্দোলন শুরু হয়। টানা গণআন্দোলনের মুখে আইয়ুব সরকার ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সব বন্দিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে বিশাল ছাত্র সমাবেশে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করে। ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আওয়ামী লীগের এক জনসভায় শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানের নাম রাখেন ‘বাংলাদেশ’।

১৯৭০ বঙ্গবন্ধু ছয় দফার আলোকে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বা?ন জানান। আওয়ামী লীগের জন্য তিনি নৌকা প্রতীক বেছে নেন।

১২ নভেম্বর এক প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় উপকূল এলাকায় লাখো মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বঙ্গবন্ধু নির্বাচনী প্রচারণা স্থগিত রেখে ঘূর্ণিঝড়বিধ্বস্ত অঞ্চলে ছুটে যান।

৭ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ী হয়। ১৯৭১ সালে ১ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরুর মাত্র দুই দিন আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন।

এই ঘোষণার ফলে সর্বস্তরের বাঙালি জনতা রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা নতুন মোড় নেয়। ১ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু কার্যত ছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রধান।

একদিকে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়ার নির্দেশ যেত, অপরদিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে যেত বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ। বাংলার মানুষ মেনে চলতেন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ।

৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্র থেকে বঙ্গবন্ধু বজ কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এই ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু দেশবাসীকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান।
২৫ মার্চ রাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাক হানাদার বাহিনী শতাব্দীর অন্যতম ঘৃণ্য গণহত্যা চালায়। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

এরপরই পাকিস্তানি সামরিক জান্তা তাকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয় এবং গণপরিষদ কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়। তার অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে ফিরে আসেন।

সেদিন বাঙালি জাতি তার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে অবিস্মরণীয় সংবর্ধনা জানায়। লাখো মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় স্নাত হয়ে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রেসকোর্স ময়দানে আসেন এবং অশ্রুসিক্ত নয়নে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।
১২ জানুয়ারি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে নতুন বাংলাদেশকে শক্ত ভিত্তির ওপর স্থাপন করেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সেপ্টেম্বরেই সংশোধন হবে: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, রাজনীতি, 13 July 2023, 1019 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধন হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।

বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে কথা হয়েছে। এই আইন নিয়ে তিনি আগেও যা বলেছেন, ঠিক সেই কথাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলকে বলেছেন।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরো বলেন, তারা বলেছেন, তারা সব দেশেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চান। গতকাল বুধবার আইন ও বিচার বিভাগের সচিব ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলকেও বলেছেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য কাঠামো (আইনি কাঠামো) দেশে আছে। সেসব সহায়ক আইনের কথা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের কাছেও উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।

গাজীপুরে হত্যাকান্ডের শিকার শ্রমিকনেতা শহীদুলের বিষয়টিও আজকের বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, আগের সংস্কৃতি নেই যে বিচার হবে না। যে কোনো অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার হয়।

তত্ত্বাবধায়ক বিষয়ে কোনো কথা হয়নি বলে দাবি করেন আইনমন্ত্রী।

এ বৈঠকে সময় দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।

দেশের মাটিতে শেখ হাসিনার ঠাঁই হয়নি : মাওলানা মামুনুল হক

জাতীয়, 5 September 2024, 96 Views,
মাওলানা মামুনুল হক। ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের রাজনীতি ছিল গুম-খুন ও প্রতিহিংসার এবং আলেম-উলামাকে জেল-জুলুম করার। এ কারণে ভারতে পালিয়ে গেছে শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের মাটিতে তার ঠাঁই হয়নি।’

৪ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত ৮টায় মাধবপুর স্টেডিয়ামে খেলাফত মজলিশ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভায় খেলাফত মজলিশের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

মামুনুল হক বলেছেন, ‘বাংলাদেশ গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ও দেশের সব শ্রেণির মানুষের আন্দোলনে দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভ করেছে। এটি বাংলাদেশের মুক্তির মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এই চেতনাকে ধারণ করতে হবে। ১৯৭১ সালে ইসলামের কথা বলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কাজ করেছে আওয়ামী লীগ।’

তিনি বলেছেন, ‘১৯৭২ সালের সংবিধান সংশোধন করতে হবে। ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর দেশের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী দোসররা অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু জনতা তা ব্যর্থ করে দিয়েছে। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ইস্পাতকঠিন শপথ নিতে হবে। পাড়া-মহল্লায় সংগ্রামপরিষদ গঠন করতে হবে।’

মামুনুল হক বলেছেন, ‘ভারতের বানের পানিতে এ দেশের মানুষের বিরাট ক্ষতি হয়েছে। ভারত এটি অন্যায় করেছে। বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গ রাজ্য করতে দেওয়া হবে না। রবীন্দ্রনাথ ও ভারতের বাবুদের সংস্কৃতি এ দেশে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।’

এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের রাজনীতি ছিল গুম-খুন ও প্রতিহিংসার। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা, নিরীহ মায়ের কোল খালি করা। আলেম-উলামাকে জেল-জুলুম করা। এ কারণে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশের মাটিতে তার ঠাঁই হয়নি।’

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা আর রাজনীতি করার চেষ্টা করবেন না। শেখ মুজিব ’৭৪ সালে মানুষ হত্যা করে বাকশাল গঠন করায় ৭৫ সালে তাকে জীবন দিতে হয়েছে।’ তিনি সারা দেশের আলেম-উলামাকে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 5 May 2024, 274 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও তাদের পরিবার এবং জনসাধারণের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে নবনির্মিত আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি (এএফআইপি) ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

আজ ৫ মে রবিবার সকালে ভবনটি উদ্বোধন শেষে নবনির্মিত প্যাথলজির বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন সরকারপ্রধান। পরে ‘আর্মি সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম-সেনা প্রাঙ্গণ’ ভবন উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। দেশের অন্যান্য সেক্টরে উন্নয়নের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীকেও গড়ে তোলা হচ্ছে আধুনিক, দক্ষ ও সময়োপযোগী বাহিনী হিসেবে।’