চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা বিএনপির চেয়ারপার্সনের পদ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সৈয়দ এ কে একরামুজ্জানকে এবার অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছে উপজেলা বিএনপি।
আজ ২৯ নভেম্বর বুধবার দুপুরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম.এ. হান্নান ও সাধারণ সম্পাদক কে এম বশির উদ্দিন স্বাক্ষরিত ফেসবুকে দেয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানা গেছে।
সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান নাসিরনগর উপজেলার বাসিন্দা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১- (নাসিরনগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে গত সোমবার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। এরপর গত মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানকে ‘দলীয় শৃংখলা পরিপন্থী কর্মকান্ডের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির দলীয় প্যাডে লেখা অবাঞ্ছিতের ঘোষণাটি নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেন এম.এ. হান্নান। নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিবৃতি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি কমিটি দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানকে বহিস্কার করেছে। বিএনপির নাসিরনগর উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে এই বহিস্কৃত নেতাকে নাসিরনগরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হান্নান বলেন, একরামুজ্জামানকে উপজেলার সকল জায়গায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে ইয়াবা বিক্রির টাকা নিয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষে কমপক্ষে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। হামলার হাত থেকে রেহাই পায়নি গবাদি পশুও। প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালায় দাঙ্গাবাজরা। আহতের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের কামাল দিঘী পাড়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ফান্দাউক গ্রামের শাহজানের ছেলে রুবেল শাহ একজন মাদক কারবারী। একই গ্রামের আজদন মিয়ার ছেলে শাফায়েত মিয়া রুবেলের কাছ থেকে কিছু ইয়াবা কেনেন। এ নিয়ে কিছুদিন পর পর পাওনাদারদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে, গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে মাদক কারবারি রুবেল শাহ ও শাফায়েতের আত্মীয় পারভেজ মিয়ার মধ্যে মাদকের টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
এসময় উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ ৭০ জন আহত হয়। পরদিন আজ বৃহস্পতিবার সকালে পশুর হাটে যাওয়ার সময় শাফায়েতের পক্ষের মারুফ মিয়ার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় রুবেল শাহের লোকজন। এসময় দুই পক্ষ দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়। এতে আরো ৪০ জন আহত হয়। সংঘর্ষের সময় শাফায়েতের পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠে।
অভিযুক্ত রুবেল মাদকের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার বড় ভাই নাইম শাহ পাশের বাড়ির শাফায়েত ও পারভেজের কাছে ৭০ হাজার টাকা পায়। সে টাকা ফেরত চাওয়ায় আমাদের উপর হামলা করে শাফায়েতের লোকজন। দু’দফা হামলায় আমাদের প্রায় ৭০-৮০ জন আহত পরে।
আহতরা হলো-বক্কর শাহা, ফকরুল শাহা, সাফিউল শাহ, সালাউদ্দিন শাহ, আলামিন শাহা, সালমান শাহ, ইয়ামিন শাহ, ইমন শাহ, জাকির শাহ, মেরাজ শাহ, মবিন শাহ, হৃদয় শাহ, লালন শাহ, মহিন শাহ, রায়হান শাহ, নিজাম শাহ, মুন্না শাহ, মুক্তাদির শাহ, মুন্নী শাহ, সজল শাহ, ফয়সাল শাহ, শিফন শাহ, শামীম শাহ, বাদল শাহ, ইধন শাহ, নাজুল শাহ, আলম শাহ, শাকিল শাহ, ইমন শাহ, মাসুক মিয়া, কামরুল মিয়া, নিজাম মিয়া, জুবায়ের মিয়া, শাহনাজ মিয়া, আবদুল্লাহ মিয়া, বক্কর মিয়া, হুমায়ুন মিয়া, তানভির ফয়সল মিয়া, লীমা বেগম, রাকিবা বেগম, নাসুমা, নাছিমা বেগম, ফারহানা বেগম, লীজা বেগম, কল্পনা বেগম, আকলিমা বেগম, তানজু বেগম, শেলিনা বেগম, খুদেজা বেগম, রাকিবা, সিমু বেগম, সুমাইয়া বেগম, জান্নাত বেগম, ইভা বেগম ও নুসরাত বেগম।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার সাইফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের পর দু’পক্ষের আহত লোকরাই চিকিৎসা নিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে শুনেছি। মাদকের টাকা নিয়ে সংঘর্ষের বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
“নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নাসিরনগরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৪ জুলাই সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নাসিরনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২ হাজার ৬৩২ টি পুকুরে ১ হাজার ৫৭৮ জন মৎস্য চাষি মাছ চাষ করছেন। বর্তমানে উপজেলায় মাছের চাহিদা ১৩ হাজার ৪৭৩ মেট্রিক টন এবং উৎপাদন হচ্ছে ১৩ হাজার ৯৭৩ মেট্রিক টন। তবে গত অর্থ বছরে উৎপাদন ছিল ১৩ হাজার ৩০৮ মেট্রিক টন। গত বছরের চেয়ে এবছর ৬৬৫ মেট্রিক টন উৎপাদন বেড়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শুভ্র সরকার বলেন, আধুনিক মাছ চাষের দিকে চাষিরা ঝুঁকছে, নতুন নতুন মাছ চাষি তৈরি হচ্ছে। আমরা কিছু বিল নার্সারি করেছি। আবার রেনু থেকে পোনা করে সেই পোনা বিলে অবমুক্ত করছি। এতে মাছের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন নাসিরনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ভোরের ডাক প্রতিনিধি সুজিত কুমার চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক সবুজ, দৈনিক যায়যায়দিন প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সমকাল প্রতিনিধি মুরাদ মৃধা, আজকের পত্রিকা প্রতিনিধি বরুণ সরকার, এশিয়ান টিভি প্রতিনিধি আব্দুল হান্নান।
চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রাম্য দাঙ্গা রোধে আশুগঞ্জ ও নাসিরনগর উপজেলার ২৫টি গ্রামে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন হাজার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৫ মে শুক্রবার থেকে আজ ৭ মে রবিবার সকাল পর্যন্ত চলা অভিযানে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
এদিকে, এখন থেকে কেউ দেশীয় অস্ত্র বানাতে গেলে তার নাম-ঠিকানা রেখে থানায় পাঠানোর জন্য কামারদের নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ। শনিবার কামারদের নিয়ে সভা করে এ নির্দেশনা দেয় নাসিরনগর থানা পুলিশ।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে নাসিরনগরে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কয়েক শ মানুষ আহত হন। এরমধ্যে একজন মারা গেছেন। গ্রাম্য এসব সংঘর্ষ এড়াতে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে কাতরা, সড়কি, রামদা, বল্লম, টেঁটা ও ফলা রয়েছে।
নাসিরনগর থানা পুলিশেরর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, অস্ত্র উদ্ধারের পর নতুন করে আর যেন কেউ অস্ত্র বানাতে না পারে সেজন্য কামারদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। কেউ যদি অস্ত্র বানাতে দোকানে যায়, তাহলে তার নাম-ঠিকানা থানায় পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, সংঘর্ষ এড়াতে প্রতিটি উপজেলায় এ ধরনের অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি মাদক উদ্ধারেও জেলার সীমান্তবর্তী তিন উপজেলায় অভিযান চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
শ্বশুরের আবদার মেয়ের জামাইকে আসতে হবে হেলিকপ্টারে চড়ে। যেই কথা সেই কাজ। জামাইও শ্বশুরের আবদার রাখতে এলেন হেলিকপ্টারে চড়ে।
এমন ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকূট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামে। হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করেতে আসা মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম তালুকদার একই উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের শিশু মিয়া তালুকদারের ছেলে। সৌদি আরব প্রবাসী ওই বর একজন ব্যবসায়ী।
মেয়ের বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে জামাইয়ের কাছে এমন আবদার করেন কনে রোমা আক্তারের বাবা সাবেক মেম্বার আরাফাত আলী।
এদিকে হেলিকপ্টারে বিয়ে হওয়া নবদম্পতিকে দেখতে ভিড় করেন শত শত উৎসুক জনতা। উপচেপড়া মানুষের ভিড় সামলাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
বিয়ের পর বিকালে আব্দুল হাকিম নববধূকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে গোয়ালনগর মাঠে অবতরণ করেন।
কনের বাবা আরাফাত আলী জানান, মেয়ে আমার সন্তানদের মধ্যে বড়। আমার আদরের রাজকন্যাকে নিতে হবে হেলিকপ্টারে করে, এটা আমার চাওয়া ছিল। জামাই আমার আবদার রেখেছে। এজন্য আমি অনেক খুশি। আমার মেয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
বিয়ের দাওয়াতে আসা ও চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল হক তালুকদার বলেন, বর-কনে উভয়েরই হাওর এলাকায় বসবাস। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এসব এলাকায় হেলিকপ্টার তো দূরের কথা চার চাকার গাড়িই দেখা যায় না। এজন্য মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে সৌদি প্রবাসী বর আব্দুল হাকিম জানান, মেয়ের বিয়ের দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে আমার শ্বশুরের ইচ্ছা ছিল জামাই যেন হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে আসেন। আমারও ইচ্ছা ছিল হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করব।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।