অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের ১৪ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনেছে দলটি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিভিন্ন সময়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব বহিষ্কারের কথা জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। সে কারণে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ে থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত ১৪ নেতার মধ্যে আটজনই কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ছিলেন। তারা হলেন : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ একে একরামুজ্জামান, তাঁতীবিষয়ক সহ-সম্পাদক রাবেয়া ভুঁইয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবু জাফর, শাহ শহীদ সারোয়ার, মতিউর রহমান মন্টু, খন্দকার আহসান হাবিব ও একে এম ফখরুল ইসলাম।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ৬ জন হলেন : শেরপুর জেলা বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক জায়েদুর রশিদ শ্যামল, সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবদুল্লাহ, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল আজিজ, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য মাহবুবুল হাসান, ঢাকার ধামরাই পৌর বিএনপির সভাপতি দেওয়ান নাজিম উদ্দিন মঞ্জু ও চাপাইনবাবগঞ্জের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবদুল মতিন।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি ভোট বর্জন করে আন্দোলনে আছে। তবে সরকার তাদের দাবি পাত্তা দেয়নি, ফলে ২০১৪ সালের মতোই বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের ট্রেন এগিয়ে চলছে।
এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের দিন বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের পর দিন থেকে চলছে টানা হরতাল ও অবরোধ। অক্টোবরের সেই দিন থেকে সমান্তরালে চলছে গ্রেফতার অভিযানও। ইতিমধ্যে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
চলারপথে ডেস্ক :
কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ছলে গ্রুপের চারজনকে আটক করেছে ১৬এপিবিএন। এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন, টেকনাফের আলীখালী ক্যাম্পের নূর হাসান (২৪), নয়াপাড়া নিবন্ধিত ক্যাম্পের ফয়াজুল ইসলাম ওরফে ডাক্তার (২৪), একই ক্যাম্পের নাসিমা বেগম (৪৩) ও নূর বেগম (৪৬)। ইয়াবা রাখার দায়ে নাসিমা ও নূর বেগমকে আটক করা হয়।
আজ ৯ মে মঙ্গলবার সকালে টেকনাফের লেদা, নয়াপাড়া ও আলীখালীতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এ বিষয়ে টেকনাফের ১৬-এপিবিএনের পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা বলেন, ‘ক্যাম্পে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছে এমন খবরে এপিবিএন অভিযান চালায়।
অভিযানের খবর পেয়ে পালানোর সময় নুর হাসানকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে নয়াপাড়া নিবন্ধিত ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ফয়াজুলকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকেও একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
আজমিরীগঞ্জে নদীর তীরে পরিত্যক্ত অবস্থায় কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতক কন্যা শিশুর পরিচয় গত পাঁচ দিনেও না পাওয়ায় সিলেটের ছোট মনি নিবাসে প্রেরন করেছে উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ড হয়েছে।
শিশুটির ভবিষ্যৎ সুরক্ষা বিবেচনা করে ভরনপোষণের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক এমন দম্পতির নিকট হবিগঞ্জের পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে আইনি পক্রিয়ার নতুন অভিবাবকের নিকট হস্তান্তর করা হবে বলে জানান উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা।
আজ ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন, আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও হাসপালের নার্সের মাধ্যমে এম্বুলেন্সের মাধ্যমে সিলেটের বাগবাড়ি ছোট মনি নিবাসে প্রেরন করা হয়।
এদিখে ভরনপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য দুইজন নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি জুয়েল ভৌমিকের নিকট লিখিত আবেদন করেছেন।
পরিত্যক্ত অবস্থায় নবজাতক কন্যা শিশুটিকে কুড়িয়ে পাওয়া নারী সুরুজ আলীর স্ত্রী আলফিনা বেগম বলেন, গত ১০ বছর ধরে তিনি নিঃসন্তান সোমবার বছিরা নদীর তীরে নবজাতক শিশুটিকে পরিত্যক্ত অবস্থায় কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ওই নবজাতককে আমার জিম্মায় দিয়েছিল মনে করেছিলাম আমার সন্তানের আকাঙ্খা শেষ হলো। ওইদিনই থেকে আজ পর্যন্ত শিশুটিকে পরিচর্যা করেছি। এমনি তার ভাসুরের স্ত্রী নবজাতক শিশুটিকে বুকের দুধ পানও করান। কিন্তু ওই শিশুটিকে সিলেটে নিয়ে যাচ্ছে বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি শিশুটির ভরণপোষণের দায়িত্ব দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও শিশু কল্যান বোর্ডের সভাপতি জুয়েল ভৌমিক বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া নবজাতকটি সিলেটের সোনামনি নিবাসে প্রেরন করা হয়েছে। আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার রাত সারে ৯ টায় সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আব্দুল আওয়াল মিয়ার স্ত্রী তমা (১০) আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইওসি ভবনে প্রসব ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১১টায় তিনি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন এবং নরমাল ডেলিভারীর ঘন্টাখানেক পর হাসপাতাল থেকে চলে যান।
পরদিন সোমবার ভোর সকালে উপজেলা কাকাইলছেও ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের দক্ষিণ দিখে বছিরা নদীর তীরে শিশুটির কান্না শোনে স্থানীয় নারী-পুরুষ সেখানে গিয়ে একটি নবজাতককে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখতে পান। সেখান থেকে উদ্ধার করে স্থানিয় দয়াল মিয়ার কন্যা আলফিনা বেগমের জিম্মায় দেয়া হয়।
ডেলিভারিতে থাকা এক নার্স জানান, শিশুটি জন্মের পর তাঁর স্বজনরা একবারের জন্যও কোলে নেননি। তিনি ঘন্টাখানেক কুলে নিয়ে সেবা যত্ন করেছেন। তাঁর সাথে সেলফিও তুলেছেন। তিনি আরও জানান, ওই প্রসূতির সাথে তার শাশুড়ি এবং ভাসুর পরিচয় দিয়ে একজন পুরুষ এসেছিল।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, রাতে ওই প্রসূতিকে প্রসব ব্যাথা অবস্থায় মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রয়োজনী কিছু ওষুধপত্র হাসপাতালের সামনে তারেক ফার্মেসী থেকে ক্রয় করেন উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের ঘরদাই গ্রামের ওমর আলী নামে এক ব্যাক্তি।
ওইদিন সন্ধ্যায় আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সমবায় অধিদপ্তরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী শেখ মাসুদুর রহমান নবজাতকটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের সম্ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে মানবিক পরিবেশে গড়ে তোলা হলে তারাও পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের সম্ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে মানবিক পরিবেশে গড়ে তোলা হলে তারাও পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে। সমাজের সকলকে সঙ্গে নিয়েই আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর।’
প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে এক বাণীতে একথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও আগামীকাল ১৬তম ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০২৩’ পালন করা হচ্ছে জেনে আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু, ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্য, পরিচর্যাকারী, অটিজম বিষয়ক গবেষক, চিকিৎসক, থেরাপিস্ট, সহায়ক উপকরণ উদ্ভাবকসহ সংশিশ্লষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনসমূহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘রূপান্তরের অভিযাত্রায় সবার জন্য নিউরোবান্ধব অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গঠন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
গতকাল রংপুর শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় হেফাজত ইসলামের সংগ্রামী মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেন, শহীদ আবু সাঈদের কবরের পাশে জামিয়া শহীদ আবু সাঈদ নামে কওমি মাদ্রাসা নির্মাণ করা হবে। হেফাজত ইসলামের নেতৃবৃন্দ শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের খোঁজ খবর নেন। এ সময় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজত ইসলামের অর্থ সম্পাদক মাওলানা মুফতি মনির কাসেমী ও স্থানীয় হেফাজত নেতৃবৃন্দ পরে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ রংপুর বিভাগীয় সমাবেশে যোগদান করেন এবং বক্তব্য রাখেন।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বরিশালবাসীকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে নৌকায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আবারও ক্ষমতায় আসতে পারলে বরিশালে ছয় লেনের রাস্তাসহ অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নেরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
আজ ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। যখন জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়নি। বাংলাদেশ পিছিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আসলে দেশ এগিয়ে যায়। কাজেই এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।
এ সময় নতুন ভোটারদের কাছে নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আহ্বান, যারা প্রথমবার ভোট দিতে আসবেন, নিশ্চয় চাইবেন না যে, আপনার ভোট ব্যর্থ হোক। কাজেই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’
আওয়ামী লীগ যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করে, তখন বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রেললাইন কেটে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ মরার ফাঁদ পাতে। মা আর সন্তানকে একসাথে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। এই দৃশ্য বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। গাড়িতে আগুন দেয়। ২০০১ সালের অগ্নিন্ত্রাস শুরু করেছিল। এরপর ২০১৩, ২০১৪ সালের পর এখন আবার শুরু করেছে।
“আমি ধিক্কার জানাই, ওই বিএনপি-জামায়াতকে। বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার কোনো অধিকার বাংলাদেশে নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, ওদের রাজনীতি মানুষ পোড়ানোতে। তাদের এদেশের মানুষ চায় না। তাদের দোসর কে? যারা একাত্তরের গণহত্যা করেছে, লুটপাট করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে, মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিয়েছে। যাদের বিচার করেছি, সাজা দিয়েছি; সেই যুদ্ধাপরাধীরা হচ্ছে তাদের দোসর।”
তিনি বলেন, একদল হচ্ছে খুনি, সন্ত্রাসী, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, মানিলন্ডারিং এবং যত প্রকার অপকর্ম…এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী সেই দল। তার সাথে জুটছে যুদ্ধাপরাধী দল। এরা নির্বাচন চায় না। বানচাল করতে চায়।
নৌকায় ভোট দিলে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তরিক হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে আহ্বান, আপনারা ৭ তারিখে সকলে সকাল সকাল সবাই ভোট কেন্দ্রে যাবেন। মার্কাটা কি? নৌকা মার্কা। এই নৌকা হচ্ছে নুহ (রা.) নবীর নৌকা। মহাপ্লাবন থেকে মানুষকে রক্ষা করেছিল।
“এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়ে আজকে দারিদ্র বিমোচন হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।”
আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তিখাতে দেশকে এগিয়ে নিতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে দরে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষ জনশক্তি আমরা গড়ে তুলতে চাই। যাতে বিশ্বের সঙ্গে শিক্ষা-দীক্ষায় সব দিক থেকে আমাদের তরুণ প্রজন্ম চলতে পারে।
“ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ছেলে মেয়ে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হবে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিখবে। দক্ষ জনশক্তি হবে। আমাদের সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্ট সরকার হবে, আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট অর্থনীতি হবে, সমাজ ব্যবস্থা স্মার্ট হবে।”
দেশের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত বরিশালে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আজকে অবহেলিত বরিশাল আজ কোথায় আছে। বরিশাল কি উন্নত হয়েছে?’ এ সময় উপস্থিত জনতা দু’হাত তুলে বরিশালের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বরিশাল বিভাগে নৌবাহিনীর ঘাটি করেছি, সেনানিবাস করেছি, এলাকার উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি, সেখানে সোলার প্যানলসহ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকায় নিচ্ছি। ভবিষ্যতে বরিশালেও নিয়ে আসব যাতে আরও শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে।’
“তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল কুয়াকাটায় চলে আসবে, সেখানে স্থাপন করা হবে যাতে দক্ষিণাঞ্চলের ইন্টারনেট নির্বিঘ্ন হয়। বরিশাল ছিল অন্ধকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, এখন প্রতিটি ঘরে আলো জ্বলছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কথা দিয়েছিলাম কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না। কথা রেখেছি। আমরা দিন বদলের সনদ দিয়েছিলাম, এখন দিন বদলে গেছে।”
ভাঙা থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা এবং পায়রা পোর্ট পর্যন্ত ছয় লেনের রাস্তা তৈরি করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যেই আমাদের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই বরিশালে আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না।
এ সময় বরিশাল একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, মেরিন একাডেমি করে দিয়েছি, প্রতিটি নদীর ওপর সেতু করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, বরিশাল ছিল শষ্য ভাণ্ডার। আবারও সেই সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য খাদ্য সংরক্ষণাগার করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের ফলে দক্ষিণাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেটা মাথায় রেখে ডেল্টা প্লান ২১০০ পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা আমি করে দিয়েছি। কাজেই এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কারা পারবে? একমাত্র আওয়ামী লীগ পারবে।
এ সময় তিনি বলেন, দারিদ্রের হার ৪১ থেকে ১৮.৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র ২৫.১ ভাগ ছিল, তা ৫.৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি। ইনশাআল্লাহ এই বাংলাদেশের হতদরিদ্র থাকবে না। আমরা গৃহহীণদের ঘর করে দিচ্ছি। প্রতিটি মানুষ ঘর পাবে, জমি পাবে। কেউ গৃহহীন থাকবে না।
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির অভয়ারণ্য করেছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময় ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অন্ধকার যুগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯৬ থেকে থেকে ২০০১ সালে দেশ যত এগিয়েছিল, তারপর তার থেমে গেল। চক্রান্ত করে ২০০১ এ আমাদের হারানো হয়। এরপর যে অথ্যাচার শুরু হলো। এই বরিশাল থেকে ২৫ হাজার জনগণ আমার কোটালীপাড়া গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছিল। কেউ ঘরে থাকতে পারত না। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ হাত কাটা, পা কাটা, চোখ তোলা, হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হাড়গুড়ো করে মারা, ঘরবাড়ি দখল করা, মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা, ফাহিমা-মহিমা কতো মানুষ আত্মহত্যা করেছে। এইভাবে তাদের অত্যাচার চলেছিল।’
“২০০১ থেকে ২০০৬ ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অন্ধকার যুগ। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন না হলেও ওই বিএনপি ক্ষমতায় থেকে তাদের ভাগ্য গড়েছিল।”
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময়ে সমস্ত দেশের গ্রেনেড হামলা বোমা হামলা। এমনকি আমার ওপর পর্যন্ত গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাঁচিয়ে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আমাদের মানবঢাল করে সেদিন রক্ষা করেছিল। এই বাংলাদেশকে তারা একটা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দুর্নীতির অভ্য়ারণ্য করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী তার জনসভার শেষ দিকে বরিশাল বিভাগের নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে বরিশালবাসীর কাছে ভোট চান।