চলারপথে রিপোর্ট :
অজ্ঞাত ট্রেনে কাটা পড়ে মো. কবির আলম (৩২) নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
আজ ২ ডিসেম্বর শনিবার ভোরে শহরের শিমরাইল কান্দি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
কবির আলম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের গুজিয়াখাইল গ্রামের পশ্চিম পাড়ার আব্দুল করিমের ছেলে।
কবির আলম শহরের কাউতলী নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামের পাশে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে ফাঁড়ির (আইসি) এসআই মো. সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কবির আলম ঢাকা বঙ্গ বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। গত বৃহস্পতিবার সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসে। কবির আলম শুক্রবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল।
শনিবার ভোরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা অজ্ঞাত ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন অতিক্রম করার সময় শিমরাইল কান্দি এলাকায় কবির আলম ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি আরো বলেন, কি কারণে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েছে তা বলা যাচ্ছে না। কবির আলমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ময়নাতদন্তের পরে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করব।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা আজ ৮ জুন বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মোঃ কামরুল ইসলাম, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাখাওয়াত হোসেন, প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক মোঃ আরজু, জেলা হোটেল এন্ড রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ শাহআলম, সাংবাদিক নিয়াজ মোঃ খান বিটু, শিহাব উদ্দিন বিপু, এনজিও নেতা এস.এম শাহীন, সাংবাদিক পিযুষ কান্তি আচার্য, মোশাররফ হোসেন বেলাল, মোজাম্মেল চৌধুরী, মোঃ মনির হোসেন প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ আতিকুর রহমান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হোটেল রেস্তোরার কিচেনে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।
সভায় বক্তারা শহরের বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরায় ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা, বরফকল ও আইসক্রীম ফ্যাক্টরীগুলোতে নিয়মিত অভিযান, শহরের বিভিন্ন বাজারগুলোতে পশু জবাইয়ের জন্য স্বাস্থ্য সম্মত কসাইখানা ও গবাদি পশু জবাইয়ের আগে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার দাবি জানান।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, সু-স্বাস্থ্যের জন্যই নিরাপদ খাদ্য দরকার। তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে হোটেল রেস্তোরায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা জোরদার করা হবে। তিনি বলেন, শিশু খাদ্যের বিষয়ে সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
স্টাফ রিপোর্টার :
অষ্টগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান-২০২৩ আনন্দঘন পরিবেশে ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার বরদা রঞ্জন মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, অষ্টগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রফেসর ডঃ দেলোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন গাজীপুর জেলার জেলা ও দায়রা জজ শামীমা আফরোজ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্যেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন সিনিয়র শিক্ষক সোহরাব হোসেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অপারেশন ডেভিল হান্টের অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী খাদিজাকে (১৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার আটকের পর তাকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার এক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কিশোরী সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশন দেন। গ্রেফতারকৃত খাদিজা কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ছয়গ্রাম হাজী বাড়ির মনির হোসেনের মেয়ে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। খাদিজা তার পরিবারের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মধ্যপাড়া বর্ডার বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আফরিন ফাতেমা ওরফে জুঁইয়ের সহযোগী ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে তারুণ্য উৎসব উপলক্ষ্যে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বিকেল তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোনের শিক্ষার্থীরা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী খাদিজাকে আটক করে। পরে তাকে সদর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সদর থানা পুলিশ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনার এক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখান।
১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মীর মোহাম্মদ এমদাদুল হক তাকে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসব চলছিল। সেখানে খাদিজা আক্তার গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নজরে পড়েন। পরে খাদিজাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন তারা। খাদিজা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের চান্দি গ্রামে চান্দি যুব কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে দুইশত পরিবারের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছে যুবকরা।
আজ ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে চান্দি যুব কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ভূূঁইয়া। অনুষ্ঠানে তেল, চিনি, ছোলা বুট, ডাল, মুড়ি, শরবত, আলু ইত্যাদি বিতরণ করা হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, গরীব-দুখী মানুষ যাতে রমজানে রোজা রেখে ভালোভাবে ইফতার করতে পারেন এজন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী ইফতার সামগ্রী দেয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহপরিচারিকার কাজ থেকে তাকে নিয়ে যেতে মাকে বলেছিলো ১৪ বছর বয়সি তামান্না আক্তার। নির্যাতন করা হয়- এমন অভিযোগ তুলে তামান্না মাকে বলেছিলো, ‘তোমরা আমারে কাজ করাইয়া খাওয়াইতে চাও। আমি মইরা বুঝামু।’ তামান্না ফাঁসিতে ঝুলে মারা গেছে।
১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে তামান্নার মরদেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর মরদেহ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মৌলভীপাড়ার এক চিকিৎসক দম্পতি আনিসুল হক ও ইসরাত আহমেদের বাসা থেকে তামান্নার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তামান্না ওই দম্পতির বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতো। সে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার মো. সুমন মিয়ার বড় মেয়ে। সুমন তার স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাদুঘর এলাকায় চিকিৎসক ইসরাত জাহানের বাবা বাবুল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকেন। আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও ইসরাত আহমেদ মুন্সেফপাড়ার খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে কর্মরত।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, ইসরাত আহমেদের বাবা বাবুল মিয়া ঢাকা থেকে সুমনকে ফোন করে জানান তার মেয়ে তামান্না গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মরদেহ আছে।
এ অবস্থায় সুমন ও তার স্ত্রী মুন্নি আক্তার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দিয়ে তামান্নার মরদেহ দেখতে পান। পরে হাসপাতালের লোকজন তামান্নার মরদেহ মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
নিহতের খালু আবদুল কাদের বলেন, ‘চিকিৎসক দম্পত্তি আগে ঢাকায় থাকত। তামান্না তখন গৃহকর্মী হিসেবে তাদের সঙ্গে ঢাকায় থাকত। দুই বছর আগে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে আসে। এরপর থেকে তাদের সঙ্গে মৌলভীপাড়ার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো তামান্না। তামান্নাকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা বেতন দিতেন তাঁরা।’
সুমন মিয়া সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়ে যদি আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে তার মরদেহ নামানোর আগে আমাদের জন্য অপেক্ষা করত। কারণ ভাদুঘর থেকে মৌলভীপাড়া যেতে ১০-১৫ মিনিট সময় লাগার কথা। কিন্তু তারা মরদেহ নিজেরাই হাসপাতালে নিয়ে গেছে। গত কয়েকদিন আগেও মেয়ে জানিয়েছে তার উপর নির্যাতন করা হতো।’
মেয়ের মৃত্যুতে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন তামান্নার মা মুন্নী আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমার কোল খালি কইরা মাইয়া চইলা গেছে।’ ১০-১৫ দিন আগে মেয়ের সঙ্গে কথা বলে নির্যাতন করা হতো বলে তামান্না জানায় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মির্জা মো. সাইফ বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা নীরিক্ষা করে ওই কিশোরীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালে আনার আগে তার মৃত্য হয়েছে।
চিকিৎসক আনিসুল হক বলেন, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ সত্যটা লিখেন। তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হতো না। তার বাবা-মায়ের মতো আমরাও আপসেট। তামান্না আমাদের সন্তানকে দেখতো। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত হলে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে। তার বাবা-মা প্রথমে কিছু না বললেও এখন কেন এমন বলছেন বুঝতে পারছি না।’
তিনি জানান, ঘটনার সময় তামান্নার সঙ্গে ঘরে তাদের সন্তান ছিলো। বিকেলে দায়িত্ব পালন করে বাসায় যাওয়ার পর তার স্ত্রী তামান্নাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর তাকে অন্যান্যদের সহযোগিতায় জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুও প্রকৃত কারণ বলা যাবে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’