চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে অজ্ঞাত (২৫) এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আশুগঞ্জ রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে এই ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে ফাঁড়ির (আই.সি) এসআই সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি আশুগঞ্জ স্টেশনের কাছাকাছি পৌছলে এক অজ্ঞাত যুবক ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যায়। পরে নিহতের মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠায়। ওই যুবকের লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য পিবিআইকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে বলা হয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ॥ সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথরের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৭০০ টন পাথরের ধুলা (ডাস্ট)। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগে ছাড়পত্র মিলছে না কাস্টমসের। যে কারণে প্রায় এক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরে এই ডাস্ট বা ধুলাগুলো পড়ে আছে। কাস্টমসের গঠিত তদন্ত কমিটিও ডাস্ট উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দাবি করেছেন, এতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ জন্য তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় গত ১৩ নভেম্বর। এরপর কয়েক দফায় মোট ২৭০০ টন আমদানি করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য পাথর আমদানি করেছে। আমদানিকৃত চূর্ণপাথরগুলো প্রতি টন আমদানি হয়েছে ১৩ মার্কিন ডলারে। এগুলো বন্দর থেকে ছাড়ানোর কাজ পায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ। তবে কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতেই বাঁধে বিপত্তি। প্রথমবারের মতো আমদানি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানায় কাস্টমস। পরবর্তীতে এগুলো পরীক্ষা করে পাথরের বদলে ডাস্ট আনা হয়েছে জানিয়ে আটকে দেয়া হয়। ফলে প্রতিদিনই বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।
অভিযোগ উঠেছে- আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এজন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়। সিএন্ডএফ এর মালিক হলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.তাকজিল খলিফা কাজল।
খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিদিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম দফা আনার পর বলা হয় সব আনার পর অনুমতি দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে এ ধরণের পাথরের অনুমতি নেই। এখন পাথর আটকে থাকায় আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত করে আমদানি করা পণ্য ডাস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে। এ ধরণের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। এখন এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে মাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধা মারা যান।
নিহত মালেকা বেগম (৫৫) আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মাজন খাঁর স্ত্রী।
নিহত মালেকা বেগমের নাতনি সানজিদা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তার মামা শাহিন মিয়া ও তার স্ত্রী জান্নাত এবং বড় মামি সেফালি ও মামাতো ভাই ইয়াসিন মালেকা বেগমকে মারধর করেন। তারা মালেকাকে মারধর করে প্রায়ই ৪ ঘণ্টা ঘরে ফেলে রাখে। এ সময় তার মেজো মামা তার নানিকে অজ্ঞান অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে ভর্তি করলে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বলেন, ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে মালেকা বেগমের প্রায়ই ঝগড়া হত। দুপুরে মালেকা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ৬২ কেজি গাঁজাসহ মোঃ জামিল হোসেন (২৬) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোলপ্লাজা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জামিল হোসেন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের ছেলে। এ সময় গাঁজা বহনকারী একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। শনিবার দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে পুলিশ মিডিয়া উইংস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল ৯টার দিকে আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেটকার আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকার তল্লাসী করে ৬২ কেজি গাঁজা উদ্ধারসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে মেয়াদোর্ত্তীর্ণ ওষুধ সেবনে আয়েশা মনি (০৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আয়েশা উপজেলার দূর্গাপুরের চাতাল শ্রমিক মোঃ খোকন মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হলে আজ ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে আশুগঞ্জ পূর্ব বাজারের আল আমিন মেডিক্যাল সেন্টারের স্বত্বাধিকারী পল্লী চিকিৎসক মো. মোস্তাকিম বিল্লাহকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি সরাইল উপজেলার টিঘর গ্রামের মোতাসিম বিল্লাহর ছেলে।
এরআগে সোমবার রাতে নিহত শিশু আয়েশার পিতা খোকন মিয়া বাদী হয়ে আল আমিন মেডিক্যাল সেন্টারের স্বত্বাধিকারী পল্লী চিকিৎসক মোঃ মোস্তাকিম বিল্লাহকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত সোমবার রাতে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি তাকে আশুগঞ্জ পূর্ব বাজারে অবস্থিত আল আমিন মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যান। এসময় ফার্মেসীর স্বত্বাধিকারী পল্লী চিকিৎসক মোঃ মোস্তাকিম বিল্লাহ শিশুটির শরীর দুর্বল এবং পেটে কৃমি হয়েছে জানিয়ে তাকে একটি ১শ মিলি ভিনসিনা সিরাপ (১ চামচ করে দিনে ৩ বার), একটি ১শ মিলি আপেলিন সিরাপ (১ চামচ করে দিনে ২ বার) ও একটি ১০ মিলি বেন-এ সিরাপ (১ চামচ ৭ দিন পরপর) খাওয়ার জন্য ঔষধের প্যাকেটের গায়ে নির্দেশনা লিখে দেন।
উক্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী শিশু আয়েশাকে ওষুধ খাওয়ানোর পর সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ফার্মেসী থেকে নেয়া ওষুধগুলো দেখে ১শ মিলি আপেলিন সিরাপটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে বলে শিশুটির পরিবারকে জানান।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, নিহত শিশুর পিতা থানায় অভিযোগ দাখিল করলে প্যানেল কোড ১৮৬০ এর ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। পরে নিহত শিশুর লাশ ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় এবং অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক মোঃ মোস্তাকিম বিল্লাহকে গ্রেফতার করা করা হয়।
তবে আশুগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নুপুর সাহা বলেন, নিহত শিশুকে সেবন করানো ১শ মিলি আপেলিন সিরাপটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও মৃত্যুর অন্য কারণও থাকতে পারে। শিশুটিকে সেবন করানো ওষুধগুলো জব্দ করে পরীক্ষার জন্য ঔষধ প্রশাসনের নিকট পাঠাতে পুলিশকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট ও ওষুধগুলোর পরীক্ষার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।