ফেসবুকে ট্যুর প্যাকেজ, বুকিং মানির নামে আত্মসাৎ

জাতীয়, 5 December 2023, 812 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইন্টেরিয়র আর্কিটেক্টের কাজ করেন নাহিদ হাজারিকা ইতি। পাশাপাশি নিয়মিত দেশে-বিদেশে ভ্রমণে আগ্রহ তার। ট্রিপকার্ট (Tripkart) নামের ফেসবুক ট্রাভেল এজেন্সির পেজে একটি অফার দেখতে পান তিনি। এজেন্সিটি মাত্র এক লাখ টাকায় দুবাই বা কাতারে ভ্রমণের সুযোগ উল্লেখ করে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দেয়। ট্রিপকার্টের এমন বিজ্ঞাপন দেখে নাহিদ হাজারিকা ইতি নামের এক নারী দুই জনের জন্য বুকিং মানির অগ্রিম এক লাখ টাকা জমা দেন। এরপর থেকে এজেন্সিটি তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

banner

প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে বনানী থানায় মামলা করেন ইতি। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। তদন্তে নেমে পর্যটকদের বিশ্বাসকে পুঁজি করে প্রতারণায় জড়িত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি।

গ্রেফতাররা হলেন চক্রের মূলহোতা সাইফুল আলম ওরফে অপু, আহাদ আলম ওরফে তালহা ও মো. আমিনুল ইসলাম।

ডিবি বলছে, চক্রটি সীমিত খরচে ট্যুর প্যাকেজ বিক্রির নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। গত এক বছরে চক্রের হাতে দুইশর বেশি মানুষ প্রতারিত হয়েছে। অপু ও তার চক্রের সদস্যরা গ্রেফতারের খবরে বহু ভুক্তভোগী গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে ভিড় করেন।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, ১৪টি পাসপোর্ট, ১০টি মোবাইল ফোন, ১৫টি সিমকার্ড, দুটি ল্যান্ডফোন, একটি ওয়াকিটকি সেট, একটি সিপিইউ ডেক্সটপ, পাঁচটি এটিএম কার্ড ও ছয়টি ব্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়।

আজ ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ‘ট্রিপকার্ড’র নামের কথিত এই ট্যুর অপারেটর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পেজে বিজ্ঞাপন দিত। তারা বিভিন্ন প্যাকেজের আওতায় দিন ও রাত থাকা, হোটেলে বুকিং, এয়ারপোর্ট পিকআপ, ড্রপআপ, গাইডের মাধ্যমে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের ট্যুর প্যাকেজ ঘোষণা করতো। একসঙ্গে ৪০ জনের ভিসা ও বিমানের টিকিট কাটাসহ সব দায়িত্ব নিজেরাই পালন করার আশ্বাস দিতো। এছাড়া প্যাকেজে আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ঘোষণাও থাকতো। এত কম টাকায় এমন অফার পেয়ে সাধারণ মানুষ তাদের ফাঁদে পা দিতো।

সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য রাজধানীর গুলশান, বারিধারা, ধানমন্ডিসহ অভিজাত এলাকায় অফিস নিয়ে প্রতারণা করতো চক্রটি। এক এলাকায় অফিস খুলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিত তারা। এরপর দুই মাস আত্মগোপনে থেকে ভিন্ন নামে অন্য এলাকায় একই কাজ করতো। গ্রেফতার সাইফুল আলম ওরফে অপুর নেতৃত্বে চক্রটি গত ছয় মাসে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ৫৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ‘ট্রিপকার্ড’র নামের ওয়েবসাইটের ড্যাশবোর্ডের তথ্যে গত ছয় মাসে শতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণার তথ্য পেয়েছে।

রাজধানীর গুলশান এলাকার বাসিন্দা জুই আক্তার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। সম্প্রতি ভ্রমণের উদ্দেশে মালদ্বীপের যাওয়ার জন্য ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান ‘ট্রিপকার্ড’র ফেসুবকের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম খরচে আকর্ষণীয় প্যাকেজ দেখে আকৃষ্ট হন জুই। এরপর ভিসা ও অন্যান্য খরচের জন্য অগ্রিম ৫৫ হাজার দেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার কিছুদিন পর দেখতে পান ‘ট্রিপকার্ড’র অফিস বন্ধ। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তারা অফিস ছেড়ে চলে গেছেন। নানাভাবে চেষ্টা করেও আর যোগাযোগ করতে পারেননি। পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার আশায় টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হন জুই। একইভাবে দীর্ঘদিন ধরে চক্রটির প্রতারণার শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ।

যেভাবে প্রতারণার শুরু
ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সাইফুল আলম ওরফে অপুর কথিত এই ‘ট্রিপকার্ড’ নামের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ট্যুর প্যাকেজ দিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। ট্যুরে যাওয়ার জন্য ওয়েবসাইটের নির্ধারিত টাকার পরিমাণের ৪০ শতাংশ অগ্রিম জমা দিয়ে বুকিং নিতে হতো। বুকিং মানি প্রতারকরা নির্ধারিত ব্যাংক অ্যকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করতো। পরে বিভিন্ন দেশের ট্যুর প্রসেসিংয়ের জন্য অফিসে ডেকে ট্যুর প্যাকেজের সম্পূর্ণ টাকা নিতো।

এভাবে কয়েকশো মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে অফিস পরিবর্তন করে ফেলত তারা। পরে দুই মাস নিজেরা আত্মগোপন থাকত। এরপর আবার অন্য নামে ফেসবুকে পেজ ও ওয়েবসাইট তৈরি করে আবারও প্রতারণা করত। বুকিং মানির সম্পূর্ণ টাকাই প্রতারক চক্র আত্মসাৎ করতো।

এ ধরনের চক্রের হাত থেকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, যে কোনো ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজের পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। আকর্ষণীয় ও কম মূল্যের বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ না হয়ে, বৈধ লাইসেন্সধারী ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে সেবা নিতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির মাধ্যমে এ ধরনের প্রতারণার শিকার হলে থানায় মামলা বা অভিযোগ দিতে হবে। এছাড়া নিজের পাসপোর্ট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

Leave a Reply

কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ

চলারপথে রিপোর্ট : ফেনীর পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার সীমান্ত এলাকা Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীজ, সার ও গাছের চারা…

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সরাইল Read more

ইখলাস মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়

আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান : ইখলাস মানুষের দিলে সৃষ্টি হয়। আর Read more

প্রাথমিক তদন্তেই ভুয়া মামলার আসামিরা রেহাই…

অনলাইন ডেস্ক : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির একটি সংশোধন Read more

গাজীপুরে শফিক, তারিক, পাপনের ১০ তলা…

জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর : গাজীপুর সদরের চান্দনা Read more

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা পরিষদ…

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার পাথরঘাটায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা Read more

ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি…

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি Read more

কৃষি বীজ সংরক্ষণাগার ভেঙে দোকান নির্মাণের…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের দেলি Read more

মিথ্যা মামলা করলে কী কী শাস্তি?

অনলাইন ডেস্ক : দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো মিথ্যা মামলা। Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বহিস্কার

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা Read more

আখাউড়ায় অবৈধ চায়না রিং জাল ধ্বংস

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিতাস নদীতে অভিযান পরিচালনা Read more

রেলপথে মাদক পাচার প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের…

চলারপথে রিপোর্ট : মাদক চোরাচালান, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ দমন Read more

সেতুর জায়গায় অবৈধ দোকানপাট

জাতীয়, বাঞ্চারামপুর, 29 April 2023, 2478 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
তিতাস নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা ওয়াই সেতুর কোটি টাকার জমি দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। আরো দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় সেতুর জায়গা দখলমুক্ত করতে ইউএনওর কাছে আবেদন করেছেন হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আহসান উল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ী। গত ১৫ মার্চ আবেদন করলেও রহস্যজনক কারণে বন্ধ হচ্ছে না দোকান নির্মাণের কাজ।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর ও কুমিল্লার হোমনা উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ রক্ষা করতে নির্মাণ করা হয় শেখ হাসিনা ওয়াই সেতু। এই সেতুর নিচের এলজিইডির জায়গায় দোকানঘর তুলে দখল করে নিয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি। কয়েকজন ব্যক্তি দোকানঘর নির্মাণ করে দখল কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বাধা দিতে গেলে উল্টো হুমকি-ধমকি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখানোর ঘটনা ঘটছে। সেতুর পিলার ঘেঁষে দোকানপাট নির্মাণ করার কারণে বহু বছরের পুরোনো রামকৃষ্ণপুর বাজারে যাওয়ার রাস্তা বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন কি, মানুষের চলাচলের রাস্তাও বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুর নিচে সরকারি জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছে ১২-১৫ জন। পিলার ঘেঁষে এসব দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, দোকান নির্মাণে ভূমি অফিস থেকে বাধা দেওয়া হলেও মানছে না কেউ।

অভিযোগদাতা আহসান উল্লাহ বলেন, ‘রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ আলম এলজিইডির জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। এতে আমার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, হাঁস-মুরগি ও গরুবাজারের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমি বাদী হয়ে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছি। ভূমি অফিস থেকে বাধা দিলেও মানছেন না শাহ আলম গংরা।’

জানা গেছে, ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের একমাত্র ওয়াই আকৃতির শেখ হাসিনা তিতাস সেতুটি ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়। আগে সেতুটি দেখার জন্য আসতেন দর্শনার্থীরা। কিন্তু সেতুর জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করায় সৌন্দর্য ফিকে হয়ে গেছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবারের ঈদের সময় সেতু এলাকায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।

স্থানীয়দের জোর দাবি, ভূমিখেকোদের কবল থেকে জমি উদ্ধার করে রামকৃষ্ণপুর বাজার রক্ষা ও সেতুর সৌন্দর্য ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

রামকৃষ্ণপুর বাজারের ইজারাদার সফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, সেতুটি নির্মাণের পরে বাঞ্ছারামপুর, হোমনা ও মুরাদনগরে যাতায়াতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টিকে পুঁজি করে সেতুর জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করছেন রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ আলম। এ কারণে আমি ইজারা নিয়েও গরুবাজার বসাতে জায়গা পারছি না। অবৈধ দখল বন্ধ না হলে সেতুর দুই পাশের আরও জায়গা বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে শাহ আলম বলেন, ‘শুধু আমি না, অনেকেই দোকানঘর নির্মাণ করে দখল করছেন। তাদের দেখে আমিও দোকানঘর নির্মাণ করেছি। সরকারের প্রয়োজন হলে জায়গা ছেড়ে দেব।’

চান্দেরচর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) আমান উল্লাহ জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে সরকারি জমি দখলকারী শাহ আলমকে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু বাধা অমান্য করে দোকানঘর নির্মাণ করছে।

হোমনা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, সেতুর জায়গা অধিগ্রহণ করেছে এলজিইডি বিভাগ। জমির মূল্যও পরিশোধ করা হয়েছে। এ জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইউসুফ হাসান জানান, অভিযোগ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে নিষেধ করা হয়েছে। সমস্ত স্থাপনার তালিকা করে উচ্ছেদ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমার দাবি, অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জমিটি এলজিইডি বিভাগের হওয়ায় সরাসরি ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছে। দখল বন্ধ না হলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ওয়াই সেতুর নিচের বাঞ্ছারামপুর অংশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হোমনা অংশে অবৈধ দখলদার থাকলে তা দ্রুত অপসারণ করার জন্য হোমনা উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হবে।

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে তরুণীর অনশন

জাতীয়, সারাদেশ, 17 June 2025, 224 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক তরুণী। ১৬ জুন সোমবার সকাল থেকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার হাপানিয়া গ্রামে অনশন করছেন তিনি। ওই তরুণী জানান, ওই গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী জলিল হাওলাদারের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জলিল ২০২৩ সালে সৌদি আরবে যাওয়ার পর, ওই বছরের ১২ জানুয়ারি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার একটি কাজী অফিসে পাঁচ লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে হয়।

banner

সাম্প্রতি জলিল দেশে ফিরে অন্যত্র বিয়ের উদ্যোগ নেন। বিষয়টি জানতে পেরে নিজের স্বামীর স্বীকৃতি ও অধিকার আদায়ে অনশন শুরু করেন তিনি। এর আগে জলিল আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন ওই তরুণী।

গৌরনদী মডেল থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে কোনো আবেদন আসেনি : আইনমন্ত্রী

আখাউড়া, জাতীয়, 23 September 2023, 1791 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে এখনও কোনো কাগজপত্র আসেনি। এজন্য তাদেরকে (বিএনপি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইতে পারে।

banner

তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়া কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পরেও উনার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে এভার কেয়ার হাসতালে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন এটা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায়। সেক্ষেত্রে তারা (বিএনপি) আবেদন করার পরে সেটা দেখা যাবে।

বিএনপির হরতাল অবরোধ কর্মসূচির হুমকি প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যদি আইন ভঙ্গ করে তাহলে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

আজ ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে সকাল পৌনে এগারটায় ঢাকা থেকে আন্ত:নগর মহানগর প্রভাতী ট্রেনে তিনি আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে এসে পৌঁছেন। এসময় দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান। পরে তিনি সড়ক পথে নিজ এলাকা কসবা উপজেলার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

নিজের নয়, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 1 July 2023, 1010 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি, মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণ। তারা অপবাদ দিয়েছিল তার প্রতিবাদ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। সেই শক্তিটা কিন্তু আপনারাই যুগিয়েছেন।

banner

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আজ ১ জুলাই শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটালীপাড়াবাসী আপনারা আমার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। আমার নির্বাচন, আমার সবকিছুই আপনারাই দেখেন। টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষই হলো আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।

দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কোটালীপাড়ায় নৌকায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন- শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা আমাদের লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে আমরা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। জাতিসংঘের প্রতিনিধি আন্ডার সেক্রেটারি দেশে আসছেন। অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরাও আসছেন। আমরা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের কিছু লোক তো আছেই, যারা বাংলাদেশের কোনো ভালোই চোখে দেখে না। চোখ থাকতে যারা অন্ধ, তাদের বিরুদ্ধে কিছুই বলার নেই। ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি। কাজেই এসব কিছু এখন আর বলার নেই। কিন্তু এটাই বলব, তারা দেখে না, কিন্তু ভোগ করে।

তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন। অনলাইনে সবাই সারাদিন কথা বলে। এতগুলো টেলিভিশন দিয়ে দিয়েছি। তারপরও তারা বলে তাদের কথা বলার অধিকার নেই!

প্রধানমন্ত্রী কৃষির প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, আমাদের ফসল আমাদের ফলাতে হবে। আমাদের খাদ্যের চাহিদা আমরা পূরণ করব। যা উদ্বৃত্ত থাকবে তা অন্যকে দিতে পারব। আমরা খাদ্য সংরক্ষণের ও ব্যবস্থা করছি। এলাকায় এলাকায় সে ব্যবস্থা নেব। শুধু এটুকুই বলব, কোথাও যেন কোনো অনাবাদী জমি না থাকে। আষাঢ় মাসে বৃষ্টির মধ্যে আমরা বৃক্ষরোপণ শুরু করেছি। এটা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি। সবাইকে আহ্বান করেছি, অন্তত ৩টি করে গাছ লাগান। এরমধ্যে একটি ফলদ, একটি বনজ ও একটি ভেষজ গাছ লাগাতে হবে। এগুলো করেই আমরা লাভবান হব। এক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা দেব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তারই স্বপ্ন পূরণ করে ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমাদের লক্ষ্য। দেশে হতদরিদ্র মাত্র ৫%। সেটাও যেন না থাকে সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। একটাও হৃতদরিদ্র থাকবে না। প্রত্যেকের একটি ঘর, একটু জমি ও জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা ইনশাআল্লাহ করতে পারব। আর আমরা সেটাই চাই।

তিনি বলেন, বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ দিচ্ছি, শিক্ষার ব্যবস্থা করছি, স্কুলগুলোকে নতুনভাবে তৈরি করে দিচ্ছি, পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছি ও বৃত্তি দিচ্ছি। আড়াই কোটি শিক্ষার্থীদের আমরা বৃত্তি দেই। এভাবে আমরা প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষকে এমনকি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কাজের মধ্য দিয়ে আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। আল্লাহর কাছে এটাই শুধু দোয়া করবেন। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবাই যার যার ধর্মীয় রীতিতে সৃষ্টিকর্তার কাছে কামনা করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে এ বাংলাদেশ সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলবে। সেটাই আমরা চাই। জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারব, সেটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেনসহ কোটালীপাড়ার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গনসংগঠনের নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের বক্তব্য মনযোগ দিয়ে শোনেন। প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন ও ভবনের সামনে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন।

পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সড়কপথে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান তিনি।

কোটালীপাড়ায় পৌঁছানোর পর নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ও বিভিন্ন শ্লোগান দেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। দুপুর সোয়া ১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেন।

টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া এবং বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।

বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 18 March 2024, 671 Views,
সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে।’

banner

আজ ১৮ মার্চ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ। আমরা ইফতার পার্টি করব না, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেব। বিএনপি শুধু ইফতার পার্টি খায় আর আওয়ামী লীগ শুধু খাওয়ায়। সারা বাংলাদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিলি করছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ইফতার পার্টিতে গিয়ে আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়। নিজেরা ইফতার খায়, আওয়ামী লীগের গিবত গায়। আর কবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করবে সেই স্বপ্ন দেখে।’