প্রকৃত সাংবাদিকরাই শুধু কার্ড পাবেন : ইসি মো. আলমগীর

জাতীয়, 6 December 2023, 772 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, যারা প্রকৃত সাংবাদিক তারাই শুধু কার্ড (পর্যবেক্ষক কার্ড) পাবেন। প্রকৃত সাংবাদিকের সংজ্ঞা কী তা আপনারা জানেন। সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। আজ ৬ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক মতবিনমিয় সভার পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

banner

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে কোনো অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের রুমে গিয়ে পরিচয় দেবেন এবং সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে আপনার কার্ড দেখাবেন। আপনি ভোটকেন্দ্রে লাইভ, রেকর্ড ও সাক্ষাৎকার নিতে চাইলে লাইনে থাকা অবস্থায় করতে হবে। এছাড়া কক্ষের ভেতরে ঢুকতে পারবেন, ছবি তুলতে পারবেন তবে বক্তব্য নিতে পারবেন না, লাইভ করতে পারবেন না। এক রুমে ১০ মিনিটের বেশি থাকা যাবে না।

ইসি আলমগীর বলেন, বিদেশিরা নির্বাচন কমিশনে এসে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন। আমরা সবসময় বলে আসছি তারা (বিদেশিরা) আমাদের ওপর কোনো চাপ দেননি। এছাড়া চাপ দেওয়ার অধিকারও তাদের নেই।

সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জামালপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় জামালপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান, পুলিশ সুপার কামরুজ্জামানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

ইখলাস মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়

আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান : ইখলাস মানুষের দিলে সৃষ্টি হয়। আর Read more

প্রাথমিক তদন্তেই ভুয়া মামলার আসামিরা রেহাই…

অনলাইন ডেস্ক : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির একটি সংশোধন Read more

গাজীপুরে শফিক, তারিক, পাপনের ১০ তলা…

জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর : গাজীপুর সদরের চান্দনা Read more

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা পরিষদ…

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার পাথরঘাটায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা Read more

ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি…

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি Read more

কৃষি বীজ সংরক্ষণাগার ভেঙে দোকান নির্মাণের…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের দেলি Read more

মিথ্যা মামলা করলে কী কী শাস্তি?

অনলাইন ডেস্ক : দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো মিথ্যা মামলা। Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বহিস্কার

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা Read more

আখাউড়ায় অবৈধ চায়না রিং জাল ধ্বংস

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিতাস নদীতে অভিযান পরিচালনা Read more

রেলপথে মাদক পাচার প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের…

চলারপথে রিপোর্ট : মাদক চোরাচালান, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ দমন Read more

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা করলে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে

জাতীয়, 10 September 2023, 1081 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় সংসদে উত্থাপিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করে সাজার বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দিলে আদালত তা আমলে নেবেন।

banner

এই বিধান যুক্ত করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এই আইনটির রিপোর্ট সংসদে উত্থাপন করেছে।

আজ ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার সাইবার নিরাপত্তা বিল–২০২৩ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণায় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।

এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার কয়েকটি সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব সুপারিশ চূড়ান্ত করে কমিটি। এছাড়া বিলের ৩২ নম্বর ধারা বাদ দেওয়াসহ কয়েকটি ধারায় শব্দগত পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিলে নতুন একটি ধারা যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়, যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের অন্য কোনো ধারার অধীন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ না জেনেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহলে তা হবে একটি অপরাধ। এই অপরাধে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ব্যক্তি মূল অপরাধটির জন্য যে দণ্ড নির্ধারিত রয়েছে সে দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যদি এই আইনের একাধিক ধারায় কোনো মামলা বা অভিযোগ করেন, তাহলে ওই ধারায় বর্ণিত অপরাধগুলোর মধ্যে মূল অপরাধের জন্য যার দণ্ডের পরিমাণ বেশি হয় সেটাই দণ্ডের পরিমাণ হিসাবে নির্ধারণ করা যাবে।

এ বিলে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল এই অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও মামলার বিচার করতে পারবেন।

বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে এই সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে। ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সাইবার নিরাপত্তা বিল সংসদে উপস্থাপন করা হয়। এরপর বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এছাড়া বিলের ২১ ধারায় শব্দগত পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রপাগান্ডা ও প্রচারণা সংক্রান্ত অপরাধের কথা বলা আছে। এখানে ‘পতাকার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রপাগান্ডা বা’ এর স্থলে ‘পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা হবে। বিলের ৩২ ধারা বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ধারায় অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট যুক্ত করা হয়েছিল। ডিজিটাল মাধ্যমে কেউ অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যক্টভুক্ত অপরাধ করলে তার সাজার বিধান করতে এটি যুক্ত করা হয়েছিল। বিলের ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া আছে পুলিশকে। এখানে সংশোধনী এনে বলা হচ্ছে, এই ধারায় সাবইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তার জায়গায় পুলিশ পরিদর্শক পর্যায়ের কর্মকর্তা বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতার করতে পারবেন।

উপস্থাপিত বিলের ৮ ধারায়ও সংশোধনী আনা হচ্ছে। ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য–উপাত্ত অপসারণ ও ব্লক করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এই ধারায়। এখানে আগে বলা ছিল যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘প্রতীয়মান’ হয় ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত দেশের বা উহার কোনো অংশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করে বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার সঞ্চার করে, তা হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করার জন্য, মহাপরিচালকের মাধ্যমে, বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবে। এখানে প্রতীয়মান শব্দের জায়গায় ‘তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ সাপেক্ষে, বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে’ প্রতিস্থাপন করা হবে।

টিকিট কালোবাজারিতে সহজ ডটকম ও রেলের কর্মচারীদের সিন্ডিকেট

জাতীয়, 26 January 2024, 758 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ট্রেনের টিকিট কাটার ক্ষেত্রে নানা কড়াকড়ি ও তদারকির পরও থেমে নেই কালোবাজারি। এই কালোবাজারির কারণে সাধারণ ক্রেতারা সহজে টিকিট পান না বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

banner

আদতে টিকিট কাটার পুরো প্রক্রিয়া রক্ষণাবেক্ষণে যারা দায়িত্বরত, তারাই জড়িত এই কালোবাজারির সিন্ডিকেটে।

এই চক্রটি বিভিন্ন কারসাজি করে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে স্বাভাবিক সময়ে দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে থাকে। আর ঈদের ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটিকে কেন্দ্র করে টিকিটপ্রতি দাম বেড়ে যায় ৩-৪ গুণ পর্যন্ত।

বাড়তি এই লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ পায় সরাসরি সিন্ডিকেটে জড়িত সদস্যরা। আর বাকি ৫০ শতাংশ চলে যায় কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আইটি বিশেষজ্ঞদের হাতে। যাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় শুধু দুটি সিন্ডিকেটের হাতেই প্রতিদিন চলে যাচ্ছে প্রায় ৫০০ টিকিট।

দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ১৪ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব। আজ ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক হাজার ২৪৪টি আসনের টিকিট, ১৪টি মোবাইল ফোন এবং টিকিট বিক্রির নগদ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সেলিম (৫০), আনোয়ার হোসেন ওরফে কাশেম (৬২), অবনী সরকার সুমন (৩৫), হারুন মিয়া (৬০), মান্নান (৫০), আনোয়ার হোসেন ওরফে ডাবলু (৫০), ফারুক (৬২), শহীদুল ইসলাম বাবু (২২), জুয়েল (২৩), আব্দুর রহিম (৩২), উত্তম চন্দ্র দাস (৩০), মোর্শিদ মিয়া ওরফে জাকির (৪৫), আব্দুল আলী (২২) ও জোবায়ের (২৫)।

এদের মধ্যে সেলিম ও উত্তম চন্দ্র দাস ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির দুই হোতা, যাদের নিজেদের নামে ‘সেলিম সিন্ডিকেট’ ও ‘উত্তম সিন্ডিকেট’ পরিচিত।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কমলাপুর রেলস্টেশনে সেলিম এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনে উত্তমের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে মহানগর প্রভাতী, তূর্ণা নিশিথা, চট্টলা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।

সেলিম ও উত্তমের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা উপযুক্ত সময় বুঝে সংগ্রহকৃত টিকিট নিয়ে রেলস্টেশনের ভেতরে অবস্থান করতেন। রেলস্টেশনে এসে টিকিট না পাওয়া সাধারণ যাত্রীদের কাছে তারা টিকিট বিক্রির জন্য ঘোরাঘুরি করতেন এবং অধিক মূল্যে টিকিট বিক্রি করতেন।

এছাড়া ট্রেন ছাড়ার সময় যতো ঘনিয়ে আসতো তাদের মজুদকৃত কালোবাজারি টিকিটের দাম তত বাড়তো। সুযোগ বুঝে অনেক ক্ষেত্রে টিকিটের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে দিতেন তারা।

ঈদসহ বিভিন্ন উপলক্ষে ছুটিকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তাররা প্রতিটি টিকিট ৩-৪ গুণ বেশি মূল্যে বিক্রি করতেন। সাধারণত প্রতিটি টিকিট তারা দেড় গুণ থেকে দুই গুণ বেশি দামে বিক্রি করতেন। এই লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ গ্রেপ্তাররা নিতেন এবং বাকি ৫০ শতাংশ কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আইটি বিশেষজ্ঞদের দেওয়া হতো।

গ্রেফতার উত্তম ও সেলিম সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন যাবত টিকিট কালোবাজারির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

যেভাবে টিকিট যেতো সিন্ডিকেটের হাতে
র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার সেলিম এবং উত্তমের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা প্রথমত ট্রেনের কাউন্টারে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, স্টেশনের আশেপাশের এলাকার টোকাই, রিকশাচালক ও দিনমজুরদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতেন। যেহেতু প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে চারটি টিকিট দেওয়া হয়। এই ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে চারটি করে টিকিট সংগ্রহ করার বিনিময়ে ১০০ টাকা করে দেওয়া হতো।

এছাড়া, কাউন্টারে থাকা কিছু অসাধু টিকিট বুকিং কর্মচারীর যোগসাজশে তারা বিভিন্ন সাধারণ যাত্রীর টিকিট কাটার সময় দেওয়া এনআইডি সংগ্রহ করে রাখতেন। পরে সেগুলো ব্যবহার করে সংরক্ষণকৃত প্রতিটি এনআইডি দিয়ে চারটি করে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতেন। এভাবে তারা প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক টিকিট সংগ্রহ করতেন।

অনেক ক্ষেত্রে টিকিট কাউন্টারে নিজেরা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতেন চক্রের সদস্যরা। আবার অনেক সময় কৌশলে লাইনে অপেক্ষমাণ টিকিটপ্রত্যাশী সাধারণ যাত্রীদের এনআইডি ব্যবহার করে চারটি টিকিট ক্রয় করিয়ে তিনটি টিকিট নিজেরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনে নিতেন।

এছাড়া, ঈদ, পুজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে গ্রেফতারকৃতরা রেলস্টেশনে কর্মরত কিছু অসাধু কর্মচারী এবং অনলাইনে টিকিট ক্রয়ের জন্য ব্যবহৃত ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সার্ভার রুম বা আইটির সদস্যদের সহযোগিতায় তাদের কাছে সংরক্ষিত জনসাধারণের এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে এমনকি সার্ভার ডাউন করে তারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতেন।

পাশাপাশি চক্রটি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দিয়ে অনলাইনে টিকিট কেটে সেগুলো তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতো। এমনকি স্টেশনে থাকা তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে কাউন্টার থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিটও সংগ্রহ করতো। সেসব টিকিটের মূল্য কাউন্টারের বুকিং কর্মচারীদের সঙ্গে তারা ভাগ করে নিতো।

এভাবে গ্রেফতারকৃতরা অবৈধভাবে বিভিন্ন পন্থায় বিপুল সংখ্যক ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতেন। যার ফলে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি রেলওয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

র‌্যাব বলছে, গ্রেফতার সেলিম দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর ধরে টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় টিকিট কালোবাজারির দায়ে ৭টি মামলা রয়েছে এবং এসব মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন। তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত হন।

গ্রেফতার আনোয়ার হোসেন ওরফে কাশেম প্রায় ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তিনি সেলিমের অন্যতম প্রধান সহযোগী। মূলত তার দায়িত্ব ছিল কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করা।

গ্রেফতার উত্তম প্রায় ১৫ বছর ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তার সহযোগী গ্রেফতার আলী ও ফারুকসহ রাজধানীর আশকোনা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং এই বিষয়টি কাজে লাগিয়ে রেলস্টেশন এলাকায় সব সময় অবস্থান করে টিকিট কালোবাজারি চক্র গড়ে তোলেন।

গ্রেফতার বাকিরা দেশের বিভিন্ন রুট সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন, যার ফলে তারা সেসব রুটের যাত্রীদের ম্যানেজ করে টিকিট বিক্রি করতেন।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা এই কালোবাজারির বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি, যারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত এমন কিছু নামও পেয়েছি। তাদের বিষয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবো। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাউন্টারম্যান, সহজ ডটকমের কর্মচারীসহ বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এমনকি স্টেশনে যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত এমন কয়েকজনেরও এই সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুবকদের ভূমিকা শীর্ষক জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান

জাতীয়, 19 October 2023, 889 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ রোধ এবং মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুবকদের ভূমিকা শীর্ষক জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়। আজ ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের হলরুমে এ জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

banner

হবিগঞ্জ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক একেএম আবদুল্লাহ ভূঞার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, হবিগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাজেদুল হাসান, হবিগঞ্জ যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রর ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাহবুবুল আলম।

সভায় বক্তরা মাদক কি, মাদকের কুফল, মাদকাসক্তের কারণ, মাদক নিয়ন্ত্রনে সরকারের উদ্যোগ, মাদক নিয়ন্ত্রনে সরকারের আইন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও জঙ্গিবাদ কি, জঙ্গিবাদের কারণ, জঙ্গিবাদের উত্থান, জঙ্গিবাদের কুফল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। যুব উন্নয়নের বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণার্থীসহ যুব উদ্যোগতারা উপস্থিত ছিলেন।

শাপলা চত্বরে গণহত্যা : শেখ হাসিনা-ইমরান এইচ সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

জাতীয়, 12 March 2025, 198 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আজ ১২ মার্চ বুধবার এ আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

banner

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম‌হিউদ্দিন খান আলমগীর, গণজাগরন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার ও বেন‌জির আহমদ।

এ ছাড়া অন্য মামলায় কারাগারে থাকায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড

জাতীয়, 18 June 2025, 136 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ-২০২৫ জারি করেছে সরকার।

banner

অধ্যাদেশ অনুযায়ী মিথ্যা, বিকৃত ও তথ্য গোপন করে চিকিৎসা, আর্থিক ও পুনর্বাসন সুবিধা দাবি বা গ্রহণ করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এরূপ কর্মকাণ্ড করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে।

১৭ জুন মঙ্গলবার এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়, কোনও ব্যক্তি ‘শহীদ’ পরিবারের সদস্য বা যেকোনও শ্রেণির আহত না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বা জ্ঞাতসারে মিথ্যা, বিকৃত তথ্য প্রদান, তথ্য গোপন ও বিভ্রান্তিকর কাগজ দাখিল করে নিজেকে ‘শহীদ’ পরিবারের সদস্য বা আহত দাবি করে চিকিৎসা, আর্থিক, পুনর্বাসন সুবিধা দাবি অথবা গ্রহণ করে তাহলে তিনি এই অধ্যাদেশের অধীন অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোনও ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত অপরাধ করলে অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ড এবং অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এই আইনের অধীন অপরাধ অ-আমলযোগ্য ও জামিনযোগ্য হবে। এই অধ্যাদেশের অধীন সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ দায়ের, অনুসন্ধান, তদন্ত, বিচার, আপিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮ (অ্যাক্ট নং ভি অব ১৮৯৮) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হবে।

এছাড়া, অধ্যাদেশে নিহত-আহতদের দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। ‘গণঅভ্যুত্থানে শহীদ’ এবং আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাই যোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে তিনটি শ্রেণি রয়েছে। তা হলো, অতি গুরুতর আহত, গুরুতর আহত ও আহত।

অধ্যাদেশে জুলাই ‘শহীদ’ পরিবার এবং আহতদের কল্যাণে নেয়া সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের আইনি ভিত্তি দেয়া হয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি সরকারি গেজেটে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে ৮৩৪ জন শহীদের তালিকা প্রকাশ করেছে তা এই অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত ও প্রকাশিত হয়েছে বলে গণ্য হবে।