দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে: রাষ্ট্রপতি

জাতীয়, 18 December 2023, 436 Views,

ডেস্ক রিপোর্ট :
বিচারপ্রার্থীরা যাতে দ্রুত ন্যায় বিচার পায়, সে লক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, বিচারিক কর্মকাণ্ডে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার মামলা নিষ্পত্তিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। আমি আশা করব, এখন থেকে ‘জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনায়েড’ প্রবাদটি আমাদের বিচার বিভাগে উদাহরণ হিসেবে আর ব্যবহৃত হবে না।

আজ ১৮ ডিসেম্বর সোমবার ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস’ উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি মামলা নিষ্পত্তির পর রায়ের কপির জন্য যেন বিচারালয়ের বারান্দায় ঘুরতে না হয়, সে ব্যাপারেও সবাইকে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন।

রাষ্ট্রপতি আশা করেন, সুপ্রিম কোর্ট ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে ও জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহিদের রক্তে লেখা সংবিধানের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করবেন। অমর শহিদের রক্তে লেখা এই সংবিধান রাষ্ট্র পরিচালনা ও বাঙালির অধিকার আদায়ের যেমন অনন্য দলিল, তেমনি বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়ও অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে মুক্তির পথ দেখাবে।

আইনজীবীদের বিচার ব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক এই আইনজীবী বলেন, আইনজীবীদের সহায়তা ছাড়া বিচারের কাজ কিছুতেই অগ্রসর হতে পারে না। বিচার কাজে বেঞ্চ ও বারের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা খুবই জরুরি। আইন, নির্বাহী ও বিচার- রাষ্ট্রের এই ৩ অঙ্গের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা রাষ্ট্র পরিচালনায় খুবই অপরিহার্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অতীত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের রক্ষক এবং চূড়ান্ত ব্যাখ্যা প্রদানকারী। সুপ্রিম কোর্টের জুডিসিয়াল রিভিউ’র ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু এই গুরুদায়িত্ব পালন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টই রায়ের মাধ্যেম অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল অবৈধ ঘোষণা করেছেন।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে বিচার বিভাগের গুরুদায়িত্ব হচ্ছে, দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত মামলাজট নিরসন করা। এই জট নিরসন করতে পারলে বিচারপ্রার্থী মানুষকে যেমন দ্রুত ন্যায়বিচার প্রদান করা সম্ভব হবে, তেমনি বঙ্গবন্ধুর সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যও সফল হবে। সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়িত হবে।

তিনি আরও বলেন, বিচারের বাণী এখন আর নিভৃতে কাঁদে না। সে ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার করে দিয়েছে। আইনগত সহায়তা দিয়ে দরিদ্র-অসহায় মানুষদেরও তিনি ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

সভাপতির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, দুর্নীতি নির্মূল, বিচার ব্যবস্থায় গতিশীলতা আনয়ন, গবেষণামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত মানোন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন নানা পদক্ষেপ জোরদার করেছে।

তিনি বিপুল সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তিতে বিচার বিভাগের সক্ষমতা সংকুচিত হওয়া এবং এ সমস্যা সমাধানের জন্য পর্যাপ্ত বিচারক নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি বড় ধরনের আইনি সংস্কারের গুরুত্বের কথা ব্যক্ত করেন। উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতে বিচারক সংকটের কথা তুল ধরে প্রধান বিচারপতি পর্যাপ্ত বিচারক নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট জাজেস কমিটির সভাপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এদিকে ‘সুপ্রিম কোর্ট দিবস ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি দিবস’ পালন করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। এ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্ত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনয়াতুর রহিম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল।

Leave a Reply

জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা আজ Read more

সরাইলে জামায়াতে ইসলামীর মিছিল

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে শুভেচ্ছা মিছিল করেছেন জামায়াতে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলো জেলা…

চলারপথে রিপোর্ট : আগামীকাল ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসছেন বাংলাদেশ Read more

বাঞ্ছারামপুরে বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ কৃষকদলের কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক Read more

দীর্ঘ ২০ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে…

দীর্ঘ ২০ বছর পরে দেশে ফিরে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ Read more

দেশীয় অস্ত্রসহ তিন সন্ত্রাসী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কসবা উপজেলায় দেশীয় অস্ত্রসহ তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার Read more

১৫ বছর পর প্রকাশ্যে জামায়াতে ইসলামীর…

চলারপথে রিপোর্ট : দীর্ঘ ১৫ বছর পর আখাউড়া উপজেলায় প্রকাশ্যে Read more

আন্দোলনে নিহত মাওলানাকে করা হলো হত্যা…

চলারপথে রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাওলানা মাহমুদুল হাসান রাজধানীতে Read more

ডাক্তারকে হাত পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে…

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগরে মুক্তি প্রাইভেট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: Read more

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা : গণঅভ্যুত্থানে অংশ…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যেসব ছাত্র-জনতা অংশ নিয়েছেন, তাদের Read more

মন্দিরে মুকুট চুরির ঘটনায় গ্রেফতার ৪…

অনলাইন ডেস্ক : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে শ্রীশ্রী যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে কালী Read more

জামায়াতে ইসলামীর সোনারামপুর ইউনিয়ন শাখা অফিসের…

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন Read more

‘সংসদে বঙ্গবন্ধু’ ও ‘মুজিববর্ষ বিশেষ অধিবেশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 6 April 2023, 946 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘সংসদে বঙ্গবন্ধু’ ও ‘মুজিববর্ষ বিশেষ অধিবেশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির দ্বাদশ বৈঠকে কমিটির সদস্য ও সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই দুটির মোড়ক উন্মোচন করেন। কমিটির সভাপতি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের পর ক্ষমতা না দেওয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়। স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই বঙ্গবন্ধু জাতিকে উপহার দেন সংবিধান। এরপর ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান- এটা বিশ্বে বিরল।

বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন- কমিটির সদস্য বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু, আনিসুল হক, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।

বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদের ২২তম ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের দ্বিতীয় এবং জাতীয় সংসদের ৫০বছর পূর্তি ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনের কার্যাদি নিষ্পন্নের জন্য সময় বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় অধিবেশন শুরু হয়ে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে মর্মে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। ৭ এপ্রিল বিকাল ৩ টায় এবং ৮ ও ৯ এপ্রিল সকাল ১০টায় অধিবেশন শুরু হবে।

এ অধিবেশনে জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আগামীকাল ৭ এপ্রিল বিকেল সোয়া ৩টায় স্মারক বক্তৃতা দেবেন।

এ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য ২০টি ও অন্যান্য মন্ত্রীর জন্য ৪৪৯টি প্রশ্নসহ মোট ৪৬৯টি প্রশ্ন পাওয়া গেছে, বিধি-৭১ মনোযোগ আকর্ষণের নোটিশ পাওয়া গেছে ৩৫টি। অধিবেশনে উত্থাপনের জন্য ৮টি সরকারি বিলের নোটিশ পাওয়া গেছে। গত অধিবেশনে অনিষ্পন্ন ৯টি বিলসহ ১৭টি বিলের মধ্যে কমিটিতে পরীক্ষাধীন ৭টি, পাসের অপেক্ষায় ১টি ও উত্থাপনের অপেক্ষায় ৯টি। বেসরকারি সদস্যদের বিলের কোন নোটিশ পাওয়া যায়নি।

বৈঠকে সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালাম সঞ্চালনা করেন। এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বাসস।

জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব

জাতীয়, 24 July 2023, 621 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বব্যাপী টেকসই, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ খাদ্য সম্মেলনে পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একই সঙ্গে তিনি টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানান।

আজ ২৪ জুলাই সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপণা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

টেকসই, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতে ৫ দফা প্রস্তাবে আর্থিক প্রণোদনা, খাদ্য ও সার রপ্তানির বিধি-নিষেধগুলো তুলে নেওয়া, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ফুড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, প্রযুক্তি বিনিময়, খাদ্য অপচয় রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সারা বিশ্বে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বৈশ্বিকভাবে ৬৯০ মিলিয়ন মানুষ এখনও অপুষ্টিতে ভুগছে, প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নেই এবং প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষ সুষম খাবার থেকে বঞ্ছিত।

তিনি বলেন, চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার ফলে সৃষ্ট খাদ্য, সার, জ্বালানি ও আর্থিক সংকট বিশ্বজুড়ে ক্ষুধা ও অপুষ্টির সমস্যাকে ঘনীভূত করেছে।

সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রবর্তনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহের অক্ষমতার জন্য কৃষি ও খাদ্যপণ্যের মূল্যই একমাত্র প্রতিবন্ধকতা নয়।

তিনি বলেন, সম্মিলিতভাবে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারলে আমরা বিশ্বব্যাপী টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করতে পারব।

জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা প্রস্তাব
প্রথমত, আধুনিক কৃষিতে বিনিয়োগের জন্য বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয়ত, জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ডিল’-কে চালু রাখার পাশাপাশি খাদ্য ও সার রপ্তানির বিধি-নিষেধগুলো তুলে নেওয়াসহ যে কোন বাণিজ্য বাঁধা অপসারণের লক্ষ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া একান্ত দরকার।

তৃতীয়ত, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ‘ফুড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থার রূপান্তরের লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

চতুর্থত, কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল রেখে ন্যানো-প্রযুক্তি, বায়ো-ইনফরমেটিক্স ও অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তিগুলো সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

পঞ্চমত, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের অপচয় রোধে তরুণ সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য দিয়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরের প্লেনারি হল রুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, মন্ত্রী, রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্লেনারি হল ছাড়াও জাতিসংঘের সদরদপ্তরে গ্রিন রুম, রেড রুম, ইরান রুমসহ বেশ কয়েকটি হল রুমে বড় পর্দায় প্রদর্শন করা হয়। এসব রুমে বিপুল সংখ্যক শ্রোতা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনেন এবং করতালির মাধ্যমে তার বক্তব্যকে সমর্থন জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কামাল দহল, সামাও এর প্রধানমন্ত্রী ফিয়ামি নাওমি মাতাফা, ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তেনিও তাজানি, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

২৪ থেকে ২৬ জুলাই রোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা আয়োজিত জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থাপণা সম্মেলনে ২০টির বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ ১৬০টির বেশি দেশ থেকে প্রায় ২ হাজারের অধিক প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করছেন।

কৃষিতে বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে আমাদের সরকার যখন দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয় তখন আবার ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি দিয়ে শুরু করি।

তিনি বলেন, আমরা কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভর্তুকি প্রদান, ১০ টাকায় কৃষকের জন্য ব্যাংক হিসাব চালুকরণ, শৃঙ্খলাপূর্ণ সার বিতরণ ব্যবস্থাসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। এরফলে, ২০১৩ সালের মধ্যে আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণতাই অর্জন করিনি, বরং খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হই।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন কতটা বেড়েছে তার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এফএও-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ খাদ্য উৎপাদনকারী ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ২০০৮-০৯ অর্থছরে দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল ৩২.৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯.৪ মিলিয়ন মেট্রিক টনে।

তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ থেকে ২০২০-২১ বছর পর্যন্ত প্রতিবছর দেশে সবজি উৎপাদন গড়ে ৫ শতাংশ এবং ফল উৎপাদন গড়ে ১১ শতাংশের বেশি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশ ধান ও মাছ উৎপাদনে ৩য়, পাট উৎপাদনে ২য়, সবজি উৎপাদনে ৩য় এবং আলু উৎপাদনে ৬ষ্ঠ।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি খাতের অবদানের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান জানান, বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ১১.৬৬%। তবে আমাদের কর্মশক্তির প্রায় ৪০.৬% কৃষিতে নিয়োজিত। আমাদের জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান ২.৪৩% এবং প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১.৯০%।

বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষি গবেষণা ও উদ্ভাবনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। দেশে বর্তমানে ৮টি সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৪ বছরে ৬৯০টি উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল শস্যের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা লবণাক্ত-সহিষ্ণু ধান উদ্বাবন করেছেন এবং খরা ও জলমগ্ন-সহিষ্ণু ধান উদ্বাবনের জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

কৃষিকে আধুনিক ও যান্ত্রিকীকরণে সরকারের কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে ২০১০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রায় ৮১ হাজার কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছি। সার, বিদ্যুৎ ও সেচ ইত্যাদির জন্য ১ লাখ ২ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কৃষি ও খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে উৎপাদন হতে শিপমেন্ট পর্যন্ত উত্তম কৃষি চর্চা, হাইজিন প্র্যাকটিসেস, গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিসেস অনুসরণ করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়াও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব স্থাপন করে দেশি পণ্যের মান নিশ্চিত করার দিকে সরকার মনোনিবেশ করেছে বলে জানান তিনি।

আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের কৃষি উদ্ভাবন ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে আগ্রহ প্রকাশ করার কথা উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।

জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আয়োজিত ফুড সিস্টেম সামিটে যোগ দিতে রোববার (২৩ জুলাই) স্থানীয় সময় বিকেলে ইতালির রোম আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে আগামী বুধবার দেশে ফিরবেন তিনি।

গভীর সমুদ্র থেকে ১৮ জেলেকে জীবিত উদ্ধার

জাতীয়, 18 July 2023, 683 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
গভীর সমুদ্র থেকে ১৮ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। আজ ১৮ জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুর রহমান এ তথ্য জানান।

কোস্ট গার্ডের এই কর্মকর্তা জানান, গত ১৪ জুলাই শুক্রবার এফভি “সাইফুর” নামের একটি ফিশিং ট্রলার নোয়াখালী জেলার হাতিয়া এলাকা থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সমুদ্রে যাত্রা করে। ১৫ জুলাই শনিবার ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়লে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে সমুদ্রে ভাসতে থাকে।

গতকাল ১৮ জুলাই সোমবার মাছ ধরার ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসলে জেলেরা উদ্ধার সহায়তা চেয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে কোস্ট গার্ডের নিয়মিত টহল জাহাজ সবুজ বাংলা’র অধিনায়ক লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ-আল-মামুনের নেতৃত্বে সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে উদ্ধার অভিযান চালায়। প্রথম দিকে জেলেরা সমুদ্রে তাদের সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি। উত্তাল সমুদ্রে টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিপদজনকভাবে ভাসতে থাকা ট্রলারটিকে মঙ্গলবার ভোরে ১৮ জন জেলেসহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, উদ্ধারের পর মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে উদ্ধারকৃত বোটসহ জেলেদের তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

খেলাধুলা সুস্থ সমাজ গঠনের অন্যতম অনুষঙ্গ: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 26 September 2023, 546 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খেলাধুলা সুস্থ সমাজ গঠনের অন্যতম অনুষঙ্গ। ক্রীড়ার ভেতর দিয়েই শিশুর সামাজিকীকরণ ঘটে। খেলাধুলার মাধ্যমেই ছাত্র-ছাত্রীরা সময়ানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা, পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো, দলগত প্রচেষ্টা ও নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি অর্জন করতে পারে।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা শেখ মুজিব নিজে খেলাধুলা করতেন। তার পুত্র শেখ কামাল এবং পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের পেশাদার খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠক। ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য জাতির পিতা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পথ অনুসরণ করে আমরাও পড়ালেখার পাশাপাশি ক্রীড়াকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।’

আজ ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ৫০তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৩ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতি আয়োজিত ৫০তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৩ উপলক্ষে আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, মহান মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক, প্রগতিশীল রাষ্ট্রে উন্নীত করার জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখতেন। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত অসাম্প্রদায়িক, মননশীল, মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন, কর্মনিষ্ঠ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের নানামুখী উদ্যোগ পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ শিগগিরই একটি বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে দক্ষ, আত্মনির্ভরশীল, আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে শারীরিক ও ক্রীড়া শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে শারীরিক ও মননগত বিকাশের মাধ্যমে সংবেদনশীল, যুক্তিনির্ভর ও পরোপকারী নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেজন্য স্কাউটিং এবং গার্লস গাইডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ক্রীড়াকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ চলমান আছে। ক্রীড়া নিয়ে উচ্চ শিক্ষার দ্বারও আমরা অবারিত রেখেছি। বিদ্যমান কিছু স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করেছি এবং নতুন আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম তৈরি করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগ জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি জাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সবচেয়ে বড় উৎসব জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়া প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাবে। আশা করি, ২৬ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সিলেট শহরে আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দিনগুলো প্রিয় শিক্ষার্থীদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’সূত্র : বাসস

ডাকাতি ও হত্যা মামলায় ১১ জনের যাবজ্জীবন

জাতীয়, 17 October 2023, 559 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মীপুরে ডাকাতি ও হত্যা মামলায় ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। একইসঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

এসময় অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় দুইজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। রায়ের সময় হোসেন প্রকাশ পাটোয়ারী নামে এক আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন, বাকিরা পলাতক।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-কাওছার, আবুল হোসেন, ছোট কামাল, হোসেন প্রকাশ পাটোয়ারী, বেলাল, আনোয়ার হোসেন, রিপন, কবির হোসেন, ইসমাইল হোসেন, আলমগীর ও আবুল কালাম বাহার। বেকসুর খালাস দেওয়া হয় লিপি ও নূর নাহারকে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের মুকবুল হোসেনের ঘরে ডাকাতদল হানা দেয়। পরে ডাকাতির সময় মকবুল বাধা দিলে ডাকাতদল তাকে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরদিন নিহতের মেয়ে দেলোয়ারা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।