অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ ২০ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে তিনি বক্তৃতা দেন। সিলেটবাসীকে সালাম ও বিজয়ের মাসের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আগুন নিয়ে খেলে। তারা জানে না আগুনে হাত দিলে আগুনেই হাত পুড়ে যায়। লন্ডনে বসে হুকুম দেয়। আর এদেশে বসে তাবেদার লোক মানুষ পোড়ায়।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন করতে দিতে চায় না। কিন্তু এত সহজ নয় যে, সরকার সহজে পড়ে যাবে। যারা খুনি তারাই নির্বাচন বানচাল করতে চায়। তাদের প্রতিহত করতে হবে।
আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি আদায় করে বলেন, এ নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। কেউ ভয় পাবেন না। নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন।
তিনি বলেন, সিলেটের যে কুপ খনন করে খালেদা জিয়ার আমলে গ্যাস পাওয়া যায়নি, সেই কুপে এখন গ্যাস ও তেল পেয়েছি। আল্লাহ জন বুঝে ধন দেন। ২০০১ সালে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। কারণ আমেরিকা চেয়েছিল তাদের কাছে গ্যাস বিক্রি করতে। আমি তা করিনি। তখন ভোট কারচুপির মাধ্যমে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছে।
সিলেটের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শুরু করে সিলটবাসী আমার সঙ্গে আছেন। আমি বারবার সিলেটে এসেছি। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সিলেটবাসীকে পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সুরমা নদীসহ সব নদী খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। নতুন রেলস্টেশন করে দিয়েছি। সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-বাদাঘাট এবং সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ছয় ও চার লেন হচ্ছে। ওসমানী বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। আধুনিক সিলেট গড়ার কাজ চলছে। সিলেটে মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। একশ শয্যার বার্ন ইউনিট ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিলেটের মানুষ সবসময় আমাদের পাশে রয়েছে। আমিও পাশে আছি। স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট অর্থনীতির জন্য আমরা লড়াই করছি।
বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে বক্তৃতা শুরু করে ৪টা ৫৫ মিনিটে শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী। ৩৫ মিনিটের বক্তৃতায় তিনি বলেন, আমরা দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা দিয়েছি। তারা কি দিয়েছে। বারবার সংবিধান লঙ্ঘন ও জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছে। কোনো কাজ করেনি। শুধু ভোগের জন্য তারা ক্ষমতায় এসেছে।
বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশের মঞ্চে পৌঁছার পর স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সরকারি আলিয়া মাদরাসার মাঠ। তার বক্তব্যের আগে শীর্ষ কয়েকজন নেতা বক্তব্য দেন। দীর্ঘ ৩৫ মিনিটের বক্তব্যকালে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা ৮ লাখ ৪১ হাজার মানুষকে ঘর দিয়েছি। প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের ভাতা দিচ্ছি। ৩৬ লাখ নারীকে এ ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই দেশকে এগিয়ে নিতে আর তারা (বিএনপি-জামায়াত) এগিয়ে নিতে দিতে চায় না।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মাঝে যেমন ছিল নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস তেমনি তার বক্তব্য শোনার জন্য ছিল নীরবতা। মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় আশপাশের এলাকায় অবস্থান করেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। নিরাপত্তার কারণে চারপাশের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তির শিকার হন অনেকে। বিশেষ করে একমাত্র মাঠের পশ্চিম দিকে প্রবেশের স্থান রাখায় মিছিল নিয়ে আসা নেতাকর্মীদের মাঠে প্রবেশে বেগ পেতে হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বিএনপিকে চাই না। খালেদা জিয়াকে চাই না, তারেক রহমানকে চাই না। এরা মানুষ মারে। এরা মানুষ না, দানব। এদেরকে প্রতিহত করতে হবে। এদের বাংলাদেশে রাখা যাবে না।
খেলা হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ধর্মঘট ভুয়া, রাজনীতি ভুয়া। তারা বলেছিল ডিসেম্বরে খালেদা জিয়া দেশ চালাবে, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবেন। কিন্তু অনেকে পালিয়েছেন। বিএনপি লালকার্ড পেয়ে গেছে।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, প্রেসিডয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছো হক, সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, ইনাম আহমদ চৌধুরী, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, প্রবাসী কল্যাণ, বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, আবু জাহির এমপি, হাবিবুর রহমান এমপি, মুহিবুর রহমান মানিক এমপি প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ হেলাল প্রমুখ।
সিলেটের নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ওসমানী বিমানবন্দর পৌঁছান। দুপুরে হযরত শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। সিলেট সার্কিট হাউসে অবস্থানের পর বিকেলে সমাবেশের মঞ্চে পৌঁছান। ওই সময় শিল্পীরা ‘বাবা শাহ জালালের দেশ সিলেট ভূমিরে…ও কোন মেস্ত্ররি নাও বানাইছে কেমন দেখা যায়’…গান দুটি পরিবেশন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ছিল নগরজুড়ে। সমাবেশস্থলের পার্শ্ববর্তী চৌহাট্টা মোড় থেকে আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, রিকাবি বাজার সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশের মাজার এলাকার রাস্তাও বন্ধ রাখা হয়। নগরীর প্রত্যেক প্রবেশ মুখ থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা এবং সংসদ সদস্য প্রার্থীদের সমর্থকরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে যোগ দেন। তাদের পরনে রঙিন গেঞ্জি ও মাথায় ক্যাপ ছিল।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ২৪ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১ জনকে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) পদে বদলি করা হয়। অন্যদের পুলিশের অন্যান্য বিভাগে পদায়ন করা হয়েছে। আজ ১৭ জুলাই সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
পুলিশ সুপার পদে বদলি: সিনিয়র সহকারী সচিব মাহাবুর রহমান শেখ সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী- ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসানকে ঝিনাইদহ, ঢাকা পুলিশ অধিদপ্তরের এআইজি মনজুর রহমানকে মৌলভীবাজার, ঢাকা টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনকে বান্দরবান, বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামকে নাটোর, নাটোর পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানকে রাজশাহী, অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধরকে খাগড়াছড়ি, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার উত্তম প্রসাদ পাঠককে ঠাকুরগাঁও, ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জি এম আব্দুল কালাম আজাদকে রাজবাড়ী, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবুল হাসনাত খানকে বাগেরহাট, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার তারেক বিন রশিদকে লক্ষ্মীপুর এবং শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামানকে জামালপুরে পুলিশ সুপার পদে বদলি করা হয়েছে।
অন্যান্য বিভাগে বদলি: একই কর্মকর্তার অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আশিকুর রহমানকে ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার, মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়াকে হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার, রাজশাহী পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার নাইমুল হককে ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার, ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার, রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামানকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, জামালপুর পুলিশ সুপার নাছির আহমেদকে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের পুলিশ সুপার, বাগেরহাটের পুলিশ কে এম আরিফুল হককে রাজশাহী মহানগরের উপপুলিশ কমিশনার, লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার, পিরোজপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামকে ঢাকা বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার, পুলিশ অধিদপ্তর ঢাকার (টিআর) পুলিশ সুপার শামীমা আক্তারকে ঢাকা স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশনের পুলিশ সুপার, পুলিশ স্টাফ কলেজের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সরকার ওমর ফারুককে রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ অধিদপ্তর ঢাকার (টিআর) পুলিশ সুপার তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরীকে সিলেট মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার পদে বদলি করা হয়েছে।
জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, এক মাস পেরোতেই আবার পুলিশের মাঠ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন পদে রদবদল হলো। আগের দিন রোববার ১৬ উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও ৩৫ অতিরিক্ত ডিআইজির পদমর্যাদার কর্মকর্তা বদলি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজিসহ একই পদমর্যাদার ১৩ কর্মকর্তারও কর্মস্থল বদল করা হয়েছে। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর আগে গত ১৩ জুন পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার সাত কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ২২ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছিল। নির্বাচনের আগে পুলিশের মাঠ প্রশাসনে এই রদবদলকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ পদক্ষেপ বলে অনেকে মনে করছেন। পুলিশ সদরদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, এসপি পদে রদবদল হলে ২৫তম ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা অগ্রাধিকার পাবেন। এ ছাড়া ২৮ ব্যাচের একটি বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতিপ্রত্যাশী।
এদিকে, পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের ৭২০ কর্মকর্তার পদোন্নতি চেয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবটি পাওয়ার পর তা মূল্যায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শূন্য পদ না থাকলেও সুপারনিউমারারি বা সংখ্যাতিরিক্ত পদোন্নতি দিয়ে ইনসিটু (পদোন্নতির পরও আগের পদে দায়িত্ব পালন) করা যেতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিশেষ করে উপজেলা পর্যন্ত জাতীয় গৃহায়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পি।
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘যত্রতত্র ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট নির্মাণের ফলে একদিকে কৃষিজমি হ্রাস পাচ্ছে অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এজন্য বিভাগ, জেলা ও উপজেলার পাশাপাশি প্রান্তিক জনপদের আবাসন পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব হওয়া প্রয়োজন।
মফস্বলে পরিবেশবান্ধব ও পরিকল্পিত আবাসন নিশ্চিত করতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত করা প্রয়োজন এবং এজন্য শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
কর্মক্ষেত্র অকারণে কালক্ষেপন না করে সাধারণ মানুষের স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে বিদ্যমান আইন মেনে যে কোনো সিদ্ধান্ত দ্রুততার সঙ্গে নেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জাগৃক সদস্য (ইঞ্জিনিয়ার) মোসলেহ উদ্দিন গ্রিন বিল্ডিং টেকনোলজি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে প্রাকৃতিক পাথরের মূল্য দেশীয় বাজারে অনেক বেশি।
অন্যদিকে সিমেন্ট শিল্পের স্বার্থে যেসব পাথর আমদানি করা হয় সেসব পাথরের আমদানি শুল্ক কম হওয়ায় বাজারে এর মূল্য অনেক কম। ফলে বেসরকারি নির্মাণ শিল্পে এসব নিম্নমানের পাথর ব্যবহারের ফলে কম স্থায়িত্বের ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ দিন দিন বাড়ছে। এজন্য গণপূর্তের রেট সিডিউলে রেডিমিক্স কংক্রিট ও পরিবেশবান্ধব ব্লকের অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। তাছাড়া বর্তমানে দেশীয় অনেক ইলেকট্রনিক সামগ্রী প্রস্তুতকারী সংস্থা লিফটসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্র মেকানিক্যাল সামগ্রী প্রস্তুত করে থাকে।
কিন্তু গণপূর্তের রেট সিডিউলে অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারণে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে এসব পণ্য ক্রয়ের সুযোগ নেই। রেট সিডিউলে এসব দেশীয় পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রত্যুত্তরে মন্ত্রী এসব প্রস্তাবনা লিখিত আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য বলেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অর্গানোগ্রাম হালনাগাদ করার দাবি উত্থাপন করলে মন্ত্রী এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান এমডিসির সভাপতিত্বে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজি ওয়াছি উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ১২ রবিউল আউয়াল। পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.)। বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর পুণ্যময় দিন। সারা বিশ্বে মুসলমান সম্প্রদায় বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদার সঙ্গে দিনটি পালন করে থাকেন। বাংলাদেশেও দিনটি সরকারিভাবে পালিত হয়। এছাড়া পত্রিকায় ক্রোড়পত্র এবং টেলিভিশন-রেডিওতে নানা অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে।
৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব মুহাম্মদ (সা.) মা আমেনার কোলে জন্ম নেন। ৩৭ বছর বয়সে তিনি হেরা গুহায় অবস্থান করে ধ্যানমগ্ন হতে শুরু করেন। ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে মহানবী (সা.) নবুয়ত লাভ করেন। প্রথম তিন বছর তিনি ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্তজনদের কাছে ইসলাম প্রচার করেন। ৬১৪ খ্রিষ্টাব্দে নবুয়তের চতুর্থ বছরে তিনি প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। বিশ্ববাসীর উদ্দেশে ঘোষণা করেন শান্তি, সাম্য, ঐক্য ও কল্যাণের বহুমুখী কর্মসূচি। জাহেলিয়াত বা অন্ধকার যুগে অজ্ঞতা, মূর্খতা, কুসংস্কার ও পাপাচারে নিমজ্জিত ছিল জাজিরাতুল আরব বা আরব উপদ্বীপ। এ সময় জ্ঞানের প্রদীপ শিখায় বিশ্বমানবতাকে আলোকোজ্জ্বল করে তুলেন মানবতার মহান বন্ধু মুহাম্মদ (সা.)। ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন এবং সেখানে একটি আদর্শ সমাজ ও কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। সব ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য নিশ্চিত করে একটি সনদ স্বাক্ষর করেন, যা মদিনা সনদ নামে পরিচিত। ২৩ বছর ইসলামের দাওয়াত দিয়ে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়ালেই ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। ব্যক্তিজীবনে, সমাজ ও রাষ্ট্রে একমাত্র তাঁর অনুকরণ-অনুসরণই দিতে পারে মুক্তির দিশা। পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর রাসুলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।’ (সুরা: আহজাব, আয়াত : ২১)। তিনি মানবজাতির সর্বোচ্চ পূর্ণতায় অধিষ্ঠিত একমাত্র ব্যক্তি। ‘(হে রাসুল!) নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সুরা: কলম, আয়াত : ৪)। তাই আজকের এ অস্থির ও অশান্ত পৃথিবীতে শান্তি, মুক্তি ও কল্যাণ পেতে আমাদের উচিত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসুল (সা.)-এর শিক্ষা ও আদর্শের পরিপূর্ণ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এদিনে নফল রোজা রাখেন। বেশি বেশি দরুদ পাঠ, কুরআন শরিফ তিলাওয়াত, দান-খয়রাতসহ নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে দিনটি অতিবাহিত করেন। পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষ্যে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, বৃদ্ধনিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নত খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
মোহাম্মদপুর থানায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে চারদিন এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ ২০ আগস্ট মঙ্গলবার তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন দীপু মনির চার দিন ও জয়ের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে আদালতের ডকে উঠানোর পর দীপু মনি একপাশে গিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসময় আইনজীবীরা ‘চোর’, ‘ফাসি চাই’ বলে চিৎকার করছিলেন। একপর্যায়ে দীপু মনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তখনো আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন।
এদিন আসামি পক্ষে এক আইনজীবী তাদের রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এজলাসে আসামিদের ডকে উঠানোর পর কারও হাতে হাতকড়া না থাকায় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আসামিদের হাতকড়া পরানোর জন্য চিৎকার করতে থাকেন। এরপর আসামি জয়কে হাতকড়া পরানো হয়। নারী বিবেচনায় দীপু মনিকে হাতকড়া পরানো হয়নি।
শুনানির এক পর্যায়ে জয় কথা বলতে চাইলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের তোপের মুখে কিছু বলতে পারেননি। অপরদিকে দীপু মনি ডকের এক কোণায় অবস্থান নিয়ে মাথা নিচু করে ছিলেন। কয়েকজন নারী পুলিশ সদস্য তাকে ঘিরে রাখেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালত তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচন, ময়মনসিংহ সিটির সাধারণ নির্বাচন ও পৌরসভার নির্বাচনসহ মোট ২৩৩টি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন নির্বাচন কমিশন। এসব নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ মার্চ।
আজ ২৪ জানুয়ারি বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এই নির্বাচনগুলোর তফসিল ঘোষণা করেন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের আলোকে আগামী ৯ মার্চ সাধারণ ও উপ-নির্বাচন মিলিয়ে ২২৩টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন একটি, সিটি করপোরেশনের শূন্যপদে চারটি, পৌরসভার সাধারণ পদে তিনটি, পৌরসভার শূন্যপদে উপ-নির্বাচন ১৫টি, ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ১৩টি এবং ১৯০টি বিভিন্ন শূন্যপদে উপ-নির্বাচন, জেলা পরিষদের শূন্যপদে নির্বাচন ৭টি-সবমিলিয়ে ২৩৩টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি সচিব জানান, ২৩৩টি নির্বাচনের মধ্য রিটার্নিং অফিসে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি। রিটার্নিং অফিসে মনোনয়ন বাছাই হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি। রিটার্নিং অফিস থেকে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থিতা আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। আর ভোটগ্রহণ হবে ৯ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।