চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বাকবিতণ্ডার জেরে সুহিনূর ওরফে সফিক (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সফিক ওই গ্রামের হাফেজ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ভাই আব্দুর রহমান ও ফয়জুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। তারা একই গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, সম্প্রতি স্থানীয় অলেক শাহ মাজারে ওরশ অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে একই গ্রামের রুবেল নামক এক যুবকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন আব্দুর রহমান। এর জেরে মঙ্গলবার রাতে আব্দুর রহমানের বাড়িতে লোকজন নিয়ে যান রুবেলের ভাই সফিক।
একপর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সফিককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন আব্দুর রহমান ও তার ভাই ফয়জুর রহমান। পাশাপাশি তারাও আহত হন। পরে আহত সবাইকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সফিককে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত দুই ভাইকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর ইউনিয়নের বাঙ্গরা বাজার এলাকায় আজ ১৫ জুলাই সোমবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩ শতাধিক অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
নবীনগর উপজেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের উদ্যোগে অভিযানকালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি ও খালের উপর অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল নবীনগর থেকে কোম্পানীগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশের জায়গাগুলো দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করেছিল। উচ্ছেদের সময় ২০০ শতাধিক টিনের দোকান ও শতাধিক একতলা, দুইতলা বিশিষ্ট মার্কেট উচ্ছেদ করা হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আবু মুছা। এ সময় সড়ক ও জনপদ বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজামুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান সম্পর্কে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল নবীনগর থেকে কোম্পানীগঞ্জ চলাচলের রাস্তার উভয়পাশের জায়গাগুলো দখলে রেখেছিলো। তাদেরকে বারবার বলার পরও তারা তাদের স্থাপনা গুলো সেচ্ছায় অপসারণ করেন নি। যার কারণে পূর্বে থেকে অবগত করে সোমবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উচ্ছেদ অভিযান কালে দুই শতাধিক টিনের দোকান ও শতাধিক পাকা আধাপাকা স্থাপনা, দুতলা মার্কেট উচ্ছেদ করা হয়।
নবীনগর প্রতিনিধি :
নবীনগরে পাওনা টাকার জের ধরে এশিয়ান টিভির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ইনচার্জ নজরুল ইসলামের উপর হামলার ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হচ্ছে শ্রীরামপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে সোহাগ মিয়া(৩১)ও একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে খন্দকার শাহানেওয়াজ অপু (৩২)। ২১ জানুয়ারি শনিবার সকালে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে সাংবাদিক নজরুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার রাতে নবীনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা যায়, উপজেলার রছুল্লাবাদ গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে এশিয়ান টিভির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ইনচার্জ নজরুল ইসলাম পাশের শ্রীরামপুর গ্রামের সোহাগ মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে সিভিল সার্জন অফিস সহায়ক পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ছয় লক্ষ, একই গ্রামের রফিক মিয়ার স্ত্রীকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকুরী দেয়ার কথা বলে ছয় লক্ষ এবং স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদসহ বিভিন্ন সরকারি চাকুরী দেওয়ার কথা বলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে মোট ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। চাকুরী না দিতে পারলে ১৫ দিনের মধ্যে পুরা টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি ঐ স্ট্যাম্পে উল্লেখ্য রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হয়ে যাওয়ার পরও চাকুরী কিংবা টাকা ফেরত না দেওয়ায় সোহাগ মিয়া বাদী হয়ে গত ২৪/০২/২০২০ সালে গাজীপুর সদর থানার একটি লিখিত অভিযোগ করেন যাহার এসডিআর নং ১২৪৫ এবং রফিক মিয়া বাদী হয় গত ২৩/০১/২০২১ সালে নবীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন যাহার এসডিআর নং ১১৭।
এছাড়াও আমীর হোসেনের ছেলে মাইনউদ্দিনকে নির্বাচন কমিশন অফিসে, মোহাম্মদ আলীর শ্যালক জনি কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চাকুরী দেয়ার কথা বলে নগদ ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় নজরুল ইসলাম।
প্রাইমারী শিক্ষিকা চাকুরী প্রত্যাশী খুকি আক্তার জানান, রুবেলের মাধ্যমে নজরুলের সাথে পরিচয় হলে তার স্বামী রফিকুল ইসলাম নজরুলকে ৬ লক্ষ টাকা দেয় এবং নজরুল তার চাকুরী নরসিংদী হয়েছে মর্মে ভেরিফিকেশন করিয়ে ঐখান থেকে বদলী করে শ্রীরামপুর নিয়ে আসতে পুনরায় ৫০ হাজার টাকা নেয়।
সিভিল সার্জন অফিসের অফিস সহায়ক পদে চাকুরী প্রত্যাশী সোহাগ মিয়া বড় ভাই রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি তাকে বিশ্বাস করে তিনজনের চাকুরীর জন্য ২২ লাখ টাকা দেয়,টাকা ও চাকুরী ফেরত না দেওয়ায় থানায় জিডিও করেছি।
নির্বাচন কমিশন অফিসে চাকুরী প্রত্যাশী মাইনউদ্দিনের পিতা আমীর হোসেন জানান, তার ছেলেকে নির্বাচন কমিশন অফিসে চাকুরী দিবে বলে ২ লাখ টাকা নিয়েছে নজরুল, কিন্তু চাকরী কিংবা টাকা কোনোটাই ফেরত দেয়নাই।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চাকুরী প্রত্যাশী জনির মামাতো বোন তাসলিমা আক্তার জানান, উপজেলার মালাই গ্রামের তার মামাতো ভাই জনিকে মন্ত্রণালয়ে চাকুরী কথা বলে তার স্বামী মোহাম্মদ আলীর নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে আর দেখাই করে না।
এ ব্যাপারে নজরুল ইসলাম টাকা লেনদেনের বিষয় অস্বীকার করে বলেন আমার অনুষ্ঠানকে বানচাল করতে অপু ও সোহাগ মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জন আমার উপর হামলা চালায়।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, এশিয়ান টিভির ১০ম বর্ষপূর্তির কেক কাটা অনুষ্ঠানের পাশে হামলার ঘটনায় দুইজনকে সন্দেহ ভাজন ভাবে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনার তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্যেখ্য গত ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে রসুল্লাবাদ বাজারে এশিয়ান টিভির ১০ম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে কেক কাটার অনুষ্ঠানের মঞ্চের পাশে পাওনাদাররা ইসমাইলকে আটক করে মারধর করে।
স্টাফ রিপোর্টার:
১১ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস। নানা আয়োজন ও আননন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পালিত হল দিবসটি। এই উপলক্ষে গতকাল রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের উদ্যোগে উপজেলার গোলচত্বরে সম্মুখ সমরের ¯ভৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে সম্মুখ সমর থেকে একটি র্যালি বের হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বরসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে সম্মুখ সমরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সম্মুখ সমরে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের প্রশাসক অরবিন্দ বিশ্বাসের সভাপতিত্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা শারমিন, বাংলাদেশ আইনসমিতির সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান আনসারি, আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ রহমান, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাসিম, বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ জসিম উদ্দিন আহমেদ, হেবজুল বারী, মোজাম্মেল হক গোলাপসহ বিশেষ ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এদিনেই পাক হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে আশুগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত চলছে ঈদের কেনাকাটা। গত ৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরে উপজেলার সদর বাজারসহ অন্যান্য কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। ছোট বড় শপিং মলের পাশাপাশি বিক্রি বেড়েছে ফুটপাতেও।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নবীনগর উপজেলার শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান ও রাস্তার পাশের ফুটপাতে গড়ে ওঠা অস্থায়ী দোকানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদের নতুন চালান থেকে বেছে নিচ্ছেন অভিভাবকসহ তরুণ তরুণীদের ড্রেস ও প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই শিশুরাও, অভিভাবকরা শিশুদের জন্য কিনছেন বাহারি রকমের পোশাক। ঈদ বাজার জমজমাট হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও। আধুনিক সমবায় সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পুরো পরিবার নিয়েই অনেকে হাজির হয়েছেন শপিং মার্কেটে। নবীনগর পৌর এলাকার পূর্ব পাড়ার মুসা মিয়া বলেন, প্রবাস থেকে দেশে ফিরে এসেছি বন্ধুবান্ধবসহ পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করব। পরিবার ও নিজের জন্য ঈদের কেনাকাটা করছি।
ঈদের শপিং করতে আসা বিদ্যাকুট গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ঈদের কেনাকাটা করবো বলেই উপজেলার সদর বাজারে আসছি কিন্তু এ বছর তুলনামূলক সবকিছুর দাম বেশি মনে হচ্ছে। সমবায় মার্কেট থেকে শার্ট ও প্যান্ট কিনেছি, এখন জুতা কিনতে সালাম রোডের দিকে যাচ্ছি।
রসুলাবাদ থেকে আসা আফরোজা বেগম বলেন, ঈদের কেনাকাটা করতে নবীনগর বাজারে আসছি। ঈদের জন্য জামা কাপড় কিনেছি। ছেলে ভাইনা করেছে নীল রঙের ঘড়ি কিনবে, ঘড়ির দোকানে যাচ্ছি। দামের বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দাম একটু বেশি।
পৌর এলাকা রাজ্জাক মিয়া বলেন, গত দুই মাস আগে যে শার্ট ৫০০-৭০০ টাকায় কিনেছি এখন তা ৮০০-১০০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
খাজানগর গ্রামের রহিছ মিয়া জানান, ঈদের কেনাকাটা করতে পরিবার নিয়ে শপিংমলে আসছি। গত বছরের তুলনায় এবছর পোশাকের দাম বেশি মনে হচ্ছে। একটি থ্রি পিস কিনতে গেলে ৩২০০ টাকা দাম বলেন, যা পরে আমার কাছে ১১০০ টাকা বিক্রি করেন। নির্ধারিত মূল্য তালিকা না থাকায় ঈদকে সামনে রেখে কিছু দোকানদাররা এই সুবিধা নিচ্ছেন বলে তার অভিযোগ। তুলনামূলক রাস্তার পাশের অস্থায়ী দোকানগুলোতে এবছর বেড়েছে বিক্রির পরিমাণ। শপিংমল গুলোতে মূল্য বেশি হওয়ায় অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে। এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে বৈশ্বিক মন্দার কারণে আগের চেয়ে সব পণ্যের দাম চওড়া। তাই আমাদের কিনতে হয় বেশি দামে। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারাও দেখে শুনে যাচাই করে নিচ্ছেন