সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়, রাজনীতি, 21 December 2023, 1242 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য জন্য তার দলের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে কেউ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।

banner

একইসঙ্গে তিনি উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’য় দেশবাসীর ভোট প্রত্যাশা করেন।

তিনি বলেন, “আপনারা আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এমনভাবে কাজ করবেন যাতে নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে না পারে।”

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আজ নির্বাচনী জনসভায় দেওয়া এক ভার্চুয়াল ভাষণে একথা বলেন।

তিনি আজ বিকেলে আওয়ামী লীগের তেঁজগাও কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নির্বাচনী জনসভায় যুক্ত হন। যার সাথে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নাটোর, পাবনা ও খাগড়াছড়ি সহ ৫টি জেলা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিল। পরে এসব জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মতবিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁর দলের নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বলেছেন যাতে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।

তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে জনগণ ও ভোটারদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। কোন দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বা নিচ্ছে না, তাতে কিছু যায় আসে না।”

তিনি বলেন, ভোট কারচুপির কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি আর বিএনপির কাজটা কি? জ্বালাও পোড়াও অগ্নি সন্ত্রাস, এটাই তারা ভালো বোঝে এটাই তারা করে।

তিনি বলেন, এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। কেননা সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদি সংগঠন হচ্ছে বিএনপি।

শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চুরির অপরাধে দুই দুবার এদেশের মানুষ খালেদা জিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেটা নিশ্চয়ই সকলের মনে আছে। ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল। আর মার্চে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ঠিক একইভাবে তারা আবার ভোট চুরি করার চেষ্টা করেছিল ২০০৬ সালে। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার লিস্ট করে সে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। পারে নাই। কাজেই দু’ দুবার যারা ভোট চুরির অপরাধে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত তাদের মুখে এখন গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়,ভোটের কথাও শুনতে হয় -এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।

তিনি বলেন, ভোটের অধিকার জনগণকে আওয়ামী লীগই দিয়েছে এবং সেটা অব্যাহত থাকবে। এবারে নির্বাচনে আপনাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এ ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ করে কোন মানুষের ক্ষতি যেন কেউ না করতে পারে। সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন এবং সে নির্বাচনে জনগণ অবাধে ভোট দেবে। ভোটের মালিক জনগণ তাদের সাংবিধানিক অধিকার।

“হ্যাঁ আমরা এটা উন্মুক্ত করেছি আমাদের নৌকার প্রার্থীও আছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছে এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীও রয়েছে,” বলেন তিনি।

তিনি দলের প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা জনগণের কাছে যাবেন, জনগণ যাকে ভোট দেবে তিনি নির্বাচিত হবেন। কেউ কারো অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। এখানে কিন্তু কোন রকমের সংঘাত বা মারামারি, কোন কিছুই আমি দেখতে চাই না।

তিনি বলেন, কোন সংঘাত হলে সংঘাত যদি আমার দলেরও কেউ করে তাদের কিন্তু রেহাই নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। সেটা মনে রাখবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার নির্বিঘেœ প্রয়োগ করবেন। যাকে খুশি বা যাকে পছন্দ তাকে ভোট দেবেন এবং সে জয়ী হয়ে আসবে। কেননা গণতন্ত্রকে আরো সুদৃঢ় করতে হবে। এর যেন কোন ব্যতয় না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহবান জানিয়ে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্যও এটা জরুরী বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার ওপর নির্মিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান তেজগাঁও দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ, প্রার্থী, স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীবৃন্দ সংযুক্ত পাঁচ জেলার ভেন্যুতে উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ:) ও শাহ পরাণ (রহ:) এর মাজার জিয়ারত করে দলের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এরপর দুপুর ২টায় নগরীর চৌহাট্টা এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন তিনি।

তিনি ২৯ ডিসেম্বর বরিশাল সফর করবেন এবং ওই দিন বিকেল ৩টায় জেলা শহরে একটি নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এরপর ৩০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ সফর করবেন এবং গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) আসনের জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। একই দিন মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, এখন লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে স্মার্ট বাংলাদেশে প্রত্যেকটি ছেলে-মেয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। আজকে আমাদের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ছয় লাখের অধিক। যারা ঘরে বসে আয় উপার্জন করতে পারে। তারা কোভিড- ১৯ এর সময়ও এটা করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়নটা ‘সাসটেইনেবল’ হবে অর্থাৎ যে উন্নয়নটা স্থায়ী হবে এবং যার মাধ্যমে জনগণ সুযোগ পাবে নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানোর। উন্নয়নবান্ধব ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করব।

তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের অনেক মেধা আছে। যে মেধা অন্বেষণ করে তাকে কাজে লাগিয়ে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং তাদেরকে প্রযুক্তি জ্ঞান দিয়ে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো। আমাদের অর্থনীতিও উন্নত হবে, স্মার্ট হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন আমরা করে যাচ্ছি সেটা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য আমরা উন্নত, উদার, অগ্রসরমান, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। যেখানে উন্নয়নটা হবে সুষম। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই যেন সুন্দরভাবে সেখানে বাঁচতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা দুর্নীতি মুক্ত এবং সুষম উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কারণ এই দুর্নীতি সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিছু লোক হঠাৎ আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়। আর সৎভাবে যারা জীবনযাপন করে তাদের জীবনটা দুর্বিসহ হয়। সেজন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ‘জিরো টলারেন্স’ আমরা ঘোষণা দেবো। ন্যায় ও সমতা ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা এবং অর্থনীতিকে সমতা ভিত্তিক করা এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করাটাই আমাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, “আমরা সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই,” শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই স্মার্ট বাংলাদেশ শুধু একটি শব্দ নয়। এর অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নটাকে স্থায়ী বন্দোবস্ত করা যাতে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম এর সুফলটা ভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা করা। সেজন্য তাঁর সরকার প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছে। যেমন ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে তার রূপরেখা এখনই প্রণয়ন করেছে।

তিনি বলেন, শতবর্ষ পরে বাংলাদেশের অবস্থান কিরকম হবে? তা বিবেচনা করে ‘ডেলটা মহাপরিকল্পনা – ২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। জলবায়ুর অভিঘাত থেকে বাংলাদেশ কিভাবে মুক্ত থাকবে, তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী পাঁচ জেলার উন্নয়নের বিভিন্ন খতিয়ান, এগুলোকে আরো সমৃদ্ধ জনপদ হিসেবে গড়ে তোলার নানা পরিকল্পনা তুলে ধরার পাশাপাশি তাঁর সরকারের গৃহীত ১০ কোটির বেশি উপকারভোগীর সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচি, দেশের সকল গৃহহীণকে ঘর নির্মান ও তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করা, ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আরো জ¦ালা, গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি-উপবৃত্তি, মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে নতুন বই প্রদান এবং চিকিৎসা সেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য সারাদেশে গড়ে তোলা কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাসহ ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন।

তিনি বর্গা চাষীদের জন্য বিনা জামানতে কৃষিঋণ এবং উদ্যোক্তা তৈরি হবার জন্য ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি কৃষকদের দোরগোড়ায় সার পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন। বিএনপি এই সারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষকদের উপর গুলি চালিয়ে কৃষক হত্যা করেছিল সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি নির্বাচনে আসবে কিভাবে সে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন ছিল না। সেই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০টি আসন পেয়েছিল। আর সেখানে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩ টি আসনে বিজয়ী হয়। এটা সকলকে মনে রাখতে হবে। এখন বড় বড় কথা বলে, তারা ভোটের কথা বলে।

তিনি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী, সংবিধান লঙ্ঘনকারী, সেনা আইন লঙ্ঘনকারী এক জেনারেলের পকেট থেকে যাদের জন্ম সেই বিএনপি ভোটের কি বোঝে, সে প্রশ্নও তিনি তোলেন। ক্ষমতায় বসে থেকে একদিকে সেনাপ্রধান এবং অপরদিকে রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোটের আয়োজন এর মাধ্যমে তার সময়ে বিভিন্ন প্রহসনের নির্বাচনের প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে যাদের জন্ম তাদের সকল কাজই অবৈধ, কারণ তারা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না।

তিনি সাম্প্রতিক রেলে অগ্নিসংযোগের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, কিভাবে রেলে আগুন দিয়ে তারা মানুষ পোড়ালো। মাতা শিশু সন্তানকে বাঁচানোর জন্য বুকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে সে অবস্থায় জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গিয়েছে। হেলপার ঘুমিয়ে আছে আগুন দিয়েছে, হেলপার পুড়ে শেষ। ২০১৩ ও ১৪ সালে একই ঘটনা তারা ঘটিয়েছে। ছেলেকে ট্রাকে বসিয়ে রেখে বাবা গেছে মনে হয় পানি আনতে, সেই ট্রাকে আগুন দিয়েছে, ছেলে পুড়ে শেষ। সন্তান আগুনে ঝলসে যাচ্ছে বাবা কিছুই করতে পারছে না। এভাবেই সারা বাংলাদেশে তারা তান্ডব করেছে। সেই ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর নামে ৫৮২টি স্কুল, ৭০টি সরকারি অফিস, ছয়টি ভূমি অফিস এবং ৩২৫২টি গাড়ি, ২৯টি রেল, নয়টি লঞ্চ তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়েছিল। এমনকি জজের এজলাসেও তারা আগুন দেয়। ঝালকাঠিতে বোমা মেরে জজ হত্যা করল। গাজীপুরে আইনজীবীদের উপর বোমা হামলা চালালো, সেখানো আইনজীবীদেরকে তারা আহত করল। এটাই বিএনপির চরিত্র, আর এখন আবার শুরু করেছে অগ্নি সন্ত্রাস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাসে আগুন দিচ্ছে, গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, রেলে আগুন দিচ্ছে। মানুষ যেন শান্তিতে চলাচল করতে পারে এজন্য সরকার নতুন রেলের কোচ ক্রয় করেছে, সেখানে আগুন দিচ্ছে। কারণ মানুষের শান্তি দেখলে ওদের মনে অশান্তি জাগে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘কুলাঙ্গার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই কুলাঙ্গার ২০০১ সালে হাওয়া ভবন খুলে খাওয়া শুরু করেছিল। তাকে খাওয়া না দিয়ে কেউ ব্যবসা পেতো না। তার খাওয়ার কোন শেষ ছিল না। খেতে খেতে সে সবই খেয়ে ফেলেছে। মানি লন্ডারিং, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পলাতক আসামি এই তারেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আর রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল। আর সেখানে বসে এখন নির্বাচন বানচাল করা সহ মানুষ হত্যার হুকুম দিচ্ছে।

তিনি বলেন, তারা বলে তারা নাকি গণতন্ত্র দেবে যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি তারা কিভাবে গণতন্ত্র দিতে পারে সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশে দারিদ্রের হার আমরা ৪১ ভাগ থেকে ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৯৮ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি, প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছি এমনকি কোভিড-১৯ এর সময় যখন বিশে^র অনেক উন্নত দেশের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়ে পড়েছিল তখনও আমরা ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। দেশের মানুষের উন্নয়নে দিন-রাত পরিশ্রম করেই আমরা একাজগুলো করে যাচ্ছি। রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রীজ সহ দেশের যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নটা আমরা করেছি সেটা জনগণের মাথায় রাখতে হবে। সেটা মাথায় রেখেই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে হবে এবং জনগণের তথা ভোটারের অংশগ্রহণ থাকতে হবে।

তিনি বলেন,“আর উন্নয়নের ধারাটাকে যদি অব্যাহত রাখতে হয় তাহলে আওয়ামী লীগকেই সরকার গঠন করে জনগণের কল্যাণ সাধন করতে হবে।” বাসস

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

ইসরায়েলকে ধরাশায়ী ইতালির

অনলাইন ডেস্ক : বিশ্বকাপ বাছাইয় পর্বের ম্যাচে ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার Read more

রেলওয়ে স্টেশনে এসি বিস্ফোরণে সিগন্যাল অচল…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন সিগন্যাল কেবিনে এয়ারকন্ডিশন Read more

পানিবন্দি ৩৫ গ্রামের মানুষ

জাতীয়, সারাদেশ, 14 August 2025, 217 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ভারী বৃষ্টি এবং ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের সব গেট খুলে দেয়ায় লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানানা জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার। তিনি জানান, বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ১৩ আগস্ট বুধবার ভোর থেকে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে প্রথমে ৭ সেন্টিমিটার ওপরে পৌঁছায়। পরে তা কিছুটা কমে ৪ সেন্টিমিটারে ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

banner

আজ ১৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় আবারো তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় পানি আরো ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের ৩৫টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। পরিস্থিতি সামাল দিতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

পাউবো সূত্র জানায়, আগামী দুই-তিন দিন এই অঞ্চলে ভারীবর্ষণ ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকতে পারে। এতে লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বন্যায় পানিবন্দি পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে পড়েছে। গবাদিপশু, পাখি, বৃদ্ধ শিশু ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিস্তাপারের হাজারো মানুষ। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। ঘরের ভেতর মাচাং বানিয়ে সারা দিনের রান্না একবারে করছেন গৃহকর্মীরা। কেউ কেউ পাশের উঁচু রাস্তার বাঁধে চুলা বসিয়ে রান্না করছেন। বাঁধ আর রাস্তার ধারে পলিথিনের তাঁবু সাঁটিয়ে রাখা হচ্ছে গবাদিপশুগুলো। সবচেয়ে বড় বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি পরিবারের নারীরা। ল্যাট্রিন ডুবে যাওয়ায় বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে নারীদের।
তিস্তাপারের গোবর্দ্ধন গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, দুদিন ধরে চরাঞ্চলের প্রায় বাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানির কারণে সাপ, পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। গরু ছাগল রাখার মতো শুকনো জায়গাটুকুও মিলছে না।

আদিতমারী মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন এলাকার কাচুয়া শেখ বলেন, বন্যার পানিতে ৫ দিন ধরে রান্না করতে পারিনি। গরু-ছাগল ও পরিবারের সদস্যদের উঁচু জায়গায় রেখেছি। ত্রাণ নয়, চাই পানি যেন আর ভারত থেকে না আসে।

তিস্তা তীরের উত্তর গড্ডিমারী গ্রামের মোন্তাজ মিয়া, বলেন, রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে হাঁটু কিংবা কোমরপানি।
পানির শোঁ শোঁ শব্দে রাতে ঘুমাতে পারিনি। আতঙ্কে থাকি শিশু বাচ্চাদের নিয়ে, কখন কে পানিতে পড়ে যায়। নিদারুণ কষ্ট নিয়ে জীবন কাটছে আামাদের।
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় কয়েক হাজারের বেশি পরিবার টানা দুদিন পানিবন্দি। তাদের তালিকা করার পাশাপাশি খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানান, বৃষ্টি ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃহস্পতিবার আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তিস্তাপারের নিম্নাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যা। তাই এসব অঞ্চলের জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২ টায় ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

তিস্তা ব্যারাজের নিবাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল ৯টায় পানি আরো ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার আর দুপুর ১২ টায় পানি ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ সামাল দিতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খোলা রাখা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও রাস্তাগুলো পর্যবেক্ষণ করছি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে প্যাকেটজাত শুকনো খাবার ও জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুত বিতরণ শুরু করা হয়েছে। আরও কিছু শুকনো খাবারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলোর খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে, যাতে তারা কষ্ট না পায়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

অধিকার আদায়ে মরণপণ যুদ্ধ করতে হবে: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি, 4 August 2023, 675 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আছি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আছি। এ আন্দোলন চূড়ান্ত আন্দোলন। এবার অধিকার আদায়ে মরণপণ যুদ্ধ করতে হবে। আমাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আর পথ নেই।’

banner

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে আজ ৪ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান।

বর্তমান সরকারকে ‘স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রু’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এরা দেশে ফ্যাসিবাদী রাজত্ব কায়েম করেছে। আর এই ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে জনগণকে উদ্ধারে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার নেতৃত্বে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ, সেই তারেক রহমানকে আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। শুধু তারেক রহমানকেই নয়, যিনি কোনোদিন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না, সেই ডা. জুবাইদা রহমানকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি তারেক রহমানের সহধর্মিণী।

তিনি বলেন, ‘এ সরকার ভীরু ও কাপুরুষ। তারা প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদেরকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেছেন‒ কোনো চাপে আছেন কিনা। তিনি বললেন, কোনো চাপে নেই, তবে বিবেকের চাপে আছি। আসলে সরকার চোখে অন্ধকার দেখছে। তাই তারা একেক সময় একেক কথা বলছেন।’

তিনি বলেন, ‘আজকে দুর্নীতির অভিযোগে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমান সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধেও ১৫টি মামলা হয়েছিল। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে মামলাগুলো তারা নাই করে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সরকার আজ তাদের পদন্নোতি দিচ্ছে। আজ সমগ্র দেশে দুর্নীতি মাকড়সার জালের মত ছড়িয়ে পড়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে বিনা অপরাধে আমাদের নেতাকর্মীদের জেলে নেওয়া হচ্ছে, ফাঁসির আদেশ দেওয়া হচ্ছে। যারা অবৈধ রায় দিচ্ছেন সেইসব বিচারপতিদের আল্লাহর কাছে একদিন জবাব দিতে হবে। ন্যায়বিচারের জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। অতীতের কথা সবসময় স্মরণ রাখবেন। সেই স্লোগানের কথা ভুলে যাবেন না‒ বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা।’

তিনি বলেন, ‘আজকে চাল-ডাল, বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বেড়েছে। সেদিকে সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভিসা পান না। ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে শত শত মানুষ। সেদিকে সরকারে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তাদের একটাই চিন্তা কীভাবে ক্ষমতা ধরে রাখা যায়।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবি রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

বছরের দীর্ঘতম রাত আজ

জাতীয়, 21 December 2023, 906 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
আজ ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দিনের আলো ফুরিয়ে যাবে তাড়াতাড়ি। সন্ধ্যে গড়িয়ে যে রাত নামবে, তা যেন কাটতেই চাইবে না।

banner

আজ হতে চলেছে বছরের দীর্ঘতম রাত। খবর দ্য ওয়ালের।

কেন ২১ ডিসেম্বর বছরের দীর্ঘতম রাত, তা জানতে হলে শৈশবের সেই ভূগোল বইয়ের পাঠে ফিরে যেতে হবে। জানতে হবে সূর্যের উত্তরায়ন ও দক্ষিণায়নের গতিপ্রকৃতি। পাঠ্যবইতে দীর্ঘতম দিন এবং দীর্ঘতম রাতের কথা সবাই পড়েছে। ২১ জুনকে বছরের দীর্ঘতম দিন বলা হয়, আর দীর্ঘতম রাত হলো ২১ ডিসেম্বর। এই দীর্ঘতম রাত হয় সূর্যের দক্ষিণায়নের কারণে।

কেন রাত সবচেয়ে বড় হয়, এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। বছরে ছটি ঋতু। ঋতু বদলের সঙ্গে দিন ও রাতের সময়কালও বদলায়। বছরের ৩৬৫ দিন কখনো সমান থাকে না। কখনো দিন বড় রাত ছোট হয়, আবার কখনো তার উল্টো। ঠিক এভাবেই বছরে এমন একটা দিন আসে, যেখানে দিন সবচেয়ে ছোট হয়, এবং রাত সবচেয়ে বড়। আবার এর উল্টোটাও হয়।

সৌরজগতের নিয়ম অনুযায়ী, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরার সময় একদিকে একটু হেলে থাকে। ফলে কখনো উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছাকাছি আছে, আবার কখনো দক্ষিণ গোলার্ধ। ২১ জুন দিনটাতে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছাকাছি থাকে। তাই সূর্যের রশ্মি দীর্ঘসময় পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে পড়ে। সূর্য এদিন কর্কটক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে বা খাড়াভাবে কিরণ দেয়। তাই মনে হয় দিন শেষই হচ্ছে না। মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে দেশগুলিতে বেশি পরিমাণ সূর্যালোক পৌঁছায়। এর ফলে এই সময়কালে সেইসব দেশে গ্রীষ্মকাল থাকে। বিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলে ‘সামার সলসটিস’ বা উত্তরায়ণ। এর পর থেকে দিন ছোট হতে শুরু করে।

ডিসেম্বর মাস থেকে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে, উত্তর গোলার্ধ চলে যায় অনেকটা দূরে। এই সময় উত্তরে সূর্যের আলো ক্ষীণভাবে পড়ে, ফলে সেখানে তখন শীতকাল, আর দক্ষিণে গরমকাল। ২১ ডিসেম্বর দিনটিতে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের থেকে অনেকটাই দূরে থাকে। ফলে সেখানে সূর্যের আলো এতটাই কম পড়ে যে, দিন খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় বলে মনে হয়। রাত হয় দীর্ঘ। একে বলে উইন্টার সলসটিস বা সূর্যের দক্ষিণায়ন। এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় হয় আর উত্তর গোলার্ধে রাত দীর্ঘতম হয়।

সোমবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার হালনাগাদ শুরু

জাতীয়, 19 January 2025, 378 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সোমবার থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হচ্ছে। আগামীকাল ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে হালনাগাদের কাজ চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আজ সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপির) পক্ষ থেকে ইসিকে ল্যাপটপ ও স্ক্যানার হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সিইসি।

banner

আগামীকাল ২০ জানুয়ারি সোমবার সাভারে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে। নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠান সিইসি নাসির জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রাথমিকভাবে ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০ ডকুমেন্টস স্ক্যানার ও ৪৩০০ ব্যাগ দিয়েছে ইউএনডিপি। আগামীকাল ২০ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।’ এ কার্যক্রমে ৬৫ হাজার মানুষ কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন সিইসি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, ‘এ কার্যক্রমে ইউএনডিপি লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছে। পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াতেই হয়তো আমরা তাদের সমর্থন চাইবো।’ প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন যে, চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। মাস ছয়েকের মধ্যে বিএনপির তরফে ভোট চাওয়া হলেও ভোটার হালনাগাদেই ছয় মাসের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করার কথা বলছেন সিইসি নাসির, ‘আমরা ছয় মাসের জন্য প্লান করেছি। কিছু কমবেশি হতে পারে। টার্গেট হচ্ছে- ছয় মাসের যাতে শেষ করতে পারি।’ এ হালনাগাদে নতুন করে ১৯ লাখ ভোটার যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

বঙ্গমাতা পাশে থাকাতেই জাতির পিতার সাফল্য সহজ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 8 August 2023, 1003 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সবসময় পাশে ছিলেন বলেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাফল্যলাভ সহজ হয়েছে। শুধু ছাত্রজীবন নয়, রাজনৈতিক জীবনেও বঙ্গমাতা সবসময় বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী হিসেবে ছিলেন।

banner

তিনি বলেন, আমার বাবার সাফল্য যদি আপনারা দেখেন, সেই ছাত্রজীবন থেকে মা পাশে থাকাতে তার (বঙ্গবন্ধু) জীবন কিন্তু সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে ওঠে।

আজ ৮ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গমাতা শুধু নিজের সংসারই চালাতেন না, হাতে যা টাকা-পয়সা আসতো তাও বাবার রাজনীতির জন্য তাকে দিয়ে দিতেন।

জাতির পিতার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু লেখেন— ‘আব্বা-আম্মা ছাড়াও সবসময় রেণু (বঙ্গমাতা) আমাকে কিছু টাকা পয়সা দিয়েছে। রেণু যা কিছু জোগাড় করতো বাড়ি গেলে এবং দরকার হলেই আমাকে দিত, কোনোদিন আপত্তি করেনি। নিজে মোটেই খরচ করতো না, গ্রামের বাড়িতে থাকতো। আমার জন্য সব রাখতো।’

এভাবে তিনি আমার বাবার পাশে থেকে তাকে সবরকমের সহযোগিতা দিয়েছেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন বিএ পরীক্ষা দেন, কলকাতায় তখন দাঙ্গা হচ্ছিল। বঙ্গবন্ধু দাঙ্গা দমনে ঝাঁপিয়ে পড়েন, কিন্তু সে সময় বঙ্গমাতা চলে আসেন বঙ্গবন্ধুর লেখাপড়ায় সহযোগিতা করার জন্য।’

অনেক আত্মীয়-স্বজন সে সময়ে কলকাতায় থাকতেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমার মায়ের ধারণা হয়েছিল, তিনি যদি বঙ্গবন্ধুর পাশে থাকেন বাবা লেখাপড়া করবেন এবং পাস করবেন, যা করেছিলেনও তিনি। এটাও জাতির পিতা তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার বাবার সাফল্য যদি আপনারা দেখেন সেই ছাত্রজীবন থেকে মা পাশে থাকাতে তাঁর জীবন কিন্তু সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে ওঠে। শুধু ছাত্র জীবন থেকে নয় রাজনৈতিক জীবনে তিনি সবসময় আমার বাবার পাশে ছিলেন।’

‘বঙ্গমাতা জাতির পিতাকে বলতেন— রাজনীতি করো আমার আপত্তি নেই, কিন্তু পড়াশোনা করতে হবে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমার দাদাও বলেছিলেন— যে কাজই করো তোমাকে পড়াশোনা করতে হবে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বাবা টানা দুই বছর কখনও জেলের বাইরে না থাকলেও মা সবসময় ঘর-সংসার সামাল দিতেন এবং কখনও হতাশ হননি।’

প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৬ দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদানসহ জাতির বিভিন্ন সন্ধিক্ষণে বঙ্গমাতার ঐতিহাসিক সময়োচিত পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা লাভের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা এদিন অনুষ্ঠানে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ চার বিশিষ্ট নারী ও জাতীয় নারী ফুটবল দলের মধ্যে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২৩’ প্রদান করেন। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আটটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতি বছর সর্বোচ্চ পাঁচ জন নারীকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

খেলাধুলার ক্ষেত্রে সাফ ফুটবল-২০২২ এ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন জাতীয় নারী ফুটবল দল ছাড়াও আরও চার নারী এই পদক লাভ করেন। তারা হলেন- রাজনীতিতে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন (মরণোত্তর), শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় নাসিমা জামান ববি ও অনিমা মুক্তি গোমেজ এবং গবেষণায় ডা. সেঁজুতি সাহা (মলিকুলার বায়োলজিস্ট)।