চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য জন্য তার দলের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে কেউ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।
একইসঙ্গে তিনি উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’য় দেশবাসীর ভোট প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, “আপনারা আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এমনভাবে কাজ করবেন যাতে নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে না পারে।”
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আজ নির্বাচনী জনসভায় দেওয়া এক ভার্চুয়াল ভাষণে একথা বলেন।
তিনি আজ বিকেলে আওয়ামী লীগের তেঁজগাও কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নির্বাচনী জনসভায় যুক্ত হন। যার সাথে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নাটোর, পাবনা ও খাগড়াছড়ি সহ ৫টি জেলা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিল। পরে এসব জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মতবিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁর দলের নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বলেছেন যাতে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।
তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে জনগণ ও ভোটারদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। কোন দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বা নিচ্ছে না, তাতে কিছু যায় আসে না।”
তিনি বলেন, ভোট কারচুপির কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি আর বিএনপির কাজটা কি? জ্বালাও পোড়াও অগ্নি সন্ত্রাস, এটাই তারা ভালো বোঝে এটাই তারা করে।
তিনি বলেন, এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। কেননা সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদি সংগঠন হচ্ছে বিএনপি।
শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চুরির অপরাধে দুই দুবার এদেশের মানুষ খালেদা জিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেটা নিশ্চয়ই সকলের মনে আছে। ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল। আর মার্চে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ঠিক একইভাবে তারা আবার ভোট চুরি করার চেষ্টা করেছিল ২০০৬ সালে। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার লিস্ট করে সে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। পারে নাই। কাজেই দু’ দুবার যারা ভোট চুরির অপরাধে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত তাদের মুখে এখন গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়,ভোটের কথাও শুনতে হয় -এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।
তিনি বলেন, ভোটের অধিকার জনগণকে আওয়ামী লীগই দিয়েছে এবং সেটা অব্যাহত থাকবে। এবারে নির্বাচনে আপনাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এ ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ করে কোন মানুষের ক্ষতি যেন কেউ না করতে পারে। সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন এবং সে নির্বাচনে জনগণ অবাধে ভোট দেবে। ভোটের মালিক জনগণ তাদের সাংবিধানিক অধিকার।
“হ্যাঁ আমরা এটা উন্মুক্ত করেছি আমাদের নৌকার প্রার্থীও আছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছে এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীও রয়েছে,” বলেন তিনি।
তিনি দলের প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা জনগণের কাছে যাবেন, জনগণ যাকে ভোট দেবে তিনি নির্বাচিত হবেন। কেউ কারো অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। এখানে কিন্তু কোন রকমের সংঘাত বা মারামারি, কোন কিছুই আমি দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, কোন সংঘাত হলে সংঘাত যদি আমার দলেরও কেউ করে তাদের কিন্তু রেহাই নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। সেটা মনে রাখবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার নির্বিঘেœ প্রয়োগ করবেন। যাকে খুশি বা যাকে পছন্দ তাকে ভোট দেবেন এবং সে জয়ী হয়ে আসবে। কেননা গণতন্ত্রকে আরো সুদৃঢ় করতে হবে। এর যেন কোন ব্যতয় না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহবান জানিয়ে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্যও এটা জরুরী বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার ওপর নির্মিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান তেজগাঁও দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ, প্রার্থী, স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীবৃন্দ সংযুক্ত পাঁচ জেলার ভেন্যুতে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ:) ও শাহ পরাণ (রহ:) এর মাজার জিয়ারত করে দলের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
এরপর দুপুর ২টায় নগরীর চৌহাট্টা এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন তিনি।
তিনি ২৯ ডিসেম্বর বরিশাল সফর করবেন এবং ওই দিন বিকেল ৩টায় জেলা শহরে একটি নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এরপর ৩০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ সফর করবেন এবং গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) আসনের জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। একই দিন মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, এখন লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে স্মার্ট বাংলাদেশে প্রত্যেকটি ছেলে-মেয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। আজকে আমাদের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ছয় লাখের অধিক। যারা ঘরে বসে আয় উপার্জন করতে পারে। তারা কোভিড- ১৯ এর সময়ও এটা করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়নটা ‘সাসটেইনেবল’ হবে অর্থাৎ যে উন্নয়নটা স্থায়ী হবে এবং যার মাধ্যমে জনগণ সুযোগ পাবে নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানোর। উন্নয়নবান্ধব ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করব।
তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের অনেক মেধা আছে। যে মেধা অন্বেষণ করে তাকে কাজে লাগিয়ে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং তাদেরকে প্রযুক্তি জ্ঞান দিয়ে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো। আমাদের অর্থনীতিও উন্নত হবে, স্মার্ট হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন আমরা করে যাচ্ছি সেটা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য আমরা উন্নত, উদার, অগ্রসরমান, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। যেখানে উন্নয়নটা হবে সুষম। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই যেন সুন্দরভাবে সেখানে বাঁচতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা দুর্নীতি মুক্ত এবং সুষম উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কারণ এই দুর্নীতি সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিছু লোক হঠাৎ আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়। আর সৎভাবে যারা জীবনযাপন করে তাদের জীবনটা দুর্বিসহ হয়। সেজন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ‘জিরো টলারেন্স’ আমরা ঘোষণা দেবো। ন্যায় ও সমতা ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা এবং অর্থনীতিকে সমতা ভিত্তিক করা এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করাটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, “আমরা সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই,” শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই স্মার্ট বাংলাদেশ শুধু একটি শব্দ নয়। এর অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নটাকে স্থায়ী বন্দোবস্ত করা যাতে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম এর সুফলটা ভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা করা। সেজন্য তাঁর সরকার প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছে। যেমন ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে তার রূপরেখা এখনই প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, শতবর্ষ পরে বাংলাদেশের অবস্থান কিরকম হবে? তা বিবেচনা করে ‘ডেলটা মহাপরিকল্পনা – ২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। জলবায়ুর অভিঘাত থেকে বাংলাদেশ কিভাবে মুক্ত থাকবে, তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী পাঁচ জেলার উন্নয়নের বিভিন্ন খতিয়ান, এগুলোকে আরো সমৃদ্ধ জনপদ হিসেবে গড়ে তোলার নানা পরিকল্পনা তুলে ধরার পাশাপাশি তাঁর সরকারের গৃহীত ১০ কোটির বেশি উপকারভোগীর সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচি, দেশের সকল গৃহহীণকে ঘর নির্মান ও তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করা, ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আরো জ¦ালা, গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি-উপবৃত্তি, মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে নতুন বই প্রদান এবং চিকিৎসা সেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য সারাদেশে গড়ে তোলা কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাসহ ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন।
তিনি বর্গা চাষীদের জন্য বিনা জামানতে কৃষিঋণ এবং উদ্যোক্তা তৈরি হবার জন্য ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি কৃষকদের দোরগোড়ায় সার পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন। বিএনপি এই সারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষকদের উপর গুলি চালিয়ে কৃষক হত্যা করেছিল সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি নির্বাচনে আসবে কিভাবে সে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন ছিল না। সেই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০টি আসন পেয়েছিল। আর সেখানে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩ টি আসনে বিজয়ী হয়। এটা সকলকে মনে রাখতে হবে। এখন বড় বড় কথা বলে, তারা ভোটের কথা বলে।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী, সংবিধান লঙ্ঘনকারী, সেনা আইন লঙ্ঘনকারী এক জেনারেলের পকেট থেকে যাদের জন্ম সেই বিএনপি ভোটের কি বোঝে, সে প্রশ্নও তিনি তোলেন। ক্ষমতায় বসে থেকে একদিকে সেনাপ্রধান এবং অপরদিকে রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোটের আয়োজন এর মাধ্যমে তার সময়ে বিভিন্ন প্রহসনের নির্বাচনের প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে যাদের জন্ম তাদের সকল কাজই অবৈধ, কারণ তারা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না।
তিনি সাম্প্রতিক রেলে অগ্নিসংযোগের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, কিভাবে রেলে আগুন দিয়ে তারা মানুষ পোড়ালো। মাতা শিশু সন্তানকে বাঁচানোর জন্য বুকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে সে অবস্থায় জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গিয়েছে। হেলপার ঘুমিয়ে আছে আগুন দিয়েছে, হেলপার পুড়ে শেষ। ২০১৩ ও ১৪ সালে একই ঘটনা তারা ঘটিয়েছে। ছেলেকে ট্রাকে বসিয়ে রেখে বাবা গেছে মনে হয় পানি আনতে, সেই ট্রাকে আগুন দিয়েছে, ছেলে পুড়ে শেষ। সন্তান আগুনে ঝলসে যাচ্ছে বাবা কিছুই করতে পারছে না। এভাবেই সারা বাংলাদেশে তারা তান্ডব করেছে। সেই ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর নামে ৫৮২টি স্কুল, ৭০টি সরকারি অফিস, ছয়টি ভূমি অফিস এবং ৩২৫২টি গাড়ি, ২৯টি রেল, নয়টি লঞ্চ তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়েছিল। এমনকি জজের এজলাসেও তারা আগুন দেয়। ঝালকাঠিতে বোমা মেরে জজ হত্যা করল। গাজীপুরে আইনজীবীদের উপর বোমা হামলা চালালো, সেখানো আইনজীবীদেরকে তারা আহত করল। এটাই বিএনপির চরিত্র, আর এখন আবার শুরু করেছে অগ্নি সন্ত্রাস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাসে আগুন দিচ্ছে, গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, রেলে আগুন দিচ্ছে। মানুষ যেন শান্তিতে চলাচল করতে পারে এজন্য সরকার নতুন রেলের কোচ ক্রয় করেছে, সেখানে আগুন দিচ্ছে। কারণ মানুষের শান্তি দেখলে ওদের মনে অশান্তি জাগে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘কুলাঙ্গার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই কুলাঙ্গার ২০০১ সালে হাওয়া ভবন খুলে খাওয়া শুরু করেছিল। তাকে খাওয়া না দিয়ে কেউ ব্যবসা পেতো না। তার খাওয়ার কোন শেষ ছিল না। খেতে খেতে সে সবই খেয়ে ফেলেছে। মানি লন্ডারিং, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পলাতক আসামি এই তারেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আর রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল। আর সেখানে বসে এখন নির্বাচন বানচাল করা সহ মানুষ হত্যার হুকুম দিচ্ছে।
তিনি বলেন, তারা বলে তারা নাকি গণতন্ত্র দেবে যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি তারা কিভাবে গণতন্ত্র দিতে পারে সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশে দারিদ্রের হার আমরা ৪১ ভাগ থেকে ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৯৮ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি, প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছি এমনকি কোভিড-১৯ এর সময় যখন বিশে^র অনেক উন্নত দেশের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়ে পড়েছিল তখনও আমরা ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। দেশের মানুষের উন্নয়নে দিন-রাত পরিশ্রম করেই আমরা একাজগুলো করে যাচ্ছি। রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রীজ সহ দেশের যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নটা আমরা করেছি সেটা জনগণের মাথায় রাখতে হবে। সেটা মাথায় রেখেই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে হবে এবং জনগণের তথা ভোটারের অংশগ্রহণ থাকতে হবে।
তিনি বলেন,“আর উন্নয়নের ধারাটাকে যদি অব্যাহত রাখতে হয় তাহলে আওয়ামী লীগকেই সরকার গঠন করে জনগণের কল্যাণ সাধন করতে হবে।” বাসস
ডেস্ক রিপোর্ট :
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আন্দোলন সংগ্রাম করে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি। আজকে নির্বাচনী সংস্কার আমরা করেছি। আজকের জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কাকে তারা নির্বাচিত করবে। কে সরকারে আসবে।
তিনি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস-খুন করে জনগণের হৃদয় জয় করা যায় না। এটা তাদের (বিএনপি-জামায়াত) জানা উচিত এবং তাদের সে অনুযায়ী কাজ করা উচিত।’
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ ১৭ ডিসেম্বর রবিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আন্দোলনের নামে মানুষ পোড়ায়, আন্দোলনের নামে রেল গাড়িতে যাতে দুর্ঘটনা হয় সেজন্য মৃত্যুর ফাঁদ তৈরি করে রাখে। মানুষ হত্যা করে, মানুষকে পুড়িয়ে মারে। জিয়াউর রহমান যেমন মানুষ হত্যা করেছে, খালেদা জিয়া এসেও একই কাণ্ড করেছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, কোটালিপাড়া বোমা রেখে দেওয়ার মত বহু ঘটনা তারা ঘটিয়েছে। ঠিক একই ভাবে আজকে লন্ডনে বসে হুকুম দেওয়া হচ্ছে। ওখান থেকে হুকুম দেওয়া হয় আর এখন থেকে তাদের দল আগুন দেয়। এই যে আগুন নিয়ে খেলা এই খেলা ভালো নয়। বাংলাদেশের মানুষ এটা কখনো মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানোবো যারা অগ্নি সন্ত্রাসী, তাদের বিরুদ্ধে সকলকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ওরা হরতাল দিয়ে লুকিয়ে থাকে। ঘরে বসে থাকে। তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছে সে সুযোগ নিয়ে গুপ্তস্থান থেকে তারা হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দেয় আর মানুষ হত্যার নির্দেশ দেয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, লন্ডনে বসে সে এসবের হুকুমদাতা।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে তাদের কিসে ভালো কিসে মন্দ। আর কোন দল ক্ষমতায় থাকলে তাদের কল্যাণ হয়।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোন অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে উঠে আসেনি। আওয়ামী লীগ এদেশের মাটি মানুষের সংগঠন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এই সংগঠন গড়ে উঠেছে। কাজেই এই সংগঠনের শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। আওয়ামী লীগকে এভাবে তারা কোনদিনই উৎখাতও করতে পারবে না, দাবাতেও পারবে না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তৃতা করেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও সুজীত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল আলম মিলন এমপি, কেন্দ্রীয় নেত্রী মেরিনা জাহান কবিতা, এমপি, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শেখ বজলুর রহমান ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি এবং সহপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্যোগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ‘জি ২০ মেগা বিচ ক্লিন আপ’ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০২৩ সালে ভারতের জি ২০ প্রেসিডেন্সির আচরণবিধির অধীনে রোববার আয়োজিত এই ঘণ্টাব্যাপী কার্যক্রমে বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, সুশীল সমাজ, শিক্ষার্থী ও তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারতের জি ২০ প্রেসিডেন্সি চলাকালে অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। এটি উভয় দেশের বিস্তৃত ও সুগভীর অংশীদারত্বের প্রতিফলন। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক হচ্ছে বহুমুখী এবং সেটা যৌথ প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষাসহ সুবিস্তৃত নানা ক্ষেত্রে সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
তিনি বলেন, উপকূলীয় ও সামুদ্রিক আবাসস্থলের সংরক্ষণ ও সুরক্ষার এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের দুই দেশের যৌথ মূল্যবোধ ও অগ্রাধিকারসমূহের একটি স্বতঃস্ফূর্ত সম্প্রসারণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সবসময় জলবায়ু ইস্যুতে সম্মুখসারিতে রয়েছে। ভূমিমন্ত্রী উপকূলীয় ও সামুদ্রিক দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তার প্রতি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণের সহায়ক হিসেবে ভারত সরকারের এই উদ্যোগ এবং নাগরিক-কেন্দ্রিক অংশগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন।
পরিবেশের ওপর সামুদ্রিক বর্জ্যের প্রভাব সম্পর্কে সংবেদনশীল করা ও সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ‘জি ২০ মেগা বিচ ক্লিন আপ’ কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। এতে পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও জনসমাজের অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
সংলাপের কথা শুনে বিএনপির নেতাদের আবারও জিহ্বায় পানি এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সংলাপ নিয়ে আপাতত আমরা ভাবছি না, ভাবব কি না সেটা পরের বিষয়। গতবারের কথা আমাদের মনে আছে; এক বার নয়, দুই বার তাদের সঙ্গে সংলাপে বসেছি। রেজাল্ট কী?
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে ৮ জুন বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, নিষেধাজ্ঞার জন্য নালিশ করতে করতে বিএনপি এখন নিজেরাই ফাঁদে পড়েছে। তারা নিজেরাই ‘ফাঁদে পড়ে কান্দে’। এখন তারা নালিশ করে নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে পেয়েছে ভিসানীতি। এই ভিসানীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কাকে ভিসা দেবে, কাকে দেবে না, একটা সেই দেশের ব্যাপার। আমরাও আমাদের দেশে কাকে ভিসা দেব, কাকে দেব না, সেটাও আমাদের ব্যাপার। এ নিয়ে ভয় পাওয়ার কী আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেবের জিহ্বায় পানি আসছে। মনে করছে আওয়ামী লীগ তাদেরকে সংলাপে ডাকবে। এই সংলাপের কথা আমরা ভাবছি না। নিরপেক্ষ কে? আপনার নেত্রী বলেছে শিশু এবং পাগল। শিশু এবং পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। কাজেই আপনি শিশু এবং পাগলের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ব্যক্তি খুঁজে বের করুন। তারপর বোঝা যাবে কী হবে। আর এটা নিয়ে মাথা খারাপ করে কাজ নেই, এই তত্ত্বাবধায়ক আর আসবে না, তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। এই মরা জিনিসকে আর জীবিত করার চেষ্টা করবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেনি, এটা নিষিদ্ধ করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
তিনি বলেন, বিএনপি নমিনেশন লন্ডন থেকে দেয়, ঢাকা থেকে দেয়, নয়াপল্টন থেকে দেয়, গুলশান থেকে দেয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে নমিনেশন বিক্রি করে। এটাই হচ্ছে বিএনপি। মনে আছে ওই নমিনেশন বাণিজ্য, অনেকের পকেট খালি করেছে। একেক জায়গায় তিনজন চারজন করে নমিনেশন পেয়েছে, এটা হচ্ছে বিএনপি।
কাদের বলেন, আমাদের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছিল না। খালেদা জিয়ার ইচ্ছায় নির্বাচন কমিশন ছিল আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন। সেটা আর হবে না। সেই দিন চলে গেছে। আমাদের নেত্রী পার্লামেন্ট আইন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। নির্বাচন কমিশন নিয়ে আপনাদের চিৎকার করার কোনো কারণ নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকে বিদেশি বন্ধুরা তারা চায় নিরপেক্ষ নির্বাচন। তারা চায় ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন। আমাদের নেত্রী দেশি বিদেশিদের আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচন করব। বিএনপি চায় তত্ত্বাবধায়ক। বিএনপি চায় শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। এটা মামা বাড়ির আবদার।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিয়মের মধ্যে থাকুন। আপনারা আমাদের শপথে থাকুন। আমাদের আবারও ৬ জুন, ৭ মার্চের শপথ নিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র গিলে খেয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা গিলে খেয়েছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ গিলে খেয়েছে। এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। এরা যদি ক্ষমতা ফিরে পায়, বিএনপি নামের বিষধর সাপ গোটা দেশ গিলে খাবে।
বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা জনগণকে বলেছি, আপনারা সময় দিন। ১০-১৫টা দিন সময় দিন। সব ঠিক হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যার ওপর ভরসা রাখুন।
নতুন ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ সমাজ, এবার তোমরা যারা প্রথমবার ভোট দেবে তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে ভোটটা দেবে।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় গেলে নাগরিককেন্দ্রিক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক, কল্যাণমুখী, সমন্বিত দক্ষ ‘স্মার্ট প্রশাসন’ গড়ার মাধ্যমে জনগণকে উন্নত ও মানসম্মত সেবা প্রদান ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
আজ ২৭ ডিসেম্বর বুধবার সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালীন সরকারের নেওয়া নানা উন্নয়ন কাজের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের গড় আয়ু থেকে শুরু করে খাদ্য উৎপাদন, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধন করেছে আওয়ামী লীগ। দেশের মানুষকে ভ‚মিহীন ও গৃহহীন থেকে উত্তরণ ঘটাতে সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের রূপান্তর ঘটেছে। আজকের বাংলাদেশ দারিদ্র্যক্লিষ্ট, অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর বাংলাদেশ নয়। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আজকে ভূমিহীন, গৃহহীন জেলা ৩২টি। ইন্টারনেট সেবায়ও আওয়ামী লীগ উন্নয়ন ঘটিয়েছে। সিম কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। আইসিটি রফতানি আওয়ামী লীগ আমলে শুরু হয়েছে। হিজড়াদের পারিবারিক, সামাজিক ও সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সরকার কাজ করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলব। বিচারবিভাগের স্বাধীনতা রাখা হবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি একটি মাত্র টেলিভিশন, একটি মাত্র রেডিও ছিল। এখন ৩৩টি বেসরকারি টেলিভিশন। এখানে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। একইসঙ্গে মানুষের কথা বলার মাধ্যম তৈরি হয়েছে৷
স্মার্ট বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্মার্ট ও আধুনিক হিসেবে আমরা গড়ে তুলব। পাঠ্যক্রমে দুর্নীতির কুফল যুক্ত করা হবে৷
বর্তমান সরকারের আমলে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। সম্ভাবনার হাতছানি দেওয়া দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা দুরন্ত বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের রূপান্তর ঘটেছে। আজকের বাংলাদেশ দারিদ্র্যক্লিষ্ট, অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর বাংলাদেশ নয়। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।
চলারপথে রিপোর্ট :
পাবনার ঈশ্বরদীতে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ১০ জন। আজ ১৫ জুলাই শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের মুলাডুলি আমতলা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বাসের হেলপার ভরত চন্দ্র সরকার রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র সরকারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে রাজশাহী থেকে রাব্বি পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাস পাবনার দিকে যাচ্ছিল। একই সময়ে বিপরীতমুখী দ্রুতগামী একটি ট্রাক নাটোরে দিকে যাচ্ছিল। মুলাডুলি আমতলা অতিক্রমকালে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে বাসের হেলপার নিহত হয়।
পাকশী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশীষ কুমার স্যানাল বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আহতদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন এলাকায় চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পাবনার পাকশী হাইওয়ে থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।